যা হয় ভালোর জন্যই হয়
জীবনে সবসময় আমরা ভালো সময় কাটাই না।খারাপ সময় আমাদের সবার জীবনেই আসে।যে সময়টাতে শান্তনা দেয়ার জন্য আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রায়ই বলে থাকেন,যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
আসলেই কি সবকিছু ভালোর জন্যই হয়?চলুন,ছোট্ট একটি গল্প শুনাই।
বাজারের মাঝে একটি মন্দির ছিল।মন্দিরে যারা কাজ করতো তারা সবাই বেতনভুক্ত ছিল।পুরোহিত থেকে শুরু করে ঝাড়ুদার এবং যে আরতি করে সে থেকে শুরু করে যে ঘন্টা বাজায় সে পর্যন্ত বেতনভুক্ত ছিল।ঘন্টা বাজানো যার কাজ ছিল সেই ব্যক্তি ঘন্টা বাজানোর সময় এতোটা ভক্তিসহকারে বাজাতো যে যারা পুজো দিতে আসতো তারা সবাই অতি মনোযোগ সহকারে তার ঘন্টা বাজানো উপভোগ করতো।
একদিন মন্দিরের ট্রাস্টিরা সিদ্ধান্ত নিলো যে এই মন্দিরে কেবলমাত্র তারাই কাজ করবে যাদের অক্ষরজ্ঞান আছে।তো দেখা গেল সেই হিসাব অনুযায়ী ঘন্টা বাজানোর লোকটিই বাদ পড়ে গেল।
Pixabay
তারপর নতুন এক লোক নিয়োগ দেয়া হলো ঘন্টা বাজানোর জন্য।কিন্তু লোকেরা তার ঘন্টা বাজানোতে আগের মতো সন্তুষ্ট হতে পারেনি।বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর সব লোকেরা মিলে ওই আগের লোকের কাছে গিয়ে বললো যে আপনি প্রতিদিন আরতি দেয়ার আগে ঘন্টা বাজাবেন।কিন্তু লোকটি বলে ঠলো যে জা তা হয়না। এতে ট্রাস্টির লোকেরা ভাববে আমি টাকার লোভে আবার ওখানে গেছি।সব লোকেরা মিলে তারপর সিদ্ধান্ত নিলো যে তাকে মন্দিরের পাশে একটি দোকান করে দেয়া হোক।যখনই আরতির সময় হবে উনি গিয়ে ঘন্টা বাজিয়ে আসবেন।এই প্রস্তাবে লোকটাও রাজি হয়ে গেলো।
বেশ কয়েকবছর কেটে গেল।লোকটি ব্যবসা করে ওই মহল্লার ভেতোর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির স্থান পেয়ে গিয়েছিল।এদিকে অনেক বছর হওয়ায় মন্দিরের অনেক জায়গায় সংস্কারের প্রয়োজন হয়েছিল।সংস্কার কাজে যে পরিমাণ টাকা লাগবে বলে ধারণা করা হয়েছিল মন্দিরের ফান্ডে তার থেকে ১০ লক্ষ টাকা কম ছিল।তো ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিল যে এই শহরের যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তার কাছে থেকেই বাকি টাকাটা নেয়া হবে।সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবাই গেল ধনী ব্যক্তির নিকট এবং ঘটনা শোনার সাথে সাথেই লোকটি তার ম্যানেজারকে বললো ১০ লক্ষ টাকার চেক রেডি করতে। তারপর ধনী লোকটি চেকটিতে টিপ ছাপ দিয়ে ট্রাস্টির লোকের হাতে তুলে দিল।টিপ ছাপ দেয়া দেখে এক সদস্য বলে উঠলো যে আপনি অশিক্ষিত হয়ে এতো বড়লোক,আজ যদি আপনি শিক্ষিত হতেন তাহলে আরো কত টাকার মালিক হতে পারতেন।
Pixabay
সদস্যের সেই কথা শুনে ধনী ব্যক্তিটি হেসে উঠলো এবং বললো যে যদি শিক্ষিত হতাম তাহোলে আজ আপনাদের মন্দিরে আমাকে ঘন্টা বাজানোর কাজ করতে হতো।যার জন্য আমি মাস গেলে কিছু টাকা পেতাম।
তো কি বুঝলেন?আজ আপনার সাথে কোনো খারাপ বা আপত্তিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য ব্যাকুল হবেন না।নিশ্চই সেই আপত্তিকর ঘটনার কোনোনা কোনো সুফল আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছে।হয়তো সেই সুফল ভোগের জন্য একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হবে।
সময় এমন হয় যে ধনী লোক গরিব আবার ভিখারি হয় ধনী।সবই কর্মফল এবং ঈশ্বরের দান।ধন্যবাদ ভাইয়া।গল্পটি ভালো ছিল।
ধন্যবাদ দিদিমনি❣️