করোনায় ভয়াবহ বাস্তবতা|| ১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য।
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @farhanshadik বাংলাদেশের নাগরিক।
আমি ফারহান সাদিক,আমার ইউজার নাম @farhanshadik।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
চলুন শুরু করি
করোনা নামের এক অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাজিত পুরো মানব জাতি।এক নিমিষে সবকিছু যেন ভয়ঙ্কর বাস্তবতার মুখোমুখি।কি নেই এই সভ্যতার আধুনিক প্রযুক্তি বৈজ্ঞানিক চিন্তা ধারা। তবুও এক অদৃশ্য এক শক্তির কাছে যেন ধরাশায়ী। ছাত্র দের জীবনের কথা দিয়ে শুরু করি আধুনিক সমাজ গঠনের জন্য শিক্ষার কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু এই ভয়াবহ মহামারীর কারণে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার হুমকির মুখে। কিছু দিন আগেও কোনো একটা ছুটির উপলক্ষের জন্য কত অপেক্ষা ছিল। পড়ালেখা, পরীক্ষার কঠিন রুটিন থেকে কবে একটু ফুরসত পাব, অনেক দিন ধরে বইয়ের আলমারিতে অবস্থান করা গল্প-উপন্যাসের বইগুলো পড়ব, বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখব,আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাব,পছন্দের মুভিটা দেখবো সেই অপেক্ষা। হুট করে এমন অবসর মিলছে যেন তিন বছর একাধারে একই কাজ করে যাচ্ছি। এখন মনে হয় কবে ইনভারসিটি, কলেজে আবার গিয়ে মুখরিত করব ক্যাম্পাস এখন হুট করেই এমন অবসর মিলছে, যে অবসর সম্ভবত আমরা কেউই চাইনি। আগের সেই কাকভোরে ঘুম থেকে ওঠা, কলেজ, প্রাইভেট কোনো কিছুরই তাড়া নেই। কলেজ শুরুর পূর্বে মামার দোকানে সিগারেট আর চায়ের কাপে চুমুক পরে না।বন্ধুদের কলরবে মুখরিত হয় না সেই চায়ের দোকানের আড্ডা। তবে কোনো কিছুই থেমে থাকে না দিব্যি চলে বেড়াচ্ছি। সাকিব নামের ছেলেটা সংসারের চাপে লেখা পড়া বাদ দিয়ে কাজে মন দিয়েছ। শুনেছি সে এখন পরিবারের খরচ নিজেই চালায়। আরেকটি বছর ছিল তার লেখাপড়া শেষ করার। শেষ হয়ে গেল এই মহামারীর কারণে তার ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করার স্বপ্ন। আহা কি নিষ্ঠুর বাস্তবতার মধ্যে যেন আমরা পার হচ্ছে প্রতিটা দিন। যখন মনের মধ্যে ভাবনা চিন্তা করি 54 জন ডিপার্টমেন্টের সহপাঠির মধ্যে আর 40 জন আমরা অবশিষ্ট আছে তখন মনের মধ্যে কুঁকড়িয়ে ওঠে এক যন্ত্রনা।
মনে হচ্ছে যেন কোন ভয়ংকর সিনেমার অংশ মনে হচ্ছে নিজেকে।কেউ যর থেকে বের হয় না চেনা শহর টা ধুলো জমে ফেকাসে রং ধারন করছে।চেনা জয়গাটায় আর সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া হয় না।আমার ছোট জীবনে কখনো এমন বিধ্বস্ত পৃথিবী দেখার অভিজ্ঞতা নেই। জীববিজ্ঞান,ইতিহাস বইয়ে ভাইরাসের দৌরাত্ম্য, বিভিন্ন লেখকের লেখা বইয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া মহামারি সংক্রান্ত বই আর ইতিহাস এতটুকুই ধারণা। মনে হচ্ছে ভয়াবহ মহামারি সংক্রান্ত কোনো বইয়ের চরিত্র হয়ে গিয়েছি। যে পৃথিবীতে প্রতিটি দিন শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য দিয়ে, সেই পৃথিবীর এ কেমন থমকে যাওয়া রূপ! সব আলোচনা শুধু মহামারি এবং ভাইরাসটিকে ঘিরে। চারপাশের একেকটি মানুষ যেন ছোটখাটো একেকজন ভাইরোলজিস্ট হয়ে গেছে।রহিম কাকার রাস্তা পাশের দোকান আর খোলা হয় না।বৃদ্ধ বয়সী মানুষ গুলো চায়ের আড্ডার সাথে এলাকার সমসাময়ীক বিষয় নিয়ে গল্পে মেতে ওঠে না।বাইরে বের হলে মুখে মাক্স পড়ে বের হওয়া লাগে।প্রিয় শহরের পরিষ্কার বাতাস তৃপ্তিভরে নেওয়া হয় না। বাজারের পাশে ভাপা পিঠা বানানো আন্টি আর বসে না।শুনেছি পাশের মহল্লার অধিকাংশ মানুষই করোনায় আক্রান্ত।আজানের পরে দুর থেকে ভেসে আসে মৃত সংবাদ।
এখন দিন কাটছে ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে। কখন কোথায় থেকে শুনি প্রিয়জন আক্রান্ত হলো।আজ এই ভয়াবহ মুহূর্তে নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছ।চারদিকে মানুষের অসহায়ত্বের হাহাকার কি এক অদ্ভুত বাস্তবতা। করোনায় দেখেছি চারদিকে মানুষের সামান্য মৌলিক অধিকার চিকিৎসা নিয়ে হাহাকার। সরি সরি লাশ।এই দৃশ্য এখনো চোখের সামনে ভাসে।পৃথিবীতে কত আধুনিক কত ক্ষমতাশীল দেশ এই অদৃশ্য শক্তির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করলো।এই ভাইরাস জীবনের সকল চাওয়া পাওয়া শেষ করে দিলে।বিষাক্ত তিক্ততার সাদ দিয়ে গেল। মাটি চাপা হয়ে রইলো হাজারো ছাত্রের জীবন। পরিশেষে বলবো স্রষ্টার কাছে তিনি যেন এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্ত করে।এবার যেন আমার সুস্থ পৃথিবী পায়।এমন নিয়ম কানুন অসুস্থ পৃথিবীতে থাকতে চায় না।