আনন্দ ভ্রমণঃ পর্ব ০১ || মুহুরী সেচ প্রকল্প (Travelling to Muhuri Irrigation Project)[10% beneficiary @shy-fox]
ভূমিকাঃ
বনভোজন বা আনন্দভ্রমণ করতে পছন্দ করেনা এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল হবে। মোটামুটি প্রায় সব মানুষই ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। তাই আমি আমার আরেকটি সিরিজ অর্থাৎ আনন্দভ্রমণ বিষয়ক সিরিজে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আশা করি ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা ও ছবিগুলো আপনার ভাল লাগবে।
পর্ব ০১: মুহুরী সেচ প্রকল্প
মুহুরী প্রজেক্ট (মুহুরী সেচ প্রকল্প) বাংলাদেশের অত্যন্ত স্বনামধন্য একটি প্রকল্প। যার অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলায়। এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল উপকূলীয় অঞ্চলের বেশকিছু জমিকে চাষাবাদযোগ্য করার জন্য। অর্থ ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে যা দিয়ে পানির প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় আর এতে করে একটা দীর্ঘ অঞ্চল চাষাবাদের আওতায় এসেছে এবং বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।
এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মানুষের আনাগোনা এখানে জমতে থাকে অর্থাৎ এটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়ে থাকে। কারণ আপনারা জানেন পানি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের কাছে যেতে মানুষ অনেক পছন্দ করে। আর এই প্রকল্পটি আমার কর্মস্থল থেকে খুব বেশি দূরে নয়। মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরত্বের পথ। মাঝে মাঝেই আমি আমার সহকর্মীদের সাথে এখানে বেড়াতে যাই।
গত সপ্তাহে কর্মব্যস্ত একটি দিন শেষে যখন অনলাইন পরীক্ষা শেষ করে আমরা সবাই ক্লান্ত, তখন হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম আমরা মুহুরী প্রজেক্ট বিকেলে ঘুরতে যাব। যেই কথা সেই কাজ।
আমরা মোট ছয়জন সহকর্মী এবং আমাদের সাথে ড্রাইভার ছিলেন। আমরা রওনা হয়েছিলাম বিকেল পাঁচটায় অর্থাৎ আসরের নামায শেষ করার পর। সেখানে পৌঁছতে আমাদের সময় লেগেছিল মাত্র ১৫ মিনিট। আপনারা যাত্রা পথ এর কিছু ছবি দেখতে পাচ্ছেন।
মুহুরী প্রজেক্ট যাওয়ার পথে হাতের ডানে এবং বেশ কিছু মাছ চাষ প্রকল্প আপনার চোখে পড়বে। আশেপাশের অঞ্চলটি একেবারে গ্রাম্য প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মাছ চাষের জন্য অনেক বিখ্যাত এবং এখান থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ পাঠানো হয়। মাছ চাষের দিক থেকে এই অঞ্চলটি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এবং এখানে বিভিন্ন রকম মাছ চাষ হয়। মীরসরাই উপজেলার প্রচুর মাছের যোগান এখান থেকে আসে। আমি এলাকায় একটা দীর্ঘ সময় অবস্থান করার কারণে অনেকের সাথেই কথা বলে জেনেছি এখানের অনেক মানুষই হচ্ছে শুধুমাত্র মাছ চাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে এবং মাছ সংক্রান্ত কাজের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সে যাই হোক, আমরা যখন প্রজেক্টর বাঁধের কাছে পৌঁছলাম তখন দেখতে পেলাম সেখানে কয়েকটি গেইট খুলে দেয়া আছে এবং পানির অত্যন্ত তীব্র স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। চাষযোগ্য এলাকা থেকে পানিকে আস্তে আস্তে বের করে দেয়া হচ্ছে কারণ বৃষ্টি হয়েছিল প্রচুর গত কয়েকদিন।
যখন বৃষ্টি হয় তখন এই বাঁধের আশপাশ অঞ্চলে প্রচুর পানি থাকে। আর পানির স্রোত এবং প্রবাহ দেখতে অনেক ভালো লাগার কারণে মানুষ ছুটে আসে। এই অংশটির আশেপাশে তেমন কোলাহল নেই এবং গ্রাম্য পরিবেশ তাই যে কারো জন্য এই স্থানটি অনেক মনমুগ্ধকর একটি পরিবেশ। সব থেকে বড় কথা দুই পাশেই হচ্ছে কেবল পানি আর পানি কারণ একপাশে সমুদ্রের তীর আর অপর পাশে হচ্ছে পানি ভর্তি মাঠ। তাই দুই পাশ থেকে যে বাতাস আসে তা অনেক ঠান্ডা হয়ে আসে এবং হৃদয়কে শীতল করে দেয়।
মুহুরী প্রজেক্টে অনেকেই আবার মাছ কিনতে যায়। কারণ এই প্রোজেক্টের আশাপাশে নদী হতে সংগ্রহ করা মাছ নিয়ে আসেন অনেকে বিক্রির জন্য। এই নদীর মাছগুলো চাষ করা মাছের মতো নয় বরং প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হওয়া মাছ তাই গুণে এবং মানে অনন্য। আর এ কারণেই এই মাছগুলো অনেকের পছন্দের এবং অনেক পর্যটক এখানে আসলে মাছ নিয়ে যেতে চান যদি পছন্দ হয়।
এখানকার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই অঞ্চলে প্রচুর মহিষ লালন পালন করা হয়। আর মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি দধি এখানে প্রচুর বিখ্যাত। এরকম পর্যটক বা দর্শনার্থী পাওয়া যাবে না যারা এখানে এসেছেন কিন্তু এই দইয়ের স্বাদ গ্রহণ করেননি। এখানে যে কয়টি দোকান গড়ে উঠেছে তার সবগুলোই হচ্ছে এই বিখ্যাত খাবার কেন্দ্রিক। এই ডেজার্ট আমরা উপভোগ করি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিন্তু এখানকার ডেজার্ট অর্থাৎ দধি অনেক বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় কারণ হচ্ছে এখানে দুধ হিসেবে মহিষের দুধ ব্যবহার করা হয়।
অবস্থানঃ https://w3w.co/certainly.fluctuates.visiting
সর্বোপরি সন্ধ্যা ঘনিয়ে যাওয়ার পরপরই আমরা মাগরিবের নামাজ পড়ে আবার আমাদের গন্তব্যর দিকে যাত্রা করে ফিরে এসেছিলাম।
শেষকথাঃ
সর্বোপরি এটি একটি আনন্দদায়ক ভ্রমণ ছিল এবং এরকম ভ্রমণ আমাদের মাঝে মাঝেই করা উচিত যাতে করে আমরা বিনোদন উপভোগ করতে পারি। এরকম ভ্রমণের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কর্মব্যস্ত জীবন থেকে কিছুটা হলেও ছুটি পাই আর এটা আমাদের জন্য খুব দরকারী কারণ এতে আমরা আমাদের কাজের জন্য নতুন করে আবার উদ্যম ফিরে পাই। আর এ কারণেই বিনোদন বা ভ্রমণকে ষষ্ঠ মৌলিক চাহিদা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি রয়েছে।
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
@engrsayful
মনে হচ্ছিল আপনার সাথে ভ্রমন করছি।
বোঝা যাচ্ছে ভ্রমনটি আপনি খুব উপভোগ করেছেন। চট্টগ্রাম আমার বড়াবড়ই খুব ভালো লাগে। অপার সৌন্দর্য মন্ডিত একটি জায়গা। আমার ছোটবেলার কিছু বছর চট্টগ্রাম কাটিয়েছি, সত্যিই ভোলার নয়।
প্রিয় ভাই আপনার প্রতিটি পোস্ট ভালো লাগে এবং নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করছি। আশাকরি নতুন অনেক কিছু শিখতে পারবো।
আমার চোখ আপনার দিকে রয়েছে।
ভালো থাকবেন 🥀
শুভ কামনা অবিরাম 💚
আপনি আমার পোস্ট নিয়মিত পড়ছেন জেনে ভালো লাগলো এবং আপনাদেরকে শেখাতে পেরে ভালো লাগছে। শিখুন এবং কাজ করুন আশা করি খুব দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন
আপনার ভ্রমণ কাহিনি পড়ে খুবই ভালো লাগল। এবং এই সেচ প্রকল্পটির জন্য নিশ্চয়ই আশেপাশের লোকের উপকার হয়েছে।
যে আমার সঠিক সংখ্যাটি মনে নেই তবে একটা বিস্তীর্ণ এলাকা চাষাবাদের আওতায় এসেছে।
ও। বুঝলাম 🙂🙂