জীবনে খারাপ সময় জরুরি, মন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে || মনের জোর আছে তো?
মনের জোর আছে তো? |
---|
পৃথিবীতে শত কোটি মানুষ রয়েছে প্রায় সবার মনের মাঝেই পাওয়া আর না পাওয়ার একটি দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। ধরুন একজন বিত্তবান মানুষ কোনদিকে তার অভাব নেই, কিন্তু তার সাথে আপনি কিছুটা সময় কাটিয়ে আসুন দেখবেন তার জীবনে সমস্যার শেষ নেই। আবার একদম যে ভিখারি তার কাছেও সমস্যা নামক কালো ছায়া বিরাজমান। তবে সমস্যাগুলো মানুষভেদে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ধরুন বিত্তশালী ব্যাক্তির একশো কোটি টাকার একটি কারখানায় আরো একশো কোটি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন সে ঠিক এই দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে। অপর দিকে ভিখারি একশো টাকা কতক্ষনে উপার্জন করে চাল কিনে বাড়িতে গিয়ে খাবার খাবে সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
এবার আসুন হঠাৎ করেই ঐ বিত্তবানের একশো কোটি টাকার কারখানায় আগুন লেগে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তার জীবনে বিপদের ঘন আঁধার নেমে এসেছে আর অপরদিকে ভিক্ষুক রাস্তা পার হতে গিয়ে দূর্ঘটনায় তার পা হারিয়ে ফেলে। এখন এই পরিস্থিতিতে কার কি করা উচিত ? আমি জানি মানুষ ভেদে বিপদ গুলো ভিন্ন রকম হতে পারে। আচ্ছা আরো একটি সমস্যা যুক্ত করলাম আপনার চাকরিটা হঠাৎ চলে গেছে, এটাও চিন্তা করতে পারেন। চলুন ব্যাপারগুলো একটু চিন্তা করি। কি ভাবছেন কাল্পনিক গল্প বলছি? না আমার উদাহরণ গুলো একদমই কাল্পনিক নয় এগুলো হরহামেশাই ঘটে চলেছে আমাদের চারপাশে।
বিত্তবান ব্যাক্তিটি প্রথমেই মানসিকভাবে ভেঙে পরে এবং কি করবে প্রথমেই বুঝতে পারেনা। তখন বেশ কিছু মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন কিন্তু মানুষগুলো দূরে সরে যেতে শুরু করলো। মানসিক চাপ বাড়তে থাকে এবং পাল্লা দিয়ে আপন মানুষগুলো তাদের রুপ বদলাতে থাকে। একসময় ব্যাংক থেকে চাপ আসতে শুরু করে এবং সম্মানের আর বালাই নেই দ্রুত তাদের টাকা পরিশোধ করতে থাকে। মানসিক দুশ্চিন্তা পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে, হঠাৎ লোকটি একদমই শান্ত হয়ে যায়। নিজেকে একটি ঘরের মধ্যে বন্দি করে ফেলে, এবার নিজের মনের সাথে নিজের বোঝাপড়া করতে বসে যায়। না এভাবে হেরে গেলে চলবেনা, বিপদ উদ্ধারের চেষ্টা করতেই হবে। মন তাকে চ্যালেন্জ করতে থাকে, তুমি শেষ আর উঠতে পারবেনা। তখন বিত্তবান ব্যাক্তিটি চ্যালেন্জ গ্রহন করে বলে, মন তুমি জানোনা আমি একদিন একশো টাকা নিয়ে ব্যাবসা শুরু করেছিলাম। সে আপন মনের মাঝেই যুদ্ধ রচনা করে।
অপরদিকে পা হারিয়ে ভিখিরি আরো অসহায় অবস্থায় পরে যায়, ভাগ্যিস যার গাড়ির নিচে পরেছে সে তার কিছুটা চিকিৎসা করিয়েছে আর ঘা শুকাতে শুরু করেছে। তবে মনের ঘা বাড়তে থাকে কারন কিভাবে তার খাবারের যোগাড় হবে? এবার কপালকে একটা বিশ্রী ভাষায় গালি দিয়ে কাটা দুই পায়ে শক্ত করে পট্রি বেঁধে ভিক্ষার থালা নিয়ে রাস্তা নেমে পরে। মনকে বলে ধুর শালা, দেখি না কি হয়।
বড়লোক তার খাতা নিয়ে লাভ ক্ষতির হিসেব করতে বসে , তখন হঠাৎ মাথায় আসে তার পুরো কারখানার দূর্ঘটনার ইন্সুরেন্স করা ছিল। সে উল্টো ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে ক্ষতিপূরণ পাবে। তাড়াতাড়ি তাদের সাথে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধানে কাজে লেগে পরে। এরপর ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে আগে গাদ্দার ব্যাংকের টাকা শোধ করে এবং বলে দেয় তার ব্যাংক হিসাব এখানে চিরদিনের মতো বন্ধ করে দিতে। অপরদিকে চিরদিনের মতো ঐ অকৃতজ্ঞ আত্মীয়দের কাছ থেকে দূরে সরে যায় এবং আবারো তার ব্যাবসা ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
ভিখারি তো অবাক আজ তার অবস্থা দেখে ভিক্ষার থালা আধাবেলায় ভরে উঠেছে কিন্তু পায়ে বাঁধা ব্যান্ডেজ কিছুটা রক্তে ভিজে উঠেছে। আরো অবাক করা ব্যাপার যেখানে এক টাকা দুই টাকার নোট পড়তো সেখানে দশ টাকার নিচে আজ আর নোট নেই। কিছু একশো টাকার নোট দেখে সে বলে রক্তে ভেজা এই ব্যান্ডেজ যত্ন সহকারে তুলে রেখে দেবে কারন আজ পা হারানোতে তার উপার্জন বেড়ে গেছে বহুগুণে। এবার সে নিশ্চিন্তে কদিন বিশ্রাম নিয়ে ঘা শুকিয়ে আবার নেমে পড়ে তার ভিক্ষার থালা নিয়ে।
এবার দুজনেই মনকে বলতে থাকে তুমি বড্ড বোকা আমার আমিকে এখনো চিনলেনা।
কি বুঝলেন?
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1614971566319874048?t=bY_v8xuYaNCdhS6vwgVgDA&s=19
আমাদের বিপদ আসলে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবাই দূরে সরে যায়। যার ফলে আমরা আরো ভেঙে পরি। আমরা যদি মনকে শক্ত রেখে মনের সাথে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাই তাহলে অবশ্যই আমরা সফল হব। আসলে বিপদ আপদ আসলে মুখোশ পরা মানুষ গুলোকে চেনা যায়। যাদের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে আছে মুখোশধারী অমানুষ। ভিক্ষুক টির সেই রক্ত মাখা ব্যান্ডেজ উঠিয়ে রাখবেন কারণ এই রক্ত মাখা ব্যান্ডেজ তাকে তার নতুন উদ্যমে পথ চলার সাহস জুগিয়েছে। পুরো পোস্ট পড়ে বেশ ভালোই লাগলো।
খারাপ সময় জীবনে প্রয়োজন রয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষ চেনা যায়, তাছাড়াও ভেতরের আমিকে বুঝতে পারা যায়।
আপনার এই পোস্টটির মাধ্যমে আমি অনেক কিছুই শিখতে এবং জানতে পারলাম। এখন তো আমাদের বিপদ হলে নিজের আত্মীয়রা ও পাশে থাকে না। বিপদ আসলে তাদের আসল মুখ চেনা যায়। তাই আমিও মনে করি জীবনে খারাপ সময় খুবই জরুরী। যার কারনে অনেকের আসল মুখ চেনা যায় এবং অন্যান্য জিনিস থেকে ধারণা পাওয়া যায়। ওই বড় লোকটির এবং ভিক্ষুকের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার লিখনী পড়ার জন্য।
জি বিপদের সময় একমাত্র নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং মনোবল সবথেকে বড় হাতিয়ার।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সত্যিই আমরা নিজেরাই নিজেদের মনের সাথে চ্যালেন্স নিতে চাই না। আসলে আমাদের চ্যালেন্স নেওয়া উচিৎ। মাঝে মধ্যেই জীবনে খারাপ সময় জরুরি। মুখোশের আড়ালে মুখোশধারী মানুষ গুলোকে চেনা যায়। আপনার উপরের লাইন টি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনি চমৎকার ভাবে বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। পোস্ট ভিজিট করে ভালো লাগলো। আপনার পুরো পরিবারের জন্য শুভ কামনা রইলো 🤲
ধন্যবাদ লিমন।
জীবন চ্যালেন্জ করবেই, আর যে যত বিপদে থাকবে জীবনের গুরুত্ব সে ততই বুঝতে পারবে।
আসলে ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। এখানে বুঝার মতো অনেক কিছু আছে। সত্যি কেউ অনেক আছে আরো চায় আবার অনেকেই বাঁচার জন্য কিছু চায়।ভিখারি ব্যান্ডেজ তুলে রাখবে আরো যাতে বেশি ইনকাম হয় আর বিত্তবান লোক ব্যাংক চিরদিনের মতো বন্ধ করে দিল।সব চেয়ে বড় কথা হলো ভাইয়া দুজনের মধ্যে লোভ বিরাজমান। লোভ ভালো নয়।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ আপু পুরোটা পড়ার জন্য।
একটু ভুল বুঝেছেন, প্রথমত বিত্তবান ঐ ব্যাংক হিসাব বন্ধ করেছে কারন তারা বিপদের সময় তার পাশে থাকেনি তাই। আর রক্তমাখা ব্যান্ডেজ উঠিয়ে রাখবে কারন ঐ ভিক্ষুকের কাছে এটা মহা মূল্যবান। এটা তাকে নতুন উদ্যমে পথ চলার সাহস জুগিয়েছে, আর যতবার এটি দেখবে মনের জোর পাবে।
ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমি আমার এর বিপরীত ভাবে বুঝেছিলাম। ধন্যবাদ
আমি মনে করি আজকে আমি যতগুলো পোস্ট পড়েছি তার মধ্যে সবথেকে বেস্ট পোস্ট হলো এটি, চমৎকারভাবে জীবন নিয়ে দুটো ঘটনা আপনি বলে গেলেন আসলেই তো জীবনে অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারে আমরা তার জন্য প্রস্তুত? হয়তো জীবন যুদ্ধে আমিও একজন যোদ্ধা হয়তো একদিন আমার গল্পটাও পরিবর্তন হয়ে যাবে জীবন রং পাল্টায়।
অনেক ধন্যবাদ ভাই আমার লিখনী পড়ার জন্য। আসলে বিপদ কখনোই আমাদের পিছু ছাড়ে না। আমাদের মন সবসময়ই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে, তাই ভিতু মনকে বোঝাতে হবে। আমি যে সত্যিই পারবো এটাই মনকে দেখিয়ে দিতে হবে।
আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে আলোকপাত করেছেন অনেক ভালো লেগেছে।বিত্তবান কিংবা ভিখারি সবারই সমস্যা থাকে তবে সমস্যার ধরণ গুলো ভিন্ন মাত্রায় হয়।কেউ লাখ টাকার অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকেন আবার কেউ একশ টাকার চিন্তায় থাকেন।কিন্তু বিপদে পড়লে কেউ থেমে থাকে না সবাই যার যার মত সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করার প্রচেষ্টা করে যান।খুব সুন্দর একটি সমস্যার সমাধান নিয়ে আপনি আজকে উপস্থাপন করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার জন্য। এক এক জনের কাছে সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি আলাদা। তবে সমাধান করতে পারাটা সবথেকে বড় বিষয়।