পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়। || The world is not a happy place for everyone.

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago
পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়। কথাটার সাথে আমার মনে হয় সবাই একমত পোষণ করবেন। তবে সুখ নামক অতি পার্থিব জিনিসের পিছু আমরা প্রতিনিয়ত ছুটতে থাকি। কিছু মানুষ তো এই সুখের পেছনে ছুটতে ছুটতে নিজের জীবন পার করে ফেলে কিন্তু সুখের দেখা পায় না।
আর দেখবেন নিম্নবিত্ত মানুষেরা কিন্তু এতো বেশি সুখের আশা করে না। ওদের দুবেলা দুমুঠো খাবার খেয়ে দিন পার করে দিতে পারলেই শান্তি। এই শান্তির দেখায় পেটের তাগিদে কাক ডাকা ভোর থেকেই শুরু হয় অক্লান্ত পরিশ্রম।

এই পরিশ্রমের জীবিকা আবার বিভিন্ন রকম, কেউ পিঠে বস্তা বয়ে চলেছে, কেউবা ঢেলা গাড়ি চালাচ্ছে, কেউ কেউ মাথায় ইট বয়ে দালানের উপর বেয়ে চলেছে। কারও কারও কাজ এবং পরিশ্রম দেখলে নিজের কাছেও ভয় লেগে যায়।
উপর ওয়ালা বলেছেন তোমরা সৎ পথে উপার্জন করো এবং জীবন পরিচালনা করো। এই মেহনতি মানুষের ঘামে আর রক্তে উপার্জন সৃষ্টিকর্তার কাছে খুব প্রিয় এবং তাদের জন্য রয়েছে পরকালে ভীষণ সুখের খবর। তাদের সহজ হিসাবের মাধ্যমে বেহেশত দান করা হবে, যা হবে তাদের স্থায়ী ঠিকানা।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এতো কষ্ট আর দুর্দশা চারিদিকে দেখার পরও কিছু কিছু দৃশ্য যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে তখন নিজের আবেগ অনুভূতি ধরে রাখা যায় না। বার্ধক্য আমাদের অবধারিত, তবে সবাই এই সময়টাতে একটু বিশ্রাম চায়। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কতজন মানুষ তা করতে পারছে? যখন দেখবেন পঞ্চাশোর্ধ একজন বয়স্ক মহিলা তার হাতুড়ির আঘাতে অনবরত ইট ভেঙে চলছে তখন আপনার অনুভূতি কি? হয়তো অনেকেই ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক ভাবে নেবেন, কিন্তু ব্যাপারটা একটু গভীর ভাবে ভেবে দেখুন। এই সময়টাতে কিন্তু শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা এবং ক্লান্তি ঘিরে ধরে মানুষকে কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য অনবরত শক্ত ইটকে টুকরো টুকরো করে চলা। তবে এই কথাটিই সত্য পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়। বাস্তবতা ঘাটতে গেলে দেখা যাবে হয়তো স্বামী মারা গেছেন আর সন্তানরা কুসন্তান হয়ে মুখের খাবার দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কিংবা আরো বড় কোন বেদনাদায়ক ঘটনা রয়েছে এই ইট ভেঙে চলা বয়স্ক মানুষটির জীবনে।
তবে যাই ঘটুক অন্তত তিনি ভিক্ষা না করে এই সময়ে এসেও নিজের পেটের ভাত উপার্জন করতে পারছেন এটা সৃষ্টিকর্তার রহমত।

আপনি হয়তো দেখে থাকবেন মাঝ বয়সী যুবক, কিংবা কিছুটা দাড়িতে পাক ধরা লোকটি ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পথে পথে ঘুরে সহজ উপায়ে টাকা উপার্জন করে চলেছে। এগুলো অনৈতিক কাজ বলে আমার কাছে মনে হয়। এর থেকে এই ইট ভেঙে চলা মা পরিশ্রম করে নিজের খাবার উপার্জন করে চলেছেন, নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা উত্তম প্রতিদান দেবেন। বাংলাদেশে এই দৃশ্য খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গেছে এবং দেখার কেউ নেই। যাদের দেখার কথা তারা আজ নিজের ব্যাংক ব্যালেন্স নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।কিন্তু মনে রাখুন ঐ ঘুষ খোর, চোর ছেচ্চর আর লুটপাট করা মানুষগুলোর মৃত্যু হবে অস্বাভাবিক এবং ভয়ংকর।

বেঁচে থাকুক মেহনতি প্রবীন মা 🙏


Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

দেখবেন নিম্নবিত্ত মানুষেরা কিন্তু এতো বেশি সুখের আশা করে না।

হ্যাঁ ভাই তারা শুধু তিনবেলা পেটপুরে ভাত খাওয়ার চিন্তা করে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

কথাটিই সত্য পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়।

প্রথমেই পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। বয়স্ক মাটি ভিক্ষা না করে নিজের জীবিকা নিজে নির্বাহ করছেন এটাই ভালো কাজ। অনেক সুস্থ লোক ও বর্তমান সময়ে ভিক্ষা করছে। তবে আমি মনে করি বয়স্ক মাটির যদিও একটি বয়স্ক ভাতা থাকতো তাহলে এই কষ্টের কাজ করা লাগতো না। অনেক অনেক দোয়া ও শুভ কামনা রইল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে বাস্তব জীবনের একটি পোস্ট তুলে ধরার জন্য।

 5 months ago 

আপনি ঠিক বলছেন ভাই পৃথিবীটা সবার জন্য সুখের জায়গা নয়।অনেক মানুষ আছে যারা টাকা-পয়সা ঘর বাড়ির উপরে সুখ খুঁজে পায় না। আবারো কেউ আছে রিক্সা চালিয়ে দিন পাড় করে সুখে শান্তিতে আছে। তবে এই বয়স্ক মা ভিক্ষা না করে কর্ম করে দিন পার করছেন। পৃথিবীর সমস্ত বয়স্ক বাবা-মার জন্য মন প্রান থেকে দোয়া রইল। আজকে আপনি একটি ভিন্ন ধর্মী পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকবেন ভাই।

 5 months ago 

একদমই ঠিক বলেছেন। পৃথিবী সবার জন্য সুখের জায়গা নয়। এখন এই পৃথিবীতে যারা কষ্ট করে আয় করে নিজেদের জীবন পরিচালনা করছে তারা একসময় সফলতা অর্জন করবে। যাদের অনেক টাকা পয়সার রয়েছে তারা আরো টাকা বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। যারা গরিব রয়েছে তারা গরিবই থেকে যাচ্ছে। তবে এই বৃদ্ধ মহিলাটি মানুষের কাছে হাত না পেতে নিজের পরিশ্রম দিয়ে জীবন পরিচালনা করছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে এরকম অনেক মানুষই রয়েছে যারা অনেক কষ্ট করে তাদের জীবন পরিচালনা করে যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।।

 5 months ago 

ভাই আপনি আজকের ব্লগে যে ছবিটি শেয়ার করছেন এর পিছনে অনেক বড় ঘটনা আছে ৷ যা আমরা কেউ ভেবে দেখি না ৷
যা হোক সন্তান হিসেবে আমাদের সবার এসব দৃশ্য দেখে বোঝা উচিত বলে মনে করি ৷

আসলেই মানুষ এই সুখের জন্য প্রতিনিয়ত ছুটছে ৷ কিন্তু তার থেকেও এই মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম শুধু তিন বেলা খেয়ে দেয়ে বাচার ৷ অথচ সেই মায়ের ছেলে হয়তো সুখে আছে ৷ সব কপাল

যা হোক আপনি দারুন একটি বিষয়ে তুলে ধরেছেন ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই

 5 months ago 

আপনি খুব মূল্যবান একটি পোস্ট করেছেন। পৃথিবীতে সবার জন্য সুখের জায়গা নয় এই কথার সাথে আমি একমত। অনেক মানুষ আছে তিন বেলা খেয়ে পড়ে বাসার চেষ্টা করে। আর অনেক খারাপ লোক আছে তার টাকা পয়সা উপার্জন করার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। আর এরা মানুষদেরকে ঠকিয়ে নিজেদের টাকার ব্যাংক পুরা করে। তবে অনেকে দুই মুঠো পান্তা ভাত খেয়ে বেঁচে আছে। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে করার জন্য।

 5 months ago 

কিন্তু মনে রাখুন ঐ ঘুষ খোর, চোর ছেচ্চর আর লুটপাট করা মানুষগুলোর মৃত্যু হবে অস্বাভাবিক এবং ভয়ংকর।

একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, তাদের মৃত্যু ভয়ংকর ভাবেই হয়ে থাকে। তবুও তাদেরকে দেখে কারো ভয় হয় না। বয়স্ক মানুষ যখন কষ্টের কাজ করে, তখন আমার কাছে খুব খারাপ লাগে। এসব দেখলে মনটা সত্যিই খারাপ হয়ে যায়। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বৃদ্ধ বয়সেও তাদেরকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে খেতে হয়। যারা মা বাবার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় না, সেই সমস্ত কুলাঙ্গার সন্তানদের জন্য পরকালে ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে। তবে ভিক্ষা না করে কাজ করে খাওয়াটা অবশ্যই সম্মানের। যাইহোক এই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59588.19
ETH 2572.25
USDT 1.00
SBD 2.50