লাকড়ির চুলায় হাঁস দিয়ে পিকনিক। || Picnic with ducks.

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago (edited)
লাকড়ির চুলায় হাঁস দিয়ে পিকনিক

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন।
আজকে একদমই ভিন্ন ধর্মী পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। গত শুক্রবার আমার কলিগরা একটি পিকনিকের আয়োজন করেছিল। মূলত আজ সেটা নিয়েই লিখছি।

অনেকদিন থেকে হাঁস খাওয়া হয় না, কারণ হিসেবে বলা যায় আমার ছেলের অসুস্থতার জন্য। আসলে বাসায় হাঁস আনা বারণ ছিল। যাইহোক যেহেতু অনেক দিন থেকে হাঁস খাওয়া হয় না, আমার খুব ইচ্ছে ছিল হাঁস খাওয়ার। হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবারে আমার কলিগ আমাকে জানায় শুক্রবার হাঁস দিয়ে ছোটখাটো একটা পিকনিকের আয়োজন করা হবে। সত্যি বলতে আমি ভীষণ খুশি ছিলাম কারণ অনেকদিন থেকে হাঁস খাওয়া হয়নি। আর সব থেকে বড় বিষয় আমরা লাকড়ির চুলায় রান্না করে খাবো।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমার কলিগ একটি গ্রামের হাট থেকে দুটো হাঁস কিনে নিয়ে আসে। পরদিন সকালবেলা সে হাঁসগুলো জবাই করে এবং রান্নার জন্য প্রস্তুত করে রাখে।
শুক্রবার দিনটা আমাদের কাজের কিছুটা চাপ কম থাকে। তাই শুক্রবারেই আমরা এই আয়োজনটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা ১০ জন কলিগ এই পিকনিকে অংশগ্রহণ করবো বলে সিদ্ধান্ত হয়। সন্ধ্যার পর পরই সবাই একত্র হতে থাকে। আমাদের মধ্যে মোটামুটি সবাই রান্নাবান্না করতে পারে, যদিও প্রথমে আমাকে বলা হয়েছিল রান্নার কাজে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু তারপরও আমার কিছু কলিগ আমাকে কষ্ট করতে দেয়নি।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

আমাদের পিকনিকের শুরুতেই সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে আনা হয় এবং রান্নার জন্য প্রস্তুত করা হয়। ছবিতে নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন আমার এক কলিগ লাকড়ি চুলায় আগুন জ্বালানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। সত্যি বলতে এ ধরনের পরিবেশে আমি অনেক বছর পরে আসলাম। আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগছিল তার এই লাকড়ির চুলায় আগুন ধরানোটা দেখে।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

ইতিমধ্যে আমার আরেকজন কলিগ হাঁসের মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ধুয়ে আনলেন।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

আমার কলিগ তার একজন নিকট আত্মীয় কে দিয়ে রসুন বাটা, জিরা বাটা এবং আদাবাটা ব্যবস্থা করে নিলেন। এরপর আমরা পেঁয়াজ এবং কাঁচা মরিচ কেটে নিলাম।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এবার আমাদের মধ্যে সবথেকে ভালো যে রান্না করতে পারে তাকে দিয়ে রান্নার কাজ শুরু করানো হলো। তিনি প্রথমেই মাংসের সাথে জিরা বাটা রসুন বাটা আদাবাটা পেঁয়াজ কুচি কাঁচা মরিচ কুচি হলুদ গুঁড়া মরিচ গুঁড়া ইত্যাদি সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিলেন। এরপর সামান্য পানি দিয়ে চুলায় চাপিয়ে দিলেন।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এরপর আমার আগুন জালানোর এক্সপার্ট কলিগ লাকরির চুলায় জাল দিতে শুরু করলেন। তিনি বেশ ভালো আগুন জ্বালাতে পারেন 😄

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এরপর ভাতের জন্য চাল ধুয়ে চুলায় চাপিয়ে দেওয়া হলো ।এবার আমার কলিগ বেশ দক্ষতার সাথে চুলায় আগুন দিতে শুরু করলেন।

সত্যি বলতে আমার কাজ ছিল শুধু ছবি তোলা এবং পুরো পিকনিকটা উপভোগ করা 😃

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এবার শুধুই অপেক্ষা কখন সেই সুস্বাদু খাবার রান্না হবে। হাঁসের মাংস আহা 😋

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

প্রায় ৪০ মিনিট ধরে লাকড়ির চূড়ায় রান্না করার পর আমাদের হাঁসের মাংসের সুস্বাদু তরকারি তৈরি হয়ে গেছে। এবার এক ফাঁকে আমরা তিনজন কলিগ এক রাউন্ড মাংস খেয়ে টেস্ট করে নিলাম 🤫
আহ্ কি সুস্বাদু খাবার 😋

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

অবশেষে রান্না শেষ করে আমরা খেতে বসলাম। সত্যি বলতে মাংসটা বেশ ঝাল ঝাল হয়েছিল। কিন্তু খেতে এতটাই সুস্বাদু ছিল যেটা বলে বোঝাতে পারবো না।

সত্যি বলতে আমাদের আয়োজন কম থাকলেও আমরা খাবারটা ভীষণ তৃপ্তি সহকারে একদম কব্জি ডুবিয়ে খেয়েছিলাম। আর লাকড়ির চুলার রান্না সত্যিই এক কথায় অসাধারণ আমিতো মোটামুটি দু প্লেট ভাত আর বেশ কিছু হাঁসের মাংস পেটে চালান করে দিলাম 😃

সবমিলে এই আলোছায়ার মাঝে আমাদের হঠাৎ এই হাঁস দিয়ে পিকনিকের আয়োজন এক কথায় ভীষণ উপভোগ করলাম। সত্যি বলতে সবার হাসিখুশি মুখটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।
আপনাদের কাছে আমাদের এই হঠাৎ পিকনিকের আয়োজনটা কেমন লাগলো আশা করি জানাবেন।
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত বিদায় নিলাম।



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1ejFJCaMLR3zrx1iztXmdz4AFKcaXPfpHbadyDS7yzWTRRjc8kkRjGZNGVw27n8Q3Mi19jpMVHLYFyQ4NZ.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 7 months ago 

শীতের দিনে হাঁসের মাংস খেতে খুব সুস্বাদু হয় আর যদি হয় তা পিকনিক তাহলে তো ব্যাপারটা আরো জমে যায়।খুব সুন্দর অনুভুতির কথা আজ আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছে। অসাধারণ সুন্দর হয়েছে সব মিলিয়ে। বন্ধুরা আপনাকে কষ্ট করতে দেয়নি এবং আপনার কাজেই ছিলো ফটোগ্রাফি করা ও আনন্দ উপভোগ করা যা জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো প্রকাশ করার জন্য।

 7 months ago 

প্রথমেই দোয়া করি আপনার ছেলের জন্য যেন দ্রুত সুস্থতা দান করেন আল্লাহ। এভাবে হাসির মাংস দিয়ে পিকনিক করার অনুভূতিটা অন্যরকম। এইতো দুইদিন আগেও আমরা হাঁসের মাংস খেয়েছি অন্যরকম একটা টেস্ট লাগে হাসের-মাংসে। আর শীতের সময় হাঁসের মাংস খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

লাকড়ির চুলায় হাঁস দিয়ে পিকনিক দেখে তো ভীষণ ভালো লাগলো। লাকড়ির চুলার রান্না তো খেতে ভীষণ সুস্বাদু লাগে। আপনাদের কলিক দের সাথে বেশ সুন্দর মহূর্ত উপভোগ করেছেন। সবার হাসিমাখা মুখ দেখে ভালো লাগলো। এধরনের আয়োজন গুলো সব সময়ই আমার কাছে ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি করা দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনি ফটোগ্রাফি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রান্না খেতে সুস্বাদু হয়েছে এবং সবাই মিলে জমিয়ে খেয়েছেন এর চেয়ে কি আর আনন্দ হতে পারে। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পরে। আপনাদের সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।

 7 months ago 

পিকনিক মানেই তো আনন্দ আর মজা। আপনার ছেলের অসুস্থতার কারণে বাসায় হাঁসের মাংস আনা হয় না তবে অনেকদিন পরে অফিস কলিগদের সাথে হাঁসের মাংস দিয়ে পিকনিক করেছেন। যাইহোক আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

আপনার ছেলে অসুস্থ বলে বাসায় হাঁস আনা নিষেধ ছিল কিন্তু ভাইয়া আপনার ছেলের কি হয়েছে? আপনার ছেলের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। যাই হোক হাঁসের মাংস খেতে ইচ্ছে করছে আর তখনই এমন অফার পেয়ে নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে। আপনার অফিসের কলিগরা মিলে দারুন একটা পিকনিকের আয়োজন করেছেন। শীতের রাতে হাঁসের মাংস দিয়ে এভাবে পিকনিক করার মজাই আলাদা। এরপর রান্না যদি হয় লাকড়ি চুলায় তাহলে তো আরও বেশি মজা। ভাইয়া অনেক সময় অল্প হলেও তার মধ্যে অনেক তৃপ্তি থাকে। ধন্যবাদ এত সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

 7 months ago 

এই ধরনের মুহূর্তগুলো গ্রাম অঞ্চল গুলোতে খুবই বেশি পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। রাতের বেলা আমরাও অনেক পিকনিক করেছি ঠিক এই ভাবেই। এটা সত্য কথা শীতের রাতে যদি হাঁসের মাংস দিয়ে পিকনিক করা যায় সেটা খেতে খুবই ভালো লাগে।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 7 months ago 

শীতকাল এলে যখন বন্ধুরা সবাই মিলে বাড়িতে ছিলাম খুব করে এমন আয়োজন করা হতো।
আপনাদের আয়োজন দেখে সত্যি খুব লোভ হচ্ছে।
এরকমভাবে সবাই মিলে একত্রে ভোজনের মজাটাই অন্যরকম।
হাঁসের মাংস আমারও খুব প্রিয় মাঝে মাঝে খাওয়া হয়।
আপনার ছেলের জন্য দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি সৃষ্টিকর্তা যেন খুব দ্রুত সুস্থ করে দেন।

 7 months ago (edited)

ইস্ ভাইয়া কথাটা একটু জানালে কি হতো? আমিও না হয় এমন পিকনিকে থাকতাম। কতদিন যে লাড়কির চুলায় খাওয়া হয় না। আপনারা কলিগরা মিলে তো দেখছি দারুন আনন্দের মধ্য দিয়ে সময় কাটিয়েছেন। অবশ্যই লাড়কির চুলার রান্না বেশ মজার ছিল তাই না। তবুও ভালো লাগলো আপনাদের সবাই কে এক সাথে দেখে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57346.65
ETH 3107.45
USDT 1.00
SBD 2.40