পুরুষ নামক টাকার মেশিন।|| Man is money making machine.
পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার সবথেকে সুন্দর সৃষ্টির মধ্যে পুরুষ মানুষ একটি। একটি ছেলে যখন জন্মলাভ করে তখনই বাবা-মা বলতে থাকে, আমার ছেলে ডাক্তার কিংবা ইন্জিনিয়ার হবে এবং আত্মীয় স্বজন কানাঘুষা করতে থাকে ব্যারিষ্টার বানালে কেমন হয়। আর পরিবারটি যদি নিতান্তই গরীব হয় তাহলে বাবা-মায়ের মুখে হাসি আসে, অন্তত রিকশা চালিয়ে হলেও তাদেরকে খাওয়াতে পারবে। আসলে পুরুষ মানুষ দুনিয়াতে জন্মলাভ করলেই মনে হয় যেন পৃথিবীটা খুশি হয়ে যায়, এ যেন একটা টাকার মেশিন জন্মলাভ করেছে। একটু চোখ আর কান খুলে গেলেই পয়সা উপার্জন শুরু হয়ে যাবে, ব্যাস পুরো পরিবার নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করতে পারবে।
ছেলেটি যদি মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত হয় তাহলে বেশ কিছুটা সময় পাবে কিন্তু যদি দুর্ভাগ্যক্রমে নিম্নবিত্ত হয় তাহলে নামটা বলতে পারলেই তার জীবন যুদ্ধ শুরু। মানে টাকার মেশিনের টাকা উপার্জন তখন থেকেই করতে হবে। এমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটি ছেলে শিশুকে পরিবার থেকেই বলা হয় "খাইতে হলে কামাই করে খা"। কি অবাক লাগছে আমার কথাগুলো শুনে? তাহলে হাজার হাজার শিশু শ্রম দেয়া শিশুদের জিঙ্গেস করুন তাদের অবস্থা কি? এদের কপালে শিক্ষা নামক বস্তুটা জোটে না।
এবার আসি মধ্যবিত্ত পরিবারের দিকে, তাদের অবস্থা নিম্নবিত্ত পরিবারের থেকে একটু ভালো। অন্তত টেনেটুনে পড়াশুনা কপালে জোটে। এখানে সেই ছেলেটি নিজের নাস্তার পয়সা জমিয়ে বোনকে চকলেট কিনে দেয়, আবার কেউ হয়তো বাবার চশমাটা ভেঙ্গেছে তাই কমদামী হলেও একটা উপহার দেয়। তবে তার হয়তো একটা দামী ঘড়ি কিংবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাবার স্বাদটা অধরাই রয়ে গেছে। কলেজ জীবনে পা দিতে না দিতেই হঠাৎ হঠাৎ পরিবার থেকে এটা ওটা নিয়ে কথা শোনানো শুরু হয়ে যায়, আর পারছিনা বাপু এবার নিজের খরচ নিজে চালিয়ে লেখাপড়া চালাও। কি আর করা টিউশনি নামক মাথা বিক্রি করা চাকরি নিয়ে আর মাথায় বোঝা নিয়ে শুরু হয় নতুন যুদ্ধ।
ছোট ভাইটা মেধাবী তাই তাকে বিএসসি তে ভর্তি করাতে গিয়ে নিজের পড়াশোনা এবার বন্ধ করতেই হলো। শুরু হলো চাকরি নামক নতুন যুদ্ধ, যেখানে শুধুমাত্র তাকে চাকরের মতো আচরণ করা হয়। এখানে একজন গাধার পিঠে যেমন তার সহ্য ক্ষমতার সর্বোচ্চ ভার দেয়া হয়। তেমনি এই পুরুষটিকেও তার সহ্য ক্ষমতার অধিক চাপ সহ্য করতে হয়, একমাত্র তার পরিবারকে চালানোর জন্য।
এবার আসি সেই নিম্নবিত্ত ছেলেটির কথায়, সে বড় হয়েছে রাস্তায় ইট ভেঙ্গে কিংবা কারখানায় হাতুড়ি পিটিয়ে। আজ সে রিকশা চালাতে সক্ষম তার হাত পা এখন শক্ত হয়েছে। পরিবারে বাবা আজ অসুস্থ আর মা অন্যের বাসায় কাজ করে। জোরে পা চালিয়ে দুটো পয়সা বেশি কামাতেই হবে। গতকাল এক মেম সাহেব দশ টাকা বেশি চেয়েছিলো বিধায় গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিয়েছে। মুহূর্তে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরেছে, কিচ্ছু বলতে পারলো না সবে মাত্র বড় হয়ে ওঠা সেই পুরুষ।
মধ্যবিত্ত ছেলেটি আজ পরিবারের চাপে বিয়ে নামক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সে জানে এটা তার জন্য অনেক বেশি চ্যালেন্জিং, তবুও সে আরো একজন মানুষের দায়িত্ব নিয়েছে। সে জানে তাকে এখন থেকে আরো একটু বেশি কষ্ট করতে হবে। এরপর যখন দু একটা সন্তান তার পরিবারে আসে তখন সেই পুরুষটির নিজের বলতে আর কিছুই থাকে না। তখন শুধুমাত্র কিভাবে সেই পরিবারের মানুষকে দুবেলা দুমুঠো খাবার দেবে সেই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে সারাক্ষণ দিকবিদিক ছুটতে থাকে। একজোড়া জুতা হয়তো ক্ষয় হয়ে গেছে কিংবা গায়ের জামাটা ছিঁড়ে গেছে সেদিকে খেয়াল করার মতো সময় তার নেই, শুধুমাত্র সেই টাকার মেশিন হয়ে টাকা উপার্জন করতেই হয়। তবুও দিনরাত শুধু মাত্র শুনতে হয় নেই আর নেই, পরিবার থেকে বারবার তিরষ্কার শুনতে হয় বিভিন্নভাবে। দুমড়ে মুচড়ে যায় ভেতরটা শুধুমাত্র দিতে না পারার কষ্টে।
গরিব পুরুষটি কিন্তু তার সংসার বড় করেছে, সে এখন দিন কিংবা ঝড়ের রাত কোনদিকে তাকানোর সময় নেই। তার মাথায় চিন্তা খালি একটাই চাল কিনে নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে, নাহলে অভুক্ত থাকবে বেশ কয়েকটি পেট।
মধ্যবিত্ত সেই পুরুষটির আজ বয়স হয়েছে জীবনের ভারে আজ সে ক্লান্ত, সন্তানেরা বড় হয়েছে। তার ঠিকানা একবার এই সন্তানের বাসায় নয়তো অন্য সন্তানের বাসায়, তাকে নিয়ে কেমন যেন একটা খেলা চলছে। তবে সেখানে তাদের অনেক কিছু দিতে না পারার তিরষ্কার শুনতে হয়। মাঝে মাঝেই চোখের কোনে অশ্রু জমে আর নিজেকে ব্যার্থ একটা মানুষ মনে হতে থাকে।একটা সময় একরাশ ঘ্লানি নিয়ে সেই পুরুষ নামক টাকার মেশিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
কতটুকু সম্মান করি আমরা একজন পুরুষ নামক মানুষকে?
যার ছিলো না কোন আবেগ আর অনুভূতি |
---|
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Heres a free vote on behalf of @se-witness.
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1685324867338674176?t=pHhswIypeazWY0-CEpmJGw&s=19
প্রথমত আপনার টাইটেল দেখেই বুকে ধুপ করে উঠলো।
তারপর যখন পড়ছিলাম প্রথম দিকের লাইনেই আশ্চর্য হয়ে গেলাম, আসলেই তো দুনিয়া কিন্তু ছেলেদেরকে এই চোখেই দেখে, এমনি এমনি কিন্তু ছেলেমানুষ হলে মানুষ খুশি হয় না, ভবিষ্যতে এই ছেলেটা টাকার মেশিন হবে ভেবেই বোধ হয় মেয়ে হলে অনেকে খুশি হয় না, পুরুষ এক জীবনত এটিএম মেশিন।
ধন্যবাদ ভাই, আমার পোস্টটির মূল বিষয়বস্তু বোঝার জন্য। সত্যিই আমরা জীবন্ত টাকার মেশিন।
আমাদের সমাজের একদম বাস্তব দর্পণ তুলে ধরেছেন ভাই। সত্যি কথা বলতে হঠাৎ পোস্টটা যখন পড়ছিলাম তখন নিজেকে কিছুটা রিলেট করতে পারছিলাম এই ব্যাপার গুলোর সাথে। আমাদের সমাজে প্রথমত পুরুষ মানুষ টাকার মেশিন ছাড়া আর কিছুই না, এটা আপনি সত্যি কথা বলেছেন। আর মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত ঘরে যদি কোন পুরুষ মানুষ জন্মগ্রহণ করে তার জীবন চলে যায় খাটতে খাটতে। তবে এই দুই শ্রেণীর মানুষের কষ্ট কখনোই উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা বুঝতে পারে না। বেশ ভালো লাগার মত একটা পোস্ট ছিল।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, আমার পোস্টটি হৃদয় দিয়ে অনুভব করার জন্য। ভেবেছিলাম হয়তো সবাই পোস্টটি এড়িয়ে যাবে। অনেক ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।
বেকারত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে।আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা একটা প্রধান কারন।আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপশি কারিগরি শিক্ষার উন্নতি করার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান সমাধান সম্ভব।সেই সাথে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি জোর দেয়া ও তাদের চাকুরীর পরিবেশ সুন্দর করার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
তবে শুধুমাত্র বেকারত্ব নয় এখানে আরো গভীর কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
খুব সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ঠিকই বলেছেন আপনি পুরুষ মানুষকে ঢাকার মেশিন ভাবা হয়। তার মধ্যে যদি মধ্যবিত্ত হলে তাদের কষ্টের কোন শেষ থাকেনা। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ার জন্য।
পুরুষ মানুষের জীবন অনেক কষ্ট আর দায়িত্বের বেড়াজালে আবদ্ধ।
আপু অনেক ক্ষন হাসলাম। যদিও মনটা বিষণ খারাপ। কিন্তু পুরুষ মানুষ তো ঢাকার মেশিন না টাকার মেশিন হবে।
বাহ্ বেশ চকৎকার উপস্থাপনা ছিল। পুরুষ মানুষগুলো কে নিয়ে কখনও এমন করে ভেবে দেখা হয় নি। তবে আজকে আপনি যে ভাবে ধাপে ধাপে পুরুষ মানুষ কে নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করলেন তখনই ভাবছিলাম যে আহ্ কত কষ্টেরই না তাদের জীবন। আর আপনার পোস্টটি পড়তে পড়তে আমার বার বার বাবার কথা মনে হচ্ছিলো। শুধুমাত্র পুরুষ জাতিই বুঝে তাদের কষ্ট। ধন্যবাদ এত সুন্দর করে বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমার পোস্টের মাধ্যমে আপনি আপনার বাবার কথা স্মরণ করেছেন এটাই আমার স্বার্থকতা। আসলে অনেকেই এই কষ্টগুলো বুঝতে চায় না।
আসলে পুরুষ নামক সেই মানুষগুলোকে সবাই টাকার মেশিন মনে করে। কিন্তু তারা কিভাবে রোজগার করছে কিভাবে টাকা উপার্জন করছে এটা কেউই চিন্তা করে না। একটা পরিবারে ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সবাই খুশি হয়ে অনেক কিছুই বলে। আপনার এই পোস্ট পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম এবং বুঝতে পেরেছি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন দেখে ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টের মর্মার্থ বোঝার জন্য। চেষ্টা করেছি গুছিয়ে উপস্থাপন করার।