"না" বলতে শিখুন। || Learn to say No 🙅‍♂️

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago
"না" বলতে শিখুন

Beige Watercolor Project Presentation_20240817_234759_0000.jpg

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

না বলতে শিখুন।
আমরা আসলে না শব্দটা বলতে পারি না, বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতিতে। আর এই অপারগতা থেকে দিন দিন এটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় এবং একটা সময় হ্যা এবং জি এগুলো না চাইলেও মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে। এই অভ্যাস কিংবা অপারগতা দিন দিন বিভিন্ন অন্যায়, অপরাধ এবং জঘন্যতম কাজগুলোকে সমর্থন করে আসছে। আমি জানিনা আপনি আমার কথাগুলো কিভাবে মূল্যায়ন করবেন, তবে কিছুটা গভীরে আলোচনা করলে হয়তো বুঝতে পারবেন।

সকালে অফিসে ঢুকেই বসের মুখোমুখি হলেন। তিনি বললেন একটু আগে আসতে পারেন না অফিসে, অথচ আপনি একদমই সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়েছেন। কি করবেন এই পরিস্থিতিতে নিশ্চয়ই জি স্যার বলে কাজে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করবেন। অথচ আপনি যদি তাকে বলতেন না স্যার আমি সঠিক সময়ে কাজে এসেছি এবং ইনশাআল্লাহ সঠিক সময়ে শেষ করবো। তিনি হয়তো এই কথাটি দ্বিতীয় দিন বলার আগে অন্ততপক্ষে একবার ভাবতেন। অফিসে প্রচুর কাজের চাপ আর সেই চাপ কমবে বলে মনে হচ্ছে না। মাত্র চিন্তা করলেন খেতে যাবেন কারন অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে এদিকে হঠাৎ করেই বস একগাদা কাজ দিয়ে বললেন কিছুক্ষণের মধ্যে রিপোর্ট বানাতে। এভাবে হয়তো আপনি একদিন দুদিন করতে পারেন কিন্তু যদি ব্যাপারটা প্রতিদিন ঘটে তাহলে আপনি তাকে না বলুন এবং বুঝিয়ে বলুন সঠিক সময়ে খাবার খাওয়াটা আপনার জন্য কতটা জরুরি।

অফিসে কিছু মানুষ থাকবে যারা প্রতিনিয়ত আপনাকে বিভিন্নভাবে অপমান অপদস্থ করতে চাইবে। আপনি সরাসরি তাদের না বলুন, যাতে আপনাকে নিয়ে কখনো কোন অযাচিত কটুক্তি করতে না পারে। কারন আপনাকে অকারণে অপমান অপদস্থ করার অধিকার তাকে দেয়া হয়নি। অফিসে কাজের চাপ থাকবেই এবং আপনি নিজেও বোঝেন কখন প্রতিষ্ঠানের আপনাকে দরকার। এখন যদি পরিস্থিতি এমন হয় প্রতিদিন আপনাকে ফাও খাটানোর ধান্দা করা হয়, তাহলে না বলুন। আসলে এধরনের প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র আপনাকে খাটিয়ে মারবে বিনিময়ে অতিরিক্ত উপার্জনের ব্যাবস্থা করে দেবে না। চেষ্টা করুন সঠিক সময়ে কাজ শেষ করার এবং অতিরিক্ত সময় অফিসে ব্যায় না করার।

আপনি একজন নারী। দেখবেন আপনি মোটামুটি ছিমছাম চেহারার মানুষ হলেও কিছু লোক আপনার বেশ প্রশংসা করতে থাকবে সব ক্ষেত্রে। দেখবেন ধীরে ধীরে কাছাকাছি ঘেঁষতে চাইবে, এটা ওটা উপহার দেবে। এধরনের মুখোশধারী নির্লজ্জ কুকুর গুলোর লালসা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। সরাসরি না বলে দেন যাতে আপনাকে কোনমতেই বিরক্ত না করে। দেখবেন সুযোগ দিলেই নিজের লালসার আভাস দেবে। সরাসরি না বলুন যারা আপনার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকাবে, সেটা হোক না অফিসের বস, বন্ধু কিংবা আত্মীয়-স্বজন। একটা না শব্দ হয়তো আপনার ইজ্জত সম্মান বাঁচিয়ে রাখবে।

সন্তানের অবাঞ্চিত বায়না না বলুন। তাকে বোঝান সে যেটা আবদার করছে সেটা আপনার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কখনো ধার দেনা করে সন্তানের জন্য অতি দুর্লভ জিনিস কেনার দরকার নেই। কারন একবার যদি সে আপনার সাধ্যের পরিসীমা বুঝে যায় দ্বিতীয়বার সে এমন কিছু বায়না ধরবে যা হয়তো আপনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। কিংবা সেটা সরাসরি বিপদ নিয়ে আসবে। সন্তানকে অভাব বোধ শেখান, বোঝান পৃথিবীতে সবকিছু কষ্ট করে উপার্জন করতে হয়। তাকেও বিভিন্ন প্রেক্ষিতে না শব্দের ব্যাবহার শেখান।

দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং খারাপ কাজকে না বলুন এবং শক্তভাবে এর প্রয়োগ করুন দেখবেন সাময়িক আপনি কিছুটা বিপদে পরেছেন মনে হলেও, আপনার ভবিষ্যতের জন্য এটা ভালো হবে।

একটা না শব্দ বাঁচাতে পারে আপনার সম্মান, আপনার পরিবার এমনকি সমাজকে। তাই না বলতে শিখুন। 🙅‍♂️



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Sort:  
 2 months ago 

আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণভাবেই একমত। কিছু কিছু সময় রয়েছে যেগুলোতে এই না শব্দটা ব্যবহার করতে হবে অনেক বেশিরভাগ করে। কারণ এটি আমাদের অনেক বেশি এবং অনেক বড় উপকার করে। আপনি অনেক কথা তুলে ধরেছেন এই পোষ্টের মধ্যে যেগুলো একেবারে ঠিক। ইজ্জত সম্মান বাঁচানোর জন্য কিন্তু এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এত গুরুত্বপূর্ণ একটা টপিক নিয়ে আজক আলোচনা করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।

 2 months ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ার জন্য।
সেই সাথে আমার পোস্ট আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে জেনে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

অনেক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আপনি পোস্টে লিখেছেন ভাই। বেশ ভালো লাগলো বিভিন্ন বিষয়ে না বলার প্রবণতা তুলে ধরেছেন দেখে। আসলে আমাদের এই সমস্ত বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া মোটেও উচিত নয়। কারণ এখানে ই রয়েছে বেশ কিছু ভালো-মন্দ দিক যাতে নিজেদের জন্য অনেক সুবিধা সৃষ্টি হবে বা ভালো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে বাচ্চাদের অপ্রয়োজনে জিনিসে না বললে পরে দেখা যায় অনেক সময় তারাও বুঝতে শেখে। আর আপনি, তারা নাচাইতে যদি দিয়ে বসেন তারা কখনোই বুঝবে না আপনার অর্থের মূল্য। যাইহোক আপনার লেখা পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমার।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
আমাদের না বলা শিখতে হবে, নাহলে বিপদে পরার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 2 months ago 

আজকে খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দিলেন আপনি। আপনার পোস্ট গুলো খুবই ভালো লাগে আমার কাছে। অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারি। আমাদেরকে "না" বলতে শিখতে হবে। না বলতে পারলে আমরা অপমান অপদস্থ থেকে মুক্তি পাব। অফিসে কাজের পেসার ও ইজ্জত সম্মান একটা না শব্দ বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম। দারুণ একটি পোস্ট আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 months ago 

যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন সেটা আমাদের দৈনিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা টপিক। সঠিক ধারাবাহিকতায় জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু কিছু ক্ষেত্রে না বলা শিখতে হবে তাহলে জীবনের পরিবর্তন আসতে পারে। ছোট ছোট পরিবর্তন থেকেই জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করা যায়।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য। জীবনে পরিবর্তন আনতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে না বলা জরুরি।

 2 months ago 

একটা না শব্দ বাঁচাতে পারে আপনার সম্মান, আপনার পরিবার এমনকি সমাজকে। তাই না বলতে শিখুন।

গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। হয়তো আমরা কেউ এভাবে ভেবে দেখিনি। আপনার এধরনের পোস্ট গুলো পড়ে প্রতিনিয়ত শিখতেছি। একদমই যুক্তিসঙ্গত কথা বলেছেন। আমাদের সবাইকে না" বলতে শিখতে হবে। এতে করে আমাদের সবার উপকার হবে। উপরের কথা গুলো একদমই ঠিক। আপনার এধরনের পোস্ট সব সময়ই ভালো লাগে। শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

ধন্যবাদ লিমন আমার পোস্ট পড়ে যথোপযুক্ত মন্তব্য করার জন্য।
আমাদের না বলা শিখতে হবে, নাহলে সুবিধাবাদী লোকজন সুযোগ নেবে বেশি।

 2 months ago 

নানা ক্ষেত্রে না বলাটা ভীষণ জরুরী ভাইয়া যা আপনার নানা উদাহরণ থেকে জানতে পারলাম। না বলার অভ্যাস তৈরি করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।

 2 months ago 

মুখের উপর না বলতে পাড়াটা একটা গুন আমি মনে করি। ভদ্রতা বসত অনেক কিছুতেই না বলতে না পারলে মানুষ সুযোগ নিতে চায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি হয়। ঠিক বলেছেন অফিস গেলে এধরণের ঘটনা বেশি ঘটে। বাস্তবসম্মত বিষয় নিয়ে লিখেছেন। ভালো লাগলো লিখাটি পড়ে।

 2 months ago 

না বলতে পারাটা একধরনের সাহসীকতার বহিঃপ্রকাশ, তাই প্রয়োজনে অবশ্যই না বলতে হবে।

 2 months ago 

আপনি বেশ অনেকগুলো উদাহরণ দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন কেন না বলা টা জরুরি। আসলেই তাই, লোকে কি ভাববে - সেটা ভেবে আমরা বেশির ভাগ সময়েই না বলতে পারি না, সেটা কিছুটা অন্যায় হলেও! তবে আমার মনে হয়, নারী রা এক্ষেত্রে নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় বস্তু থেকে বাঁচাতে কৌশলে হলেও না টা বুঝিয়ে দেন, কিন্তু সরাসরি না অনেকেই করতে পারেন না! নিজেকে প্রায়োরিটি দিয়ে, না বলা টা শিখতে পারলে অনেক পরিবর্তন হবে অন্যদের স্বভাবেও, যারা জেনে বুঝেই অন্যায় আবদার নিয়ে অসময়ে হাজির হয়ে পরে!

 2 months ago 

আপনি বেশ অনেকগুলো উদাহরণ দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন কেন না বলা টা জরুরি। আসলেই তাই, লোকে কি ভাববে - সেটা ভেবে আমরা বেশির ভাগ সময়েই না বলতে পারি না, সেটা কিছুটা অন্যায় হলেও! তবে আমার মনে হয়, নারী রা এক্ষেত্রে নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় বস্তু থেকে বাঁচাতে কৌশলে হলেও না টা বুঝিয়ে দেন, কিন্তু সরাসরি না অনেকেই করতে পারেন না! নিজেকে প্রায়োরিটি দিয়ে, না বলা টা শিখতে পারলে অনেক পরিবর্তন হবে অন্যদের স্বভাবেও, যারা জেনে বুঝেই অন্যায় আবদার নিয়ে অসময়ে হাজির হয়ে পরে!

 2 months ago 

আমি চেষ্টা করেছি বিভিন্ন স্তরে উদাহরণ দিয়ে পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলার। না বলাটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরুরি। তাই দ্বিধাহীনভাবে প্রয়োজনীয় জায়গায় না বলুন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68559.31
ETH 2695.07
USDT 1.00
SBD 2.73