হোস্টেল লাইফ রেগিং (পর্ব -৪)|| Hostel life ragging.

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago
হোস্টেল লাইফ রেগিং
(পর্ব -৪)

সংগ্রহশালা

আমি আমার হোস্টেল লাইফ রেগিং নিয়ে তিনটি পর্ব আলোচনা করেছিলাম। আজ তার চতুর্থ পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। আমি আমার হোস্টেল জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছি এই শিক্ষাগুলো আমার পরবর্তী জীবনে ভীষণ কাজে লেগেছে। তবে রেগিং এর বিষয়গুলো এতোটাই ভয়ানক এবং বেদনাদায়ক ছিল যে বলে শেষ করতে পারবো না। যাইহোক চলুন আজ চতুর্থ পর্ব শুরু করি।


রুমমেট দের নিয়ে একসাথে বাইরে নাস্তা করতে গিয়ে অবশেষে কান মলা খেলাম। নিজেকে বড্ড অপমানিত এবং মনে হতে লাগলো। গত রাতের মতো আজও ঘুম কিছুতেই আসছিলো না। আমরা তাদের বয়সে ছোট কোথায় আমাদের ভালোবাসবে আর আদর করে সবকিছু শিখিয়ে দেবে, উল্টো তারা বিভিন্নভাবে আমাদের অপমান অপদস্থ করে চলেছে। মাঝে মাঝে রাগ হচ্ছিল ভীষণ কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এরকম ওলটপালট চিন্তা ভাবনা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারিনি। সকালের দিকে ক্লাস ছিলনা, তাই বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম। পেটের মধ্যে এক রাজ্যের খিদে নিয়ে ডাইনিং রুমের দিকে গেলাম। ডাল, আলুর ভর্তা আর ভাত খেলাম আজকে তৃপ্তি সহকারে কেন যেন আজ আর খারাপ লাগলো না। এরপর দ্রুত ক্লাসের দিকে গেলাম। যথারিতী ক্লাসে ঢুকে রেগিংয়ের বিষয়গুলো ভুলে গেলাম এবং বেসিক ওয়ার্কশপ প্রাকটিস ক্লাশটি ভীষণ উপভোগ করলাম।

দুপুরের দিকে গোসল সেরে ডাইনিংয়ে যাওয়ার সময় ভীষণ সতর্কতা অবলম্বন করলাম আজ। চারিদিকে দেখে শুনে খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকলাম। দুপুরের খাবারটাও আজ খারাপ লাগছে না, কারন মনের থেকে সবকিছু মেনে নিয়েছি। অথচ এমন অখাদ্য বাসায় কোনদিন খাইনি। যাইহোক খাবার সেরে গতকালের মতো কিছুটা ঘুম দিলাম, তবে কেন যেন আজ ভীষণ ভয় করতে লাগলো। মনে হচ্ছিল আজ রাতে হয়তো ভয়ংকর কিছু হবে। তবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চিন্তা করে দেখলাম কোথাও কোন ভুল করলাম কিনা। তবে সেরকম কিছু মনে হলো না, তবুও সাবধানে থাকতে হবে।

আজ রাতে একটা জিনিস খেয়াল করলাম, মিটিং বা রেগিংয়ের ঠিক আগে উপর তলার রুমগুলোতে শুনসান নিরবতা। কারনটা হলো তাঁরা আমাদের উপর অত্যাচার করার আগে একটা রুমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিল। আজকের পরিস্থিতি যে কি হবে ভাবতেই ভীষণ দুশ্চিন্তায় মন কেঁপে উঠছিল।

আজ ঠিক বারোটার সময় দরজায় নক করা হলো বেশ জোরে, তাড়াতাড়ি ১০২ নাম্বার রুমে আয় মিটিং আছে। আমরা সবাই অবাক হলাম কারন কালকের থেকে আধ ঘন্টা আগেই আজ ডাক পরেছে। মনে মনে উপর ওয়ালাকে স্মরন করছিলাম, আজ যেন খারাপ কিছু না হয়।

যথারীতি রেগিংশুরু হয়েছে। আজ নতুন একটা ছেলে হোস্টেলে উঠেছে ১০২ নাম্বার রুমে, সে নিয়ম-কানুন তেমন জানতো না। তাকেই প্রথম সামনে আনা হলো নামধাম শোনার পর তাকে এমন কিছু বলা হলো তাতে আমি রিতিমত অবাক হয়ে গেলাম। এরপর ছেলেটা ভয় পাওয়ার বদলে রাগ দেখাতে শুরু করলো, তখন তারা তাকে কষে কয়েকটা চড় মেরে বসলো। এবার সে বুঝতে পেরেছে পরিস্থিতি ভালো না, সে একদম চুপচাপ হয়ে গেছে।

এরপর তাকে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন বলে দেয়া হলো, এবার ছেলেটা চুপচাপ চোখের পানি ফেলতে শুরু করলো। আজ আমাকে তেমন কিছু বললো না। তাই ভয় একটু কম লাগছিলো। মিটিং শেষ শেষ করে রুমের দিকে গেলাম, আর ছেলেটা তার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। আজকে রাতে তেমন ঘুমুতে সমস্যা হলো না। পরদিন সকালে উঠেই শুনলাম নতুন ছেলেটা চলে গেছে, তার পক্ষে এসব মেনে নেয়া নাকি সম্ভব না।

চলবে



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1ejFJCaMLR3zrx1iztXmdz4AFKcaXPfpHbadyDS7yzWTRRjc8kkRjGZNGVw27n8Q3Mi19jpMVHLYFyQ4NZ.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

হোস্টেল লাইফ রেগিং এর ৪র্থ পর্ব আজ পড়ে নিলাম।সত্যি কথা বলতে দিনের পর দিন এতো অন্যায়,এতো অপমান আমি হলেও মেনে নিতে পারতাম না।নতুন ছেলেটি হয়তো সহ্য করতে পারবে না।তাই চলে গেছে।স্বাধীন দেশে কিছু মানুষের কাছে পরাধীন হয়ে থাকা সবার জন্য সম্ভব নয় আসলে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58679.35
ETH 3155.04
USDT 1.00
SBD 2.44