স্টিমিট বয়ের 🐣 জন্মদিন আজ (মাশাআল্লাহ) || Happy Birthday to Steemit Boy 🧁

---

সবার উপর শান্তি বর্ষিত হোক 🤲। আপনাদের হয়তো মনে আছে আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে সকাল ১১ টায় আমার ছেলে সন্তান দুনিয়াতে আসে। সত্যিই তখন আনন্দের বন্যায় ভাসছিল আমাদের সবার হৃদয় কিন্তু সেই আনন্দ বেশিক্ষণ টিকলো না। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলাম ও বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে দুনিয়াতে এসেছে। প্রথমত তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং দ্রুত তার মাকে রেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করলাম। হাসপাতালে ভর্তি হবার সাথে সাথেই তারা জানিয়ে দিলেন তার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, ব্লাড ইনফেকশন এবং শ্বাসনালীতে ছিদ্র রয়েছে এবং তার প্রতিনিয়ত ১২-১৪ লিটার গতির অক্সিজেন লাগছে 😥 যদিও সে শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষে রয়েছে তবুও বাঁচার সম্ভাবনা কম। তবে চিকিৎসকগন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

_{^{ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- সংযুক্তি}}

দুদিন পর হঠাৎ তার শরীরের অক্সিজেন লেবেল কমতে থাকে হঠাৎ করেই ৫০-৬০% এ নেমে আসে। চিকিৎসক দ্রুত আমাকে ডাক দেন এনআইসিওতে, আমার কিছুই করার ছিলনা । শুধু মাত্র তার বেডের পাশে দাঁড়িয়ে কেঁদেছি আর আল্লাহকে স্মরণ করেছি। তবে কিছুক্ষণ পর সে তার অক্সিজেন লেবেল সামলিয়ে নিতে থাকে আবার ৯৫-৯৮% এ আসে। তিনদিন সেই হাসপাতালে রাখার পর তারা হাল ছেড়ে দেন এবং রাত বারোটা বাজে আমাকে হঠাৎ ডেকে বলে দেন তাদের এখানে আর চিকিৎসা করা সম্ভব নয় । কারণ আমার সন্তানের অবস্থা ভালো নয় আরো উন্নত চিকিৎসা এবং মেসিনারীজ লাগবে।

_{^{ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- সংযুক্তি}}

রাত সাড়ে বারোটায় সিদ্ধান্ত নেই আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য। দ্রুত এম্বুলেন্স ব্যাবস্থা করে ছুটে যাই সবথেকে ভালো চিকিৎসার জন্য। সেখানে পৌঁছানো মাত্র শুরু হয়ে যায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা কিন্তু আমার হাতে তুলে দেয়া হয় দৈনিক ৩৫-৪০ হাজার টাকার বিশাল অংকের খরচের হিসাব। তবে একটা ব্যাপার ছিল দেখতাম তারা ভীষণ চেষ্টা করছিলেন তাকে সাড়িয়ে তোলার, প্রতিটি রোগীর সাথে একজন করে নার্স নিযুক্ত ছিলেন। চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে তার চিকিৎসা খরচ চলে আসলো প্রায় দেড় দুইলক্ষের কাছাকাছি। আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম। এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে হয়তো আর চিকিৎসা করাতে পারবো না, কারন টাকার যা যোগাড় ছিল সবশেষ প্রায়। একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম আমার সন্তানের শারীরিক বেশ উন্নতি হয়েছে। কোন রকম ধারদেনা করে ঐ হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে আবার পূর্বের হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু তখনো তার অবস্থা বেশ নাজুক ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে রাখতে চায়নি কারন আমরা বড় হাসপাতাল থেকে ফেরত এসেছি। অনেকটা অনুরোধ করে এবং বন্ড সই দিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করি। কিন্তু আমি আর অর্থের দিকে আর সাপোর্ট দিতে পারছিলাম না তখন @rex-sumon ভাই এবং @rme দাদা পাশে দাঁড়ান। দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসার পর আমাদের সন্তান মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠে এবং বাসায় নিয়ে আসি। কিন্তু তারপরও আরো দুবার নিওমুনিয়া আক্রান্ত হয় এবং মাঝে মাঝেই শ্বাসকষ্ট হতো।

_{^{ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- সংযুক্তি}}

দীর্ঘ চার মাস তার চিকিৎসা চলেছে আলহামদুলিল্লাহ সে কিছুটা সুস্থ হয়ে জীবনের ছন্দে ফিরে আসে। কিন্তু আমি দীর্ঘদিন মানসিক চাপের কারনে নিজেই অসুস্থ হয়ে পরি মানসিকভাবে। যাক ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

_{^{ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- সংযুক্তি}}

দীর্ঘ যুদ্ধের পর সে সুস্থ হয়েছিল। আসলে দিনগুলো মনে পড়লে এখনো বুকের ভেতরটা নাড়া দিয়ে ওঠে, সে কি কষ্ট হয়েছিল তা বলে বোঝাতে পারবো না। আজ তার বয়স একটি বছর পূর্ন হলো। তাই সবার কাছে দোয়া প্রার্থী। তারজন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আল্লাহ পাক তাকে সুস্থ রাখেন। আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি অভিভাবক @rme দাদার প্রতি 🙏 এবং #amarbaglablog পরিবারের প্রতি কারন সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন । আমাদের দোয়া সবসময়ই আপনাদের সাথে রয়েছে।

---

"সবাই দোয়া করবেন"