সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি এবং ক্ষতিকর প্রভাব। || Bad effect of social media (10% for @shy-fox)
"চাই সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য"
সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক শুরু করছি।
আমার আজকের আলোচ্য বিষয় হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু ক্ষতিকর দিক।
চলুন শুরু করি।
" সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি "
আমরা এখন বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির এক স্বর্ন যুগে বসবাস করছি। যেখানে প্রায় সকলের কাছে মোবাইল ফোন নামের এক অতীব প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে। যা কারোও কারোও কাছে জীবন সমতূল্য কারন এখানে রয়েছে মহামূল্যবান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। যেখানে যানা যায় সকালে ঘুম থেকে উঠে কে কি করেছে আর রাত ঘুমোতে যাবার আগে কি খেয়েছে। এ যেন ফুটপাতের খাবারের মতো সবকিছু একবারেই খোলামেলা। মানুষকে তার ঘোমটার আড়াল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছে খারাপ কিছু করার জন্য। আমি এর বেশ কিছু খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করবো।
👉 সময়ের অপচয়:-
ফেসবুক ব্যবহারে সময়ের অনেক অপচয় হয়। আমাদের দেশে প্রায় তিন কোটির উপরে ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে গড়ে প্রতিদিন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ৮০ থেকে ১২০ মিনিট ব্যয় করেন একে অপরকে বার্তা প্রেরণের জন্য (সুত্র প্রথম আলো পত্রিকা জরিপ )।
এক গবেষণায় দেখা গেছে , দৈনিক গড়ে ৩০ মিনিটের বেশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় ব্যয় করলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
👉 গুজব ছড়ানো :-
প্রায়শই আমরা দেখি ফেসবুকে বিভিন্ন রকম অসত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। যা আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। এমন অনেক অসত্য তথ্য এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে মারামারি এমনকি খুন পর্যন্ত হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে তা রাষ্ট্রীয় বড় ধরনের সমস্যায় রুপ নেয়।
👉 হতাশা এবং মানসিক অবসাদ:-
ফেসবুকে প্রায় সব বন্ধুরা এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে যে সে মোটামুটি সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটি দেখার পর তার বন্ধুরা অনেকেই রীতিমত হতবাক এবং আমি কি করলাম এই চিন্তায় মোটামুটি মানসিক রোগী হয়ে যায়। এমন অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটে থাকে। এই ব্যাপারটি খুব মারাত্মক একটি ক্ষতিকর দিক এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যা মানুষের জীবন পর্যন্ত কেড়ে নেয়।
👉 অনিরাপদ সম্পর্ক :-
এখানে অবাধ যোগাযোগের ফলে কিশোর কিশোরীরা বিভিন্ন রকম অনিরাপদ সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন রকম অনৈতিক সামাজিক অপরাধের জন্ম দেয়। একটি পর্যায়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে।
👉 গোপনীয়তা বলতে কিছুই থাকেনা :-
এখন আর মানুষ গোপনীয়তা বলতে কিছুই রাখেনা। একদম সকাল থেকে রাত অবধি যা যা করছে সব সেখানে পোস্ট করছে। এমনকি সবথেকে অবাক করা বিষয় হলো মানুষ এরকম অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আবেগের বশে প্রকাশ করে যা অসভ্যতার বহিঃপ্রকাশ। গোপন আর গোপন রইল না।
👉 বিভিন্ন আইনগত জটিলতা
আমরা প্রায়শই বিভিন্ন রকম অপপ্রচার এবং উগ্রবাদী কিছু লিখা দেখতে পাই।
কিছু অতিউৎসাহী মানুষ ঐ সমস্ত লিখায় মন্তব্য লিখে থাকেন যা সরকার বিরোধী এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানবতাবিরোধী। এই এ সমস্ত লিখা বিভিন্ন রকম আইনী সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রেখেছে এবং এসমস্ত অপপ্রচার এবং উগ্রবাদ শক্ত হাতে দমন করছে।
👉 আশক্তি দেখা দেয়:-
সবসময়ই ফেসবুক চালানোর ফলে এর প্রতি একটি আশক্তি চলে আসে। কোন মানুষ মাদকাসক্ত হলে যেধরনের লক্ষন দেখা যায় ফেসবুক আশক্তিতে এরকম লক্ষন দেখা যায়। এই আসক্তি সামাজিক, আর্থিক এবং মানসিকতা উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে যা একটি মানুষের জীবন ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।
👉শারীরিক জটিলতা:-
ফেসবুকের দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফল বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। যেমন দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং মস্তিষ্কে চাপ পড়ার একটি সম্ভাবনা থাকে। এরকম অনেকেই রয়েছেন যারা শুয়ে বসে সারাদিন ফেসবুক চালান তাদের মেদ-ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
👉কর্ম জীবন এবং শিক্ষা জীবনে প্রভাব:-
এরকম আমরা অনেকেই রয়েছি যারা অনেক রাত জেগে ফেইসবুক চালাই যা কর্ম জীবন এবং শিক্ষা জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। অনেকেই রয়েছেন যারা রাত জেগে ফেইসবুক চালালেন পরদিন নির্ঘাত অফিসে বিলম্বে ঢুকলেন। চাকরি চলে যাবার সম্ভাবনা বেড়ে গেল। আবার এমনও হচ্ছে কাল পরীক্ষা আর সারারাত ফেসবুক চালাচ্ছে আর পরীক্ষায় নির্ঘাত ফেল। আসলে সবকিছু এভাবেই চলছে।
👉 মানসিক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়া:-
অতিরিক্ত মাত্রায় এই ফেসবুক ব্যবহারে অনেকেই মানসিক রোগী হয়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে উগ্রতা, হীনমন্যতা, সংকীর্ণতা এবং তীব্র জেদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে উগ্রতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে খুনের মতো ঘটনা ঘটছে খুব তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
এগুলো সব মানসিক রোগের লক্ষণ।
👉 কিছু পরামর্শ :-
ফেসবুকের উপকারি দিক বলতে আমি বুঝি দূরের মানুষ এবং কাছের মানুষ সবার সাথে যোগাযোগ রাখা যায় খুব সহজেই। যা খুব সল্প খরচে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে। এখানে আপনি চাইলে যেকারো গোপনীয় তথ্য যেকোন সময় সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। সবথেকে বড় বিষয়টি হচ্ছে আমাদের সন্তানদের নজরে রাখতে হবে এবং আমাদের নিজেদের সতর্ক হয়ে চলতে হবে। নিজের গোপনীয়তা এবং মূল্যবোধ ধরে রাখতে হবে। তাহলে এটি একটি সহনশীল মাত্রায় থাকবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি, তবে খুব শিগগিরই ফিরে আসছি।
আমি কে ?
আমি মো: ইমরান হাসান। একজন যন্ত্র প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার), যন্ত্র নিয়ে আমার পেশা আর ব্লগিং হলো আমার নেশা। খুব বেশি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, নতুন মানুষদের সাথে পরিচিত হতে আর নতুন নতুন গল্প লিখতে। আমি একজন স্বাধীন ব্লগার। আমি মানুষকে ভালোবাসা দিতে জানি এবং পেতেও জানি।
"হতে চাই মানবতার
করি মানবতার জয় জয়কার"
ফেসবুকের উপকারি দিক বলতে আমি বুঝি দূরের মানুষ এবং কাছের মানুষ সবার সাথে যোগাযোগ রাখা যায় খুব সহজেই। যা খুব সল্প খরচে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে। আপনার কথায় আমি একমত স্যার অনেক তথ্য বহুল পোস্ট আপনার এই পোস্ট পড়ে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনাকে অসংখ্য 💖ধন্যবাদ💖
@emranhasan💐
ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি ভালো ভাবে উপলব্ধি করার জন্য ♨️
আপনার কাছেও ভালো মানের পোস্ট আসা করছি।
অবশ্যই স্যার আমি ভালো মানের পোস্ট আপনাদের সবাইকে উপহার দিবো আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀
অনেক সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন আপনি ,,আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ...❤️
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য 🥀
শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
সামাজিক যোগাযোগ মধ্যম নিয়ে অসাধারণ একটি অসাধারণ আলোচনা করেছেন। সবচেয়ে বেশি গুজব রটে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে। লকডাউনের জন্য স্কুল কলেজ বন্ধ একারণেই আমি নিজেও প্রচুর সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিবাহিত করি। আপনার পোস্ট থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলাম। ধন্যবাদ।
ভালো ভাবে ব্যাপারটি উপলব্ধি করেছেন তাই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই 🥀
এটি আসলে ধীরে ধীরে মানুষকে শেষ করে দিচ্ছে।
ভালো থাকবেন ♨️
হুম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি ও তার ক্ষতিকারক প্রভাব পোষ্ট টি দেখে আমার নিজের লেখা একটি কবিতার কথা মনে পরে গেল।যা
যে আমি অনেকদিন আগে লিখেছিলাম মোবাইল ফোনে আসক্তি।পরে কখনো আপনাদের সাথে ভাগ করে নেব।♥
ধন্যবাদ আপনাকে 💗
খুব সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন ভাইয়া।সত্যিই এটি সবার জীবনে ভালো দিকের সঙ্গে সঙ্গে খারাপ দিকটাই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এই সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে। ছোট মানুষ থেকে শুরু করে বয়স্করাও এখন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যুক্ত হচ্ছেন। যেটার ভালো দিকের তুলনায় খারাপ দিকই বেশি। অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট করেছেন ভাইয়া। শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ @rasel72 আমি চেয়েছিলাম সবাই ব্যাপারটি উপলব্ধি করুক। আমি সার্থক সবাই বুঝতে পেরেছেন। শুভ কামনা অবিরাম।🥀
ভালো থাকবেন ♨️
আপনার প্রত্যেকটি পয়েন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ, আপনি সঠিক যুক্তি দেখিয়েছেন। তবে আমি মনে করি এগুলোকে সঠিক ব্যবহার করলে আসক্তি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি,, কারণ এগুলোর মাধ্যমে অনেক সহজেই একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। এগুলো শুধুমাত্র যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করলে ঠিক আছে কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু ভাবে ব্যবহার করলে,, সারাদিন ফেসবুকে পড়ে থাকলে এটির উল্টোটা হবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য।।
ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টের সঠিক মর্মার্থ উপলব্ধি করার জন্য ♨️।
ফেসবুক ব্যাপারটা এমন এক অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে যে আমি পোস্টটি করেই বসলাম। যাক ভালো থাকবেন 🥀
ধন্যবাদ ভাই, এমন প্রতিবেদন আরো চাই।
ইনশাআল্লাহ হবে।