ভোগান্তির আর এক নাম চিকিৎসা ব্যাবস্থা || (Another name for suffering is medical care)
"চিকিৎসা যখন আমার কাছে ভোগান্তি"
গত ১৪/০৭/২১ সকাল ১১.৩০ মিনিটে আমার ছেলের জন্ম হয়েছিল। তার জন্মের পরপরই শ্বাসকষ্ট ও নিওমুনিয়ার লক্ষন দেখা দেয়। সাথে সাথে এম আর খান শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি। আজ ১৪ দিন সে নবজাতক নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে। তার পরিক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার নিওমুনিয়া, শ্বাসকষ্ট, রক্তের সংক্রমন এবং হৃৎপিণ্ডের সমস্যা রয়েছে। তার অবস্থা বেশ খারাপ। তারা আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
আমরা ১৭ তারিখ রাত ১টায় আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করলাম। সেখানে পাঁচ দিনের চিকিৎসা খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা চলে আসলো। আমি দিশেহারা হয়ে পড়লাম, তবে একটা বিষয় আমার ছেলের কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম হাসপাতাল পরিবর্তন করবো। আমি দিশেহারা হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, আদ্ দ্বীন হাসপাতাল সহ আরও কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে এন আই সিওতে জায়গা পেলাম না। অবশেষে আমি এম আর খান শিশু হাসপাতালে এন আই সিওতে কথা বলে জায়গা পেলাম এবং তারা চিকিৎসা করতে রাজি হলেন।
আমি আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে এসে জানালাম আমি হাসপাতাল পরিবর্তন করবো, তারা আমাদের ছাড়তে রাজি না। তারা বললেন তার অবস্থা ভীষণ খারাপ, আর যখন এম আর খান শিশু হাসপাতালের নাম শুনলেন তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক এম আর খান শিশু হাসপাতালে ফোন করে বলে দিলেন তারা যাতে এই বাচ্চা না রাখে কারন চিকিৎসা ওদের কাছে ব্যাবসা। এটি অবশ্য আমি অবগত ছিলাম না।
আমি খুব কষ্টে ধার দেনা করে প্রায় দুই লাখ টাকা পরিশোধ করলাম। ওরা আমাদের রাখার খুব চেষ্টা করেছে অনেকভাবে। ওরা শেষ আধা ঘন্টা আমার ছেলের অক্সিজেন বন্ধ করে দেয়, আমি শুধু আল্লাহকে ডাক ছিলাম আমি আমার স্ত্রীকে বললাম যেকোন পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে।
এমবুলেন্স ডাকলাম ফোনে। এমবুলেন্স আসার সাথে সাথে ছেলেকে উপর থেকে নামিয়ে সাথে সাথে অক্সিজেন সাপোর্ট দিলাম। রাস্তা প্রায় চল্লিশ মিনিটের কিন্তু জ্যামের কারণে এক ঘন্টা লেগে গেলো। মনে মনে শুধু একটি কথাই বলছিলাম আল্লাহ আমাদের এভাবে হারিয়ে দিওনা।
অবশেষে এম আর খানে পৌঁছালাম। কিন্তু এখানে যে ভোগান্তি অপেক্ষা করছে জানতাম না। তাড়াতাড়ি জরুরী বিভাগের মাধ্যমে ভর্তি হয়ে এন আই সিওতে আসলাম। বিকেলে যে চিকিৎসকের সাথে কথা বললাম তার এখন অন্য রুপ। তিনি আমাকে দেখেই বললেন আয়েশার এক চিকিৎসক কি আপনাকে এখানে আনতে না করেছিলেন তারপরেও আপনি কেন আনলেন।
আমি বিষয়টি বুঝলাম এখানে চিকিৎসকদের কসাই বৃত্তি রয়েছে। আমি তাকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম আমার ছেলে আগের থেকে কিছুটা ভালো এখানে রেখে চিকিৎসা করলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে এবং আমার আর্থিক সংকট রয়েছে। দীর্ঘ আধা ঘন্টা তার কাছে অনুরোধ করার পর সে ভর্তি নিল। আমার বাচ্চার খুব কষ্ট হচ্ছিল আমি অনুভব করছিলাম। যাক আবার চিকিৎসা শুরু হলো। প্রতিদিন প্রায় আট থেকে দশ হাজার টাকার ঔষধ লাগছে আর একদিন পরপর সমস্ত পরিক্ষা নিরীক্ষা চলছ, চালিয়ে যাচ্ছি এ যুদ্ধ।
গতকাল রক্ত লেগেছে। সৌভাগ্য ক্রমে রক্তের গ্রুপ এক হওয়াতে রক্ত দিতে পেরেছি।
তার মা প্রতি বার ঘন্টা পরপর দেখে আসছে আর আমি দুবার চিকিৎসকদের সাথে কথা বলছি।
যাক আসার কথা হচ্ছে সে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে, তবে কিছুটা সময় লাগবে। গত চৌদ্দ রাত ঘুম কি জিনিস ভুলে গেছি। শুধু একটাই প্রচেষ্টা এই যুদ্ধে জিততে হবে।
প্রতিদিন তার মা তাকে ডাক দেয় আর সে একটু একটু করে সাড়া দেয়। মায়ের ডাকে সে ফিরবে ইনশাআল্লাহ।
Cc:-
@rme
@blacks
@rex-sumon
"সব শিশু ভালো থাকুক"
"আল্লাহ যেন সব বাচ্চাকে সুস্থ রাখে"
"আল্লাহ যেন সব বাচ্চাকে সুস্থ রাখে"
আপনি ঠিক বলেছেন স্যার ডাক্তারদের কাছে আমাদের চোখের পানির মূল্য নেই। ওরা শুধু টাকা চিনে। আল্লাহ যেন আপনার বাচ্চাকে সুস্থ রাখে"
আল্লাহ পাক আপনার সন্তান কে সুস্থ করে দেবেন, অনেক দুয়া করছি😢। আমীন।
আমিন।
ভাই আপনার লেখা পড়ে চোখে পানি চলে আসে।আল্লাহ খুব দ্রুত আপনার বাচ্চাকে সুস্থ করে দিক, সেই দোয়া করি সবসময়।
আমিন।
আমরা মন থেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি, আপনার বাচ্চা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আপনাদের কোলে ফিরে আসবে।অনেক অনেক আশীর্বাদ এবং শুভকামনা রইলো।
এটা আমি ভালো জানি ভাই, আমার ভাগনি ছয় মাস কষ্ট করে মারা গেছেন, সে কোমায় ছিলো।
জি ভাই এটা আমার জীবনের একটি মর্মান্তিক অভিঙ্গতা যা আমার বাচ্চার সাথে ঘটে গেছে।
মানুষ আসলে আজকাল পশুর থেকেও অধম হয়ে গেছে । অন্যের দুঃখে এরা দুঃখী হওয়ার বদলে খুশি হয় কারণ, অন্যের দুঃখ হলেই এদের পকেটে টাকা ঢুকবে । অথচ এই দুনিয়ায় প্রাণের চেয়ে দামি কিছুই নয় ।