গল্প: অতৃপ্ত আত্মা 💀 || ১ম পর্ব: কাহিনীর সুত্রপাত।
গল্প: অতৃপ্ত আত্মা 💀
১ম পর্ব: কাহিনীর সুত্রপাত
১ম পর্ব: কাহিনীর সুত্রপাত
জোসেফ ম্যান্ডোলা ডাক নাম জোসেফ, আর দাদা অস্টিফ ম্যান্ডোলা আদর করে ডাকেন জ্যাফি। জোসেফের এই জ্যাফি নামটা ভীষণ প্রিয়। বাবা মা এক রোড এক্সিডেন্টে মারা যাওয়ার পর দাদা তাকে বড় করেছেন। সমস্ত আদর আর আবদার দাদাকে কেন্দ্র করে তার। দাদা নাতির মধ্যে ভীষণ মিষ্টি একটা সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে দুজন দুজনকে চোঁখে হারায়। মি: অস্টিফের বয়স ষাট পেরিয়েছে কবে, তার শারীরিক শক্তি বেশ লোপ পেয়েছে বটে। তবুও জ্যাফির জন্য তাকে বেঁচে থাকতেই হবে, এই চিন্তা থেকেই তিনি বেশ স্বাস্থ্য সচেতন। আর সবসময়ই নাতির সাথে বিভিন্ন রকম দুষ্টুমি আর খোশ গল্পে মেতে থাকেন। মূলত কখনো যেন জ্যাফি তার পিতা মাতার অভাব বুঝতে না পারে এটাই তার কামনা। তিনি বেশ গুছিয়ে নিয়েছেন সবকিছু বলা যায়।
মরফেজ হলো তাদের বাসার একমাত্র কাজের লোক যে বিগত ত্রিশ বছর এই পরিবারের সাথে রয়েছে। জোসেফ আর অস্টিফ কখনোই তাকে কাজের লোক মনে করে না কারন মরফেজ তার আন্তরিকতা দিয়ে সবাইকে আপন করে নিয়েছে, বলা যায় সে এই পরিবারের একজন সদস্য। পুরো বাড়ির সবকিছু দেখাশোনা থেকে শুরু করে খাবার দাবার তৈরি সব একা হাতে মরফেজ পরিচালনা করে চলেছে। মরফেজ এক গরিব কৃষক ছিল আর হঠাৎ বন্যার কবলে সে তার পুরো পরিবার হারিয়েছে। সেই থেকে অস্টিফদের বাড়িতে বসবাস করে আসছে।
তাদের পরিবারের আরো একজন সদস্য রয়েছে, সে হলো জিওনা, একটি আধো আধো কথা বলা তোতা পাখি। সে অস্টিফের ভীষণ কাছের বন্ধু, একবার জঙ্গল থেকে আহত অবস্থায় কুড়িয়ে পেয়েছিল অস্টিফ। পরে তার চিকিৎসা করিয়ে যত্ন সহকারে লালন পালন করে চলেছে। সারাদিন সে উন্মুক্ত অবস্থায় বাড়িতে উড়ে বেড়ায় আর রাত হলে শুধুমাত্র তার সুন্দর খাঁচায় এসে ঘুমিয়ে পরে। তার একটাই সমস্যা এতো দিন পরেও ভালো কথা বলতে পারে না। অস্টিফকে সে ডাকে অ-ক্যা-স্টি-ক্যা-ফ মানে অস্টিফ। আসলে নাম শেখাতে চেয়েছিলেন অস্টিফ কিন্তু সে একটানে পুরোটা বলতেই পারেনা। আর একমাত্র অস্টিফ ছাড়া আর কেউ তার কথা তেমন বুঝতে পারে না।
জোসেফ সবেমাত্র দশম লেবেল পাশ করেছে। অস্টিফের সবসময়ই চিন্তা হয়, কবে যে সে বড় হবে আর তার সমস্ত সম্পদ তাকে বুঝিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হবে। তবে সে নাতির ভালোবাসা ছেড়ে কোনভাবেই ওপারে যেতে রাজি নয়। তারজন্য নিজেকে যথাসম্ভব ফিট রাখার চেষ্টা করে চলেছেন। তবুও তিনি ঝুঁকি নিতে চান না, তিনি পরিকল্পনা করলেন উকিল ডেকে তার সমস্ত সম্পদ জোসেফের নামে করে দেবেন। পরদিন সকালে উকিল খবর দিয়ে জোসেফ আর মরফেজের সামনে সই করে দিলেন। আর বললেন দাদু ভাই আমি এতো সহজেই তোমাকে ছেড়ে যেতে চাইনা কিন্তু বলা তো যায়না যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তাই তোমার নামে সব করে দিলাম আজ। আর মরফেজ তো আছেই সবসময়ই তোমার সাথে। জোসেফর চোখে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো, আমি সম্পদ চাইনা। তুমি থাকলেই হবে এই বলে সেখান থেকে ছুটে পালিয়ে গেলো।
এদিকে মরফেজকে সবাই যা মনে করতো আসলে সে একদমই তার বিপরীত ছিল। সে ভেতরে ভেতরে এই সম্পদ ভোগ করার স্বপ্ন দেখতো। সে কিছুতেই মানতে পারলো না জোসেফ এই সম্পদের মালিক হবে। সেদিন রাতেই সে চুপিচুপি অস্টিফের ঘরে গিয়ে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করলো। সে গভীর রাতে অস্টিফের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে বালিশ চাপা দিয়েছে। এরমধ্যে ধস্তা ধস্তিতে পাখি জিওনা কেচর মেচর শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু জোসেফ ঘুমোনোর সময় তার কানে হেডফোন লাগিয়েই ঘুমিয়েছে, মরফেজ সেটা জানে। কয়েক সেকেন্ড জোরে বালিশ চাপা দিয়ে অস্টিফকে মেরে ফেললো। এদিকে অস্টিফ কার হাতে খুন হলো সে নিজেও বুঝতে পারলো না।
জিওনা কেচর মেচর করেই চলেছে মরফেজ সেদিকে তেমন ভ্রুক্ষেপ করলো না। এদিকে মরফেজ পুরো ঘর এলোমেলো করে কিছু টাকা পয়সা এবং আলমারি এলোমেলো করে দিল যাতে বোঝা যায় চোর এসে অস্টিফকে মেরে ফেলেছে। আর জানালা দিয়ে একটি দড়ি ঝুলিয়ে দিল।
এদিকে অস্টিফের আত্মা কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না সে মরে গেছে। তার আত্মা পুরো ঘরে ছটফট করতে লাগলো। সে সব দেখতে পাচ্ছে এখন কিন্তু কোন কিছু স্পর্শ করতে পারছে না আর কথা বলতে পারছেনা।।।।।
💀 চলবে 💀
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1586633712133099520?t=ld2n6yNEm89pn9URs4hN_g&s=19
অতৃপ্ত আত্মার প্রথম পর্ব পড়ে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। মানুষ সম্পত্তির লোভে কোন কিছুই করতে দ্বিধাবোধ করে না। অস্টিফ এর আত্মা তার এরকম মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। অস্টিফের আত্মা শেষ পর্যন্ত কি করেছে সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম। গল্পটা কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু।
আসলে মানুষ সম্পদের লোভে অনেক কিছু করতে পারে। তবে পৃথিবী কখনো পাপীকে ছেড়ে দেয় না।
সামনের পর্বে বেশ আকর্ষণ রয়েছে আপু।
বরাবরের মতো এবারও আপনার অতৃপ্ত আত্মা গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। তবে অস্টিফকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার কথা শুনে খারাপ লাগলো। মনে হচ্ছে গল্প টি পরের পর্বে আরো ভালো লাগবে। অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যা পরের পর্ব বেশ দারুন হতে চলেছে।
আশাকরি ভালো লাগবে তোমার।
শেষ পর্যায়ে মরফেজ এইরকম একটা কাজ করবে সেটা ভাবতে পারি নাই। যাইহোক গল্পে টুইস্ট আসলো। দেখি অস্ট্রিক এর অতৃপ্ত আত্মা শেষ পযর্ন্ত কী করে। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।।
ধন্যবাদ ভাই তোমায়।
মরফেজ অর্থের লোভে শেষ পর্যন্ত এটা করেই ফেলেছে। যাক পরের পর্বে আরো কিছু টুইস্ট আসবে।