আমার কবিতা :- নাড়ি ছেঁড়া ধন যখন নরপিশাচ || মায়ের আত্ম চিৎকার । (10% for @abb-charity)

👁️ কবিতায় মায়ের দীর্ঘ শ্বাসের গল্প 👁️

_{সংগ্রহশালা}

"নাড়ি ছেঁড়া ধন যখন নরপিশাচ"

কেনইবা অস্তিত্ব প্রানভূমিতে রক্তচুষে দশ মাস মাতৃগর্ভে। খোলা চোখে স্বর্গের স্বপ্নে, বেদনার পর অশ্রুসিক্ত নয়নে।

কয়েক দশকের মাংসপিন্ডে আঁচড় কেটে গর্ভ করে ছিন্ন। ধিক্কার তোমার সেই স্বপ্নের সেদিন ঘুরেছিলে নরকদ্বারে।

আগলে রেখেছিলে মাংসপিণ্ডে মানুষ সে নয় নরপাষন্ড। তাইতো তোমার গর্ভপিন্ডে আজ রুপ ধারণ শকুনের।

নেইতো আজ তোমার রুগ্ন অঙ্গে টুকরো খানিক কাপড়ের আঁচলে যাকে ভাবতে অন্তিম লাঠি এখন সে ঘুনে খাওয়া ফাঁকি।

কি পেয়েছো এই স্বপ্নদ্বারে বৃদ্ধাশ্রমের চার দেয়ালের ঘোরে। অযত্নের ঝড়ে গেলো স্বপ্নের ঘোর বহুকাল ঘুমুবে বিভোর ঘুমে।

👁️

"কবিতার পটভূমি"

_{গল্পটা অনেক বড় আমি সংক্ষেপে আলোচনা করছি। আমি একটি অনলাইন সংস্থার সাথে কাজ করেছিলাম আজ থেকে কয়েক বছর পূর্বে। এদের একটি বৃদ্ধাশ্রম ছিল "আপন নিবাস" নামক। এর পুরো খরচ ঐ সংস্থাটি বহন করতো, বিশেষ করে এর জন্য আমার কাছে সংস্থাটি খুব ভালো লাগতো। একদিন সুযোগ এলো আপন নিবাসে যাওয়ার।আসলে বৃদ্ধাশ্রম কি জিনিস আমার সত্যিই জানা ছিলোনা। একজন বয়স্ক মানুষ জীবনের করুণ সব স্মৃতি নিয়ে এখানে বসবাস করে। আমি ভীষণ আবেগপ্রবণ মানুষ কারো চোখে পানি দেখলে সত্যিই আমার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। একজন খুব বয়স্ক আর অসুস্থ মহিলা দেখে আমি থমকে গেলাম, খুব ইচ্ছে হলো তার সাথে কথা বলি। বললাম কেমন আছেন মা? কেমন যেনো ভাবলেশহীন উত্তর এলো আছি, বেঁচে আছি। আমার দিকে তেমন তাকালেন না। বললাম মা আমি তো একটি সংস্থা থেকে এসেছি আপনার সাথে কথা বলতে চাই। তিনি বললেন কি বলতে চাও বলো। আমি বললাম মা এখানে কিভাবে এলেন যদি একটু বলতেন। কথা বলার সাথে সাথেই মনে হলো কোথায় যেনো তিনি হারিয়ে গেলেন। বললেন শুনতে চাও? আমি বললাম জি মা। শোন তাহলে আমি আমার গর্ভে নরপিশাচ ধরেছিলাম আজ তার শাস্তি পাচ্ছি, তবে আর বেশিদিন হয়ত টিকবো না। আমার চোখ ছলছল করছে ততক্ষণে। বললাম কি হয়েছিল? বললো আমার গর্ভে যখন সন্তান এসেছিল যদি জানতাম যে এটা এতো ভয়ানক হবে তাহলে হয়ত ওটাকে আগেই মেরে ফেলতাম। যখন হয়েছিল ভেবেছিলাম অনেক কিছু আর স্বপ্ন ছিল আকাশচুম্বী। আমি আর আমার স্বামী তাকে আদরে আর আহ্লাদে বড় করেছিলাম আর বানিয়েছিলাম মস্ত শিক্ষিত মানুষ। বড় হলো, বড় চাকরি নিলো তখনও সব ঠিক ছিলো। হঠাৎ ওর বাবা মারা গেলো । বিয়ে করালাম তাকে সুন্দর ফুটফুটে মেয়ের সাথে। কিন্তু কেনো যেনো আমার ছেলে আমাকে ভালোবাসুক এটা সে চাইতো না। খুব ঝগড়া করতো ওঁরা আমাকে নিয়ে। একদিন আমি আমার বউমাকে বোঝাতে গেলাম জানিনা সে কি বুঝলো, আমার ছেলের কাছে নালিশ করলো এই প্রথম আমার ছেলে আমার সাথে খুব খারাপ ব্যাবহার করলো। এভাবে আরো একদিন কি একটা বিষয় নিয়ে বউ নালিশ করায় ছেলে অগ্নিমূর্তি হয়ে তেড়ে এসে আমার গায়ে হাত তুললো। আমি মনে হয় মারা গেলাম। আমার পেটের মাংসপিণ্ড আজ আমায় প্রহার করলো। আমি এক কাপড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পরলাম। এরপর এই আশ্রমের লোকজন আমায় খুঁজে নিয়ে লালন পালন করছে। আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ত বেশিদিন আর বাঁচবো না কিন্তু এই নরপিশাচ কখনো অনুশুচনা করলো না আমার কাছে এটাই আমার দুঃখ থেকে গেলো মরার আগে। আমি আর কিছু শুনার মতো অবস্থায় ছিলাম না। শুধু বিদায় নিয়ে চলে এলাম একটি শিক্ষা নিয়ে।}

👁️ শিক্ষা 👁️

একজন সন্তান যত খারাপ কাজ করুক না কেনো মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত একজন মা ক্ষমা করার অপেক্ষায় থাকে। কিছু সন্তান বড় হয় কিন্তু মানুষ হয় না।