শিশুদের সাথে আমাদের আচরণ || বেঁচে থাকুক সব শিশু হাসি আর আনন্দে (১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য 🦊)
"ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা
সব শিশুরই অন্তরে।"
সব শিশুরই অন্তরে।"
কেমন আছি আমরা সবাই। আশাকরি ভালো।
আমি ছোট্ট একটি চাকরি করি। দিনের প্রায় চৌদ্দ ঘন্টা সময় দিতে হয় একজন কোম্পানির মালিকের লাভের অংক ভারি করার জন্য। এরপর যেটুকু সময় পাই তার কিছুটা অংশ পরিবার আর যতটুকু সময় দেয়া সম্ভব তোমায় দেই @amarbanglablog, আসলে নিজের বলতে কিছুই থাকেনা। তারপরও নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আছি তোমাদের সাথে @amarbanglablog পরিবার। যাক ভিন্ন প্রসংগে চলে গিয়েছিলাম। আসুন কথা বলি মূল আলোচ্য বিষয় নিয়ে শিশুদের সাথে আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত।
" শিশুদের নিয়ে কিছু কথা "
একটি শিশুকে গড়ে তুলতে হলে তার যত্ন নিতে হবে, এটি শারীরিক-মানসিক সবদিকের। একটি শিশুকে গড়ে তুলতে হলে তার পিতা-মাতাকে হতে হয় সবথেকে যত্নশীল, যার ফলশ্রুতিতে এই শিশু সন্তান একদিন মানুষের মতো মানুষ হয়। এই সন্তানকে হাঁটাচলা থেকে শুরু করে কথা বলা পড়াশোনা, আচার-আচরণ, টুকটাক কাজকর্ম সব কিছুই তাকে একটু একটু করে শেখাতে হয়। আর এই কাজগুলো শেখানোর সময় পিতা-মাতাকে সর্বোচ্চ উৎসাহ প্রদান করতে হয়। মনে রাখবেন এই শিশু সন্তানের সাথে আপনি ঠিক যেই ধরনের আচার আচরণ করবেন তার ভবিষ্যৎ ঠিক সেভাবেই তৈরি হবে, এমনকি সে ভবিষ্যতে ঠিক এভাবেই তার আচার-আচরণ বহিঃপ্রকাশ করবে।
অনেক সময় এরকম অনেক দায়িত্বশীল পিতা মাতাও তাদের সন্তানদের সাথে সহনশীল আচরণ করেন না যার ফলশ্রুতিতে সন্তানদের ভবিষ্যত অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।
আসুন কথা বলি সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর করার জন্য আমাদের আচার-আচরণ তাদের সাথে কেমন হওয়া উচিত।
শিশুর সাথে আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত
শিশুর সাথে বন্ধুত্ব করুন:-
শিশুকে বুঝতে হলে প্রথমে তার সাথে বন্ধুত্ব করতে হবে। আর এই এই বন্ধুত্বের মাধ্যমেই বোঝা যাবে শিশুর ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তার কি প্রয়োজন সে আসলে কি চাচ্ছে সবকিছুই এখান থেকে স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে। তাই তার সাথে বন্ধুত্ব করুন। সঠিক কাজে তাকে উৎসাহ দিন এবং ভুল কাজটিকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলুন এতে তার ভেতর সঠিক এবং ভুলের স্পষ্ট ধারণা আসবে। অবশেষে সে তার ভুলগুলো বুঝতে পারবে।
প্রশংসা করবেন:-
শিশুর কাজের প্রশংসা করুন। সঠিক কাজে উৎসাহ দিন আবার এমন যেন না হয় তার কোনো খারাপ কাজ উৎসাহ পেয়ে যায়। ধরুন সে কোথাও মারামারি করে আসলো সে এটা অন্যায় কাজ করল। এখন যদি আপনি তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন যাক বাবা তুমি আমার নাম উজ্জ্বল করেছ দুই-চারটা মেরে ফাটিয়ে দিয়ে এসেছো তাহলে ব্যাপারটা এখন কোন দিকে গড়ায়। নিশ্চয়ই এই উৎসাহটা আপনার সন্তানকে দেয়া যাবে না তাহলে সে কোনোদিনই আর সঠিক মানুষ হয়ে উঠবে না। তাই উপযুক্ত কাজে উৎসাহ দিন।
শিশুর সাথে কখনও উত্তেজিত হবেন না:-
শিশুর সাথে কখনো উত্তেজিত আচরণ করবেন না। সে কোন অন্যায় করলেও তাকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলুন। আপনার অতিরিক্ত উত্তেজিত আচরণ তার মন-মানসিকতা আর উপরে সূদুর-প্রসারী প্রভাব ফেলবে যা তার ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।
শিশুকে সঠিক শিক্ষা দিন:-
আপনি নিজেকে উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরে সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিন। সমাজের যে খারাপ কাজগুলো আছে মারামারি করা, চুরি করা, গালিগালাজ করা এবং গুরুজনকে অসম্মান করা, এগুলো খারাপ কাজ তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে হবে। তার আগে আপনাকেও গুরুজনকে সম্মান করতে হবে সুন্দর ভাবে চলতে হবে যখন সে দেখবে আপনি গুরুজনদের সম্মান করছেন এবং সমাজে সম্মানের সাথে বসবাস করছেন স্বাভাবিক ভাবেই তার ভেতর এই অনুভূতি গুলো কাজ করবে।
মারধোর কিংবা শাস্তি দেবেন না:-
আমরা শিশুদের নিয়ম-কানুন ঠিক মতো না মানার জন্য শাস্তি দেই মারধোর করি।দেখুন কোন শিশু মায়ের পেট থেকেই কোন কিছু শিখে আসেনা। আর নিয়ম শৃঙ্খলা এটি দীর্ঘ শিক্ষার ফল। তাই অযথা সন্তানকে শাস্তি বা মারধোর করবেন না এতে হিতে বিপরীত হবে এবং সন্তান বকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সন্তানকে শেখান সবকিছু সে ধীরে ধীরে শিখে নিয়ে উপযুক্ত মানুষ হয়ে উঠবে।
এখানে আরো একটি মজার ব্যাপার বলি যদি শাস্তি দিতেই হয় একটু অন্যভাবে দিন
ধরুন বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করতে করতে সে প্রায়শই স্কুল বাস মিস করে আজ সে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এসেছে। কিছু বলার দরকার নেই সন্ধায় একগাদা হোম ওয়ার্ক ধরিয়ে দিন যেন রাত বারোটার আগে শেষ না হয়। ব্যাস পরদিন সব ঠিকঠাক।
খেলাধুলা করুক আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে বলুন:-
বাচ্চারা যতবেশি খেলাধুলা করবে তাদের শরীর মন ততই ভালো থাকবে। এই খেলাধুলার মাধ্যমে তার প্রচুর বন্ধু হবে যাদের সাথে সে মনের আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবে। এছাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চারা ধুলো মাটি দিয়ে বেশি খেলা করতে পছন্দ করে। যার ফলশ্রুতিতে তাদের শরীরে ময়লা লেগে থাকে তাই তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা শেখাতে হবে।
তাকে পুরস্কৃত করুন:-
যেকোন ভালো কাজ পুরষ্কারের যোগ্য। তাই আপনার সন্তান ভালো কাজ করলেই তাকে পুরস্কৃত করুন। এটি দামী হতে হবে এমন নয় তাকে একটি কলম দিন, গল্পের বই কিনে দিন অথবা একটি খেলনা কিনে দিন। দেখবেন সে ভালো কাজ করার একটি বড় উৎসাহ পাবে এবং একজন চমৎকার মানুষ হয়ে উঠবে।
তাকে সহনশীল হতে এবং ভালোবাসতে শেখান:-
দেখুন বাচ্চারা প্রায়শই মারামারি করে, আপনার ছেলে আপনাকে নালিশ করলো অমুক ছেলেটা তাকে মেরেছে। এই পরিস্থিতিতে আপনি ঠান্ডা থেকে তাকে এটা বোঝান তার এমন কোন বাজে আচরণের কারণে সেই ছেলেটিকে তাকে মারতে বাধ্য হয়েছে। তখন সে সহনশীল হবে এবং আরও একটু সতর্ক হয়ে চলবে। আর শুধুমাত্র ভালোবাসা দিয়ে পুরো পৃথিবী জয় করা সম্ভব তাই সন্তানকে মানুষের প্রতি ভালোবাসা বোধ করতে শেখান। সে একদিন মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হবে।
এই ছিল আমার ব্যাক্তিগত কিছু অভিমত শিশুদের প্রতি আমাদের আচরণ নিয়ে। আশাকরি আমরা আমাদের সন্তানদের প্রতি যত্নশীল হবো। তাদের উপযুক্ত মানুষ হতে সহযোগিতা করবো।
আমি কে ?
আমি মো: ইমরান হাসান। একজন যন্ত্র প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার), যন্ত্র নিয়ে আমার পেশা আর ব্লগিং হলো আমার নেশা। খুব বেশি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, নতুন মানুষদের সাথে পরিচিত হতে আর নতুন নতুন গল্প লিখতে। আমি একজন স্বাধীন ব্লগার।
"হতে চাই মানবতার
করি মানবতার জয় জয়কার"
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমিও আমার ছোট বোনের সাথে ঠিক এই কাজটিই করি। তার কোনো ভালো কাজে অনেক প্রশংসা করি আর কোনো দুষ্টামি করে ভুল করে ফেললে তা বুঝিয়ে দি।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ছোট বোনকে আদরে আগলে রাখবেন আর ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। দোয়া রইল।
অবশ্যই ভাইয়া ধন্যবাদ।
একজন শিশু তার পিতা মাতার কাছ থেকেই সব কিছুই শিখে। শিশুদের সাথে আমাদের আচরণ,বেঁচে থাকুক সব শিশু হাসি আর আনন্দে। আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। আপনার পোস্ট পরে আমার অনেক কিছুই শেখা হয়ে গেলো। আমার ভবিষ্যৎ এ কাজে লাগবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি শিক্ষনীয় পোষ্ট করার জন্য শুভকামনা রইলো আপনার জন্য স্যার।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। 💜
খুব ভালো লিখেছেন ভাই। আমাদের দেশের অধিকাংশ বাবা মা তার সন্তানকে সেরকম সময় দেয় না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেই সন্তান হয় সোস্যাল মিডিয়া নাহলে অন্য কোনো দিকে জড়িয়ে পড়ছে। যা পরে একটি ভয়ংকর রুপ নিচ্ছে। আপনার এই অসাধারণ পোস্টটা সকল বাবা মার পড়ে অনুসরণ করা দরকার।
এবং এতো ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ @emon42 । আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আমার দুটি সন্তান রয়েছে, তাদের নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আর প্রচেষ্টা রয়েছে। আমার সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন।
আপনি নিজেও ভালো থাকবেন।
আল্লাহ্ আপনার সন্তানদের সুস্থ্য রাখুক। এবং আপনার ইচ্ছা যেন পূরণ হয়।
♥️💜♥️
শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের গুরুত্ব নিয়ে আসলে বলার কিছু নাই। কারণ শিশুর জন্ম থেকে যুবক পর্যন্ত, বিকাশ,সামাজিকীকরণ প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে পরিবারের সদস্যদেরকে। সুস্থ মানসিক বিকাশে শিশুর প্রতি যত্নশীল আচার-আচরণ করা উচিত। সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ, আমার পোস্টটি সুন্দর উপলব্ধির জন্য। দেখুন শিশুরাই আমাদের উত্তরসূরী তাই তাদের সঠিক শিক্ষা দিতে না পারলে সবকিছুই বৃথা।
আপনি খুব সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন ভাইয়া।শিশুদের সঙ্গে আমাদের সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে।কারণ বাচ্চাদের মন অনেক কোমল ও সহজ -সরল হয়।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দিদি 💚
আপনার সুন্দর মন্তব্য সবসময়ই অনুপ্রাণিত করে আমায়।