বিপদ যখন পিছু ছাড়ে না।
জীবনের গতিবিধি বোঝা বড় দায়। কখন কে কিভাবে কোথায় ঠিক কোন অবস্থায় থাকবে, তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউ জানে না। এমনিতেই দেশের ভীষণ নাজুক অবস্থা এবং বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে জীবন যাপন করছি। তারমধ্যে হঠাৎ দুটো খারাপ খবর একসাথে এসে আমার সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে। গত কিছুদিন ধরে আমার স্ত্রীর শরীরটা ভালো যাচ্ছে না, তার বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যে খবর পেলাম আমার ভাগিনা অনেকটাই মৃত্যু শয্যায়। আপনারা হয়তো জানেন আমার ভাগিনা খুব জটিল স্নায়ুবিক রোগে ভুগছে এবং তার চিকিৎসা বাংলাদেশে আর নেই। মূলত তার মারাত্মক খিঁচুনি হয় যা অনেক দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়, একবার খিচুনি হলে তার ব্রেনের অসংখ্য নিউরন নষ্ট হয়ে যায়। সে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ইদানিং তার রোগের উপসর্গের বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে খিঁচুনি প্রশমনের জন্য বেশ কিছু ঔষধ খেতে হয়। যা দিনকে দিন অতিরিক্ত ডোজ দেয়া হচ্ছে। ফলাফল স্বরূপ তীব্র গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেয়া দেয়, এক পর্যায়ে সেটা আলসারে রুপ নিতে থাকে। হঠাৎ করেই তীব্র বমি শুরু হয়ে যায় যা একেবারেই অনবরত, আর সেই সাথে খিঁচুনি তো আছেই। প্রথমেই নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়, কিন্তু তার বোমির সমস্যা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে না আসায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে রেফার করা হয়। তবে অদ্ভুতভাবে তার খিঁচুনি আর বোমি তো কমলোই না বরং তার সাথে জ্বর যোগ হয়েছে। একটা পর্যায়ে একদমই তার শরীর রেসপন্স করছিল না। সবমিলিয়ে ভীষণ জটিল অবস্থায় পরে আমাকে খবর দেয়া হয়। আমি খুব দ্রুত অসুস্থ স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চলে আসি এবং দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে থাকি। ইতিমধ্যে আরো বেশ কিছু নিকট আত্মীয় হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে যায় কারন তার অবস্থা অনেকটাই সংকটাপন্ন। জ্বর এই কমছে আবার বাড়ছে, সেইসাথে বুকে প্রচন্ড ব্যথা।
প্রয়োজনীয় ঔষধ পরতে শুরু করায় ওর জ্বরটা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে থেমে থেমে উঠছেই, ডাক্তার বেশ কিছু টেস্ট দিয়েছে যা দেখে হয়তো ফাইনাল সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে তারা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক 😕 এরমধ্যেই আমার স্ত্রীর শরীর খারাপ হতে থাকে, তাকে গতকাল ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালে। একজন তিনতলায় আর একজন ছয় তলায় ভর্তি বুঝুন এবার আমার কি অবস্থা? আমি ইদানিং বেশি দুশ্চিন্তা করতে পারছিনা, ক্রমশ নিজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলি। সারাদিন হাসপাতালে ছুটাছুটি করে রাতে আর পোস্ট লিখার মতো মানসিক শক্তি পাইনা। তাই মাঝে আর পোস্ট করতেই পারিনি। যাইহোক সবাই দোয়া করবেন আমি যেন সমস্ত রোগশোকে শক্ত থাকতে পারি এবং সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করতে পারি।
সবথেকে বড় বিষয় আমি হয়তো সৃষ্টিকর্তার খুব প্রিয় বান্দা নাহলে এতো কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করতেন না। যাইহোক সবাই দোয়া করবেন আমি যেন সবকিছু সামলিয়ে এগিয়ে যেতে পারি।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
আপনার পোস্ট পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া বিপদ যখন আসে সব দিক দিয়ে আসে। আর বিপদে ধৈর্য্য ধারণ করা সব চেয়ে উত্তম কাজ। আর পোস্ট সবাই সুস্থ হয়ে গেলে করতে পারবেন এখন আগে রোগীর দেখাশোনা করুন। দোয়া করি সৃষ্টি কর্তা তারাতাড়ি সুস্থ করে তোলবে।আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
যদিও আপনার কাছে থেকে ফোনে বিষয়টি শুনেছিলাম তবে এখন পোস্ট এর মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পেরে ভীষণ খারাপ লাগলো। ছেলেটার অবস্থা খুব খারাপ। এখন আরো দোয়া করা ছাড়া কিছুই নেই। সৃষ্টিকর্তা পছন্দের ব্যাক্তি কে বিপদে ফেলে পরিক্ষা করেন। ধৈর্য্য ধারণ করুন। আর ভাবির দিকে খেয়াল রাখবেন। সব মিলিয়ে সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
ফ্যামিলির কেউ অসুস্থ হলে আমাদের নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে। আপনার স্ত্রী এবং ভাগিনা দুই জনের অসুস্থতার খবর শুনে খুবই খারাপ লাগছে। আসলে আপনার ভাগিনার বিষয়ে বিস্তারিত পড়ে খুবই খারাপ লাগছে।যে রোগের কথা বললেন সেটা আদৌ ভালো হবে কিনা সেটাও শিওর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। যাই হোক দোয়া করি দুজনেই যেন সুস্থ হয়ে যায়। আর আপনার টেনশনও কমে যায়।
গত কালকে আপনার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছিলাম। পরিবারে কেউ অসুস্থ থাকলে মন-মানসিকতা ভালো থাকেনা। তারপরও আপনি অনেক ধৈর্য ধরে আপনার ভাগিনার পাশে থেকে চিকিৎসা করছেন জেনে ভালো লাগলো। ভাবি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ আগেই জেনেছিলাম। আপনার ভাগিনা এবং ভাবির জন্য মন থেকে দোয়া রইল ও সুস্থতা কামনা করছি। সে সঙ্গে আপনি যে টেনশন মুক্ত এবং শক্ত থাকতে পারেন এ কামনাই করছি।
আপনার পোস্ট পড়ে যতটা বুঝতে পারলাম ভাই, আপনার সত্যিই অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে দিনগুলো কাটছে। প্রথমত আপনার স্ত্রীর শরীর খারাপ, তারপরে আপনার ভাগিনা মৃত্যুশয্যায়। তবে আপনি তার যে রোগের উপসর্গ গুলো বললেন, এটা তো অনেক বেশি সিরিয়াস। যাই হোক, আপনার ভাগিনার জন্য প্রার্থনা রইলো, সে যেন সুস্থ হতে পারে।