বাস্তব জীবনের গল্প :-( সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল || পর্ব- ০৪

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বাস্তব জীবনের গল্প :-(
সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল
পর্ব- ০৪


female-4983032_640.jpg

সংগ্রহশালা

🍄 সুত্রপাত 🍄

সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক শুরু করছি। আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আবারো হাজির হলাম বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে, আজ লিখছি এই গল্পের চতুর্থ পর্ব। আপনারা চাইলে এই বাস্তব জীবনের গল্পের প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব এবং তৃতীয় পর্ব দেখে আসতে পারেন। এটা মূলত আমার এক আত্মীয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া এক বাস্তব কাহিনী। যেখানে সেই মহিলাটি টিকটকের ফাঁদে পড়ে তার জীবনকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঢেলে দেয়। যেখানে ব্যাপক কষ্ট করতে হয় তাকে। তো চলুন শুরু করি আজকের পর্ব।

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkBkWk1u8SpUsMxtnvvkpEdG9k24LGffM4vafoB8ay5hmyhYiHGqDWUzDU9pSju8cwbooSUHv4mEtxyF4bho8GTsaSC2vjZnHfafqmd4yWV8MhwjYaFY9U.png

"সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল"


সুইটি যখন বুঝতে পারলো সে পুরোপুরি বিপদে পরে গেছে তখন সে সিদ্ধান্ত নিল সাহায্য নিতে হবে কারো। যে লোকটির ভরসায় সে এই বিপদের পথে পা বাড়িয়েছে সেই লোকটি আর তাকে কোন রকম সহযোগিতা করবে না কারন তার স্বার্থ উদ্ধার হয়েছে।সে বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে তাকে। অবশেষে সে তার বোন জামাই ইমনকে সব জানায় কিন্তু এই ইমন সেদিন তাকে যেতে মানা করায় সুইটি তাকে উল্টো কড়া কথা শুনিয়ে দেয়। আজ সেই ইমনের কাছেই আগে সহযোগিতা চাইতে হবে। যদিও তার স্বামী এই কাতারেই থাকে কিন্তু তাকে তো আর মুখ দেখানোর মতো নেই। সুইটি লুকিয়ে ভয়ে ভয়ে ইমনকে সব জানায়। ইমন ভীষণ রেগে যায় কিন্তু সুইটির কান্না আর অবর্ননীয় কষ্ট শুনে সে বললো আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়। পরের দিন ভোরে সুদানি মহিলা তার গায়ে পানি ঢেলে দিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়। সুইটি হুড়মুড় করে উঠে গেছে ঘুম থেকে আর বুঝতে পারলো কপালে আজ দুঃখ আছে। চোখের নিমেষে সুদানী মহিলার খানদানি এক লাঠির আঘাত পড়লো তার পিঠে। নিমেষেই কঁকিয়ে উঠলো সুইটি আর দুচোখ গড়িয়ে জল পড়তে লাগলো। সকাল সকাল মার খাবার কারন হচ্ছে গতকাল ইমনের সাথে অনেক রাতে লুকিয়ে কথা বলতে হয়েছে, তাই সে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারেনি। সে কোন রকম নিজেকে সামলিয়ে কাজ শুরু করে দেয় কিন্তু সুদানী মহিলা রাগে গজগজ করতেই থাকে। আসলে একা হাতে চার-পাঁচ জনের কাজ করতে গিয়ে গতকাল সুইটির হাতে ঠোসা ফুটে যায় তাই আজ কাজ করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। দুপুরে খাবার এবং বিশ্রামের কিছুটা সময় পায়। খাওয়ার পর তার ঘুম চলে এসেছিল কিছুক্ষণের জন্য। তখন দরজায় করা আঘাতের শব্দ শুনতে পায়। ডোরভিউ দিয়ে তাকিয়ে দেখে ম্যাডামের ভাই নক করছে এবং চোখ রক্ত চক্ষু। তার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার সে যদি এখন দরজা খোলে তাহলে তার সাথে কি ঘটবে। সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। লোকটি বিরক্ত হয়ে চলে গেলো কিন্তু তার কুমতলব মনে রেখে দিল। সুইটি আরো কিছু সময় অপেক্ষা করে তারপর দরজা খুলে আবার কাজে যোগ দিল।

face-5450354_640.jpg

সংগ্রহশালা

এদিকে ইমন পরিকল্পনা করতে থাকে কিভাবে সুইটিকে উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়। ইমন বেশ চালাক চতুর মানুষ সে পরিকল্পনা করতে লাগলো। প্রথমেই সুইটির অবস্থান সম্পর্কে জানতে হবে এবং পরবর্তীতে সেই দালালের অবস্থান। এরপর এখন একমাত্র সুইটির স্বামী শাহীন ছাড়া আর কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারবে না। তাই শেষ পর্যন্ত তার সহযোগীতা লাগবে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে। সুইটির কাজ অনেক রাত পর্যন্ত চললো। কাজ শেষ করার পর সে আগে তার মোবাইল হাতে নিয়ে বোন জামাই ইমনকে মেসেজ পাঠায়। ইমন হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে সুইটির অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এবার সোলাইমানের অবস্থান সনাক্ত নিয়ে একটু ঝামেলায় পরে ওরা। পরে সুইটির মনে আছে বাংলাদেশে থাকাকালীন আবেগী হয়ে সোলাইমান তাকে তার অবস্থান দিয়েছিল। সেই লিংকটা ইমনকে সে দেয়। দেখা যায় সুইটির অবস্থান থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটা রাস্তা। ইমন এবার কড়া ভাষায় সুইটিকে জানায় এখন একমাত্র তার স্বামী ছাড়া আর কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারবে না। সুইটি কান্না করতে করতে বলে ইমন ভাই তুমি আমার স্বামীর সাথে কথা বলো। তাকে বুঝিয়ে বলো আমি লজ্জিত আর অনুতপ্ত, আমাকে যেন সে উদ্ধার করে নিয়ে যায় 😥।

" চলবে "

Sort:  
 2 years ago 

যাক সুইটি তাহলে নিজের ভুল বুঝতে পারলো। প্রবাসে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হয় বেশি। এতো মানুষের কাজ করতে থাকলে সুইটির জীবন শেষ হয়ে যাবে। এখন তার স্বামী ছাড়া কেউ বাচাঁতে পারবেনা। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
সুইটির মতিগতি এখনো পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছেনা। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি ঘটে।
দেখার আমন্ত্রণ রইলো ✨

 2 years ago 

আমি আগেই বলেছি আপনাদের গল্পটা শুনে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। এখন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে যে ইমন পারবে কিনা এই বিপদের হাত থেকে সুইটিকে থেকে রক্ষা করতে। খুব তাড়াতাড়ি এর পরের পর্ব দিবেন ভাই। আমি আশায় রইলাম অনেক দোয়া রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব আসছে ভাই।
ধন্যবাদ ভাই 🤗

 2 years ago 

দিনশেষে কাছের মানুষ গুলোই কাজে আসে, আমাদের কখনোই অতিরিক্ত লোভ করা ঠিক নয়, যত পর্ব যাচ্ছে গল্প আরো রোমাঞ্চকর হচ্ছে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই বিপদে পড়লে একমাত্র ঘনিষ্ঠ মানুষ ছাড়া সাহায্য করার মতো নেই।
এটা বিপদে পরলে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74