গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (প্রথম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
মিথপটাং শহর, সকাল সম্মুখভাগ।


মিথপটাং শহরে সকালের আলো ফুটেছে। হেথাং তার বিছানায় পরে পরে ঘুমাচ্ছে। তার ভাবখানা ভীষণ নবাবী, আর হবে না কেন বলুন? হাতিশালায় হাতি আর ঘোড়াশালায় ঘোড়া রয়েছে প্রচুর। তাছাড়াও গবাদিপশু রয়েছে অগুনিত। তবুও তার কোন চিন্তা নেই কারন তার লোকবলের অভাব নেই। তার আঙুলের ইশারায় লোকজন ছুটতে থাকে দিকবিদিক। আরে ছুটবে না কেন বলুন, হেথাং এই শহরের একমাত্র ধনকুবের আর ধনসম্পদ ওয়ালা লোক। ভাবছেন কিভাবে কি? আর এই হেথাং এতো বড়লোক কিভাবে হলো?

যাইহোক প্রথমেই জেনে নেই হেথাং এর ধনকুবের হবার রহস্য। হেথাংয়ের বাবা জগুলা ছিলেন একজন খনি শ্রমিক। রাজা বিশ্বময়ের সোনার খনিতে কাজ করতো। মূলত তারা সোনাসহ আরো মূল্যবান সব খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করতো এবং সেগুলো রাজার খাজানা শালায় জমা হতো। একদিন হেথাং এর বাবা খনিতে কাজ করার সময় একটা ছোট্ট অদ্ভুত পাথর দেখতে পায়। পাথরটি নীল রঙের আর অদ্ভুতভাবে তার ভেতর থেকে আলোর বিচ্ছুরণ হচ্ছে। জগুলার বুঝতে বাকি নেই এটা খুব অসাধারণ কিছু। সে আস্তে করে মাটিতে বসার ভঙ্গিমা করে বসে যায় এবং তার মাথার পাগড়ি ফেলে দেয় মাটিতে। পাগড়ি ওঠানোর ছলে সে ছোট্ট মূল্যবান রত্ন উঠিয়ে নেয়। কেউ কিচ্ছুটি টের পেল না 😄

মূল্যবান রত্ন রইলো তার মাথায়, এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। খনি থেকে সবাই বেরিয়ে আসছে এক এক করে। তবে সবাইকে পরীক্ষা করে তারপর ছাড়া হবে, কেউ কোন রত্ন চুরি করেছে কিনা। যারা পরীক্ষা করবে তাদের সামনে জগুলা দাঁড়িয়েছে, তার পুরো শরীরটা পরীক্ষা করা হয়েছে। একজন সেপাই তার পাগড়ি দেখতে চাইলে তার মূল্যবান পাথর যেখানে রয়েছে ঠিক সেখানে আঙ্গুলে চাপ দিয়ে ধরে পুরো পাগড়ি ঝাড়া দিলো। পাগড়িটা সবার সামনে একদম খুলে গেছে। এবার সবাই ধরে নিল তার কাছে কিচ্ছু নেই। সে চুপচাপ সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ালো।

এদিকে হেথাং অকর্মন্য কিন্তু বুদ্ধিমান ছেলে, কোন কাজ করতে তার ভালো লাগে না তবে মাথায় বেজায় বুদ্ধি। আর তার একটা দোষ হলো মেয়েদের দেখলে সে সুখের কল্পনায় হারিয়ে যায়। আর কোন মেয়ে তাকে দেখে একটু হাসি দিলে তার জন্য সব অকাতরে বিলিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বাপের টাকা পয়সা না থাকায় সে তেমন মেয়ে পটাতে পারে না। যাইহোক এই হেথাং হলো জগুলার একমাত্র গুনধর ছেলে। বাবা বাড়ি ফিরছে দেখে হেথাং একটু আড়ালে চলে গেল। কারন জগুলা তাকে দেখলে অনেক কড়া কথা শুনিয়ে ছাড়বে, প্রতিদিনের মতো। হেথাং আড়াল থেকে বাবার দিকে নজর রাখছে, কারন বাবা কাজ করে যে স্বর্নমোহর আনবে সেখান থেকে দুই একটা চুরি করে সেটা দিয়ে আমোদ ফুর্তি করা যাবে।

এদিকে হেথাং খেয়াল করলো বাবার মতিগতি আজ অন্যরকম সে আজ তাকে বকছে না। তার মা কে ডেকে নিয়ে কি যেন খুব আস্তে আস্তে বলছে। হেথাং খেয়াল করলো বাবা পাগড়ির ভেতর থেকে একটি নীল রঙের মূল্যবান পাথর তার মাকে দেখাচ্ছে। আর বলছে দেখো আমি আজকে কি পেয়েছি? এটা একটা অমূল্য রত্ন পাথর মনে হচ্ছে। এই বলে সেই ছোট্ট পাথরটি বের করে। সাথে সাথে চমৎকার নীল রঙের আলোর বিচ্ছুরণ চারিদিকে ছড়িয়ে পরতে থাকে। হেথাং আড়াল থেকে এটা দেখে একেবারে হা হয়ে যায় আর তার মনে মনে খারাপ ফন্দি আঁটতে থাকে।
হেথাং সিদ্ধান্ত নেয় যা করার আজকে রাতেই করতে হবে, এটাই হবে তার ভবিষ্যৎ গড়ার মহা অস্ত্র।
হেথাং অনেকটা লোভী দৃষ্টিতে পাথরটার দিকে তাকিয়ে থাকে।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 4 months ago 

যগুলার ছেলে হেথাং কে নিয়ে একটি চমৎকার গল্প লিখেছেন ভাইয়া। জগুলা খনি থেকে এত মূল্যবান একটি রত্ন যে নিয়ে আসতে পেরেছে পোস্ট পড়ে বেশ অবাক হয়ে গেলাম। তবে তার ছেলের মতিগতি একদম ঠিক ছিল না, বিশেষ করে মেয়েদেরকে নিয়ে এরকম চিন্তা ভাবনা একদম উচিত ছিল না মনে করি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরকমটা হয়ে থাকে ভাইয়া কুড়ে ছেলেরাই বেশি পরিমাণে মেয়ে ভক্ত হয়ে থাকে। যাই হোক সেটা বলতে চাচ্ছি না, আমরা আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম যেখানে আমরা জানতে পারবো হেথাং কিভাবে ধন কূপের মালিক হলো। সে কি তার বাবার সেই মহা মূল্যবান রত্নটি চুরি করেছিল নাকি নিজের পরিশ্রম করে হয়েছিল সম্পূর্ণ বিষয়টি জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা ই রইলাম পরবর্তী পর্বের জন্য ভাইয়া।

 4 months ago (edited)

চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন। গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার এধরনের ভিন্ন ধরনের গল্প গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে রত্ন পাথরটি দেখে হেথাং এর মনে মনে লোভ ধরে যায়। এখন হেথাং কি তার বাবার রত্ম পাথর চুরি করে ধনকুবের মালিক হয়েছিলেন। নাকি তার নিজের পরিশ্রমের টাকায় হয়েছিলেন এই জানার জন্য। আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

 4 months ago 

গল্পটি পরে মনে হলো ভিন্ন রকম একটি দেশের গল্প পরলাম। জগুলা বেশ বুদ্ধিমান তাই বুদ্ধি খাটিয়ে নীল পাথরটি নিয়ে এসেছে। তবে তার ছেলে কি করবে আশাকরি পরের পর্বে পরিষ্কার করে বোঝা যাবে। আপনার এধরনের ভিন্ন রকম গল্প গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। মনে হচ্ছে সামনে অনেক কিছু অপেক্ষা করছে। চমৎকার গল্পটি আমাদের কে উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা নিয়ে চমৎকার একটি গল্প উপহার দিয়েছেন। আপনার এই ধরনের গল্প গুলো খুবই ভালো লাগে আমার কাছে। তার কারন হলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপনা করেন। হেথাং সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা করার আজকে রাতেই করতে হবে, এটাই হবে তার ভবিষ্যৎ গড়ার মহা অস্ত্র। হেথাং লোভী দৃষ্টিতে পাথরটার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমার মনে হচ্ছে হেথাং পরবর্তী অংশে পাথর চুরি করতে পারে। আশায় থাকলাম আপনার পরবর্তী অংশের অপেক্ষায়।

 4 months ago 

খুবই সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো, রহস্যময়ী এই গল্পটি। আসলে জগুলা অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে নীল পাথরটি নিয়ে এসেছে এবং তার ছেলে কি করবে সেটাই জানার বিষয়। দেখা যাক আগামী পর্বের কি হয়,সেই পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষা রইলাম। আসলে এ ধরনের গল্প অনেক আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। আপনার গল্পটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে ভাইয়া।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনার গল্পগুলো পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে৷ সবসময় আপনি খুব সুন্দর কিছু গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করে আসছেন৷ এই গল্পটিও একেবারে অসাধারন হয়েছে। এই গল্পের মধ্যেও রত্ন পাথরটি ছিল সেটি দেখে হেথাং এর মনে অনেক লোভ সৃষ্টি হয়ে গেল৷ আসলে এরকম মূল্যবান কিছু দেখলে যেকারো লোভ চলে আসে৷ তেমনি এখানে হেথাং এরও লোভ চলে এসেছিল৷ তারপর পরবর্তী পর্বের মাধ্যমে এটি জানার আশা রইলাম যে সে আসলে কি এটি চুরি করে ধনী হয়েছিল নাকি নিজ থেকে ধনী হয়েছিল৷

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 65560.09
ETH 3467.72
USDT 1.00
SBD 2.68