ভ্রমন অভিজ্ঞতা :- কুমিল্লা থেকে ঢাকা ট্রেন ভ্রমণ। || ১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য 💌
ভ্রমন অভিজ্ঞতা
কুমিল্লা থেকে ঢাকা ট্রেন ভ্রমণ
কুমিল্লা থেকে ঢাকা ট্রেন ভ্রমণ
🍄 সুত্রপাত 🍄
সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক শুরু করছি। আশাকরি ভালো আছেন। আমি আজ যে ভ্রমন কাহিনী লিখছি তা মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। সময়ের অভাবে লিখতে পারিনি, যাক আজ লিখছি। ঈদে কুমিল্লা গিয়ে মোটামুটি বেশ কিছুদিন ছিলাম সেখানে, গত দশ তারিখে ঢাকা ফিরে আসার জন্য ট্রেনের টিকিট পাই উপকূল এসি চেয়ারে। ভোর ৬.২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল তাই ঠিক সকাল ছয়টায় স্টেশনে চলে আসি ঈলমাদের নিয়ে। তবে হয়ত অনেকেই জানেন আমার ছেলে মেয়ে দুজনেই আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। স্টেশনে আসার কিছু সময় পর ইয়ান বমি করতে শুরু করে। যা দেখে আমরা বেশ ঘাবড়ে যাই। আমার স্ত্রী বলতে থাকে আমি যেন আজ ঢাকা না যাই কারণ ইয়ান বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে আমরা যদি ঢাকা ফিরে আসি তাহলে সবাই সুস্থ হয়ে যাবে। তাই তাকে সান্তনা দিলাম এবং বিচলিত হতে মানা করলাম এবং ঢাকা ফিরে আসার সিদ্ধান্তে অটল থাকলাম। আমি আমার বাচ্চাদের অসুস্থতায় সর্বোচ্চ যত্নশীল থাকার চেষ্টা করি। জ্বর বমিসহ অন্যান্য ঔষধ সব সময় সাথেই থাকে। তাই দ্রুত ইয়ানকে বমির জন্য জোফরা সিরাপ খাইয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর সে ঘুমিয়ে পরল। অবশেষে ৬.৩০ মিনিটে ট্রেন আসলে ওদের নিয়ে ট্রেনে উঠে পরলাম।
" ট্রেন ভ্রমণ শুরু "
অবস্থান:- লাকসাম, কুমিল্লা
অবশেষে দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে ট্রেনে উঠে পরলাম। নির্দিষ্ট আসন খুঁজে নিয়ে বসে পরলাম সবাই। ঈলমা বেশ খুশি ছিল কারণ ট্রেন ভ্রমণ ও খুব কম করেছে। আর আমাদের ছোট সদস্য ঘুমে বিভোর হয়ে রইলো তার মায়ের কোলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসি ছেড়ে দিল দায়িত্বরত কর্মকর্তা। বেশ উপভোগ্য একটি পরিবেশ সৃষ্টি হলো তখন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বিড়ম্বনা শুরু হলো এসি নিয়ে। বাইরে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আবহাওয়া ভীষণ ঠান্ডা হয়ে গেল। ইয়ানকে একটি মোটা তোয়ালে জড়িয়ে নিল ইমু (স্ত্রী) আর ঈলমাকে একটি কাঁথা জড়িয়ে দিলাম আমি। বৃষ্টির কারণে ঠান্ডার তীব্রতা বাড়তে থাকলো। সবাই ঐ কর্তব্যরত অফিসারকে খুঁজতে থাকি কিন্তু তাকে কোথাও না পেয়ে হতাশ হই সবাই। তখন আমার মাথায় একটি বুদ্ধি এলো আমি এসির সমস্ত জানালা গুলো লাগিয়ে দিলাম। এতে ঠান্ডা বাতাস বাইরে বের হতে পারলো না এবং ঠান্ডা ভাব বেশ খানিকটা কমে গেলো। সবাই ধন্যবাদ জানালো আমায়। পরবর্তীতে ঐ কর্মকর্তা আসলে সবাই মোটামুটি তাকে আচ্ছা করে কতগুলো কথা শুনিয়ে দিল এবং এসি বন্ধ করতে বললো।
অবস্থান:- লাকসাম, কুমিল্লা
" ইয়ানের জেগে ওঠা "
![]() | ![]() |
---|
অবস্থান:- আখাউড়া
বেশ দুই ঘন্টা ঘুমানোর পর ইয়ান জেগে ওঠলো আড়মোড়া দিয়ে। ভাগ্য ভালো ততক্ষণে এসি বন্ধ হয়েছে আর খুব ভালো একটি পরিবেশ বিরাজ করছে ট্রেনে। ইয়ানকে চেয়ারের সাথে সংযুক্ত ছোট টি টেবিলের উপর বসিয়ে দিলাম। যাকে নিয়ে সকালে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলাম এখন সে মোটামুটি দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছে। ভালোই লাগছিল ওর দুষ্টুমি গুলো।
" ঈলমার খুনসুটি "
![]() | ![]() |
---|
অবস্থান:- আখাউড়া
তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম ঈলমা বেশ উপভোগ করছে ট্রেন ভ্রমণ। ঈলমার জন্য একটি চিকেন বার্গার এবং কফি অর্ডার দিলাম। ও বেশ তৃপ্তি সহকারে খেয়েছে। তারপর সে মোবাইল গেমস খেলতে বসে গেলো কারন সময় তো কাটাতে হবে। এভাবেই প্রায় দুপুর একটা বেজে গেছে।
" যাত্রা সমাপ্তি "
দুপুর ঠিক একটা বিশ মিনিটে ট্রেন বিমান বন্দর স্টেশনে প্রবেশ করলো। তার ঠিক আগে আগেই ইমুকে সবকিছু গুছিয়ে নিতে বললাম। সে গুছানো শেষ করার পর পরই আমরা নেমে পরলাম সবাই। নামার পরপরই ছোট একটি ট্যাক্সিক্যাব নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
"পরিশেষে কিছু কথা"
আসলে শিশুরা হঠাৎ যেকোন আবহাওয়ার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনা। তাই অসুস্থ হয়ে পরে। তারা অসুস্থ হলে বিচলিত না হয়ে উপসর্গ অনুযায়ী ঔষধ দিতে হবে। সবথেকে ভালো হয় তাদের কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধ সবসময়ই সাথে রাখা। এতে হঠাৎ তারা অসুস্থ হলে যাতে তাদের খাওয়ানো যায়। সর্বোপরি ভ্রমনকালে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আজ এখানেই শেষ করলাম। কিন্তু ফিরে আসবো খুব তাড়াতাড়ি ইনশাআল্লাহ।
ভাইয়া,ট্রেনে চড়ার দারুন অভিজ্ঞতা আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।ভাইয়া, বাচ্চারা যেখানে সব সময় থাকে সেইখানের পরিবেশে থাকার অভ্যস্ত হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে যখন কোথাও যাওয়া হয় সেইখানের পরিবেশ বা আবহাওয়া সহজে মানিয় নিতে পারে না তখনই বাচ্চাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ইয়ান বমি করছে লেখাটি পড়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম আল্লাহর রহমতে ওষুধ খাওয়ার পরে আপনার বাবু সুস্থ হয়েছে দেখে খুব ভালো লাগছে। ট্রেনে ভ্রমণ টা খুবই নিরাপদ এবং বাচ্চাদের জন্য আনন্দদায়ক একটি ভ্রমণ।ভাইয়া, ট্রেনে ভ্রমনে অভিজ্ঞতা মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
সত্যি বলতে আপনার চমৎকার মন্তব্যগুলো সবসময়ই অনুপ্রাণিত করে। সত্যিই তাই আপু বাচ্চাদের নিয়ে বেশ চিন্তায় পরতে হয় মাঝে মাঝেই তবে উপর ওয়ালা তাদের রক্ষা করেন সবসময়ই। আমরা তো শুধু মাত্র দায়িত্ব পালন করতে পারি।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1527881415441977344?t=J_iiW2MnsONAsVyYnUEcfA&s=19
ট্রেন ভ্রমণ নাম শুনেই বেশ মজাদার এবং আনন্দদায়ক ভ্রমণ মনে হচ্ছে। আমি নিজেও ট্রেন ভ্রমণ অনেক পছন্দ করি। তবে ট্রেনে নোয়াখালী যেতে যেতে আমাদের প্রায় একটা-দুটোর মতো বেজে যায়। কিন্তু গাড়ি দিয়ে গেলে দশটা থেকে এগারটার মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যাওয়া যায়। তাই এই সবকিছু বিবেচনা করে ট্রেন ভ্রমণ খুব কম করা হয়। তবে এরকম আলাদা কিছু আনন্দ পাওয়ার জন্য অবশ্যই ট্রেন ভ্রমণ করার ইচ্ছা আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য এবং অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
সত্যি বলতে সময় একটু বেশি লাগলেও ট্রেন জার্নি বেশ আনন্দদায়ক।
ভাইয়া প্রথমে আপনার ছেলে ইয়ান বাবুর জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি কিছুটা সুস্থতা লাভ করার জন্য। কেননা ওর ফটোগ্রাফি টি দেখে মনে হচ্ছে ও বেশ ভালই আছে। তবে এ কথা ঠিক ভাইয়া, নতুন পরিবেশের আবহাওয়ায় গেলে ছোট ছোট সোনামনিরা একটু আধটু অসুস্থ হয়ে থাকে। এ বিষয়ে আমার বেশ ভাল অভিজ্ঞতা আছে। তবে আপনারা সবাই মিলে ট্রেনে খুব আনন্দ উপভোগ করে ঢাকায় ফিরে এসেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। এখন ঢাকায় ফেরার পর পুরো পরিবার যেন সুস্থ ও ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করছি। কুমিল্লা থেকে ঢাকা ট্রেন ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই ভীষণ চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
অবশেষে ঢাকা ফিরে আসতে পেরেছি এটাই সবথেকে বড় বিষয়। আমার পুরো পরিবারের জন্য দোয়া করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
পুরো পরিবারকে একদম বিন্দাস লাগছে। আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে আপনার ছেলে-মেয়েরা অসুস্থ হলেও তাদেরকে দেখে বুঝতে পারছি খুব খারাপের কিছু হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। ঢাকা থেকে কুমিল্লা ট্রেন ভ্রমণ কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগলো। এটা জেনে বেশি ভালো লাগছে আপনার নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন। একটা বিষয় খুব ভাল বলেছেন জ্বর মাথাব্যাথা কমনকোল্ড এই ধরনের প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলো আমাদের প্রত্যেকেরই বাসায় রাখা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে মুল্যবান কিছু কথা শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বাচ্চা দুটো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। যাক শেষ পর্যন্ত সুস্থভাবে ফিরে আসতে পারলাম তাই শুকরিয়া আদায় করছি।
ছোট বাচ্চাদের নিয়ে দূরের পথে যাত্রা করা আসলেই অনেক দুশ্চিন্তার একটি ব্যাপার। তবে এক্ষেত্রে ট্রেন জানি আমি বেশ নিরাপদ এবং সুবিধাজনক মনে করি। আপনার উপস্থিত বুদ্ধিতে এসি বিরম্বনা কাটিয়ে উঠলেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলেই আপনার মত আমিও মনে করি যাত্রাপথে সাধারণ কিছু ঔষধ সবসময় সঙ্গে রাখা উচিত। ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
আসলে যাত্রা পথে বিভিন্ন বিভ্রাট হবেই তবে বুদ্ধি খাটিয়ে সব মোকাবেলা করতে হবে।
আর কিছু ঔষধ সবসময়ই সাথে থাকতে হবে।
সতর্কতার সাথে আনন্দ ভ্রমণ ।সাথে ছেলে মেয়েদের খুনসুটি, ম্যাডামের গম্ভীর কণ্ঠে দিকনির্দেশনা ,সব মিলিয়ে আপনার ভ্রমণটি অনেক উপভোগ করেছেন বলে আমার মনে হচ্ছে। ভালই ভালই গন্তব্যে পৌঁছতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটির চমৎকার মূল্যয়নের জন্য। ভ্রমনটি উপভোগ্য ছিল তবে বাচ্চাদের অসুস্থতায় বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।
মহান আল্লাহ আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখুন এই কামনা করি। আমিন
সেইরকম সবাই মিলে একসাথে ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। অনেক মজা করেছেন দেখছি। কিছু ভালো সময় কেটেছে আপনার মনে হচ্ছে। আপনি ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন দেখে আমার ইচ্ছে করছে এখনই আমি ট্রেনে ভ্রমণ করি। অনেকদিন আগে ট্রেন ভ্রমণ করেছিলাম। আপনার এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
সত্যিই ট্রেন ভ্রমণ বেশ ভালো উপভোগ করলাম।
তবে ছেলেটার অসুস্থতা একটু ঝামেলার সৃষ্টি করে।
পরিবারের সবাইকে একসাথে দেখে খুবই ভালো লাগছে। ইলমা মামনি ইয়ানকে দেখে বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে ইলমা অনেক খুশি দেখে বোঝা যাচ্ছে। আমার কাছে সব থেকে ট্রেন জার্নিকে নিরাপদ বেশি মনে হয়। ট্রেন জার্নি করার সময় আলাদা এক অনুভূতি কাজ করে
আপনি খুব সুন্দর ভাবে ঢাকা থেকে কুমিল্লা ট্রেন জার্নি এর পুরো বিষয় আমাদের সাথে উপস্থাপনা করেছেন। তবে ট্রেনে যদিও বমি কম হয় তবুও বমির ঔষধ খাওয়াই ভালো করেছেন ।আপনাদের ট্রেন জার্নি র কাহিনী পরে ভালো লাগল ভাইয়া।
জি আপু ট্রেন জার্নি আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগে। এটা সবথেকে নিরাপদ এবং আরামদায়ক জার্নি। ঈলমা খুশি ছিল তবে ইয়ান কিছুটা অসুস্থ ছিল।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য 🥀
ভালো থাকুন দোয়া রইল।
ট্রেন ভ্রমণ বেশ মজার। তবে ঈদের সময়ে ট্রেনগুলোর সিডিউল বিপর্যয় হলে সত্যি সেটা বিরক্তির সীমা অতিক্রম করে। কুমিল্লা থেকে ঢাকা ট্রেনে আগমন টা মোটামুটি ঝামেলা বিহীন ছিল। ধন্যবাদ ভাই আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
জি ভাই মোটামুটি ঝামেলাহীন ভ্রমন ছিল তবে বাচ্চাদের অসুস্থতায় একটু বিভ্রাট ঘটেছিল।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
দোয়া রইল 🥀