বাস্তব জীবনের গল্প :-( সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল || পর্ব- ০৫

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

বাস্তব জীবনের গল্প :-(
সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল
পর্ব- ০৫


female-4983032_640.jpg

সংগ্রহশালা

🍄 সুত্রপাত 🍄


প্রিয় #amarbanglablog বাসী 🤗 আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ☺️ বেশ বেশ ঝামেলায় ছিলাম সারাদিন কারন কোন মতেই স্টীমিটে ঢুকতে পারছিলাম না। এই মাত্র ঢুকে পোস্ট করার চেষ্টা করছি। আবারো হাজির হলাম বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে। আজ এই গল্পের পঞ্চম পর্ব শুরু করছি। আগের চারটি পর্বে আপনাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি আর কিছু মানুষ অপেক্ষায় রয়েছেন পরবর্তী পর্বে কি ঘটতে যাচ্ছে। গল্পটি হলো আমার এক আত্মীয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব কাহিনী যার প্রেক্ষিতে গল্পটি লিখা কারন আমি মনে করি এর থেকে শেখার অনেক কিছু রয়েছে। চলুন শুরু করি আজকের পর্ব।

" সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল "


সুইটি নিজের ফাঁদে নিজেই পড়েছে এখন আর কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছেনা আটকে রয়েছে কাতারে সুদানী এক দজ্জাল মহিলার খপ্পরে যেখানে শারীরিক অমানবিক পরিশ্রমের সাথে সাথে যৌন হয়রানির সম্ভবনা রয়েছে। এখন একমাত্র কিছুটা ভরসা বোন জামাই ইমনের উপর। গতরাতে ইমনকে ভীষণভাবে অনুরোধ করেছে তাকে যাতে কোনভাবে উদ্ধার করার ব্যাবস্থা করে। এদিকে ইমন ভীষণ বিচক্ষণতার সাথে সুইটির অবস্থান এবং ঐ দালাল সোলায়মানের অবস্থান বের করতে হয়। ইমন কিছুক্ষণ চিন্তা করে সুইটির স্বামীকে ফোন করে পুরো ঘটনা জানায়। প্রথমে শাহীন ক্ষোভে ফেটে পড়ে কিন্তু সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে সে কিছুটা দমে যায়। এবার ইমনের বিচক্ষণতায় শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। ইমন সুইটির অবস্থান এবং ঐ দালালের অবস্থান শাহীনকে দেয়। তাছাড়া সুইটির সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শাহীনকে সরবরাহ করে যা ধরে শাহীন এগুতে পারে। কাতারের আইন ভীষণ করা নিয়মের বাইরে শাহীন কিছুই করতে পারবেনা। শাহীনের কাছে ঠিকানা থাকা সত্ত্বেও সে সুইটির সাথে দেখা করতে পারবেনা। দুরুত্ব মাত্র দশ মিনিটের হাঁটা রাস্তা। কাতারে মোটামুটি অনেক মানুষ চেনা রয়েছে শাহীনের। তাই প্রথমেই তার বন্ধু লিটনকে পুরো ঘটনাটা জানায়। লিটন দীর্ঘদিন কাতারে থাকায় তার বেশ প্রভাব রয়েছে সবদিক থেকেই। লিটন আর শাহীন প্রথমেই সেই দালালের কাছে চলে যায় সরাসরি কারন ইমন আগেই দেশে থেকেই তার অবস্থান এবং ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে দেয়েছিল। এবার ঠিক দালালের সামনে গিয়েই তাকে ফোন করে লিটন এবার সেই দালাল যখন বুঝতে পারলো আর পালানোর কোন পথ নেই। তখন সে আমতা আমতা করতে করতে বলে সুইটি তাকে বলেছে তার স্বামী নেই এবং ভীষণ অভাবে পরেছে তাই তাকে সোলায়মান সহযোগিতা করেছে। কিন্তু তার ম্যাডাম তার উপর কেন অত্যাচার করছে সে বুঝতে পারছেনা। তবে সে কথা বলে সবঠিক করে নেবে। এবার লিটন আর শাহীন ক্ষেপে গিয়ে বলে তার হাড্ডি গুঁড়ো করে দেশে পাঠিয়ে দেবে। এবার দালাল বাবাজি বেশ ভয় পেয়ে যায়। সে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় ম্যাডামের সাথে কথা বলে দেশে পাঠানোর ব্যাবস্থা করবে।

face-5450354_640.jpg

সংগ্রহশালা

ওদিকে সুইটি ভয়ে ভয়ে কাজ করে যাচ্ছে আর তাড়াতাড়ি আয়রন করতে গিয়ে হাত পুড়ে ফেলে অনেকটা। কিছুক্ষণ দালাল শাহীন আর লিটনকে নিয়ে ঐ সুদানী মহিলার বাসায় পৌঁছায়। সুদানী মহিলা পুরো ঘটনাটা শুনে ভীষণ ক্ষেপে যায় এবং বলে নতুন লোক না পেলে আর জরিমানা না দিলে তাকে ছাড়বে না। সুইটিকে এক ঝলকের জন্য তাদের সামনে আনা হয়। শাহীন এক ঝলক তার স্ত্রী দিকে তাকিয়ে রিতিমত তার কলিজা কেঁপে ওঠে। ছেড়া আর ময়লা একটা মেক্সি পরা আর কি চেহারা হয়েছে তার। চোখের নিচে কালি জমেছে তার। যে প্রতি মাসে নতুন জামা কিনতো বেশ কয়েকটি আর চমৎকার সেজেগুজে থাকতো আজ তার কর্মফল ভোগ করছে সে। ঐদিনের মতো আলোচনা ওখানেই শেষ করতে বাধ্য হলো ওরা কারন সুদানী মহিলা বেশ রেগে গিয়েছিলেন। লিটন আর শাহীন আজকের মতো বিদায় নিল। লিটন ঐ দালালকে দুই একদিনের মধ্যেই পুরো ব্যাপারটা মিটমাট করে সুইটিকে দেশে ফেরত না পাঠালে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে আর মাইর ফাও হিসেবে দেয়া হবে। শাহীনরা ওখান থেকে যাওয়ার পর সুদানী মহিলা দ্বিগুণ আক্রোশে ফেটে পড়ে এবং তার হাতে থাকা লাঠি কয়েক ঘা সুইটির গায়ে পরে। ঐ রাতে সুইটি ব্যাথা, যন্ত্রনা আর দুশ্চিন্তায় ঘুমুতে পারেনি 🥺।


" চলবে "

Sort:  
 2 years ago 

সুইটির স্বামী সুইটির করুণ অবস্থা দেখে বুঝতেই পারছিলো না কি করবে। যেখানে সুইটি প্রতিমাসে নতুন নতুন জামা কাপড় পাল্টাতো। আসলে সব কিছুই আমাদের কর্মফলের কারণে হয়ে থাকে ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি গল্প উপহার দেয়ার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
সামনের পর্ব আসছে খুব তাড়াতাড়ি।
আশাকরি পড়বেন।

 2 years ago (edited)

দেখতে দেখতে পর্ব ৫চলে এসেছে। ভীষণ ভালো লাগলো সর্বোনাশা টিকটক এর গল্পটি।সুদানী মহিলা ভীষণ রাগি মনে হচ্ছে ভালোই মেরেছে। তবে মহিলাটির জীবনে একটা ভালো শিক্ষা হয়েছে। আশাকরি এরপর মহিলাটি ভালো হয়ে যাবে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

 2 years ago 

দেখা যাক সামনের পর্বে কি ঘটে।
অপেক্ষায় থাকো।
খুব তাড়াতাড়ি সামনের পর্ব আসছে।

 2 years ago 

পাপের প্রায়শ্চিত্ত যেন পাচ্ছে সুইটি। তার স্বামীও তাহলে জেনে গেল, ফাইনালি সেখানে গেল সুইটির সাথে দেখা করতে। খুব শীঘ্রই হয়তো সুইটি দেশে ফিরতে পারবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
সুইটির স্বামী আসলে একজন ভালো মানুষ।
তাই তার সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে সে কষ্ট হলেও মেনে নিও সবকিছু।
সামনের পর্বে সুইটির আসার ব্যাবস্থা হবে।

 2 years ago 

যেমন কর্ম তেমন ফল। তবে কি বলবো ভাই এই ঘটনা পড়ে। যত দিন যাচ্ছে তত জেনো শিক্ষিত মানুষগুলো কেমন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সামাজিক অবস্থান দিন দিন অবক্ষয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। মানুষটার সময়ের মূল্য কে আর মূল্যায়ন করতে পারছে না নতুন নতুন চমক এর কবলে পড়ে।

 2 years ago 

সামাজিক বিভিন্ন অবক্ষয়ের কারণে আজ অনেক কিছু হুমকির মুখে পড়েছে।
সচেতন না হলে বেশ বিপদে পরতে হবে সবাইকে।

 2 years ago 

এরকম একটা পরিস্থিতিতে স্ত্রীকে দেখতে পেয়ে একজন ছেলের কি অবস্থা হতে পারে তা ভাবতেই খারাপ লাগছে, শেষ পর্যন্ত কি হয় তা জানতে হবে।

 2 years ago 

আসলে শাহীন ভীষণ ভালো মানুষ তাই নিজেকে সামলিয়ে নিয়েছে একমাত্র তার সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে।
আসলে সেও পরিস্থিতির শিকার।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60030.46
ETH 2413.07
USDT 1.00
SBD 2.43