পরিবর্তনশীল প্রজন্ম || নিজেকে মানিয়ে নিতেই হবে।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
পরিবর্তনশীল প্রজন্ম
নিজেকে মানিয়ে নিতেই হবে

পরিবর্তনশীল প্রজন্ম.jpg

সংগ্রহশালা

আপনি যখন আমার পোস্টটি পড়ছেন আমি জানিনা আপনার বয়স কতো কিংবা কোন প্রজন্মের মানুষ আপনি। হতে পারে আপনার বয়স পনেরো থেকে বিশ। তাহলে এই পোস্টটি কিছুটা আপনার উপলব্ধি এনে দেবে, ভালো মন্দ বোঝার। আর যদি আপনার বয়স ত্রিশের উর্ধ্বে তাহলে আপনার অনুভূতি আর চিন্তার মাঝে আমি নতুন কিছু সংযুক্ত করতে চলেছি। কারনে যুগের বা প্রজন্মের পরিবর্তন ঘটেছে যাদের চিন্তা চেতনার সাথে আপনার বিস্তর ফারাক। তবুও মেনে নেয়ার চেষ্টা আপনাকে করতেই হবে।

যদি আমি আপনাকে প্রশ্ন করি আপনি পিতা-মাতা বা শিক্ষকের হাতে কতগুলো মার খেয়েছেন? হয়তো হেসে জবাব দেবেন অসংখ্য বার। তখন একটি কাজ করার আগে হয়তো দশবার চিন্তা করে, এরপর অনুমতি নিয়ে করতেন। তবুও ভয় থেকে যেতো কোন ভুল হয় কিনা। গুরুজনদের দেখলে সম্মান করা তখন ছিল একটা রীতিনীতি। না সেই ভয় আর সম্মান কখনো বিফলে যায়নি, আমি বলবো এই অনুশাসন আমাদের মানুষ হিসেবে তৈরি করেছে। ভেতরে চিন্তা চেতনা আর বোধবুদ্ধির প্রখরতা অন্তত এই প্রজন্মের থেকে বেশি।

এবার আসুন নতুন প্রজন্মের কথায় তারা বুদ্ধিমান, অতিমাত্রায় আবেগ প্রবন এবং সংবেদনশীল। না চমকে উঠবেন না নতুন প্রজন্মের মানুষ, একটু ভাবতে বসুন। কথায় কথায় খাবার না খাওয়ার ধমক কিংবা অবশেষে আত্মহত্যার হুমকি কতবার দিয়েছেন পিতা-মাতা কে ? হয়তো এবার হাসি পাচ্ছে আপনার। বিশ্বাস করুন পিতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতেই ভয় পেতাম আর মায়ের কাছে শতবার আবদার করে নিজের চাহিদা পূরণ করতে হতো। কিন্তু সত্যিই অবাক লাগে যখন শুনি নিজের চাহিদার একটা বাইক না পেলে আপনি আত্মহত্যার হুমকি দেন কিংবা নামিদামি কলেজে ভর্তি হতে না পারার শোকে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়ে অনশনে চলে যান। একটি বার কি কখনো চিন্তা করেছেন আপনার বাবার পায়ে জুতোটা ঠিক আছে কিনা কিংবা তার চশমার পাওয়ার কতটুকু বেড়েছে।

হয়তো এগুলো এখন আপনার ভাববার বিষয় নয়, কিন্তু অবাক হবেন জেনে আমরা নিজের টিফিন খরচের টাকা জমিয়ে ছোট বোনকে খেলনা কিনে দিতাম কিংবা দাদার জন্য একটু মিষ্টি বাতাসা। এখন হয়তো আমার লেখা আর আপনার পড়তে ইচ্ছে করছেনা। না ব্যাপারগুলো আপনাকে দোষারোপ করার জন্য বলছিনা, শুধুমাত্র কিছুটা বোঝার জন্য বলছি। এখন এমন এক যুগে আমরা বসবাস করি যেখানে ছোট্ট একটি সমস্যার সমাধান করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় এমনকি পিতা মাতাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। ঊশৃংখলতা মাঝে মাঝেই এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছায় যখন জন্মদিনের নাম করে পঁচা ডিম আর ময়দা মাখিয়ে দেয়া হয় নাক মুখে, আর ক্লাস পার্টির নাম করে অপসংস্কৃতির ভয়াল থাবা। ভাবছেন এগুলো তো এখনকার দিনের স্বাভাবিক ঘটনা, মেনে নেয়া উচিত। আমরা কোন দিন শিক্ষকদের ভয়ে অভদ্রতা করার সাহস পাইনি। কিন্তু এখন শিক্ষক যদি ধমক দেন তাকে উল্টো ধমক শুনতে হয়, এমনকি মার খাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

তবে এই ঘটনাগুলো কখনো স্বাভাবিক বিষয় নয় অন্তত সুস্থ মানসিকতার দিক থেকে। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে বোঝাতে গেলেও বিপদে পরতে হয়। একমাত্র তাদের নিজের ভেতরে যতক্ষন না ভালো মানসিকতা বেড়ে উঠছে ততক্ষণ সত্যিই সম্ভব নয় পরিবর্তন আনার। তবে পরিবারকে একমাত্র বড় ভূমিকা পালন করতে হবে তাদের ভেতর শুভ বুদ্ধির বিস্তার লাভ করার জন্য। তবে মারামারি করা যাবেনা, তখন হয়তো বিপদ বাড়বে। তার থেকে আপনি তার বন্ধু হয়ে যান এবং ভেতরে ভেতরে তাকে পরিবর্তন করার যুদ্ধে নামুন। হয়তো একদিন ভালো মানুষ হয়ে উঠবে আপনার সন্তান। আমি বলি এখন প্রজন্মের সন্ধি বা বন্ধুত্ব করার যুগ। তাই নিজেকে মানিয়ে নিন প্রজন্মের প্রয়োজনে।

"সুস্থ মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠো নতুন প্রজন্ম"

Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল, সত্যি ভাইয়া আমাদের সবারই উচিত যুগের সাথে মানিয়ে চলা।আসলে আমাদের সমাজ পরিবর্তনশীল। তাই তো আগের যুগের ছেলেমেয়েরা শিক্ষক, বাবা মাকে অনেক সম্মান করতো। কিন্তু এখন শিক্ষক, বাবা মারা সব সময় ছেলে মেয়েদের ভয়ে থাকে। আর কিছু হলেই আত্মহত্যার হুমকি দেয়। বাচ্চারা এমন বিরক্ত করে না মেরে পারা যায় না। যাইহোক ভাইয়া চেষ্টা করি সব সময় মানিয়ে নিতে, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

জি আপু এখনকার বাচ্চারা মানসিক দিক থেকে অনেক পরিবর্তিত, তাই তাদের সাথে মানিয়ে নিয়ে চেষ্টা করতে হবে মানুষ হিসেবে তৈরি করার জন্য।

 2 years ago 

পরিবেশ এবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে জীবন অতিবাহিত করাটা উত্তম। আসলে বলা হয়ে থাকে যায় দিন অনেক ভালো, আসে দিন খারাপ । আগে ছেলে মেয়েরা বয়স্ক লোকদের এবং পিতা মাতাদের অনেক শ্রদ্ধা এবং সম্মান করতো। বর্তমান সময়ে শ্রদ্ধা এবং সম্মান কোনটাই করে না এইটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। আর বর্তমান সময়ে আত্মহত্যা করাটা যেন ছেলে খেলা হয়ে গেছে। একটু রাগারাগি হলেই আত্মহত্যা করছে। তাই আমাদেরকে সকল বিষয় মানিয়ে নিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হবে। এত চমৎকার বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

জি এখন আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। গত এক বছরে এমন ৫৭০ টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কারন গুলো ভীষণ তুচ্ছ ব্যাপার ছিল।

 2 years ago 

আমার মনে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে সুস্থ্য মানসিকতা! তাদের মানসিকতা একদম চরম বিপর্যের দিকে! আগে তো স্যারদের সামনে যেতেই ভয় পেতাম, আর আম্মার কাছে লুকিয়ে টাকা চাইতাম, কখনো বাবার কাছে টাকা চাওয়ার সাহস পায়নি! এখনও বাবার কাছে চাইনা! তরুণ প্রজন্মকে অনুশাসন, ধর্মীয় রীতিনীতি পালন, শ্রদ্ধাবোধ, শিষ্টাচার ইত্যাদি বিষয়গুলো না শেখানোর ফলে এমন হচ্ছে! আরও খারাপ হবে অবস্থা! যদি না ছেলে মেয়েদের যথাযথ আদর্শে গড়ে তুলতে না পারে।

 2 years ago 

হ্যা বর্তমান প্রজন্ম অনেক আলাদা, তাদের অনেক নৈতিক শিক্ষার অভাব রয়েছে। মানিয়ে নিয়ে আর তাদের বুঝিয়ে এগিয়ে চলতে হবে।

 2 years ago 

আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু তুলে ধরেছেন। আসলে আগেরকার সময় মানুষ পিতা-মাতা এবং শিক্ষককে অনেক সম্মান করতেন। তবে শিক্ষকের হাতে এবং মা-বাবার হাতে অনেক মার আমরাও খেয়েছি। তবে এখনকার প্রেক্ষাপটে আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু কথা লিখেছেন। এখনকার সময় অনেক শিক্ষক ছাত্রর হাতে অপমান হয়েছে। তবে সবাই ছাত্র জীবনে শিক্ষক এবং মুরুব্বিদের সাথে খুব ভালো ব্যবহার করা উচিত। খুব সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এখন আর শিক্ষকদের এতো সম্মান করে না ভাই। উল্টো সুযোগ বুঝে অপমান করে। আমরা চেষ্টা করবো আমাদের সন্তানদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। আপনি খুব বাস্তব কিছু কথা শেয়ার করেছেন। আগেকার সময় মানুষ শিক্ষকদের সাথে এবং মা-বাবার সাথে অনেক সম্মান দিয়ে কথা বলতেন এবং তাদেরকে অনেক ভয় পেতেন। এখনকার সময় সেই ভয়গুলো আস্তে আস্তে কমে গেছে। অনেক ছেলের কাছে পিতা-মাতা এবং শিক্ষক লাঞ্ছিত হচ্ছে। তবে সবাই পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। খুব সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এখনকার বাচ্চারা অনেক পরিবর্তিত মানসিকতার , তাই তাদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। তাছাড়াও তাদের যতটুকু সম্ভব বুঝিয়ে মানুষের কাতারে আনতেই হবে।

 2 years ago 

ভাই প্রতিটি কথা যুক্তিযুক্ত বলেছেন ৷ এটা সত্যি যে এখনকার যুগ কলিযুগ ৷ একটা সময় ছিল গুরুজন বা বড়দের মুখে কথা তো দুরের কথা সবে তে ছিল রীতিনীতি ৷ তবে এখনকার জেনারেশন পুরাই উল্ট ৷ এখনকার ছেলে পুলে বাবা মার কাছে আবদার করে বাইক কিংবা আরও অন্য কিছু ৷ আর না দিতে না পেরে নানা রকম হুমকি ৷ জানি না কেন এমন করছে ৷ যতটা জানি এখন হলো ডিজিটাল যুগ উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা তবুও এমন অবস্থা ৷ যা আসলে অনেকটা কষ্ট বা পীরা দেয় ৷ সত্যি বলতে দারুন একটি টপিক তুলে ধরেছেন ৷ ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

এই সমস্যাগুলো সামনে আরো বাড়বে, তাই মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর তাদের বুঝিয়ে নিয়ে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।

 2 years ago 

বর্তমান সমাজে এই অধঃপতনের মূল কারণ হলো শিক্ষা ব্যবস্থা। কারণ বর্তমান সময়ে শিক্ষকদের শাসন করা থেকে বিরত রাখা হয়। এর ফলে শুরুতেই ছেলেমেয়েদের এমন একটা মন মানসিকতা তৈরি হয়ে যায় পরবর্তীতে আর কোন কিছুর শাসন তারা নিতে পারে না। এজন্য অল্পতেই তারা অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। তাছাড়া বাবা মায়েরাও এখন সন্তানদেরকে চাওয়ার আগেই জিনিস কিনে দিয়ে এমন অবস্থা করে ফেলে যে পরবর্তীতে না করলে সন্তান আত্মহত্যার মতো এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। আসলে এর থেকে আমাদের বাঁচার উপায় কি তাই খুঁজে পাইনা । মাঝে মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে অনেক চিন্তা হয় । খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লেখাটি পড়ে।

 2 years ago 

সত্যিই বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থার উপর আমার আত্মবিশ্বাস একদমই নেই কারন এখনকার স্কুল গুলোতে অনুশাসন এবং মূল্যবোধ এই জিনিসগুলো আর নেই। তাই হয়তো বাচ্চারা শুধুমাত্র শিক্ষিত হয়ে উঠেছে কিন্তু সঠিক মানুষ হয়ে উঠছে এটা বলা বেশ কঠিন। তবুও মানিয়ে নিয়ে তাদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতেই হবে।

 2 years ago 

পরিবর্তনশীল প্রজন্ম || নিজেকে মানিয়ে নিতেই হবে।

আপনার জেনারেল রাইটিং পোস্ট গুলো আমার কাছে সব সময়ই ভালো লাগে। সব সময়ই চমৎকার চমৎকার টপিক নিয়ে আলোচনা করেন। চমৎকার কিছু কথা লিখেছেন। প্রজন্মের সন্ধি বা বন্ধুত্ব করার যুগ। তাই নিজেকে মানিয়ে নিন প্রজন্মের প্রয়োজনে। আপনার কথায় আমি একমত। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।

 2 years ago 

হ্যা সত্যিই তাই মানিয়ে নিয়েই সামনে এগিয়ে চলতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 57428.63
ETH 2425.69
USDT 1.00
SBD 2.34