গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (দ্বিতীয় পর্ব)
সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
মিথপটাং শহর, গভীর রাত্রি।
জগুলা এবং তার স্ত্রী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। এদিকে হেথাংয়ের শয়তানী চিন্তা তাকে ঘুমুতে দিচ্ছে না। বিছানায় ছটফট করতে থাকে আর মূল্যবান রত্ন নিয়ে চিন্তা করতে থাকে। এখন একবার সুযোগ নিয়ে দেখতে হবে মূল্যবান পাথর কব্জা করা যায় কিনা। সন্ধ্যায় লুকিয়ে সে দেখেছে বাবা পাথরটা কোন সিন্দুকের ভেতর রাখছে। এদিকে তাদের তেমন বেশি কোন আসবাবপত্র নেই। যাইহোক হেথাং ধীরে ধীরে তার বাবা মায়ের ঘরে প্রবেশ করে নিঃশব্দে। জগুলা ঘুমানোর সময় চাবি সবসময়ই তার মাথার নিচে রাখে, এটাও হেথাংয়ের অজানা নয়।
হেথাং ফন্দি এঁটেছে যেভাবেই হোক তার বাবাকে বিছানা থেকে উঠাতে হবে এবং এক ফাঁকে তাড়াতাড়ি মূল্যবান পাথর সরাতে হবে। হেথাং লুকিয়ে বালিশের কাছাকাছি গিয়ে একটি কাসার মগ দূরে জোরে শব্দ করে ফেলে দিয়েছে যাতে করে তার বাবা ঘুম ভেঙ্গে সেটা দেখতে বের হয়, কি ঘটেছে ব্যাপারটা। ঠিক তাই হলো হুড়মুড়িয়ে ঘুম ভেঙ্গে জগুলা ছুটে যায় দেখতে। এই ফাঁকে হেথাং চাবিটা লুকিয়ে দ্রুত সিন্দুক খুলে পাথরটি নিজের কব্জায় নিয়ে খাটের তলায় লুকিয়ে পরে। এদিকে জগুলা আবার এসে ঘুমিয়ে পরে।
হেথাং বেশ কিছুটা সময় খাটের তলায় অবস্থান করে, এরপর ধীরে ধীরে তার ঘরে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়। সে অবাক বিস্ময়ে পাথরটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। হঠাৎ হাতের থেকে টেবিলের উপর পরে যায়, ছোট্ট এই অমূল্য পাথরটি। এটা গড়িয়ে গিয়ে অপর একটি সাধারণ পাথরের সাথে টক্কর লেগে যায়। মুহুর্তের মাঝে সেই পাথরটিও ঠিক এই পাথরের মত হয়ে যায় এবং ঝলমলিয়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটতে থাকে। হেথাং যেন খুশিতে লাফিয়ে উঠলো।
সে এবার যে পাথরটি নতুনভাবে রত্ন পাথরে পরিণত হয়েছে, সেটা দিয়ে নতুন আরেকটি পাথরে টক্কর দেয়। কিন্তু তেমন কিছুই ঘটালো, তখন আবারো মূল রত্ন পাথর দিয়ে টক্কর দেয়ার সাথে সাথে সাধারণ পাথরটি রত্ন পাথরে রুপান্তরিত হয়ে যায়। বুঝতে বাকি রইলো না একমাত্র এই পাথর দিয়েই সব পাথরকে রত্ন পাথরে পরিণত করা সম্ভব, তবে মূল ক্ষমতা আসল পাথরের মধ্যেই থাকবে।
হেথাংয়ের শয়তানি বুদ্ধি খুলে যায়, সে বেশ বড় সড় একটা পরিকল্পনা হাতে নেয়। প্রথমেই তার নিজের হাতে থাকা সাধারণ আংটির পাথরটি চাকু দিয়ে উঠিয়ে ফেলে, বেশ কায়দা করে রত্ন পাথরটি বসিয়ে দেয়। এরপর পরিকল্পনায় বসে কি করা যায়। তার শয়তানি মাথা থেকে বুদ্ধি বের হয় তাকে এখান থেকে পালিয়ে যেতে হবে অমূল্য এই পাথর নিয়ে। যদি সে এটা না করে তার বাবা তাকে বড়লোক হতে দেবে না আর রাজার লোক খবরটা পেলেও তাদের উপর হামলা হতে পারে। হেথাং খুব তাড়াতাড়ি তার ছোট্ট একটা ঝোলা গুছিয়ে নেয়, যেখানে খুব প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া সে কিছুই নেয়নি। কারন সে জানে তার কাছে যে পাথর রয়েছে তা দিয়ে যেকোন সময় সে স্বর্নমুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
তার পিতা মাতাকে রেখে, গভীর রাতের আঁধারে হেথাং পা বাড়িয়েছে অজানা ঠিকানায়, তবে সে জানে তার বড়লোক হবার সম্ভাবনা রয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে সে চলে যায় বহুদূরে অচেনা একটা শহরে, যার নাম শিবলিং শহর। এদিকে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। জগুলা আর তার স্ত্রী ঘুম ভেঙ্গে আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠেছে। হঠাৎ তার সেই পাথরের কথা মনে পরে যায়, সে বালিশের নিচে চাবি খুঁজতে গিয়ে আৎকে উঠলো। কারন সেখানে চাবিটা নেই, আর পরে আছে সিন্দুকের ঠিক পাশেই। জগুলা চাবি দিয়ে হুড়মুড়িয়ে তালা খুলে দেখে সেখানে সেই অমূল্য পাথরটা নেই, আর মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে। দৌড়ে ছেলের রুমে গিয়ে দেখে কাপড়চোপড় এলোমেলোভাবে পরে আছে, আর হেথাং সেখানে নেই। জগুলার বুঝতে বাকি রইলো না, পাথরটির সাথে কি ঘটেছে। জগুলা ছেলের এই অপকর্মে ক্ষেপে গিয়ে গজগজ করতে থাকে।।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1774866832211763567?t=ksgr8BHTxgcE6pGieQ7XmQ&s=19
আপনার গল্প যত পড়ছি তত গভীরে হারিয়ে যাচ্ছি। ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা দ্বিতীয় পর্ব মূল্যবান রত্ন পাথরটি চুরি করে নিল এবং বুঝে গেল এ পাথরের সাথে যার ধাক্কা লাগবে সে পাথর রত্ন হয়ে যায়। বুঝতে বাকি রইলো না একমাত্র এই পাথর দিয়েই সব পাথরকে রত্ন পাথরে পরিণত করা সম্ভব, তবে মূল ক্ষমতা আসল পাথরের মধ্যেই থাকবে। আশা করছি পরবর্তী পর্বে আরও সুন্দর কিছু উপহার দিবেন, আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ নাজমুল।
পরের পর্ব আরো দারুন হতে চলেছে।
আশাকরি সাথেই থাকবে।
হেথাং বুদ্ধি করে তার বাবাকে সরিয়ে রত্ন পাথরটি চুরি করে নিলো। হঠাৎ করে হাত থেকে পাথরটি পরে অন্য পাথরের সাথে টক্কর লাগার সাথে সাথে অন্য সাধারণ পাথরটি অমুল্য পাথরে পরিণত হয়ে যায়। আর তখন সে বুঝতে পারে এই পাথর দিয়ে যে কোনো কিছু করা সম্ভব। তারপর হেথাং বড়লোক হওয়ার জন্য শয়তানি বুদ্ধি মাথায় নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে এরপর জগুলা তার ছেলেকে অথবা সেই অমুল্য রত্ন পাথর ফিরে পেয়েছে কি না সেটা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আসাদুল। পরের পর্ব আরো জমজমাট হবে এবং অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।