কাউকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)
কাউকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

আপনি যদি কখনো মনে করেন চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা আপনার থেকে ছোট। তাহলে আপনি অহংকারী।

যদি আপনি কোন আর্থিকভাবে কম অবস্থাপন্ন মানুষ বা গরিব মানুষকে দেখে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন, তাহলে আপনি টাকার গরমে অমানুষে রুপান্তরিত হয়েছেন।

যদি কোন শ্যাম বর্ণের কাউকে দেখে নাক সিঁটকান তাহলে আপনি চোখে রঙিন চশমা পরে আছেন। যে চশমা হয়তো খুব তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যাবে।



একটা হাতের সবগুলো আঙ্গুল সমান হয় না, কিন্তু প্রতিটি আঙ্গুল বিভিন্ন কাজের জন্য সৃষ্টিকর্তা নিপুণ হাতে তৈরি করেছেন। আবার একটি আঙ্গুল ছাড়া আপনার হাত অসম্পূর্ণ। কিন্তু আপনার মনে কি এই প্রশ্নটা আসে? কেন হাতের আঙুলগুলো সমান নয় ? যদি আপনি এটা চিন্তা করেন, তাহলে জেনে রাখুন হাতের আঙ্গুল সমান না বলেই আপনি হাত দিয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারেন।

এখন আমার প্রশ্নটা হচ্ছে তাহলে মানুষের ক্ষেত্রে কেন আপনি এতো সমান সমান খুঁজতে যান?
একটা মানুষের টাকা কম থাকতেই পারে, তাই বলে কি আপনি তাকে ছোট করে দেখবেন?
মনে রাখুন আপনার থেকে তার টাকা কম রয়েছে তাই সে আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে এসেছে। যদি তার ঠিক আপনার সমান টাকা থাকতো তাহলে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করানোর মতো লোক খুঁজে পেতেন না।

সমাজে বিভিন্ন জাতি ধর্মের মানুষ রয়েছে। সুইপার নিশ্চয়ই সবাই চেনেন, যারা বিভিন্ন রকম ময়লা পরিষ্কার করে থাকে। এখন কল্পনা করুন যদি এই জাতিটা না থাকতো তাহলে আপনার ময়লা কে পরিষ্কার করতো? ঠিক এমনি করে সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি জাতি নিশ্চয়ই কোন না কোন কাজের জন্য তৈরি করেছেন।
একজন শ্যামা মেয়েকে দেখে নাক সিঁটকালেন, দেখা গেল পার্লারে সেই মেয়েটাই আপনার রুপের পরিচর্যা করে আপনাকে আরো পরিপাটি সুন্দর করে তুলছে। অথচ তার রুপের খবর রাখার কোন সময় নেই। একটু খবর নিয়ে দেখুন এই মানুষটি কারো ঘরের রাজকন্যা এবং সেই বাড়িটা আলোকিত করে রেখেছে। আসলে চেহারার উজ্জলতা নয় মনের উজ্জ্বলতায় সে ভরিয়ে রেখেছে তার ভুবন। আর আপনার মেকি উজ্জ্বলতা হয়তো আপনি টাকা দিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন। এবার বলুন তো কার রুপ সত্যিকারের সুন্দর?

একটা পরিবারের তিনটি ভাই।
বড়ভাই নিজে খুব বেশিদূর লিখাপড়া না করে সংসারের হাল ধরেন বাবার সাথে, মেঝো মোটামুটি লেখাপড়া করে ছোট খাটো কাজ করে। তার সংসার পরিচালনা করছে, আর ছোট জন সবার সহযোগিতায় বেশ পড়াশোনা করে নামিদামি লোক হয়ে উঠেছে। ভালো লেখাপড়া করার কারণে তার বেশ ভালো চাকরি হয়ে গেছে। তবে বেচারার এখন ভাবে আর মাটিতে পা পরে না। মজার ব্যাপার হলো বড় ভাইকে এখন মূর্খ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে খারাপ লাগে না।

যে বড়ভাই তার জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে তাকে গড়ে তুলেছে আজ তার মুখ থেকে কথাগুলো শুনে মুচকি হেসে উড়িয়ে দেয়। কিছুটা আর্থিক সহায়তার জন্য ছোট ভাইকে বলার পর সে যদি দিতে অস্বীকৃতি জানায় তখন কাহিনীটি আপনাদের কেমন লাগবে?

সৃষ্টিকর্তার খেল বোঝা দায়, হয়তো আজ তুমি বড্ড বড়লোক, কাল কিন্তু ফকির বনে যেতে পারে।
আরো একটা ব্যাপার সৃষ্টিকর্তা হয়তো সেই গরিব ভাইয়ের উসিলায় ছোট ভাইটার আর্থিক সক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তাই বলবো কখনো কাউকে ছোট করে দেখবেন না। মানুষকে সম্মান দিন এবং ভালোবাসুন, দেখবেন আপনি সৃষ্টিকর্তার পছন্দের মানুষ হয়ে উঠেছেন।



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 months ago 

আপনি আজকে একদম বাস্তব কিছু কথা লিখেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। আসলে মানুষ একটু টাকা ওয়ালা হয়ে গেলে। তখন আর কাউকে মুল্য দিতে চায় না। আসলে মানুষ এইটা বুঝে না যে আজকে আপনি ধনি টাকা ওয়ালা সৃষ্টি কর্তা চাইলে কালকে আপনাকে গরিব অসহায় করে দিতে পারেন। তাই আমাদের কারো প্রতি অহংকার না করে সবাই মিলে মিশে থাকায় উচিত। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি শিক্ষনীয় বিষয় ধুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

দারুন লিখেছেন ভাইয়া।খুবই ভাল লাগলো এই বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য। আমরা প্রায়ই নাটক কিংবা মুভিতে দেখি বড় ভাইয়ের সেক্রিফাইসের কারনে ছোট ভাই-বোনরা লেখাপড়া শিখে বড় চাকুরি করে।শেষে সেই বড় ভাইকে মাথার উপরে না রেখে কাজের লোকের মতো আচরন করে।এমনটা মুভিতে দেখেই কষ্ট পাই।আর বাস্তবে দেখলে কি করবো তা বলতে পারছি না।তাই বলবো কখনও কাউকে ছোট করা ঠিক নয়।আল্লাহ চাইলে এক নিমিষে সব শেষ করে দিতে পারেন।

 2 months ago 

এরকম বাস্তব ঘটনাগুলো নিয়ে মুভি তৈরি করা হয়।
আমি নিজের চোখে বড় ভাইদের এরকম কষ্টের দিন পার করতে দেখেছি।

 2 months ago 

আপনার পোস্ট পড়ে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম। চমৎকার একটি পোস্ট উপহার দিলেন আপনি, কাউকে কখনো ছোট করে দেখার মনোভাব আমাদের দূর করতে হবে। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সুন্দর করে বানিয়েছে, যার দ্বারা যে কাজ দরকার তাকে সেই কাজের উপযোগী করে বানিয়েছেন। আপনি ঠিক বলছেন সৃষ্টিকর্তার খেলা বোঝা দায়, হয়তো আজ আমি বড্ড বড়লোক, কাল কিন্তু আমি ফকির হতে পারি। আমাদের মাঝে এই ধরনের পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 months ago 

বাহ্! এককথায় দুর্দান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাই। পোস্টের কথাগুলো পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। আসলে মানুষকে কখনো অর্থের মাপকাঠিতে বিচার করা ঠিক না। কারণ সৃষ্টিকর্তা চাইলে সবাইকে ধনী বানাতে পারতেন এবং সবাইকে গরীব বানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য ধনী গরীব বানিয়েছেন। ধনীদের এটা মনে রাখা উচিত, আল্লাহ তায়ালা চাইলে এক মুহূর্তে রাস্তার ফকির করে দিতে পারেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য।
আমি নিজের কথাগুলো গুছিয়ে লিখার চেষ্টা করেছি।

 2 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আমি আপনার কথাই একদম একমত আসলে কাউকে কখনো ছোট করে দেখা উচিত নয়। ঠিক বলেছেন ভাই আপনি আসলে আমাদের সমাজের মানুষ একে অপরের সাথে সব সময় তুলনা করে থাকে আমিও মনে করি একে অপরের সাথে তুলনা করা কখনো উচিত নয়। প্রত্যেকটি মানুষ এক রকম প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। তবে প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা থাকে। আশা করি সেগুলো কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে সকলে অগ্রসর হতে পারবে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

চরম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন পোস্টের মাধ্যমে। হ্যাঁ অনেকেই আছে টাকার অহংকার করে। আজকে ধনী আছে কালকেও সে ফকির হয়ে যেতে পারে তাই কাউকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই। উদাহরণটা বেশ ভালো লাগলো হাতের আঙ্গুলগুলো যখন সমান হয়নি তাহলে সব মানুষগুলো একরকম কিভাবে হবে??

 2 months ago 

সত্যিই মানুষের অহংকারে মাটিতে পা পরে না, তারাই সবাইকে সমান পাল্লায় মাপতে যায়।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমাদের হাতের আঙ্গুলগুলো যেমন সমান না তেমন প্রত্যেকটা মানুষই বিভিন্ন রকমের। নিজেকে কারো থেকে বড় ভাবা একদম উচিত নয়। আমাদের উচিত মন থেকে অহংকার সরিয়ে সবাইকে আপন করে নেওয়া। আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়েও অন্তরের সৌন্দর্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যারা সবকিছুর মধ্যে সৌন্দর্য খুঁজে পায় মূলত তারাই মানুষ অর্থাৎ সুন্দর মনের মানুষ। আপনার লেখাগুলো পড়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।

 2 months ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু আমার লিখা গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। দোয়া রইলো।

 2 months ago 

সৃষ্টিকর্তা আমাদের কে বিভিন্ন ভাবে পরিক্ষা নিয়ে থাকেন। সব সময়ই আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপরে সন্তুষ্ট থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। কারন হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা যা করবেন আমাদের মঙ্গলের জন্য করবেন। একদমই ঠিক বলেছেন আমাদের কাউকে ছোট চোখে দেখতে নেই এবং অবহেলা করতেও নেই। রিজিকের মালিক সৃষ্টিকর্তা। আপনার এধরনের পোস্ট গুলো সত্যি ভীষণ ভালো লাগে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

ধন্যবাদ লিমন।
আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে এবং মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65160.59
ETH 3545.92
USDT 1.00
SBD 2.43