জেনারেল রাইটিং || আগে স্কুল থেকে রাস্তা দেখতাম আর এখন রাস্তা থেকে স্কুল দেখি 🙂||

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আজ - শুক্রবার

২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জুন ০৭ , ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

আমি প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত আমাদের গ্রামে স্কুল থেকেই পড়াশোনাটা কমপ্লিট করেছি। প্রথমে ভর্তি হয়েছিলাম আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এরপর সরকারের মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মোটামুটি এই দশটা বছরে আমার জীবনের অনেক স্মৃতি জমে রয়েছে এই স্মৃতির পাতা থেকে মাঝেমধ্যে আপনাদের মাঝে নতুন, নতুন কিছু গল্প শেয়ার করি এবং আপনাদের রেসপন্স দেখে আমার এগুলো শেয়ার করার আগ্রহ আরো বেশি বেড়ে যায়। ছোটবেলা থেকেই আমার স্কুলে যেতে তেমন একটা ভালো লাগে না কারণ হয়তোবা যখন নতুন, নতুন ছিলাম তেমন বন্ধু-বান্ধব ছিল না আর এমনিতেই আমি একটু নীরব স্বভাবের সব সময় একা, একা থাকতেই বেশি পছন্দ করি। আর আমার চেয়ে বয়সে যারা বড় রয়েছে তাদের সাথে থাকতে ভালবাসি আসলে মধ্যাকথা হচ্ছে যাদের ক্রিয়েটিভ বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য নলেজ রয়েছে তাদেরকে আমি অনেক সম্মান করি এবং সব সময় তাদের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসি এবং তাদের স্কিল গুলোকে নিজের মধ্যে ডেভেলপ করার চেষ্টা করি। এজন্যই আমার স্কুলে বন্ধু-বান্ধব এর সংখ্যা কম। কারণ আমি সবসময় সিনিয়রদের সঙ্গে চলাফেরা করতাম।

IMG_20240523_103654_768-01.jpeg

তবে যেটাই হোক সবমিলিয়ে স্কুল জীবনটা আমার জীবনের জন্য একটা বেস্ট সময় ছিল। এই সময় আমি জীবনের আসল আনন্দটা উপভোগ করতে পেরেছি এবং সেই সাথে জীবনের যে কত মজা এবং কত আনন্দ করেছি এগুলো এখনো মনে পড়ে। যখন স্কুল এই টিফেন দিতো তখন অনেক সময় টিফেন খাওয়ার নাম করে বাড়িতে চলে আসতাম🤭 এবং আম্মুর সাথে বাড়ির কাজে হাত লাগাতাম এর মূল উদ্দেশ্য ছিল যেন স্কুলে না যেতে হয়। আবার বন্ধুবান্ধব মিলে স্কুল ফাঁকি দিয়ে অনেক দূরে ঘুরতে যেতাম কতই না স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আর যখন বন্ধুবান্ধব আর সবাই মিলে একসঙ্গে আড্ডা দিতাম তখনকার মজাটা তো আরো বেশি সুন্দর ছিল। আজকে যখন স্কুলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন স্কুলটা দেখে অনেক মায়া কাজ করছিল তখনই মনের ভিতর এই কথাটা আজ জেগে উঠল যে আগে স্কুল থেকে রাস্তার মানুষগুলোকে দেখতাম তারা কতই না আনন্দে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে আর কত কিছু। কিন্তু আমাদের জীবনটা এই যে দিনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে চার ঘন্টা বন্দি কোথাও যাওয়া যাবে না পড়াশোনা করো এবং সেগুলো জমা দাও তবে

IMG_20240523_103625_506-01.jpeg

এখন এই পর্যায়ে এসে দেখি যে জীবনের গোল্ডেন সময় গুলো হয়তো বা হারিয়ে ফেলেছি। তখনই জীবনটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আমি সারা জীবন পড়াশুনায় অনেক ফাঁকি দিয়েছি কিন্তু আমি কিন্তু তেমন একটা খারাপ স্টুডেন্ট ছিলাম না কারণ জেএসসি তে অনেক ভালো একটা রেজাল্ট ছিল আবার এসএসসি তেও জিপিএ ফাইভ ছিল। আসলে কথা হচ্ছে আমি সব সময় পড়াশোনা করতে ভালোবাসি না জীবনটাকে ভালো করে উপভোগ করতে হবে এই জন্য সবসময় অন্যরকম কিছু চিন্তাভাবনা করতাম আর বাকি যে সময়গুলো রয়েছে প্রতিদিন না পড়লেও সপ্তাহে যে দুই একদিন বই নিয়ে বসতাম ইনশাল্লাহ পুরো সপ্তাহের পড়াটাই অল্প সময়ের মধ্যে কভার করে ফেলতাম । আমার আবার একটা ভালো গুণ ছিল সেটা হচ্ছে যে কোন কিছু খুব অল্প সময়ে মুখস্ত করে ফেলতে পারি। এটার জন্য হয়তোবা আমার তেমন একটা কষ্ট করতে হতো না স্যারদের পড়াশোনা গুলো জমা দিতে। আগে যখন প্রাইমারিতে ছিলাম তখন অনেক পুরনো একটা ঘরে ক্লাস করতাম তো একটা বেঞ্চ ভাঙ্গা ছিল আর আমাদের কয়েকটা স্যার ছিল একদম ক্লাসে এসেই ঘুমিয়ে যেত হাহাহা,

IMG_20240523_103237_640-01.jpeg

আপনাদের জীবনে এমন কোন মুহূর্তের সম্মুখীন হলে সেটা কমেন্টে জানাতে পারেন। আবার যখন হাইস্কুলে উঠলাম তখন হাই স্কুল টাও বেশ পুরনো ছিল ।আমাদের টিনের চালের ঘরে ক্লাস করতে দিত অনেক সময়, যখন মুষলধারে বৃষ্টি হতো টিনের চাল দিয়ে পানি পড়তো তখন এই সময় গুলোকে আমরা অনেক বেশি এনজয় করতাম এছাড়াও আমাদের স্কুলের মাঝখানে যে ফাঁকা জায়গা রয়েছে ওই জায়গাটাতে অনেক আমগাছ লাগানো ছিল এখনো যা আছে দেখলাম ওই আম গাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আম হয়েছে। বিশেষ করে কয়েকটি গাছে অনেক মিষ্টি, মিষ্টি আম পাওয়া যেত যখন বৃষ্টি হতো তখন ওই আম গাছ থেকে আমরা আম কুঁড়িয়ে এনে সবাই মিলে লবন দিয়ে খেতাম ইস রে!!! কি যে একটা গোল্ডের মুহূর্ত ছিল ওই সময়গুলো এখনো অনেক মিস করি। আমাদের স্কুলে খয়বার নামে একজন স্যার ছিল‌‌ ওনি প্রচণ্ড রাগী । একটু ভুল হলেই ধুপ ধাপ ছড়ি দিয়ে
বসিয়ে দিত আমিও কিছুদিন মার খেয়েছি যদিও 🤭। তাও কেন জানিনা ওই স্যার ‌টা আমার ফেভারিট ছিল। কারণ উনি এত সুন্দর করে পড়াগুলো বুঝিয়ে দিত যে বাড়িতে আর ওই বিষয়ে তেমন একটা বুঝতে কষ্ট হতো না।

IMG_20240523_103703_291-01.jpeg

যাইহোক সকল সার-ম্যাম এবং আমাদের যেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীগুলো রয়েছে সবাইকে ভালোবাসা জানাই এবং আপনাদের সবাইকে শ্রদ্ধা এবং শুভকামনা ও ভালোবাসা জানাই। আপনাদের মধ্যে যদি কেউ এখনো হাই স্কুল লেভেলে থেকে থাকেন তাহলে আপনারা আপনাদের জীবনের গোল্ডেন সময় উপভোগ করছেন এই সময়কে আরো সুন্দর করে উপভোগ করার চেষ্টা করুন কারণ হয়তোবা এই সময়টা শেষ হয়ে গেলে অনেক বেশি মিস করতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে এতক্ষন পাশে থেকে আমার এই ছোট্ট ব্লগটা উপভোগ করার জন্য আবারো খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে নতুন কোন পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগের সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

ব্লগার@emonv
ডিভাইসInfinix note 11 pro
শ্রেণী ‌জেনারেল রাইটিং

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  
 4 months ago 

আপনার আজকের এই পোস্টটা পড়ে তো আমার নিজেরই ছোটবেলার স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গিয়েছে ভাইয়া। স্কুল জীবনটা কত বেশিই না মজার ছিল আমাদের। আপনার কাছে স্কুলে যেতে ভালো না লাগলেও আপনি সবসময় অল্প সময়ের মধ্যে পড়া গুলোর কভার করে ফেলতেন কথাটা শুনে খুব ভালো লাগলো। স্কুল জীবনটা ছিল আমাদের সবার জীবনে অনেক সুন্দর এবং আনন্দময় মুহূর্ত। এই মুহূর্তগুলো যতই মনে পড়ে ততই এখন খুব ভালো লাগে। আপনি আপনার স্কুল জীবনের মুহূর্তটা অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন। যেটা দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

 4 months ago 

বন্ধু তুমি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছো। আসলে স্কুল লাইফে অনেক স্মৃতি জড়ানো ছিল আমাদের সকলের। আসলে স্কুল লাইফের মত আর মজার সময় হয়তো আর কখনো পাওয়া যাবে না। অনেকদিন পর আবারো সেই হাইস্কুলের দৃশ্য গুলো তোমার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেয়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ বন্ধু এত সুন্দর একটি স্মৃতিময় পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

ছোটবেলায় স্কুলে যেতে খুব একটা ইচ্ছে না করলেও, সেই স্কুল লাইফটাকে নিয়ে অনেক স্মৃতি এখনো পর্যন্ত আমাদের জীবনে জড়িয়ে রয়েছে। সেই স্মৃতিগুলো কখনোই ভুলার মতো না। আসলে আগে যখন স্কুলে পড়তাম তখন বাহিরের রাস্তাঘাট দেখতাম। আর তখন অনেক কিছুই চিন্তা করতাম, আর এখন রাস্তা থেকেই স্কুল দেখি। আজ স্কুল লাইফে বন্ধুদের সাথে কোন কিছু খাওয়ার মজাটাই ছিল আলাদা। বিশেষ করে ফলের সিজনে বিভিন্ন রকম ফল খাওয়া হতো সবাই একসাথে। খুব ভালো লাগলো ভাই আপনার আজকের পোস্ট।

 4 months ago 

সেম অবস্থা আমার দেরও। যখন স্কুলে ছিলাম তখন এত গুরুত্ব ছিল না বা এভাবে ভাবতাম না। তবে তারপর যখন স্কুল ছেড়ে কলেজে উঠলাম ওই মুহূর্তে স্কুলের কথা বারবার মনে পড়তো। যেন দিনে দিনে নিজের অধিকার হারিয়ে ফেলতে থাকলাম স্কুল থেকে। এদিকে শিক্ষক আওয়ার আগের মত সেভাবে অধিকার ফলাতনা। জয় হোক বেশ ভালো লাগলো বিস্তারিত দেখে।

 4 months ago 

টিফিন খাওয়ার নাম করে আমরাও বাড়িতে চলে আসতাম ভাইয়া। তবে যাই হোক স্কুল জীবনের সেই সুন্দর সময় গুলোর কথা এখনো মনে পড়ে। আসলে স্কুলে যখন ক্লাস হতো তখন জানালা দিয়ে বাহিরে দেখতাম। আর এখন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় স্কুলটা দেখে পুরনো অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। সময় বদলে গেছে। আর সময়ের সাথে সব কিছুই বদলে গেছে।

 4 months ago 

খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ একদমই বাস্তবিক কিছু কথা আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে আপনার ফুটিয়ে তুলেছেন৷ আসলে যখন স্কুলে ছিলাম তখন স্কুল থেকে বাইরের রাস্তা দেখতাম৷ তবে এখন স্কুলের রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করা হয় এবং সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা স্কুল দেখি৷ আসলে একটা সময় একটা ঘটনা ঘটবে৷ এটিকে মেনে নিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68338.18
ETH 2645.26
USDT 1.00
SBD 2.69