|| অজ্ঞাতনামা || সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ। ১০% বেনিফেসিয়ারি @Shy-fox এর জন্য।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি। আমি প্রতি সপ্তাহে আমার পছন্দের একটি করে মুভির রিভিউ দিয়ে থাকি। আজকেও আমি সেরকমই আমার পছন্দের একটি মুভি রিভিউ দেব। এটা একটা বাংলা ছবি। মুভিটার নাম অজ্ঞাতনামা। মূলত ছবিটি প্রবাসীদের নিয়ে নির্মিত। আমাদের দেশের একজন মানুষ যখন প্রবাসে মারা যায় তখন তার মৃত দেহের জন্য তার পরিবারকে কত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তার উপরই মুভিটা নির্মাণ করা হয়েছে। তো চলুন শুরু করা যাক। ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।
মুভির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
------ | ------ |
---|---|
পরিচালক | তৌকির আহমেদ |
প্রযোজক | ফরিদুর রেজা সাগর |
চিএনাট্য | তৌকির আহমেদ |
কাহিনীকার | তৌকির আহমেদ |
পরিবেশক | ইমপ্রেস টেলিফিল্ম |
মুক্তি | ১৯ আগষ্ট ২০১৬ |
দৈর্ঘ্য | ১০০ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
অভিনেতার নাম | চরিএ |
---|---|
মোশারফ করিম | ফরহাদ,পুলিশ |
ফজলুর রহমান বাবু | কেফায়েত উদ্দিন |
শহীদুজ্জামান সেলিম | রমজান দালাল |
নিপুন | বিউটি |
শতাব্দী ওয়াদুদ | ওসি |
আবুল হায়াত | আব্দুল হাকিম |
শহিদ আলি | রহমান |
মুভির কাহিনি সংক্ষেপ
বাংলাদেশ পররাষ্ট্র বিভাগ থেকে ফোন দেয় পুলিশ অফিসারের কাছে। বলে আপনার এলাকার একজন ছেলে নাম আবু ওয়াহাব পিতার নাম আব্দুল হাকিম আরব আমিরাতে থাকে। গতকাল একটি দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার পরিবারকে খবর দিতে।আগামীকালকে ঢাকা বিমানবন্দরে তার লাশ আসবে। তারা যেন লাশটি গ্রহণ করে। পুলিশ অফিসার এবং তার সহযোগীরা বেরিয়ে পড়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে। গ্রামে গিয়ে তারা যথারীতি মেম্বার চেয়ারম্যানের সাহায্য নিয়ে আব্দুল হাকিমের বাড়ি যাই তারপর জানাই আপনার ছেলে আব্দুল ওহাব আরব আমিরাত শহরে মৃত্যুবরণ করেছে।কিন্তু তখন আবদুল হাকিম বলেন আমার ছেলে তো ইতালির রোমে থাকে। দুই বছর আগে সে আরব আমিরাতে থাকত। পুলিশ কোন কিছুতেই কোন পথ খুঁজে পায় না।বলে তাহলে আপনার ছেলের পাসপোর্ট আরব আমিরাত কি করে গেল।
এরপর ফোনে আব্দুল ওহাবের সাথে যোগাযোগ করা হয়। সে বলে সেই ইতালি যাওয়ার আগে তার আরব আমিরাতের পাসপোর্টটা ওই এলাকার রমজান দালালের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। রমজান দালালের মাধ্যমে ওই এলাকার অনেক ছেলে বিদেশে গেছে। পুলিশ রমজান দালালের কাছে যাই বলে আসল ঘটনা কি বল। রমজান দালাল স্বীকার করে আফসার উদ্দিন প্রমানিকের ছেলে আসির উদ্দিন প্রামাণিক আব্দুল ওহাবের পাসপোর্টটি কিনে তার মাধ্যমে আরব আমিরাতে গিয়েছিল। তার মানে বোঝা যাচ্ছে এখানে আসির উদ্দিন প্রমানিক মৃত্যুবরণ করেছে। সেই আব্দুল ওহাবের পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছিল আরবামিরাতে। পুলিশ এখন তার বাড়িতে খবর দেয় তার পিতা হিসেবে অভিনয় করে বাংলাদেশের বিখ্যাত অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। তিনি রীতিমতো ভেঙে পড়েন।তিনি এতটাই গরিব নিজের বসত ভীটা বন্ধক রেখে ছেলের লাশ আনতে যায় সঙ্গে যায় রমজান দালাল এবং তার এক ভাতিজা।
যথারীতি তারা ঢাকা যায় এবং বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। এমন সময় কাস্টমস অফিসার এসে বলে তাদের লাশ এসে গেছে। এসে নিয়ে যাও। কাস্টমস অফিসার বলে আমি সব বুঝতে পেরেছি।সব তখন কাস্টমস অফিসার কে ঘুষ দেয়া লাগে। লাশ নিয়ে তারা বাড়িতে চলে আসে। এলাকায় এসে দাফনের ব্যবস্থা হচ্ছে।গোসল দেয়া প্রয়োজন।গোসল দিয়ে যাওয়ার সময় অত্র এলাকার ইমাম সাহেব খেয়াল করেন তার সুন্নতে খাতনা করা হয় নাই। তখন আসিরের বাবা বলেন আমি তো ছেলের খাৎনা করিয়েছি।সবাই গিয়ে দেখেন এটা আসির না। আসির মোটামুটি ফর্সা এবং লম্বা।এবং এই ব্যক্তি ছিল অনেক কালো এবং খাটো। গ্রামের সবাই দেখে বলল না না এটা আসির হতেই পারে না। তার পরিবারের জন্য আরেকবার আসো ফিরে পেল।হয়তো তারা আসির বেঁচে আছে।
এরপর তারা আবার ঐ পুলিশ অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে যায় ঢাকায়। কাস্টমস অফিসার কোনভাবে লাশ ফিরিয়ে নেয় না। বলে আমরা লাশ ফিরিয়ে নিতে পারবো না। এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তারা একে একে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব জায়গায় যায়। কিন্তু কেউ কোন দায়িত্ব নিতে চায় না।অবশেষে পুলিশ অফিসার বলে তিনি তার এক পরিচিত এর মাধ্যমে আরব আমিরাতের বাংলাদেশ এম্বাসিতে খবর নিয়েছেন। তাদের আসির সত্যি সত্যি মারা গিয়েছে দুর্ঘটনায়। কিন্তু কোন কারণে হয়তো আফ্রিকায় চলে গিয়েছে আসিরের লাশ।এবং আফ্রিকার ওই লাশটা বাংলাদেশের চলে এসেছে।আসিরের লাশের কোন হদিস নেই।এরপর কোনো উপায় না দেখে আসিফের বাবা আফসার উদ্দিন প্রামাণিক ওই লাশ তার বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন করে। এখানে তিনি মহৎ হৃদয়ের পরিচয় দেন।
ব্যক্তিগত মতামত
এই ছবিটি মূলত প্রবাসীদের নিয়ে নির্মিত। প্রতিদিন জীবিকার তাগিদে কত শত মানুষ বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। অথচ তারা কোন দূর্ঘটনায় বিদেশে মারা গেলে ঠিক মতো তাদের লাশ দেশে আসে না। নানান রকম ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় তাদের পরিবারকে। দেশ যখন তাদের থেকে রেমিটেন্স নেই তখন তারা খুবই ভালো।কিন্তু যখন তারা মারা যায় তাদের মৃতদেহ বিমান বহন করতে চায় না। এবং তাদের পরিবার ও নানা ভোগান্তির শিকার হয়।এভাবে আর কতদিন। এই ছবির মাধ্যমে একটি দারুন শিক্ষা ছিল যে জাল পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। হয়তো মরলে সঠিক খবরটাও পরিবারের কাছে আসবেনা।ছবিটি দেখে অনেক কিছু শিক্ষনীয় ব্যাপার আছে।অসাধারণ একটি মুভি ছিল।মুভির অভিনেতা গুলো অসাধারন ছিল।একেবারে বাস্তব মনে হয়েছে দেখে।
আইএমডিবি রেটিং : ৯/১০
ব্যক্তিগত রেটিং :১০/১০
মুভির লিংক।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ আমি ফুটবল পছন্দ করি।
একদম বাস্তবতা চোখের সামনে ফুটে উঠেছে এই মুভি রিভিউটি দেখে। মানুষ তার জীবিকা নির্বাহ করার জন্য বা একটু সুখের আশায় বিদেশে যায় যেন দেশে তাদের পরিবার স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারে। এ মানুষগুলো এত অসহায় ভাবে বিদেশে যাওয়ার পরেও শেষে দেখা যায় ভোগান্তির শিকার হয়। তারপরে এই মানুষগুলো যখন বিদেশেই মারা যায় তখন তো আরও ভোগান্তি। অনেক দুঃখময় একটা মুভি রিভিউ ছিল। ধন্যবাদ ভাই এই মুভি থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
আপনাকেউ ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি কাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের জন্য।।
মুভিটি আমি দেখেছি অনেক আগে। আমার দেখা সেরা মুভি গুলোর মধ্যে এটিও একটি। সামাজিক একটা মুভি। এখানে আমার সবচেয়ে বেশি মারা যাওয়া ছেলেটির বাবার জন্য বেশি কষ্ট লেগেছিলো। বাবা ছেলেটির মারা যাওয়ার কথা শুনে প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল। শেষে ছেলের মৃতদেহ পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল। ছবিটি দেখতে যেমন ভাল লেগেছিল তেমন কষ্ট লেগেছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে এই মুভিটি রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিকই বলেছেন আপু। পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন জিনিস হচ্ছে বাপের কাঁধে ছেলের লাশ। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।।
ছবিটি দেখেছি দুই তিনবার। যতবার দেখেছি ততবারই খারাপ লেগেছে খুব। মোশারফ করিম,ফজলুর রহমান বাবু সবসময় ভালো অভিনয় করে আসছে। আসলেই জীবিকার তাগিদে মানুষ বিদেশ যায় পরে দেখা যায় সেখানে মারা গেলে লাশটা পর্যন্ত দেশে আসেনা। কঠিন ভোগান্তির মধ্যে পরে যায় একটি পরিবার। সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন ভাই।
আপনাকেউ ধন্যবাদ ভাই🙂🙂
এইটার সাথে আমি অনেকটাই পরিচিত। কারণ আমার এক খালুর লাশ দেশে আনাই যায়নি। ওইখানেই দাফন করতে হয়েছিলো।
আর এইটা অনেকদিন দেখার ইচ্ছে ছিলো তবে আজ গল্পটা পড়ে ফেললাম, ভালো লাগলো।
খুবই দুঃখজনক 🙁🙁
এই নাটক টি আমি দেখেছি । যদিও মোশারফ করিমের কোন নাটক আমি বাদ দেই না। মোশারফ করিম আমার প্রিয় একজন অভিনেতা। নাটকটি আমাদের সমাজের বর্তমান বাস্তবতা তুলে ধরেছে। সুন্দর একটি রিভিউ শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।
মোশারফ করিম অনেক ভালো একজন অভিনেতা। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।।।
ফজলুর রহমান আসলেই অনেক বড় মাপের একজন অভিনেতা, এই নাটক আমি বহুবার দেখেছি, আর এই নাটিক দেখেই প্রথমবার আমার সারাদিন মুড অফ ছিলো। আপনার রিভিউ পারফেক্ট ছিলো।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।।