!!! আমরা শিক্ষার্থী না,আমরা পরীক্ষার্থী!!!

কী আজকের পোস্টের টাইটেল টা কেমন জানি লাগছে, তাই না। কথাটার অর্থ অনেক গভীর এবং এটা একেবারে বর্তমান বাস্তব। কথাটা যদিও আমার না। কিছুদিন আগে আমরা ক্লাসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন আমার বন্ধু সাইম কথাটা বলে। প্রচলিত শিক্ষা ব‍্যবস্থা আমাদের শিক্ষার্থী না পরিক্ষার্থী তৈরি করে ফেলেছে। পরে আমি নিজেও ভেবে দেখলাম কথাটা একেবারে বাস্তব। বতর্মান সময়ের শিক্ষাব‍্যবস্থা টা অনেকটাই পড়ি লেখি জিপিএ ৫.০০ পাই সেরকম হয়ে গেছে। আমরা সেটাই পড়ি যেটা পরীক্ষায় আসবে এবং আমরা সেটা কখনো পড়ার চেষ্টা করি না যেটা আমাদের সিলেবাসের বাইরে। এই মনোভাবই আমাদের বই পড়া অভ‍্যাস থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে। একজন শিক্ষার্থীকে যদি সেমিষ্টার শুরু করার পূর্বেই পরীক্ষার দিন জানিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সে শিখবে কী করে বলুন তো। সে তখন চেষ্টা করবে কী করে তার কোর্স টা শেষ করা যায় যেন তেন মূল‍্যে।। এটা সবার ক্ষেএে এক না। আমি যে শিক্ষাক্রমের আওতায় আছি কারিগরি শিক্ষা। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো নাকী কারিগরি শিক্ষাকে অনেক মূল‍্যায়ন করে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঠিক তার উল্টোটা করে। বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে এটাকে এগিয়ে নিতে কিন্তু কিসের কী। যদিও আমাদের দেশের কারিগরি শিক্ষার হার ৪% থেকে ১৮% এ উন্নিত হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। আমাদের বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নিয়ে কিছু কথা না বললেই না। এরা আমাদের রোবট ভাবে।

---

---

---

---

শিক্ষার্থীদের জীবনে করোনা মহামারী এক কালো অধ‍্যায় বলা যায়। সবার দুইটা বছর নষ্ট। অন‍্যদের অটোপাশ দিয়ে পাশ করিয়ে দিলেও আমাদের কপালে তা জোটেনি। এটা অবশ‍্য ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের ইয়ার গ‍্যাপ পূরণ করার জন্য অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো আমাদের সেমিষ্টার ৬ মাসের পরিবর্তে ৪ মাসে হবে। এতে করে মোটামুটি ২০২৩ সালের মধ্যে গ‍্যাপটা পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু ভাই এটা বাংলাদেশ। এখানে আমরা কেউ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলি না। এই ৪ মাসের সেমিষ্টারের ১ মাসের বেশি সময় যায় মিড টার্ম এবং সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা। এরপর আসে বিভিন্ন ছুটি এবং অন‍্যান‍্য কার্যক্রম মিলিয়ে আরও এক মাস চলে যায়। আর থাকে ২ মাস। এই ২ মাস ধরুন আমাদের ক্লাস টাইম। আমাদের প্রতি সেমিষ্টারে মোটামুটি ২০ ক্রেডিটের ৬ টা সাবজেক্ট থাকে। আমরা মোটামুটি ৬০ দিন ক্লাস পাই। তাহলে সবকিছু বাদ দিয়ে আমরা প্রতিটা বই প্রতি সময় পাই ১০ দিন। এই ১০ দিনে পুরো বইয়ের থিওরী পড়া লাগে এরপর আছে ব‍্যবহারিক ক্লাস টেস্ট কুইজ টেস্ট। কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু ব‍্যবহারিক কাজে দক্ষতা অর্জন করা পাশাপাশি থিওরী তেও। কিন্তু আমাদের ব‍্যবহারিক এর সাজ সরঞ্জাম এতোটাই খারাপ এবং পুরাতন অধিকাংশ নষ্ট বলা যায়। ফলে আমাদের ব‍্যবহারিক জ্ঞানের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। তাহলে বলুন এতো চাপের মধ্যে আমরা বর্তমানে সেমিষ্টারে পাড় করছি। আমরা আর শিক্ষার্থী নেই। আমরা এখন পরীক্ষার্থী।

---

---

এই অবস্থা যে শুধু আমাদের তা কিন্তু না। আমাদের অন‍্যান‍্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদেরও অনেক টা এই একই অবস্থা। আমরা ক্লাসে যাচ্ছি বইয়ের পাতা মুখস্থ করছি পরীক্ষা দিচ্ছি ভালো রেজাল্ট করছি শিখছি না কিছুই। আমাদের শেখার ইচ্ছাই নেই। আসলেই কী তাই?? না আমাদের শেখার ইচ্ছাটাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের প্রথম থেকেই শেখানো হয় প্রতিযোগিতা। কীভাবে একজনকে অতিক্রম করে ভালো ফলাফল করতে হবে। ফলে আমাদের মধ্যে যে ক্রিয়েটিভিটি আছে সেটাকে নষ্ট করে দেওয়া হয়। পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় এক ফলাফল ভিওিক বিকৃত শিক্ষাব‍্যবস্থার সঙ্গে। প্রতিযোগিতা ভালো তবে সেটা নিজের সঙ্গে করতে হবে। আমাদের বর্তমান সমাজের মানুষ রাও আপনাকে ঐ জিপিএ বা চাকরি দিয়েই বিচার করবে। এখন অবসরে শিক্ষার্থীরা আর গল্প অ‍্যাডভেঞ্চারের বা রহস্যের বই পড়ে না। তারা এখন অবসরে ফোন ল‍্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকে। আমি নিজেও এর বাইরে না। কারণ আমি এগুলো দেখেই বড় হয়েছি।। আমরা এখন শেখার জন্য বা বিনোদনের জন্য পড়ি না। আমরা পড়ি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। তাই টাইটেল টা এমন আমরা শিক্ষার্থী না আমরা পরীক্ষার্থী।।।

---

---

---

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ করে আমি ফুটবল পছন্দ করি।

---

---

---

---

---

---

---

---