"জুলফিকার " সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
মুভির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
------- | ------- |
---|---|
মুভির নাম | জুলফিকার |
পরিচালক | সৃজিত মুখ্যার্জী |
সংগীত | অনুপম রায়, নচিকেতা। |
মুভির দৈর্ঘ্য | 2 ঘন্টা ১৮ মিনিট |
দেশ | কলকাতা, ভারত |
ভাষা | বাংলা |
অভিনয়ে | প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী, দেব, যিশু সেনগুপ্ত, পরমব্রত, কৌশিক সেন, কাঞ্চন মল্লিক, নুসরাত জাহান, পাওলী দম, অনুশকা হাজরা আরও অনেকে। |
মুভির কাহিনী সংক্ষেপ
মুভিটা কলকাতার একটি এলাকা নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এই এলাকায় সরকার আইন শাসন কিছুই চলে না। এলাকা চলে একটি সিন্ডিকেট এর কথায়। এবং এই সিন্ডিকেট এর প্রধান এখন জুলফিকার আহমেদ। শুরুতেই দেখা যায় পুলিশ অফিসার লাল্টুর বদলি হয়ে গেছে। সে ঐ এলাকা থেকে চলে যাবে। যাওয়ার আগে সে নতুন অফিসার কে সবকিছু বলতে শুরু করল। বলল যাই করবেন কখনো সিন্ডিকেট এর বিপক্ষে যাবেন না। এই এলাকা চলে সিন্ডিকেট এর কথায়। তবে যখনই সিন্ডিকেট এর কোনো এক ব্যক্তির জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় তখন সিন্ডিকেট থেকেই তাকে হত্যা করা হয়। এমনটা আগেও বেশ কয়েকবার হয়েছে। তখন লাল্টু কিছুদিন আগের ঘটনা ঐ নতুন অফিসার এর কাছে বলতে থাকে। ঐ সিন্ডিকেটের প্রধান জুলফিকার ও তার সহযোগী টনি এবং মার্কাসকে আটকে রেখে মুক্তিপন দাবি করে একদল সন্ত্রাসী। সিন্ডিকেটের সদস্যরা জুলফিকার এর গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকা রানীর থেকে নিয়ে জুলফিকার কে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। তবে আসার সময় সবগুলোকে মেরে ফেলে। জুলফিকার এর অতি নিকট বন্ধু বসির। বসির একজন দেশপ্রেমিক। সবার আগে তার কাছে তার দেশ। তবে মার্কাস আবার কথা বলতে পারে না।
এবার দেখা যায় সিন্ডিকেটের মিটিং চলছে। সেখানে সিন্ডিকেটের একজন সদস্য পারভেজ মাকসুদ বলে একজন আতঙ্কবাদী আমাদের কাছে আশ্রয় নিবে। তাকে আশ্রয় দিলে আমাদের অনেক লাভ হবে। কিন্তু এটা দেশের জন্য ক্ষতি। সেজন্য সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিষেধ করা হয় এবং পারভেজ মাকসুদ রাগ করে চলে যায়। তবে পারভেজ ঐ আতঙ্কবাদীকে ঠিকই আশ্রয় দেয়। যাইহোক এরপর দেখা যায় সিন্ডিকেট এর অন্য সবাই মিলে পারভেজ এবং আতঙ্কবাদীকে আক্রমণ করে এবং হত্যা করে ফেলে। এরপর দেখা যায় জুলফিকার একটি জনসভায় রয়েছে। ঐ এলাকায় জুলফিকার অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল দিন দিন। কিন্তু এটা মেনে নিতে পারছিল না কাশীনাথ। কাশীনাথ সিন্ডিকেটের একজন সদস্য। তাই সে পরিকল্পনা করতে থাকে জুলফিকার কে হত্যা করতে হবে। এজন্য সবার আগে হাত করতে হবে জুলফিকার এর বন্ধু বসির কে। কাশীনাথ বসির কে গিয়ে বলে জুলফিকার ঐ আতঙ্কবাদীকে নিয়ে এসেছিল। এবং ও সবকিছু জানত। কিন্তু বসির বিশ্বাস করে না। তখন কাশীনাথ জুলফিকার এর ইমেইল থেকে যাওয়া ইমেল দেখাই বসির কে। আসলে কাশীনাথ তার লোক দিয়ে জুলফিকার এর ইমেইল হ্যাক করে ইমেইল গুলো পাঠায়। তাছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
কাশীনাথ একে একে সিন্ডিকেটের অন্য সব সদস্যদেরও ম্যানেজ করে ফেলে। ঘটনার দিন মার্কাস এবং টনিকে একজন সদস্য অন্য কাজে নিয়ে যায়। এবং ঐ সিন্ডিকেটের মিটিংয়ের সময় প্ল্যান অনুযায়ী সবাই গুলি করে হত্যা করে জুলফিকার কে। ঐ পুলিশ অফিসার লাল্টুও সিন্ডিকেটের সদস্য ছিল। লাল্টু এবং অন্য একজন ছিল জুলফিকার এর পক্ষে ওরা কিছুই জানত না। জুলফিকারকে যখন মারা হয় তখন ওরা কিছুই করতে পারে না ওরা পালিয়ে এসে টনি এবং মার্কাসকে সবকিছু জানাই। তখন মার্কাস ছুটে যেতে গেলে অন্যরা বাঁধা দেয়। জুলফিকার কে হত্যা করা হয়েছে এখন মার্কাস টনি লাল্টু জুলফিকার এর ভাতিজা আক্তার এরা সবাই আত্মগোপনে চলে যায়। ওদেরও হত্যা করা হতে পারে এই আশংকায়। কিন্তু একপর্যায়ে বসির ফোন করে বলে তোমাদের কিছু বলা হবে না তোমরা চলে এসো। আগামীকাল জুলফিকার এর জানাযা আশাকরি তোমরা থাকবা। কথামতো জুলফিকার এর জানাযায় ওরা যায়। জানাযা শেষ সাধারন জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয় বসির। বলে জুলফিকার সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে যাচ্ছিল সেজন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে।
জুলফিকার এর পরে বসির ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। সেজন্য সবাই বিশ্বাস করে নেয়। কিন্তু পরক্ষণেই ভাষণ দেয় সবার ভুল ভাঙিয়ে দেয় টনি এবং মার্কাস। ওরা বলে জুলফিকার সবসময়ই আপনাদের ভালো চেয়েছে। ওরা ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে জুলফিকার ভাইকে। শুরু হয়ে যায় দাঙ্গা। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় জুলফিকার এর সব খুনি। এবং সবাইকে এক এক করে বের করে খুন করতে থাকে মার্কাস টনি লাল্টু এবং জুলফিকার এর পক্ষের কিছু লোক।শেষ পর্যায়ে জুলফিকার এর ভাতিজা আক্তারও হাযে অস্ত্র তুলে নেয়। সে এখন জুলফিকার এর জায়গাই বসবে। যাইহোক এক এক করে সবাইকে হত্যা করা হয়। শেষ পর্যায়ে দুই গ্রুপের লড়াই চলছে এমন সময় ঘটনাচক্রে বসির জেনে যায় জুলফিকার দেশদ্রোহী ছিল না। ঐ আতঙ্কবাদীর বিষয়ে কিছুই জানত না জুলফিকার। এগুলো সব কিছু ছিল কাশীনাথের ষড়যন্ত্র। তখন কাশীনাথকে মারার জন্য তাড়া করতে থাকে জুলফিকার। একপর্যায়ে দুজনই মারা যায়। এখন আরও কিছু সিন্ডিকেটের সদস্য রয়েছে। কিন্তু আক্তার বুদ্ধি করে কৌশলে একে একে মার্কাস, টনি, সবাইকে মেরে ফেলে। কারণ সে নিজে একা নিয়ন্ত্রণ করবে এই এলাকা। কিন্তু লাল্টু থেকে যায়। সেজন্য সে লাল্টুকে বদলি করে দেয় এই থানা থেকে। এখানেই শেষ হয় মুভিটা।
মুভির শিক্ষা ও ব্যক্তিগত মতামত
আসলে ক্ষমতা এমন একটা জিনিস যেটার নেশা আপনার কাছের মানুষকেউ আপনার শএু বানিয়ে দেবে। সেটার যোগ্য উদাহরণ ছিল এই মুভিটা। এই মুভিতে প্রথমে সবাই ক্ষমতার লোভে জুলফিকার কে হত্যা করে। যারা হত্যা করে তারাও খুন হয়। শেষমেষ কেউই ক্ষমতা দখল করতে পারে না। উল্টো ক্ষমতা দখল করে আবার সেই জুলফিকার এর ভাতিজা আক্তার। অর্থাৎ যাদের ক্ষমতা তাদের কাছেই গেল মাঝ থেকে শুধু অনেকগুলো খুন হলো। ঠিক এইরকমটা বাস্তবেও হচ্ছে। মুভিটার কাহিনী ছিল একেবারে দূর্দান্ত। এছাড়াও ওপার বাংলার সবচেয়ে দক্ষ অভিনেতা রা অভিনয় করেছে মুভিটাতে। সবমিলিয়ে দারুণ মুভিটা আমার কাছে। এছাড়া মুভিটার গানগুলো ছিল চমৎকার।
ব্যক্তিগত রেটিং : ৯/১০
অফিশিয়াল ট্রেলার
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।।
মুভিটি আমি দেখেছি আমার কাছেও অনেক ভালো লেগেছে ।আপনি বেশ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেনআপনি রিভিউ বেশ সুন্দরভাবে বাক্ত করেছেন ।আসলেই ক্ষমতার জন্য মানুষ নিজেকে কতটা নিচু করতে পারে এবং এতটা নিচু করেও নিজেকে ক্ষমতা আর পায় না সেটা এই মুভিটি দেখলেই বোঝা যায়।ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর ভাবে মুভির রিভিউ টি শেয়ার করার জন্য।
সিনেমাটা অনেক আগেই দেখেছি। আমার ঠিক ঠাক লেগেছে। একমাত্র প্রসেনজিৎএর অভিনয় সাবলীল লেগেছে। আর মনে পড়ে আমরা হাসাহাসি করতাম যে দেব কে কথা বলার রোল দেয় নি বলে। কিন্তু মূক চরিত্রে অভিনয় করা আরো কঠিন।এখন সেটা বুঝি।তবে একটা কথা বলি কোন সিনেমার রিভিউ করার সময় এত ডিটেইল্সে বর্ননা না করে একটু ছুঁয়ে বেড়িয়ে গেলে ভালো হয়। নয়তো বিষয়টা স্পয়েলার হয়ে যায়।ভালো লিখেছেন।
আসলে দিদি অনেক আগের সিনেমা তো সেজন্য মোটামুটি সবাই দেখছে। তাছাড়া যাদের স্পয়লারের ভয় আছে তারা এমনেই পড়বে না আসল কাহিনী টা 😆😆😆।।
ছবিটির কাহিনী বেশ দারুন। বেশ কিছু নামীদামী শিল্পী এখানে অভিনয় করেছেন দেখছি।
ক্ষমতা কারোর হাতে আজীবন থাকেনা কিন্তু মাঝখানে কিছু লোকের প্রান চলে যায়, এখানেও তাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এধরনের সিন্ডিকেট আমাদের সমাজের কিছু কিছু জায়গায় রয়েছে তবে কিছুটা আত্মগোপনে।
যাক গল্পটা ভালো লেগেছে আমার কাছে।
একসময় দেখে নেবো পুরো মুভিটি।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।।
আজকাল নাটক, ছবি তেমন দেখা হয় না। টিভিতো দেখি ই না বলতে গেলে। মোবাইলে দেখব ভাবছি,আপনার মুভির রিভিউ দেখে। নচিকেতার গান তো আলাদা রকমের কিছু। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।