আমার বন্ধু রাশেদ। সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ। ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি। আজ আমি আমার পছন্দের একটি মুভির রিভিউ করব। মুভিটার নাম আমার বন্ধু রাশেদ। এটা একটি বাংলা মুভি। এই মুভিটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিওি করে নির্মিত। এবং এই মুভিটা দেখলে মুক্তিযোদ্ধে কিশোরদের ভূমিকা সম্পর্কে জানা যায়। আশাকরি সবাই সাথেই থাকবেন। এবং মুভির রিভিউ টা পড়বেন। এবং এটা খুব ভালো একটি মুভি আপনারা দেখতে পারেন। এই পোস্টের ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।
------ | ------ |
---|---|
পরিচালক | মোরশেদুল ইসলাম |
লেখক | মোহাম্মদ জাফর ইকবাল |
মুভির দৈর্ঘ্য | ১০০ মিনিট |
ক্যাটাগরি | ইমপ্রেস টেলিফিল্ম |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
মুক্তি | ১ এপ্রিল ২০১১ |
নির্মাণ ব্যায় | ৳৩০ লক্ষ টাকা |
আয় | ৳ ৬০ লক্ষ টাকা |
নাম | চরিএ |
---|---|
আফনান | রাশেদ |
আরমান পারভেজ মুরাদ | শফিক ভাই |
হুমায়রা হিমু | ওরু আপা |
রাইসুল ইসলাম আসাদ | রাকিবুল |
পীযুষ বন্দ্যোপ্যাধায় | রাকিবুলের বাবা |
ওয়াহিদা মল্লিক | রাকিবুলের মা |
গাজী রাকায়েত | আজগর আলী রাজাকার |
ফৈয়াজ বীন জিয়া | আসরাফ |
কাওসার আবেদীন | কাদের |
মুভির কাহিনি সংক্ষেপ।
সাল 1970 ক্লাসে নতুন এক ছেলের আগমন ঘটে। মানে নতুন ভর্তি আর কী। মজিদ স্যার জিজ্ঞেস করে তোর নাম কি? ছেলেটার নাম বলে আমার নাম লাড্ডু। স্যার ছিলেন কট্টরপন্থী। আমার ক্লাসে লাড্ডু নামের কেউ থাকতেই পারে না, কাভি নেহি। স্যার ক্লাসের সবাইকে দায়িত্ব দেন ওর জন্য একটি নাম ঠিক করতে। এক এক জন একেক নাম ঠিক করে আসে। তবে ক্লাসের একজন নাম দেয় রাশেদ হাসান। স্যারের নামটা খুব পছন্দ হয়ে যায়। এবং স্যার লাড্ডুর নাম দেন রাশেদ হাসান। সে থেকে ক্লাসের সবাই ওকে রাশেদ বলে ডাকে। এই ক্লাসের কিছু ছেলের সাথে বিশেষ করে রাকিবুলের সাথে রাশেদের খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়। পরে ঘটনাটা বর্ননা করে রাকিবুল। 1970 সাল সবাই তখন ক্লাস সেভেন এর ছাত্র। সবার সাথে রাশেদের খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কিন্তু রাশেদ ছিল সবার থেকে আলাদা। অন্য ছেলেরা খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও রাশেদের চিন্তাভাবনা ছিল অনেক উঁচুতে এবং অন্যদিকে।
সপ্তম শ্রেণীর পরীক্ষা হয়ে যায়। সবাই পাস করে সাথে রাশেদও।তারা সবাই এখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সাল 1971 চারিদিকে মুক্তিযুদ্ধের দামামা বেজে গেছে। কিন্তু সাধারণ ছাত্ররা এ বিষয়ে কিছু না জানলেও রাশেদ এ বিষয়ে অনেক কিছু জানতো। এমনকি রাতের মশাল মিছিলেও যেত। মাত্র 14 বছরের একটি ছেলের এতো সাহস ভাবা যায় না। তার বন্ধুদের কে সব কিছু বলে। পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের উপর অত্যাচার করছে কিন্তু বাঙালি এখন তা বুঝতে পেরেছে এবং যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে,সে তার বন্ধুদের বলে 7 ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।ছাত্র সবাই অবাক।রাশেদ এত কিছু জানেন কিন্তু তারা এ বিষয়ে কতটা অজ্ঞ।
একদিন রাতে রাকিবুলের বাড়ির সামনে দিয়ে মশাল মিছিল যাচ্ছে। সবার হাতে মশাল মুখে বলছে বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর। রাকিবুল সেটা লক্ষ্য করে দেখছিল। এবং সে রাশেদকে মিছিলের মধ্যে দেখতে পাই। এরইমধ্যে ওই এলাকায় পাকিস্তানি মিলিটারির আগমন ঘটে। এবং তারা ওই স্কুলেই একটি ঘাঁটি করে। পাকিস্তানি মিলিটারিরা ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ করত। রাশেদ কিছু মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করে এবং বলে আপনার মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণ করতে চাইলে আমরা সাহায্য করবো। কারন আক্রমণ করতে গেলে স্কুলের ম্যাপ টা ভালোভাবে জানা দরকার। এবং ছাত্ররা একবারে মেপে মেপে স্কুলে একটি ম্যাপ তৈরি করেছিল।সেই ম্যাপ টা ছিল রাশেদের এক বন্ধুর কাছে। রাশেদ সেটা যোগাড় করে রাকিবুল কে সাথে নিয়ে রাতে মুক্তি বাহিনীর কাছে যাই এবং ম্যাপটি দেয়। বলতে গেলে তারাও যুদ্ধে অংশ নেয়।
মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণের দিন। একটু সমস্যা হয়ে গেছে। রাস্তার কড়া পাহাড়ার কারণে শফিক ভাইয়ের কাছে গুলি পৌঁছাতে পারছে না কেউ। এই দায়িত্ব নেয় রাশেদ এবং তার বন্ধুরা। তারা গুলি নিজের শরীরে বেঁধে উপরে শার্ট পড়ে খেলার বাহানায় মিলিটারিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে শফিক ভাইয়ের কাছে গুলি পৌঁছে দেয়। এবং কড়া পাহাড়ার কারণে শফিক ভাইয়ের সহযোগী যুদ্ধের দিন রাতে শফিক ভাইয়ের সাথে যোগ দিতে পারে না। শফিক ভাইয়ের সহযোগী হিসেবে যায় রাশেদ এবং রকিবুল। প্রথমে শফিক ভাই রাজি না হলেও পরে সেটা মেনে নেয়। ঠিক সময়ে ক্যাম্প আক্রমণ হয় মেলেটারি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এবং ক্যাম্প ছেড়ে পালায়। কিন্তু যাওয়ার আগে তারা কিছু মুক্তিযোদ্ধা কে আহত করে। তার মধ্যে শফিক ভাইও ছিল। এবং মিলিটারিরা রফিক ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। এবং ঘোষণা দেয় সুস্থ হওয়ার পরে শফিককে ফাঁসি দেওয়া হবে। কিন্তু রাশেদ এবং তার বন্ধুরা সেটা মেনে নিতে পারে না। তারা ভাবে যে করেই হোক হাসপাতাল থেকে মিলিটারিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে শফিক ভাইকে উদ্ধার করবে।
শফিক ভাইকে উদ্ধারের জন্য সুন্দর একটি পরিকল্পনা করে রাশেদরা। এবং হাসপাতাল মালিকের সাথে যোগাযোগ করে।হাসপাতাল মালিক মুক্তাবাহিনীর পক্ষে হলেও বাচ্চাদের সাথে তিনি কোনো পরিকল্পনায় রাজি হননি। তিনি সরাসরি না বলে দেন ঘটনার দিন সবাই তৈরি হয়ে হাসপাতালে। গিয়ে দেখে হাসপাতাল মালিক প্রথমে না বললেও তিনি রাশেদদের কথামতো সব ব্যবস্থা করেছেন।মানে হাসপাতাল মালিক ওদের সাথে আছে। পুরো পরিকল্পনামাফিক মিলিটারিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাচ্চারা শফিক ভাইকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে শফিক ভাই আবার যুদ্ধে যোগদান করে। কিন্তু মানুষ সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে।
এরইমধ্যে রাকিবুলের বাবা-মা ঠিক করে তারা ভারতে চলে যাবে। এভাবে আর থাকবে না। এজন্য রাকিবুলের মন খারাপ হয়ে যায় যে রাশেদকে ছেড়ে তাকে চলে যেতে হবে। কিন্তু কিছু করার নেই এটাই বাস্তবতা। রাশেদ একা হয়ে যাই কারণ এখন সব কাজ তাকে একাই করতে হবে। এভাবে কিছুদিন চলতে থাকে কিন্তু কিছুদিন পরেই ওই এলাকার রাজাকার দের হাতে মুক্তি বাহিনী হিসেবে ধরা পড়ে রাশেদ। দু একজন রাজাকার ছোট বাচ্চা ধরে ছেড়ে যেতে বললেও,রাজাকারদের প্রধান আজগর আলী রাশেদকে ছাড়ে না। এবং বলে বল পাকিস্তান জিন্দাবাদ রাশেদ বলে জয় বাংলা' সাথে সাথে রাজাকার আজগর রাশেদের বুকে গুলি করে। রাশেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষণ পর রাশেদ তার প্রিয় জন্মভূমি জন্য শহীদ হয়ে পরপারে পাড়ি জমায়। এভাবে শহীদ হয়ে যায় রাশেদ। এবং রাকিবুল বড় হওয়ার পরে তার ছেলেকে এই ঘটনা বর্ণনা করে।এভাবে শহীদ হয়ে যায় রাশেদ নিজের দেশের জন্য।
কিশোর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসাধারণ একটি সিনেমা। বলা যায় কালজয়ী সিনেমা এটি। দেশপ্রেম ও বন্ধুপ্রেম দুইটিই অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠেছে। এতো ভাবে রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ
আপনাকেউ ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।।
কিশোর মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক টেলিফিল্ম মুভিটি চমৎকার একটি মুভি। দেখিনি কোনদিন।তবে মনে হচ্ছে খুব ভালো।মুভি রিভিউ আর্টিকেলটি আরো ভালো লেগেছে যে এর অভিনয়কারিদের নাম ও পাঠ সহ উল্লেখ করা জন্য।খুব সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।।
আমি চলচ্চিত্রটি দেখার আগেই জাফর ইকবাল স্যার এর আমার বন্ধু রাশেদ বইটি পড়েছি।
আমি আবার জাফদ ইকবাল এদ বড়সড় ফ্যান।তাই বলবো অসম্ভব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।
বাহ তাই নাকী আপু। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।।
আমার বন্ধু রাশেদ এই মুভিটা অনেক আগেই দেখেছে। আপনার রিভিউ এর মাধ্যমে আর একবার দেখা হয়ে গেলো। অনেক সুন্দর রিভিউ করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
আপনাকেউ অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
মুক্তিযুদ্ধের চমৎকার একটি ছায়াছবি আমার বন্ধু রাশেদ। এই সিনেমা টি আমি অনেক বার দেখেছি। অনেক ভাল লেগেছে আমার আপনার রিভিউ টি পড়ে। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মুভির দারুন একটি রিভিউ তৈরি করার জন্য।
আপনাকেউ ধন্যবাদ ভাই।