চৈএ দিনের গান!!!! সম্পূর্ণ নাটক রিভিউ। ১০% বেনিফেসিয়ারি @Shy-fox এর জন্য।

---

---

এজাজুল হক একজন রাজমিস্ত্রি। তিনি তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। সেই মেয়ে আবার জামাই পাগল। মানে বর যা বলে তাই শোনে। এজাজুল হকের বুদ্ধি অন‍্যদের থেকে আলাদা। সে সবসময়ই অন‍্যরকমভাবে দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো করে থাকে। এজন্য অনেকে তাকে পাগল বলে। এজন্য তার বউ তাকে এগুলো করতে নিষেধ করে। তার মেয়ের স্বামী রিয়াজ সৌদি আরব যাবে। কিন্তু তার কিছু টাকা সংকট পড়েছে। সেই টাকার যোগার করতে সে এখন শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে। এবং তার বউ শাওন কিছুটা বোকা। তাই রিয়াজ বলে যেভাবেই হোক তোর বাবা মায়ের কাছে থেকে টাকাটা নিয়ে দিবি। তখনকার দিনে আবার স্বামীরা স্ত্রীদের তুই করে বলতেন। রিয়াজ নিজেকে তার বউয়ের কাছে প্রেসিডেন্ট বুস হিসেবে দাবি করতেন।

---

---

---

---

রিয়াজ তার বউকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে যায়। বিয়ের পরে প্রথমবার গিয়েছে। তার শ্বাশুড়ি দেখে তো খুবই খুশি। সাথে সাথে দোকানে চা চিনি আনার জন্য লোক পাঠিয়ে দেয়। এবং পেঁপে কেটে দেয় যাতে সে খাই। রিয়াজের একটা ক‍্যামেরা ছিল। সেই ক‍্যামেরা দিয়ে আবার সে সবার ছবি তুলে রাখত। এই যখন বিদেশ যাবে তখন সে ছবিগুলো দেখবে। এজাজুল হক তখন কাজে গেছে। কাজ শেষে সে এলাকার মাতব্বর এর বাড়ি যাবে যুদ্ধের খবর দেখতে। তখনকার সময়ে প্রতি এলাকায় এক থেকে দুইজনের বাড়িতে টিভি ছিল। তখন আবার আমেরিকা এবং ইরাক যুদ্ধ হচ্ছিল। যুদ্ধের মধ্যে ইরাকের ছোট ছোট শিশুরা পানি পাচ্ছে না। এজন্য এজাজুল হক সিদ্ধান্ত নেই সেও পানি খাবে না। যতদিন না যুদ্ধ শেষ হয়। এরমধ্যে সে বাড়ি গিয়ে দেখে তার জামাই এসেছে। রাতে সবাই একসঙ্গে খেতে বসে। রিয়াজের বউ শাওন প্রায় সব মুরগির মাংস রিয়াজের প্লেটে তুলে দেয়। এবং বলে আমার আব্বা মুরগির মাংস খাই না।

---

---

---

---

খেতে খেতে রিয়াজ তার শ্বশুরকে বলে আমি সৌদি যাব। কিছু টাকা কম পড়ছে এই ২০ হাজারের মতো। সেটা আপনি দেবেন। তখনকার দিনে ২০ হাজার অনেক টাকা। কিন্তু এজাজুল হকের নিজের ভিটা বাড়ি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই। অন‍্যদিকে রিয়াজ তার স্বামীকে বলে রেখেছে তোর বাপ যদি টাকা না দেয় তাহলে তোকে তালাক দিয়ে আমি চলে যাব। এজন্য শাওন নিজেও তার বাবা মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে। অন‍্যদিকে টানা কয়েকদিন পানি না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এজাজুল হক। একদিন কাজে গিয়ে মাথা খুড়ে পড়ে যায়।

---

---

---

---

এরপর গ্রামের এক টাকাওয়ালা লোকের কাছে ভিটাবাড়ি বন্ধক রেখে টাকা যোগাড় করে এজাজুল হক। এবং সেই টাকা তার জামাইকে দেয় এজাজুল হক। টাকা পেয়ে রিয়াজ এবং শাওন দুজনেই খুশি। শাওন খুশি কারণ তাকে আর তার স্বামী তালাক দেবে না। এরপর টাকা পেয়ে তার বউকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় রিয়াজ। অন‍্যদিকে এজাজুল হক পানি পান করে ছেড়ে দেওয়ায় গুরতর আহত হয়ে। কোনো উপায় না দেখে তার স্ত্রী গ্রামের কিছু লোকের সাহায্য নিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখানে শেষ হয় নাটকটা।

---

---

নাটকের শিক্ষা ও ব‍্যক্তিগত মতামত

---

---

এখানে মোটামুটি ৯০ এর দশকের গ্রামের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা একেবারে বাস্তব। মূলত তখন আমাদের সমাজের মেয়েরা খুবই অসহায় ছিল। বাবা এবং স্বামীর উপর নির্ভর করে তাদের জীবন চলতো। এজন্য স্বামীর শত অত‍্যাচার সহ‍্য করেও থাকতে হতো। এবং মেয়ের বাবা মা মেয়ের কথা ভেবে জামাইয়ের সব আবদার মেনে নিতো। যেমনটা এই নাটকে দেখা গেছে। রিয়াজ চাওয়া মাএই সামর্থ্য না থাকা সত্বেও মেয়ের ভালোর জন্য নিজের বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা যোগাড় করে মেয়ের জামাইকে দেয় এজাজুল হক। এটাকে আমরা যৌতুক বলে থাকি। তখন এই ঘৃণ্য প্রথাটা বেশ প্রচলিত ছিল। এখন অনেকটা কমে গেলেও এর প্রচলন এখনো রয়েছে।

---

---

ব‍্যক্তিগত রেটিং : ৯/১০

---

---

নাটকের লিংক

---

---