এবার অন্য দায়িত্বে।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
টাইটেল টা দেখে কিছুটা হলেও ধারণা করেছেন আপনারা যে আমি কী নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। না আজ আমি ঐরকম কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা দায়িত্ব নিয়ে কথা বলব না। তবে যেটা নিয়ে বলব সেটাও কম দায়িত্বের না। আপনাদের সঙ্গে এর আগে আমি ফুটবল সম্পর্কে বেশ কিছু কথা শেয়ার করেছিলাম। যেখানে একবার আমাদের দল জিতেছিল এবং একবার হেরেছিল। কিন্তু সেই দুইবার আমি ছিলাম দলের সক্রিয় খেলোয়ার। কিন্তু এবার আর খেলোয়ার না। এবারের দায়িত্ব ছিল তার থেকেও বড়। একটা খেলা সুষ্টুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় একজন নিয়ন্ত্রক এর। ক্রিকেটে যাকে আমরা আম্পায়ার বলি ফুটবলে রেফারি। আজ আমার উপর দায়িত্ব পড়েছিল সেই রেফারির। সেই দায়িত্ব টা কঠিন ছিল পালন করা এবং কিছু দ্ধিধাগ্রস্ত মূহুর্ত আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেব।
গতকাল আমাদের কলেজের ম্যাসেনজার গ্রুপে বলা হয় যে ইলেকট্রিক্যাল ষষ্ঠ সেমিষ্টার এর সঙ্গে সিভিল ষষ্ঠ সেমিষ্টার এর ফুটবল ম্যাচ রয়েছে। সবাই যেন প্রস্তুতি নিয়ে আসে। আমি আপাতত খেলার মতো অবস্থায় নেই। কারণ আমি বেশ অনেকদিন মাঠের বাইরে। বলের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই হঠাৎ ঐভাবে খেলা যায় না। সেজন্য আমি বলে দেয় আমি খেলতে পারব না আমার সমস্যা আছে। তবে আমি মাঠে থাকব খেলা দেখব। ঐভাবেই আজ কলেজে যায়। প্রথম দুই ক্লাস ভালোভাবে হয়। এরপর আমরা যারা খেলব তারা ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়। পরে অবশ্য শুনি যে আজ আর ক্লাস হবে না। কারণ আজ ছিল গণপ্রকৌশল দিবস। স্যার রা সবাই সেই অনুষ্ঠানে যাবে। মাঠে চলে গেলাম দেখলাম আমাদের দলের খেলোয়ার রা প্রস্তুতি নিচ্ছে ড্রেস আপ করছে। বিপক্ষ দলের খেলোয়ার রাও তাই করছে। আমার পুরো পরিকল্পনা আমি মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব। হঠাৎ আমার বন্ধু জিতু ডেকে বলছে ইমন বন্ধু রেফারি তুমি। জিতু আমাদের গোলকিপার বেশ ভালো খেলে ছেলেটা। আমি বললাম না আমি পারব না। কারণ এইরকম লোকাল পর্যায়ে রেফারি দেওয়া বেশ ঝামেলার। তারপর আবার লাইন ম্যান নেই।
কিন্তু দুই দলের ক্যাপ্টেন এসে বলল সমস্যা নেই হয়ে যাবে তুমি দাও। আমি একটু ফুটবল সম্পর্কে ভালো জানি সেজন্য মনে হয় আমার উপর ভরসা রেখেছে ওরা। যাইহোক ম্যাচ শুরুর প্রথমেই কিছু কথা বললাম ওদের উদ্দেশ্যে যে বন্ধুদের মধ্যে খেলা বেশি ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই। যথারীতি খেলা শুরু করলাম আমি বাঁশি দিয়ে। আমি আগেও বেশ কয়েকবার ফুটবল ম্যাচে রেফারি করেছি। কিন্তু এবারের অনূভুতি টা আলাদা ছিল। তারপর আবার কোনো দলেরই নির্ধারিত জার্সি নেই। সেজন্য একটু ঝামেলা হচ্ছিল আমার। প্রথমার্ধে মোটামুটি কোনো বিতর্ক ছাড়াই ম্যাচ পরিচালনা করি আমি। সেখানে আমাদের দল ১-০ তে পিছিয়ে ছিল। আমি আগেই বলি আমি রেফারি করলে কখনো পক্ষপাত করি না। আমি চেষ্টা করি একেবারে সঠিকভাবে খেলা পরিচালনা করার।। পরের হাফ খেলা শুরু হয় আমার বাঁশি দেওয়ার মাধ্যমে। খেলা মোটামুটি ভালোভাবে চলছিল। মারামারি বা সেরকম মারাত্মক ফাউল হয়নি।
ম্যাচ শেষ হতে হতে আমাদের দল আরও তিন টা গোল খেয়ে যায়। ম্যাচ শেষে ফলাফল দাঁড়ায় ইলেকট্রিক্যাল ( 0-4 )সিভিল। শেষবার যখন আমি খেলেছিলাম সিভিলের সঙ্গে তখন ফলাফল হয়েছিল ইলেকট্রিক্যাল 3-1 সিভিল। খেলায় জয় পরাজয় থাকবেই। তবে আশার কথা কোনো সিভিলের খেলোয়ারদের আমার ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু আমাদের ইলেকট্রিক্যালের কয়েকজন বলছিল আমি কিছু সিদ্ধান্ত ওদের পক্ষে দিয়েছি। এখন ওদের ওটা বলা স্বাভাবিক। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বর্তমানে একটা ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করে চারজন রেফারি। এবার কাতার বিশ্বকাপে অফসাইড টেকনোলজি থাকবে মানে পাঁচটা হলো। সেখানে আমি একা একটা ম্যাচ পরিচালনা করছি একটু সিদ্ধান্ত ভুল হতেই পারে। তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি একেবারে ফেয়ার খেলানোর জন্য। এইরকম দায়িত্ব গুলো খুবই কঠিন। কারণ এখানে একটা এমন তেমন সিদ্ধান্তে মারামারিও হতে পারত। তবে শেষমেষ ম্যাচ টা বেশ ভালোভাবে শেষ হয়েছে। এটা ছিল আমার পরিচালনা করা তৃতীয় ফুটবল ম্যাচ। এবং আপনাদের জানিয়ে রাখি আমার পরিচালনা করা প্রথম দুটো ম্যাচে একটু হাতাহাতি হয়েছিল মারামারি না কিন্তু আজ হয়নি।।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | নভেম্বর,২০২২ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
খেলায় হার-জিত থাকবেই। তবে নিজের টিম যখন খেলছিলো আপনি এই দায়িত্ব না নিলেই পারতেন। ফাল্তু ব্লেম কে ই বি নিতে ভালোবাসে বলুন।তবে আপনার দলের ছেলেরা আপনায় ব্লেম দিলো নাকি আনন্দে বলল তা জানি না। জয় আপনাদের হয়েছে সেটাই হয়তো উচ্ছাসের কারণে বলা। আর বিশ্বকাপ আর কলেজ ফুটবল দুইই আকাশ পাতাল ব্যাপার। আর যখন দুই দলের ক্যাপ্টেন বলেছিলো সমস্যা নেই তবে তো এই নিয়ে সমস্যাই নেই।
ঠিকই বলেছেন আপনি আমার রেফারি করাই উচিত হয় নি।
এই জন্যে নিজেদের মধ্যে ম্যাচে রেফারি থাকতে হয় না।আপনি যতই সত থাকার চেষ্টা করেন,দিনশেষে যেই দল হারবে সেই আপনাকে ব্লেম দিবে আর এমনটা আমার সাথেও অনেকবার হয়েছে।তবে আপনি রেফারি না থেকে খেললেই মনে হয় ভালো হতো,আর রেজাল্ট টাও ভিন্ন হতে পারত।
ঠিকই বলেছেন ভাই। রেফারি করাটাই ভুল ছিল।।
বাহ এতো বিশাল এক দায়িত্ব ভাই। একদম খেলোয়ার থেকে রেফারি বনে গেলেন। সব দায়িত্ব ঠিক মত পালন এর পরও নিজের দল আপনাকে বললো তাদের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিষয়টা আপনার কাছে কেমন লেগেছিলো ভাই? খারাপ লাগেনি? যদি কথাটা সিভিল এর খেলোয়ার রা বলতো তাও বুঝতাম। কিন্তু বলেছে আপনার নিজেরি দলের খেলোয়ার রা। একটু নিশ্চই খারাপ লেগেছে।
অবশ্যই খারাপ লাগছে ভাই। আমার ফ্রেন্ড রা বলল ও ওদের দিকে সিদ্ধান্ত দিয়েছি।।
নিজেদের ম্যাচ এ রেফারি এজন্য ই থাকা ঠিক হয়নি ভাইয়া আর একা ই বা পারা সম্ভব নাকি? যাই হোক জয় পরাজয় ত আছেই। মনে হয়, আপনি খেললে বেটার কিছু হত। যাক, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করে জানানোর জন্য। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।