"আমার বাংলা ব্লগ".ঘেটু পুএ কমলা - সম্পূর্ণ মুভি পর্যালোচনা। ৭ জুলাই ২০২১.
হুমায়ুন আহমেদ নামটা বাঙ্গালীদের কাছে খুবই পরিচিত। বলা হয় একজন হুমায়ুন আহমেদ ১০০ বছরে একটি আসে এবং যখন আসে তখন ১০০০ বছরের রসদ রেখে যায়। ঠিক যেমন ছিলেন সত্যজিৎ রায়। আজ আমি হুমায়ুন আহমেদের রচিত এবং পরিচালিত একটি মুভি " ঘেটু পুএ কমলা " নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। সবাই সাথে থাকবেন।
মুভি সম্পর্কে কিছু তথ্য:
--------- | ------- |
---|---|
পরিচালক | হুমায়ুন আহমেদ |
লেখক | হুমায়ুন আহমেদ |
সংগীত | মকসুদ জামান মিন্টু, এস আই টুটুল, ইমন শাহ। |
এডিট | সলিমুল্লাহ |
সিনেমাট্রগ্রাফি | মাহফুজ উর রহমান খান |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
মুভির দৈর্ঘ্য | ২ ঘন্টা |
মুক্তি | ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ |
অভিনয়ে:
নাম | চরিত্র |
---|---|
মামুন | ঘেটু পুএ কমলা |
তারিখ আনাম খান | জমিদার হেকমত আলী |
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় | কমলার পিতা |
মুনমুন আহমেদ | জমিদার স্ত্রী |
আগুন | চিএশিল্পী |
প্রাণ রয় | নৃত্য শিক্ষক |
শামিমা নাজনিন | ময়না, রাঁধুনী |
তমালিকা কর্মকার | কমলার মা |
মাসুদ আকন্দ | ঘোড়া পালক |
রহমত আলী | মিষ্টির দোকানদার |
কুদ্দুস বয়াতি | গায়ক |
তৎকালীন সময়ে ঘেটু গানের প্রচলন ছিল। সব জমিদার ধনী ব্যক্তিরা ঘেটু গানের আয়োজন করত। এখানে জমিদার চৌধুরী হেকমত আলী হলো বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার জমিদার। বর্ষা মৌসুমে হাওড়ে পানি আসাই তার কোন কাজ নেই। তাই তিনি ঘেটু দলকে খবর দেয় ঘেটু গান শোনার জন্য। কিন্তু এই ঘেটু গানের পিছনে লুকিয়ে ছিল এক কুৎসিত এবং নোংরা ঘটনা। মূলত ঘেটু গানের দলে যে নৃত্য শিল্পী থাকত সেটা ১৪,১৫ বছরের একটি ছেলে। কিন্তু সে মেয়ে সেজে নৃত্য করত। এবং এই সুন্দর চেহারার বালকদেরকে জমিদাররা শয্যা সঙ্গী বানাত। এবং তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালাত। বতর্মান ভাষায় এরা ছিল সমকামী। এর জন্য জমিদাররা ঘেটু গানের আসর বসাত। সেরকম ভাবে একটি ঘেটু গানের দল আসে জমিদারের বাড়ি। ঘেটু পুএের নাম কমলা। জমিদার তার নৃত্য দেখে কিন্তু জমিদারদের নৃত্য খুব একটা ভালো লাগে না। কিন্তু জমিদারের উদ্দেশ্য আলাদা। জমিদার সত্যি সত্যি কমলাকে তার শয্যাসঙ্গী বানায় এবং তার উপর নির্যাতন চালায়। কিন্তু জমিদারের বউ সেটা মেনে নিতে পারেনি। তাই সে জমিদার বাড়ির রাঁধুনী কে বলে কমলা কে হত্যা করতে। কমলা ছিল খুবই শান্ত স্বভাবের বালক। সে প্রতিদিন জমিদার বাড়ির ছাদে যায়। এবং জমিদার কন্যার সাথে কমলার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একমাস পর একদিন দুপুরে ঘেটু পুএ কমলা ছাদে হাটতে থাকে। এবং রাঁধুনী সুযোগ বুঝে ছাদে যায় এবং কমলাকে ধাক্কা মারে এবং ছাদ থেকে ফেলে দেয়। কমলা নিচে পড়ে এবং মারা যায়। তখন সবাই ঘুমাচ্ছে কিন্তু চিএশিল্পী ঘটনা টা দেখে। এরপর জমিদার কমলার পিতাকে বলে আমি তোমাকে অনেক টাকা দেব সারাজীবন বসে খেতে পারবে। এবং কমলার দাফন হয়ে যায়। কিন্তু জমিদার বিষয়টি বুঝে এবং বলে এটা সাধারণ না। নিশ্চয়ই কমলাকে কেউ হত্যা করেছে। জমিদার বুঝতে রাঁধুনি ময়না তার স্ত্রীর নির্দেশে এইটা করেছে। তাই জমিদার ময়নাকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এভাবেই শেষ হয় মুভিটা।
মূলত এখানে পূর্বের সমাজের একটি কুৎসিত চিএ ফুটে উঠেছে। ছবিটি খুবই ভালো মুভি। আপনারা দেখতে পারেন।
মুভির প্রাপ্ত পুরষ্কার :
--------- | ------ |
---|---|
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার | সেরা চলচ্চিত্র ২০১২ |
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার | শ্রেষ্ঠ শিশু অভিনেতা ২০১২ |
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার | শ্রেষ্ঠ গল্প লেখক ২০১২ |
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার | শ্রেষ্ঠ সংলাপ ২০১২ |
মেরিল প্রথম আলো | সেরা চলচ্চিত্র ২০১২ |
মেরিল প্রথম আলো | শ্রেষ্ঠ পরিচালক ২০১২ |
ব্যক্তিগত রেটিং : ১০/১০