||| অনেকদিন পরে ||

সতত হে নদ,তুমি পড়ো আমার মনে,
সতত হে নদ, তোমার কথা ভাবি বিরলে।

এটা মাইকেল মধুসূদন দওের লেখা "কপোতাক্ষ নদ" কবিতার প্রথম দুই লাইন। কবি যখন বিলেতে ছিলেন তখন এই নদ তার মনে পড়তো। এরপর যখন উনি স্বদেশে আসেন তখন এই নদ নিয়ে কবিতা লিখেন। বাংলাদেশে নদীমাতৃক দেশ। কথিত আছে বাংলাদেশে ছোট বড় ভালো মিলিয়ে প্রায় তেরোশত নদ নদী আছে। আমার শহরে একটি মাএ নদী। কিছুদূরে অবশ‍্য আরেকটা নদী আছে। তবে ছোট থেকে একটা নদীর কথাই সবার মুখে শুনতাম। নদীটার নাম ছিল গড়াই এটা পদ্মা নদীর অন‍্যতম প্রধান শাখা নদী। এই নদী দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল আমার, কিন্তু দেখা হত না বিভিন্ন কারণে। তো আমি যখন মাধ্যমিক বিদ‍্যালয়ে ভর্তি হয় তখন এই নদীর পাশে একটা বিদ‍্যালয় আছে সেখানে ভর্তি হয় শুধু এই নদীটা দেখার জন্য। যদিও আমার বাড়ি থেকে প্রথমে রাজি ছিল না। এই গল্প অন‍্যদিন করব। প্রতিদিন স্কুলে আগে যেতাম এবং এই নদীর পাড়ে বসে থাকতাম এবং টিফিনের পুরো সময় টা এখানে কাটাইতাম। পুরো পাঁচবছর এভাবে কেটেছে। নদী টার সঙ্গে অনেক গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছিল।।

---

---

---

---

তবে আমি যখন কলেজে ভর্তি হয় প্রতিদিন কিন্তু এই নদী দেখি। কারণ এই নদীর উপর দিয়ে নির্মিত সেতু পার হয়ে আমি কলেজে যায়। কিন্তু আমার মাধ্যমিক বিদ‍্যালয়ের সামনেই ঐ অংশের নদীটুকু দেখার মাঝে যে আনন্দ যে শান্তি সেটা পেতাম না। বাড়ি থাকলেও খুব একটা ঐদিকে যাওয়া হয় না। কারণ প্রথমত আমি সাথী ছাড়া পথে বের হয় না। আর আমার ঘোরাঘুরির সাথী বা সঙ্গী আমার বন্ধু লিখন। লিখন এখন ঢাকায় থাকে মাঝে মাঝে যখন আসে তখন বের হয়। কিছুদিন আগে আমরা বের হয়েছিলাম। আমি আগেই লিখনকে বলে দেয় লিখন আজ কিন্তু এম এন পার্কে যাব গড়াই নদীর পাড়ে। লিখন বলে ঠিক আছে। বের হয়েছিলাম বিকেল ৫ টার দিকে। ঘন্টাখানেক এদিক সেদিক ঘুরলাম।এরপর সন্ধ‍্যার একটু আগে আমরা গেলাম ঐ খানে। আমাদের স্কুলের পাশে গড়াই নদীর পাড়ে। ঐ জায়গা টাকে এখন মানুষ এম এন পার্ক বলেই চিনে।।

এখানে বিকেলে অনেক মানুষ থাকে। সেজন্য সন্ধ‍্যার একটু আগে আসা। সেসময়ে সব মানুষ চলে যায় এবং আলাদা একটা শান্তির বাতাস পাওয়া যায়। সেজন্য একটু দেরীতে যাওয়া আর কী।।

---

---

যথারীতি গিয়ে বসলাম আলম ভাইয়ের চটপটির দোকানে। আমার বিগত কিছু পোস্টে আলম ভাইয়ের সম্পর্কে আপনাদের বলেছি। আলম ভাই এখানের বিখ‍্যাত চটপটি ফুসকা বিক্রেতা। দেখি আলম ভাইয়ের দোকানের চেয়ারে কিছু মেয়ে বসে আছে ইশারা করলাম। আলম ভাই বলল দাঁড়াও এখনি চলে যাবে। আমি আবার মেয়ে মানুষ থেকে দূরে থাকি হি হি। কিছুক্ষণ পর মেয়েগুলো চলে গেলে আমি এবং লিখন চেয়ার নিয়ে বসে পড়লাম নদীর পাড়ে। সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। সন্ধ‍্যা আগত নদীতে বেশ অনেক পানি। এবং দারুণ বাতাস বইছে নদীর পাড় বলে কথা। পুরান দিনগুলোর কথা মনে পড়ছিল। বেশ অনেকদিন পর আবার এখানে ফিরে আসা। ঐ মধুসূদন দওের মতো স্বদেশ বিদেশ যেখানেই যায় না কেন এই নদী একেবারে হৃদয়ের মনিকোঠায় থাকবে। আলম ভাইয়ের চটপটি ফুসকা দুইটাই আমার পছন্দ।

লিখন বলল আমি ফুসকা খাব আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে আমি চটপটি খাব। কারণ প্রতিবার লিখন চটপটি নিয়ে আমার ফুসকাই ভাগ বসাই আজ আমি এইটা করব। হ‍্যা সেটাই করছিলাম। যদিও লিখন একটু বেঁকে বসেছিল। সময় টা বেশ দারুণ কেটেছিল ঐ জায়গাই। ঐখান থেকে বাড়ি আসি সন্ধ‍্যারও বেশ কিছুক্ষণ পরে। কারণ যতই রাত বাড়তে থাকে জায়গাটা যে আরও সুন্দর হতে থাকে।

---

---

------	-----
ফটোগ্রাফার	@emon42
ফটোগ্রাফি ডিভাইস	Redmi note 10 pro
সময়	আগষ্ট, ২০২২

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

---

---

---

---

---

---

---

---