!! স্মৃতিটুকু রয়ে গেছে: লিচু চুরি!! ১০% বেনিফেসিয়ারি @Shy-fox এর জন্য।

আমার বাংলা ব্লগে নিজের মাতৃভাষায় লিখতে লিখতে নিজের মধ্যে আলাদা একটা লেখার আগ্রহ জেগে উঠেছে। যেটা আমি ছাড়াও আরও অনেকের জেগে উঠেছে। গতকাল আমি আমার অতীতের একটা ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। যাইহোক আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ছোটবেলার আরেকটা ঘটনা শেয়ার করব। সত্যি এখন ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে অনেক ভালো লাগে। আগে কত দূরন্ত ছিলাম। আমি আজকে আপনাদের সাথে আমার যে ঘটনা টা শেয়ার করব সেটার নাম দিয়েছি লিচু চুরি। আপানারা নন্টে ফন্টে দেখেছেন তো। হ‍্যা নন্টে ফন্টেতে লিচু চুরির একটা এপিসোড আছে। যাইহোক চলুন শুরু করা যাক।

---

---

আমার জীবনের যত দুষ্টামির ঘটনা আছে এর বেশিরভাগ করেছি আমি ২০১৫,২০১৬ সালে। সালটা ২০১৬ গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম। আমি তখন অষ্ঠম শ্রেণির ছাএ। তখন মে মাস। গরমের ছুটি দেবে দেবে এমন একটা ভাব। আমিও অপেক্ষায় আছি কবে গরমের ছুটি পাব। যাইহোক প্রতিদিন সকালে স্কুলে যাওয়া এবং বিকেল চারটেতে ফিরে আসা। এরপর বিকেলে বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট এভাবেই চলছিল। আম মোটামুটি পাকা শুরু হয়েছে। আমাদের আম গাছ ছিল সেজন্য আমের প্রতি খুব একটা আগ্রহ জাগত না। এবং অন‍্যের গাছ থেকে কয়েকটি পেড়ে খেলেও কিছু বলত না। কিন্তু আমাদের গ্রামে সেরকম লিচু গাছ নেই। শুধুমাত্র একটা লিচু বাগান। পাড়ার সব ছেলের নজর ঐ লিচু বাগানে। গ্রামের ছেলেরা খুবই দূরন্ত হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকাল লিচু বাগানের গাছগুলোতে অনেক লিচু ধরেছে। আমরা সব বন্ধুরা মিলে ঠিক করি একদিন লিচু খেতে হবে। কিন্তু ঐ লিচু বাগানের মালিক খুবই কিপ্টা। এবং বেশ ভালো পাহাড়া থাকে বাগান টাই।

---

---

তো আমরা সেই চারমূওি মনে আছে তো আপনাদের। মানে আমি শিমুল, তোহা এবং মেহেদী। গ্রামে আমরা সমবয়সী ছেলে এই চারজন। ঠিক করলাম যেভাবেই হোক এবার ঐ বাগানের লিচু খেতে হবে। গতবার লিচু বাগানের মালিক লিচু খাওয়াতে চেয়েও খাওয়াই নাই। তাই এবার খেতে হবে। এবং চুরি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু সেটা কীভাবে। বাগানে বেশ ভালো পাহাড়া থাকে ধরতে পারলে আর রক্ষে নেই। এরই মধ্যে আমাদের গরমের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। গরমের সময়ে সন্ধ‍্যার পর গ্রামে আবার লোডশেডিং বেশি হয়। এমন এক সন্ধ‍্যায় লোডশেডিং হয়েছে। আমাদের চারজনের প্লান করা শেষ। আমাদের প্লান ছিল এমন যে লিচু বাগানের যে পাহাড়াদার আছে লোডশেডিং এর সময় যে করেই হোক তার বাড়ির মেইন সুইচের ফিউজ আমরা কেটে দেবে। যেহেতু গ্রাম লোডশেডিং হলে কেউ ঘরে থাকেনা। সেজন্য আমাদের ফিউজ কাটার কাজটা সহজ হয়ে যায়। পাহাড়াদার সম্পর্কে আমার চাচাতো দাদা। ফিউজ কাটার কাজটা আমি করি এবং পাহাড়ায় থাকে আমার বন্ধুরা। কারেন্ট চলে এসেছে সবার বাড়িতে কারেন্ট আছে কারেন্ট নেই শুধু লিচু বাগানের পাহাড়াদারের বাড়িতে। থাকবে কী করে ফিউজ তো কাটা। সবকিছু আমাদের প্ল‍্যান মতো এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই বসে গল্প করছি। প্ল‍্যান মতো আমার ঐ দাদি এসে বলছে আমাদের ঘরে কারেন্ট নেই লিচু বাগান থেকে তোর দাদাকে একটু ডেকে এনে দিবি। ব‍্যাস আমাদের প্ল‍্যান সম্পূর্ণ।

---

---

আমি এবং তোহা যাব দাদাকে ডাকতে। আমি জানি দাদা বাড়িতে আসলে আমাকে পাহাড়ায় রেখে যাবে। আমি এবং তোহা থাকব পাহাড়ায় এবং সেই সময়ে শিমুল এবং মেহেদী বাগানে ঢুকে লিচু পাড়বে। সবকিছু আমাদের প্ল‍্যান মতো হলো। হবে নাই কেন প্ল‍্যানের মাস্টারমাইন্ড ছিলাম তো আমি। পাহাড়াদার দাদা গেল বাড়িতে পাহাড়ায় আমি এবং তোহা। শিমুল এবং মেহেদী বাগানের পেছন দিক দিয়ে ঢুকে পাকা দেখে বেশ কয়েক ঝোপ লিচু পেড়ে চলে যায় আমাদের পূর্বপরিকল্পিত জায়গাই। এরপর পাহাড়াদার দাদা চলে আসে। বলে কেউ লিচু বাগানে আসে নাই তো আমি বললাম না। দাদা বল দাড়া অনেক কষ্ট করেছিস তোরা। দুই ঝোপ লিচু নিয়ে যা। আমি বললাম বাহ ভালো হলো। পাহাড়াদার দাদার লিচু গুলো আমরা যেতে শেষ করে ফেলি। এবং আমাদের সেই জায়গাই গিয়ে শিমুল এবং তোহার পেড়ে নেওয়া লিচুর সমান চারভাগ করি। এরপর চলে আমাদের লিচু খাওয়ার পালা। আহ কী স্বাদ সেই লিচুর। আমরা চারজন ছাড়া এই ঘটনা আর কেউ জানে না। আজ আপনাদের জানালাম। কেমন লাগল আমাদের লিচু চুরির ঘটনা।

---

---

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ করে আমি ফুটবল পছন্দ করি।

---

---

---

---

---

---

---

---