!! রেলওয়ে স্টেশনের ছিন্নমূল মানুষের জীবন!! ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।

প্রকৃতি পরিবর্তশীল। প্রকৃতি পরিবর্তন হলে নতুন পরিবেশ আসে এবং মানুষ নতুন এর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। এভাবে খাপ খাইয়ে নিতে নিতেই চলে মানুষের জীবন। সব মানুষ খুব সহজে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা। তবে এটা সম্ভব হয় কিছু সময় অপেক্ষার পর। একবার ভেবে দেখুন আজ থেকে কয়েকবছর আগে আপনি কেমন অবস্থানে ছিলেন এখন কেমন অবস্থায় আছেন। আগে কতটা ব‍্যস্ত থাকতেন এখন কতটা ব‍্যস্ত থাকেন। ভাবলে কিছুটা অবাক হবেন। হয়তো দেখবেন আপনি আর সেই আগের মতো আপনি নেই অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আপনার এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে প্রকৃতি পরিবেশ এবং পরিস্থিতির কারণে।

---

---

---

w3w

---

আমি আপনাদের আগেও কয়েকবার পোস্টের মধ্যে বলেছি আমার বাড়ি থেকে আমার কলেজের দূরত্ব এই ১৬ কিলোমিটার। মোটামুটি যোগাযোগ ব‍্যবস্থা ভালো সেজন্য আমি বাড়ি থেকেই ক্লাস করি। আমার ক্লাস যখন শেষ হয় ঠিক সেই সময়ে কুষ্টিয়া কোর্ট কুষ্টিয়ায় লোকাল ট্রেন আসে। সেজন্য আমি এবং আমার বন্ধুরা প্রায় দিন ট্রেনে বাড়ি ফিরি। কারণ আমরা ছাএ ট্রেনে টাকা টা কম লাগে তাই আর কী। যাইহোক তো বেশিরভাগ দিনই আমাদের কোর্ট কুষ্টিয়া স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা লাগে। এরমধ্যে অনেক অসহায় লোক আমাদের নজরে আসে যারা এই স্টেশনেই থাকে। কিন্তু আমার সাথে বন্ধুরা থাকাই ওদের সাথে গল্প করেই সময় টা আমি কাটিয়ে দেয়। আগে কখনো আমি এই লোকগুলোর দিকে খেয়াল করি দেখি নাই সেইরকম।

---

---

---

w3w

---

কিন্তু গতকাল শুক্রবার আমি অন্য একটি কাজে কুষ্টিয়া গিয়েছিলাম। কিন্তু আসার সময়ে আমি বেশ কিছুক্ষণ স্টেশনে বসি। সেই সময়ে আমি খেয়াল করি। মোট পাঁচজন লোক ছোট একটা বাচ্চা তাদের কোলে এই কয়েকমাস বয়স হবে। এদের মধ্যে একজন পুরুষ এই ৩০ বছর মতো বয়স। তার একটা হাতের আঙ্গুল গুলো নেই এবং দূর্ঘটনায় পা কাটছে এবং তার মুখের ভাষাটা বেশ খারাপ। এবং একজন মেয়ে বয়স খুব একটা বেশি না তার কোলে ছোট বাচ্চা মেয়ে। বুঝলাম মেয়েটা তার এবং ঐ যুবক টা সম্ভবত তার স্বামী। এবং আর দুজন সম্ভবত ঐ ছেলের বাবা মা। এরা এই স্টেশনেই থাকে। কিছুক্ষণ পর একজন লোক স্টেশনে এইসব লোকদের দেওয়ার জন্য খিচুড়ি নিয়ে আসলো। এটা প্রতিদিন দেয় কী না জানিনা। শুক্রবার মুসলমানদের জন্য বিশেষ একটি দিন সেজন্য দিতে পারে। তো ঐ লোকটা সেআ খাবার আনতে গেল না। এবং ওর স্ত্রী কে বলল যা তুই গিয়ে খিচুড়ি নিয়ে আয়। জবাবে তার স্ত্রী বলল আমার কাছে এতো মানুষের টা দেবে না। ছেলেটা বলল গিয়ে আমার নাম বলবি। নাম বলাতেই দেয়নি। সে ঐ লোককে লক্ষ্য করে দু চারটা গালি দেয়।

---

---

---

w3w

---

এরপর তার স্ত্রী তাকে নিজের ভাগের খিচুড়ি টা দিয়ে দেয়। পুরুষ টা খেতে শুরু করে কিন্তু নিজের স্ত্রীকে একবারও খেতে বলে না। খাওয়া শেষ করেই পুরোষটা একটা সিগারেট ধরাই। বাচ্চাটার পাশেই সিগারেট খাওয়া শুরু করে। এভাবেই এদের দিন কাটে। সারাদিন এই স্টেশনে থাকে রাত হলে কোনো এক জায়গা ঘুমিয়ে পড়ে। এদের জীবন আর আপনার জীবন চিন্তা করে দেখেন। সে কিন্তু তার জীবন নিয়ে ভালো আছে সেরকম কোনো অভিযোগ নেই। তাদের মুখে আমি তৃপ্তির হাসি দেখেছি। সুতরাং নিজের জীবন নিয়ে কখনো হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন, আপনি যে অবস্থানে আছেন সেটাও অনেকর কাছেই স্বপ্ন। এরপর ট্রেন চলে আসে। আমি আমার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে পড়ি।

---

---

------	-----
ফটোগ্রাফার	@emon42
ফটোগ্রাফি ডিভাইস	VIVO Y91C

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

---

---

---

---