||| আম চুরি |||

চুরি কথাটা শুনলেই কেমন হয় না। তবে চুরি কিন্তু আমরা সবাই করেছি। না আমি অন‍্যের মালামাল চুরির কথা বলছি না। চুরি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ছোটবেলা বন্ধুদের সাথে আম লিচু জাম এগুলো সবাই চুরি করেছি ধরে নেওয়া যায়। কারো তো আবার মাছ চুরির ও ঘটনা আছে। না আজকে ওসব কিছু বলব না। গতকাল রাতে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখন ও মনে করিয়ে দিল একটা ঘটনা। ঘটনাটা ছিল আম চুরির। আমি ভুলেই গেছিলাম। গতকাল বন্ধু এবং আমি এটা নিয়ে আলোচনা করলাম। ভাবলাম সেটা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি। তাহলে পরে ভুলে গেলেও সমস্যা হবে না থেকে যাবে। হয়তো একশো বছর পর আমার ছেলে মেয়ে পড়বে। যাইহোক আসল ঘটনায় যাওয়া যাক।।

---

---

আমি যে স্কুলে পড়তাম কুমারখালী এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ‍্যালয় অনেক বড় একটি জায়গা নিয়ে গঠিত। এবং আমাদের বিদ‍্যালয়ের মালিকানাধীন অসংখ্য আম গাছ রয়েছে। আম গাছের সঠিক পরিমাণ বলতে পারব না। তবে প্রতিবছর স্কুল কতৃপক্ষ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেন। হিমসাগর, ফজলি, ল‍্যাংড়া, আম রুপালী সব প্রকার আমের গাছ আছে। ২০১৮ সালের কথা। আমি তখন দশম শ্রেণির ছাএ। ঐ স্কুলে আমার পঞ্চম বছর। প্রথম কয়েকবছর বেশ ভয় পেতাম সেজন্য আম পাড়তাম না। তবে যতই বড় হয়েছি ভয় যেন ততই কেটেছে। তো তখন আমের সময় চলছে। গ্রীষ্মের দুপুর বলা যায়। টিফিন টাইমে মাঠে খেলতেও পারি না গরমের জন্য। অন‍্যদিকে গাছে বড় বড় কাঁচা আম। কিন্তু আম গাছের আম পাহাড়া দেওয়ার জন্য পাহাড়াদার ও রয়েছে। কোনো কিছুতেই কেউ সাহস করে না আম পাড়ার। কিন্তু আমাদের আম খেতে হবে স্কুলেরএ আম। তো ঠিক করলাম মাঠের দক্ষিণ পাশের হিমসাগর গাছের আম খাব। কিন্তু ঐ গাছের নিচে একজন পাহাড়াদার থাকে। উনি আবার একটু বয়স্ক। আমরা দাদু বলতাম।

তো ঐ বুড়া আবার বেশ গল্পপ্রেমিক ছিল। পোলাপান কাছে গেলে গল্পের আসর বাঁধিয়ে নিত। তো আমরা সেই সুযোগটাই নেয়। আমাদের গ্রুপে ছিলাম আমি, তুহিন, ওলি, লিখন, আপন। তো এখন আমাদের প্ল‍্যান ঠিক করার পালা। কী করে কী করব। তো অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করে ফেললাম।

---

---

Source

---

---

আমাদের প্ল‍্যান ছিল সবচেয়ে মিষ্টি চেহারার আপন এবং লিখন গিয়ে দাদুর সঙ্গে গল্প বাঁধিয়ে নেবে। এবং গল্পের গন্ধ পেয়ে আরও কিছু জুনিয়র জড়ো হবে এটা নিশ্চিত ছিলাম। আমি এবং ওলি লম্বা দুজন গিয়ে দাদুর সামনে দাঁড়াব যেন উনি পেছনে কিছু দেখতে না পাই। এবং এই সুযোগে তুহিন আম পাড়বে পেছন থেকে। প্ল‍্যান এর সুবিধার্থে আরেকজন আমার বন্ধু ইকরা কেউ দলে নিলাম। কারণ দুজন মিলে পাড়লে দ্রুত হবে। তবে সবকিছু খুবই সাবধানতার সঙ্গে নিংশব্দে করতে হবে। এবং চুরি নিয়ে যাব আমি ঝাল নিয়ে যাবে আপন। প্ল‍্যান ঠিকঠাক পরেরদিন আমরা প্ল‍্যান বাস্তবায়ন করব। তো সেদিন সবাই এসেছে ক্লাসের। সেদিন কেউ টিফিন নিয়ে আসেনি। অপেক্ষা করছি কখন টিফিন হবে। টিফিন হয়ে গেলে কী রোদ আর গরম। প্ল‍্যান মাফিক প্রথমে আপন এবং লিখন চলে গেল গল্প করতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আসর জমে গেল। এরপর আমি এবং ওলি গিয়ে আড়াল করে দাড়ালাম দাদুর সামনে। ইশারা করতেই ইকরা এবং তুহিন আমি পাড়লো গাছ থেকে। গাছ ছোট মাটিতে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে পাড়া যেত।

পর্যাপ্ত পরিমাণ আম পাড়া হলো। এরপর এক এক করে সবাই কেটে পড়লাম। না ক্লাসে নিয়ে যায়নি। ক্লাসে অনেক পোলাপান অন‍্যদের ভাগ দেওয়া লাগবে। তাই চলে গেলাম ভোকেশনাল বিল্ডিং এর পেছনে। প্রথমে আমগুলোর খোসা ছাড়ালাম। এরপর ঝাল দিয়ে খেলাম। আহ কী স্বাদ। হিমসাগর আম কাঁচা টা কিন্তু বেশ মিষ্টি হয়। চুরি করা আম সেজন্য যেন আরও বেশি স্বাদ লাগছিল।এভাবে তার পরের দিনও চলে আমাদের আম চুরি মিশন। কিন্তু তারপর দিয়ে দিল গরমের ছুটি😩। ব‍্যাস মাএ দুইদিন করার পর আর সুযোগ পাইনি। ছুটি শেষে এসে দেখি সব গাছের আম পেড়ে ফেলেছে😑। তবে ঐদিনের আমের স্বাদ কখনো ভুলব না।।

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে।

---

---

---

---

---

---

---

---