||| ভূক্তভোগী |||

আচ্ছা কখনো এমন কোনো পরিস্থিতিতে পড়েছেন আপনি যেখানে কোনো অপরাধ না করেই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে শাস্তি পেতে হয়েছে। আমি কখনো হয়নি। তবে আমাদের মধ্যে হয়তো এমন অনেকেই আছেন যারা অন‍্যের ষড়যন্ত্রের ভূক্তভোগী। আসলে পৃথিবীটা এমন একটা অবস্থায় চলে গেছে আপনি কোনোভাবেই ক্ষমতাশালীদের বিপক্ষে যেতে পারবেন না। তাদের কথা না শুনলেও বিপদ। কখন কোন বিপদে ফেলে দেয় তার কী ঠিক আছে বলেন। যাইহোক চলুন আজ এমন একটা ঘটনাই শেয়ার করব আপনাদের সঙ্গে যেটা আমার সামনে ঘটে গেছে।।

---

---

এই বছরের মে মাসের কথা। আমাদের কুষ্টিয়া পলিটেকনিকের সপ্তম সেমিষ্টারের ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির ছাএ ওমর ভাইয়ের সঙ্গে ঘটনা টা ঘটে। ওমর ভাইকে আমি সরাসরি চিনি। উনি অনেক ভালো মানুষ এবং আমার এলাকার বড় ভাইয়ের ক্লাসমেট। বেশ শান্তশিষ্ট ধর্মীয় অনুসাশন মেনে চলেন। যাইহোক উনি লেখাপড়ার জন্য কলেজের পাশে একটি মেসে থাকতেন। উনার সঙ্গে থাকত আরও বেশ কয়েকজন ছাএ। উনি ছিলেন মেস এর ম‍্যানেজার। সাধারণত মেস এর ম‍্যানেজার সব দায়িত্ব পালন করে থাকে এবং উনি যেহুতু সবার বড় ছাএরা উনার কথা মেনে চলতো। তো একদিন ঐ এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী দলের একটি সমাবেশ ছিল দলের নামটা প্রকাশ না করি। আর এটা রাজনৈতিক কোনো আলোচনা না। আমি শুধু সত‍্য ঘটনা টা তুলে ধরছি। তো ঐ এলাকার কিছু নেতা ওমর ভাইয়ের মেসে যায়। এবং বলে তোমরা আজ আমাদের সঙ্গে ঐ সম্মেলনে যাবা। ওমর ভাই খুব সহজ উওর দিয়ে বলেন ভাই আমরা ছাএ মানুষ। আমরা ঐসব সম্মেলনে যেতে পারব না এবং এখানকার সব ছাএ রা আমার ছোট ওরা আমার কথা শুনে চলে। আমি ওদেরও যেতে দিতে পারব না। ওমর ভাইয়ের কথা শুনে ঐ নেতা বলে ঠিক আছে দেখে নেব। এই বলে চলে যায়।।

---

---

এর ঠিক দুইদিন পরের ঘটনা। ওমর ভাই স্থানীয় মসজিদে গেছে এশার নামাজ পড়তে। নামাজ পড়ে এসে দেখে তার মেসে পুলিশ এসেছে। এবং তার রুমে অনেক পুলিশ। পুলিশ তাকে এবং মেসের বাকি ছাএদের ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে শোনা যায় পুলিশ বলছে ওমর ভাই নাকী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ঐসব ছাএরা উনার নেতৃত্বে কাজ করে। এবং আরও কী সব জিহাদি বই উদ্ধার করছে ভাইয়ের রুম থেকে। যাইহোক পরেরদিন মোটামুটি অন্য সব ছাএকে ছেড়ে দিলেও ওমর ভাইকে ছাড়েনি। উনাকে কোর্টে চালান করে দেয়। এবং উনার তিন মাসের জেল হয়। উনি দুইমাস পরে জুলাইয়ে এর মাঝামাঝি জামিনে বের হয়েছে। কয়েকদিন আগে আমি ওমর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললাম। উনি বললেন আমি ষড়যন্ত্রের স্বীকার। পরবর্তীতে উনি যখন সব খুলে বললেন মোটামুটি সব কিছু পরিষ্কার হলো। কে বা কারা ষড়যন্ত্র করছে সেটা মোটামুটি আপনিও বুঝছেন আমিও বুঝছি। কিন্তু কিছু করার নেই।।

ওমর ভাইয়ের বিষয়ে ক্লাসের ছাএ উনার এলাকা এবং শিক্ষকদের কাছ থেকেই মোটামুটি জেনেছি উনি খুব ভালো ছেলে। উনি এইরকম কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নেই। মাঝখান থেকে উনার ক‍্যারিয়ার টা নষ্ট হয়ে গেছে বলা যায় কিছু সুবিধাবাদীদের জন্য। ওমর ভাইকে প্রায় মাসে দুই বার থানায় হাজিরা দেওয়া লাগে। পাশাপাশি উনার জেলার বাইরে যাওয়া নিষেধ। উনার অপরাধ কী ছিল বলেন তো। ছিল অপরাধ ছিল এই দেশে জন্ম নেওয়া। যেখানে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করলেও এইরকম পরিস্থিতির স্বীকার হওয়া লাগে। আর হ‍্যা এখানে একটা কথাও আমার মনগড়া না। বতর্মান বাংলাদেশের কী অবস্থা সেটা আমার থেকে আপানারা ভালো জানেন। যাইহোক সবাই সাবধান থাইকেন। কখন কার উপর কোন বিপদ আছে বলা যায় না।

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ করে আমি ফুটবল পছন্দ করি।

---

---

---

---

---

---

---

---