!! স্মৃতিটুকু রয়ে গেছে!! খরগোশ সমাচার!! ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।

খরগোশ প্রাণীটি আপনাদের কাছে কেমন লাগে। আমার কাছে কিন্তু বেশ দারুণ লাগে। একেবারে চুপচাপ থাকে সুন্দর গঠন এবং সরল স্বভাব। আমাদের এলাকায় মোটামুটি কয়েকঘরে খরগোশ আছে। সবাই ইচ্ছা করেই তা পালন করে। আমার বাড়িতেও একসময়ে দুইটা খরগোশ ছিল। সেটা অবশ্য আমার বড় ভাই অনেক জীদ করে পালন করত। তো তখন আমার বয়স এই মোটামুটি ৬-৭ বছর তবে আমার সব ঘটনা পরিষ্কার মনে আছে। আমার বড় ভাইয়ের বয়স তখন ১৩-১৪। আমার বড় ভাই আবার আমার বাবা মায়ের অনেক আদরের ছিল। আমার থেকে ওর আবদার ছিল বেশি এবং তা পূরণও করা হতো। যাইহোক ওর মতো সুযোগ সুবিধা পাই নাই। তো একদিন আমার বড় ভাই বাড়িতে এসে বাইনা ধরলো তার খরগোশ চাই। কোথায় যেন দেখছে খরগোশ এখন সেগুলো তার চাই। অসম্ভব জেদি ছিল আমার বড় ভাই এখনো আছে তবে আগের থেকে কমেছে।

---

---

তো মোটামুটি আমার আব্বা আমার ভাইয়ের সঙ্গে গেল। কোনো উপায় না পেয়ে কিনে দিল দুইটা খরগোশ। দুইটা একেবারে ধবধবে সাদা। আমিও সেই জীবনের প্রথম খরগোশ দেখি। তো আমার ভাই খরগোশ নিয়ে তো মহা খুশি। কিন্তু খরগোশ পালনের জন্য কোনো খাঁচা আমাদের বাড়িতে নেই। এবং খাঁচা তৈরি করাটাও বেশ সময়সাপেক্ষ। তো আমার আব্বা খরগোশ দুইটা রাখার জন্য দারুণ একটা ব‍্যবস্থা করে দিল। মোটামুটি আমাদের ঘরে নেট ছিল। মাছ ধরা নেট না হিহি। ওটা দিয়ে সুন্দর চতুর্ভুজ আকারের একটা ঘর তৈরি করা হলো। তো সেখানেই থাকত খরগোশ দুইটা। আমার বড় ভাই খরগোশ দুইটাকে অনেক ভালোবাসত। আমি ধরতে গেলে আমাকে ধরতে দিত না বলত তুই মেরে ফেলবি। আমার তখন বেশ মন খারাপ হতো।

---

---

---

Source

---

---

প্রতিদিন বিকেলে খরগোশ দুইটাকে নিয়ে মাঠে যেত ঘাস খাওয়াতে। রাতে কোলে করে নিয়ে বসে থাকত। অনেক ভালোবাসতো। এভাবেই বেশ কিছুদিন গেল। মোটামুটি সপ্তাহ খানেক। তখনই আমাদের বাড়িতে আগমন হয় এক হুলোড়। হুলোটা বেশ বজ্জাত ছিল। আমরা কেউ বুঝতে পারিনি হুলোটার নজর আমাদের খরগোশ দুইটার উপর। তো বেশ কিছুদিন হুলোটা খরগোশের আশাপাশে ঘুরেছে। খরগোশ সে বুঝে বেশ আতঙ্কে থাকত। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি। তো হঠাৎ একদিন রাতে তখন প্রায় রাত আড়াইটা। আমার আব্বু আম্মু দেখি বলছে বেঁচে নেয় মেরে ফেলেছে। কথাটা শুনে আমি ধড়ফড় করে ঘুম থেকে উঠে পড়েছি।

---

---

উঠে দেখি খরগোশ দুইটা মৃত। ওদের গায়ে বজ্জাত হুলোটার নখেরদাগ। বেশ ভালো জখম। যাইহোক বুঝতে পারলাম খরগোশ দুইটা মারা গেছে এটা হুলোটার কাজ । দেখি আমার বড় ভাই মৃত খরগোশ দুইটার পাশে বসে কান্না করছে। সে কী কান্না। মনে হয়ে অনেক কাছের কেউ মারা গিয়েছে। যাইহোক সেই কান্নার দৃশ্য আমার এখনো মনে আছে। এরপর আসে আসল ঘটনার পালা। আগেই বলেছি আমার বড়ভাই ছিল অনেক জেদি। ও সিদ্ধান্ত নিল হুলোটারে মারবে। যদিও আমার বাবা মা নিষেধ করছিল কিন্তু বান্দা কারো কথা শুনতে প্রস্তুত না। বেশ কয়েকদিন নজরে নজরে রেখেছিল হুলোটাকে আমার বড় ভাই। একদিন যেই না বাগে পেয়েছে বাঁশ দিয়ে দিয়েছে এক বাড়ি ব‍্যাস হুলোড় ভবলীলা সাঙ্গ।মানে হুলোটা ও মারা গেছে। এরপর থেকে আমার বাড়িতে আর কখনো কোনো খরগোশ পালন করা হয় নাই। তবে আমার বাড়িতে এখন দুইটা বিড়াল আছে। বিড়াল গুলো আমার অনেক পছন্দের। তবে আমার ভাইয়ের সেই রাতের কান্না আমার এখনো মনে আছে।

---

---

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ করে আমি ফুটবল পছন্দ করি।

---

---

---

---

---

---

---

---