!! রয়েল বেঙ্গল রহস্য - ফেলুদা!সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ।! ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।

মুভির শুরুতেই লালমহন গাঙ্গুলির কাছে চিঠি আছে। চিঠি টা লিখেছেন মহিতোষ সিংহরায়। তিনি গোয়েন্দা ফেলুদা প্রদেশ মিএ এর কাছে সাহায্য চান। মহিতোষ সিংহ রায়ের লেখা বাঘে বন্দুকে বই ফেলুদা পড়েছে। এবং মহিতোষ সিংহরায় চিঠিতে ফেলুদার কাছে সাহায্য চাই। শহর থেকে বাইরে জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশ দেখে ফেলুদা যেতে রাজি হয়। সাথে ছিল বিখ‍্যাত গোয়েন্দা গল্প লেখক লালমহন গাঙ্গুলি এবং ফেলুদার খুরতোতো ভাই তপেস। নির্দিষ্ট দিন ট্রেনে করে চলে যায় ওখানে। স্টেশনে তাদের নিতে আসে মহিতোষ সিংহরায়ের সেক্রেটারি নাম তড়িৎ। তড়িৎ অত্যন্ত সহজ সরল বুদ্ধিসম্পন্ন ছেলে। যাইহোক জঙ্গলের মধ্য দিয়ে গাড়িতে করে তারা সিংহরায় প‍্যালেসে চলে যায়।

---

---

---

---

সেখানে গিয়ে মহিতোষ সিংহ রায়ের সাথে ফেলুদা দের কথা হয়।মহিতোষ সিংহ রায়ের পরিবার বাঘ শিকার করত। মহিতোষ সিংহ রায়ও প্রায় ৫০ টার উপর বাঘ এবং লেপার্ড শিকার করেছে। মহিতোষ সিংহ রায় তার শিকারের কথা ফেলুদাদের বলছিল এবং ফেলুদারা শরবত খাচ্ছিল। এমন সময় শশাঙ্ক এর আগমন হয়। শশাঙ্ক হলো মহিতোষবাবুর বাল‍্যবন্ধু। তার পরিবার নেই মহিতোষ সিংহ রায়ের সঙ্গে থাকে তার ব‍্যবসা দেখাশোনা করে। মহিতোষ সিংহ রায়ের ছেলেরা কলকাতায় চাকরি করে। এরপর ফেলুদাদের ঘর দেখিয়ে দেওয়া হয়। তাদের ঘরের সামনে কালবনির জঙ্গল। তারা ছাদে দাঁড়িয়ে রয়েছে হঠাৎ একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধের আগমন। উনি হলে মহিতোষ সিংহ রায়ের দাদা দেবতোষ সিংহ রায়। উনি প্রায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। তবে বেশ ভালো মনে আছে আগের কথা। তার সঙ্গে ফেলুদা বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে।

---

---

---

---

পরেরদিন সকালে ফেলুদা তপেস এবং লালমোহন গাঙ্গুলি তড়িৎবাবু শশাঙ্ক এবং মাধবলাল জঙ্গলে ঘুরতে যায়। মাধবলাল মহিতোষ সিংহরায়ের অফিসে চাকরি করে এবং খুব দক্ষ শিকারী। সে বাঘের চালচলন সব জানে। ঘুরতে ঘুরতে জঙ্গলে হঠাৎ মাধবলাল একটা হরিণের ডাক শোনে। এই হরিণ ডাকলে আশেপাশে বাঘ থাকে। যাইহোক এরপর তারা দ্রুত জঙ্গল ত‍্যাগ করে। এরপর মহিতোষ সিংহরায় ফেলদা কে বলে চলুন আপনাকে একটা জিনিস দেখাই। আমার প্রপিতামহ আদিত‍্য নারায়ন এর লেখা সংকেত। এটা সম্ভবত গুপ্তধনের সংকেত এই গুপ্তধন আপনাকে উদ্ধার করে দিতে হবে।সংকেত টা হলো

মুরো হয় বুড়ো গাছ
হাত গোন ভাত পাঁচ
দিক পাও ঠিক ঠিক জবাবে
ফাল্গুন তালজোড় দুইমাঝে ভুই ফোড়
সন্ধানে ধন দেয় নবাবে

---

---

---

---

এরপর রাতে ফেলুদা নিজের ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে এবং সংকেতটা নিয়ে ভাবছে। হঠাৎ দেখে এই বাড়ি থেকে করে যেন বের হয় জঙ্গলের দিকে গেল তারপর পর ঠিক আরেকজন গেল। যাইহোক ফেলুদা সেরকম গুরুত্ব না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। পরেরদিন ঘুম থেকে উঠেই শুনতে পাই তড়িৎবাবুর মৃতদেহ জঙ্গলে পাওয়া গেছে। সেটা শুনে মহিতোষবাবু শশাঙ্ক ফেলুদা মাধবলাল এবং বনবিভাগের সবাই জঙ্গলে মৃতদেহের কাছে যায়। প্রথমত এটা বাঘে ধরা মনে হলেও পরে ফেলুদা বলে এটা মানুষের কাছে। যেকোন অস্ত্র দিয়ে তড়িৎকে জখম করা হয়েছে। যাইহোক এরপর তারা চলে যায়। পুলিশ তড়িৎ বাবুর মৃতদেহটা নিয়ে যায়।

---

---

---

---

যাইহোক তখন মহিতোষবাবু নিজের পারিবারিক ঘরে গিয়ে দেখেন সেখান থেকে তাদের বংশের ঐতিহ্য আদিত্যনারায়ন সিংহ রায় এর তলোয়ার টা নেই। এবং এই বাড়িতে চুরি করার মতো কেউ নাই। এরপর ফেলুদা ছাদে দাঁড়িয়ে সংকেত টা ভাবছে অনেকটাই সমাধান করে ফেলেছে কিন্তু কিছু সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। যাইহোক এরপর হঠাৎ সেখানে দেবতোষ বাবুর আগমন হয়। ফেলুদা কৌতুহলবশত তাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে এবং সে সেগুলো বলে। আশ্চর্যভাবে তার কথা থেকে ফেলুদা গুপ্তধনের সংকেতটার রহস্য ভেদ করে ফেলে। কিন্তু এখন তার আরও একটি দায়িত্ব আছে। সেটা হলো তড়িৎ বাবুর খুনের রহস্য উন্মোচন।

---

---

---

---

এরপর ফেলুদা তপেস লালমহন গাঙ্গুলি এবং মাধবলাল একসঙ্গে জঙ্গলে যায়। ফেলুদা সংকেত অনুসারে এগিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ তড়িৎবাবুর চশমা এবং শার্ট এর ছেড়া অংশ পায়। এরপর কিছুদুর গিয়ে দেখে গুপ্তধনের জায়গাই গুপ্তধন নেই। সেটা কেউ উদ্ধার করে ফেলেছে। তো যাইহোক এরপর ফেলুদা পাশেই একটি পোড়া মন্দিরের ভেতরে যায়। এরপর সিংহরায় বাড়িতে সবাই বসে খাচ্ছে। তখন ফেলুদা বলে আপনার সংকেত আমি সমাধান করে ফেলেছি। তবে গুপ্তধন সেখানে নেই। আগামীকাল সকালে আমরা পোড়ামন্দিরের কাছে যাব সেখানে সব রহস্যের উন্মোচন করব। তো পরেরদিন সকালে তারা ওখানে চলে গেল। এরপর ফেলুদা মন্দিরের ভেতর থেকে একটি রুপার কলসি বের করে নিয়ে আসে। কলসি ভর্তি নারায়নি রৌপ‍্যমুদ্রা। এই মুদ্রায় যেই মহিতোষ সিংহরায় হাত দিয়েছে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বাঘের আগমন হয়।

---

---

---

---

ফেলুদা শশাঙ্ক এবং মাধবলাল গুলি মেরে বাঘটাকে তাড়িয়ে দেয়। এর ফলে অনেক রহস‍্যের উন্মোচন হয়ে যায়। মহিতোষ সিংহরায় কখনো শিকার করেন নাই। তার বদলে শিকার করছে তার বাল‍্যবন্ধু শশাঙ্ক এবং মহিতোষ সিংহরায় সেটা নিজের নামে চালিয়ে দিতেন। এবং তড়িৎ বাবুকে কেউ হত‍্যা করেনি না বাঘ না মানুষ। তড়িৎবাবু ঐ সংকেত এর সমাধান করে ফেলেছিলেন। তিনি ঐ গুপ্তধন উদ্ধার করতে এসে মাটি খোড়া শেষ তলোয়ার টা পাশে রেখে দিয়েছেন। এমন সময় তলোয়ার এর উপর বজ্রপাত হয় এবং তলোয়ার দ্বারা তড়িৎবাবু আহত হয়। পরে তড়িৎবাবুকে বাঘে ধরে। তড়িৎ বাবু শেষ পযর্ন্ত তড়িৎপৃষ্ট হয়ে মারা যায়।এবং এই গুপ্তধন শশাঙ্ক বাবু ঐ পোড়ামন্দিরের মধ্যে রেখে আসে। মূলত তড়িৎবাবু শশাঙ্ককে বলে গুপ্তধনের অর্ধেক আমি আপনাকে দেব। কিন্তু শশাঙ্ক নিজের বন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করে না। যাইহোক মহিতোষবাবু ফেলুদা কে অনুরোধ করে এই সিংহরায় পরিবারের এই ইতিহাস আপনি ছাড়া আর কেউ যেন না জানে। ফেলুদা কথা দেয় ঠিক আছে। এরপর যাওয়ার সময় ফেলুদাদের মহিতোষ সিংহ রায় একটা উপহার দেয়। এবং সেটা ছিল কিছুপরিমাণ নারায়নি রৌপ‍্যমুদ্রা। সব রহস্যের উন্মোচন শেষ। এখানে মুভিটা শেষ হয়।

---

---

ব‍্যক্তিগত রেটিং : ৯.৯/১০

---

---

মুভির শিক্ষা ও ব‍্যক্তিগত মতামত

---

---

মুভিটা ছিল গোয়েন্দা রহস‍‍্যময় একটি মুভি। একটি বিখ্যাত পরিবার এবং সেই পরিবারের সুন্দর একটি ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস বজায় রাখতে পরিবারের যোগ্য উওরসরী হতে মহিতোষ সিংহ রায় চেয়েছিলেন। কিন্তু তার শিকার করার ক্ষমতা ছিল না। বংশের গৌরর রক্ষা করার জন্য অন‍্যের শিকার সে নিজের নামে চালিয়ে দিত। মানুষের উপরের চেহারা টাই আসল না। উপরে সহজ সরল দেখতে কিন্তু ভেতরে তার অন্য এক মানুষ থাকতে পারে। যেমনটা দেখা গেছে তড়িৎ বাবুর ক্ষেএে। এবং মাঝে মাঝে আমাদের সামনে এমন কিছু রহস্য থাকে যেগুলো কীনা এতটাই সহজ যে সেগুলো আমাদের নজরে আসে না। যেমনটা এই মুভিতে দেখা গেছে। এই মুভির সবার অভিনয় ছিল অসাধারণ।।

মুভি লিংক

---

---

মুভি লিংক

---

---