!! খেলাধুলা নিয়ে আমার মজার কিছু মূহুর্ত (দ্বিতীয় ঘটনা)!! ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox.এর জন্য।

গতকাল আমি আমার জীবনে খেলাধুলা নিয়ে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সম্পর্কে আপনাদের বলেছিলাম। আজ আরেকটা ঘটনা সম্পর্কে আপনাদের বলব। এই ঘটনাটা আমার কৈশোরে ঘটে গিয়েছিল। এটা ২০১৬ সালের ঘটনা। আমি তখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রতিদিন বিকেলে মাঠে যায় খেলতে। সারাদিন প্রাইভেট স্কুল এবং বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়া। এভাবে কাটত দিনগুলো। তো আমরা এলাকার সব সমবয়সী বন্ধুরা খেলতাম একসঙ্গে।তখন ছিল ক্রিকেট এর সময়। গ্রামের ছেলেরা খেলার সরঞ্জাম একসঙ্গে টাকা তুলে কিনতাম। মোটামুটি সবাই একটা নির্দিষ্ট চাঁদা দিয়ে কিনতাম খেলার ব‍্যাট বল উইকেট। এজন্য আমাদের খেলার মাঝে প্রায়ই ঝামেলা সৃষ্টি হতো। এবং আমাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল আবার খুব ত‍্যাড়া। প্রতিটা এলাকায় এমন দুই একটা থাকে। আমরা যখনই খেলতাম ঐ ছেলেটা শুধু ত‍্যাড়ামো করত। ওর নাম ছিল সাগর। ও আমাদের দেখে কিছুটা বড় ছিল। সেজন্য হয়তো শরীরের জোড় দেখিয়ে ত‍্যাড়ামো করে সব অর্জন করতে চাইত। যেমন আউট হলে আউট দিতে চাইত না। যে দলে খেলবে সে দলে সে সবার আগে ব‍্যাটিং যাবে। সবার আগে বোলিং করবে। আমরা সবাই একপ্রকার বিরুক্ত ছিলাম সাগরের উপরে।

---

---

এলাকার ক্রিকেটে সবচেয়ে মজা হতো ওভারের শেষ বল নিয়ে। অনেকেই ছিল সম্পূর্ণ ওভার নিজে খেলত এবং শেষ বলে রান নিয়ে পরবর্তী ওভারে আবার সে ব‍্যাটিংয়ে যেত। মধ‍্যকথা সে তার পার্টনার কে ব‍্যাটিং করতে দিত না। এটা সব এলাকার ক্রিকেটে হয়ে থাকে। তো এইরকম একদিন বিকেলে আমরা মাঠে খেলতেছি। তো আমি আর সাগর একদলে পড়েছি। প্রতিবারের মতো সাগর গা জোড়ারী করে সবার আগে ব‍্যাটিং নেমেছে। দুই জন আউট হওয়ার পর আমি নেমেছি। আমি ব‍্যাটিংয়ে নামার সঙ্গে সঙ্গে সাগর আমার কাছে এসে বলল ইমন প্রতি ওভারের শেষ বলে রান নিবি। আমি বললাম কেন। বলল তুই রান করতে পারবি না। আমি বললাম আমি পারব না। তো কোনো উপায় না দেখে আমি মেনে নিলাম। কিন্তু পর পর চার ওভার এভাবে গেল। ও আমাকে ব‍্যাটিং দিল না। প্রতি ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল রান নেয়। কিন্তু অনেক হয়েছে আর না। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি এইবার থেকে আর রান নেব না।।

---

---

পরের ওভারে শেষ বলের আগে সাগর আমাকে বলছে এই ইমন এইবার রান নিবি। আমি তো রান নেব না আগেই ভেবে নিয়েছি। ওভারের শেষ বলে সাগর বল মেরে রান নেওয়ার জন্য দৌড় দিছে। কিন্তু আমি আমার জায়গাই দাঁড়িয়ে আছি। ও আমাকে বলছে এই ইমন দৌড়া দ‍ৌড়া। আমি বলছি না রান নেব না ব‍্যাক চলে যা। সাগর তখন প্রায় অর্ধেকটা পার হয়ে এসেছে। ও যখন দেখল আমি রান নেব না তখন ফিরে চলে গেল ওর প্রান্তে। কিন্তু যেতে যেতে ততক্ষণে ও রান আউট 👆। সাগর তো রেগে গেছে।রেগে গিয়ে আমার কাছে এসে আমাকে দুইটা থাপ্পড় মারল। থাপ্পড় টা খেয়ে আমার প্রচণ্ড রাগ হলো। কিন্তু আমি তো ওর শরীরের সঙ্গে পেরে উঠব না। কারণ প্রথমত ও আমার বড় দ্বিতীয়ত ওর শরীর আমার থেকে ভালো। আমি তখন হাতের কাছে দেখলাম উইকেট মানে স্ট‍্যাম্প রয়েছে। সাগর মাঠ থেকে উঠে যাচ্ছে। আমি একটা স্ট‍্যাম্প তুলে নিয়ে গিয়ে পেছন থেকে সাগরকে ধরলাম মার। স্ট‍্যাম্প দিয়ে অনবরত পায়ে কয়েকটি বারি মারলাম সাগর পড়ে গেল। তখনও কেউ আমাকে ধরতে আসেনি। সাগর মাটিতে পড়ে পা ধরে চিল্লাচিল্লি করছে। আমি আরও কয়েকটি বারি মারলাম স্ট‍্যাম্প দিয়ে। তখন কয়েকজন দৌড়ে এসে আমাকে ধরল।

---

---

মাঠের আশপাশে বড় যারা ছিল তারা সবাই ছুটে এলো। সাগরকে ধরে তুলল। আমাকে আমার বন্ধুরা ধরে রেখেছে। ততক্ষণে খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সাগরকে কয়েকজন ধরে বাড়ি নিয়ে গেল। এবং আমি অবশ্য বাড়ি যায়নি। সোজা চলে গেছি অন্যদিকে। বাড়ি গেলাম সন্ধ‍্যার অনেক পড়ে। ততক্ষণে আমার বাড়িতে নালিশ চলে গেছে। আমার মা আমাকে পিটানোর জন্য মোটামুটি তৈরি। যেই ঢুকেছি বাড়িতে দেখি আমার মায়ের হাতে লাঠি। আমার মা আমাকে মারতে যাবে তখন আমার বড় চাচাতো ভাইয়েরা আমাকে বাঁচিয়ে দেয়। যাইহোক পরেরদিন মোটামুটি পারিবারিকভাবে বসেছে। সেখানে সাগরও এসেছে। দেখলাম পায়ে ব‍্যান্ডেজ করা। পা ভাঙেনি তবে হাড়ে চোট লেগেছে। তো প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো ইমন সাগরকে মেরেছিস কেন। আমি সব খুলে বললাম। আমার সব বন্ধুরাও সেখানে ছিল। সবাই আমার সঙ্গে তালে তাল দিল। অর্থাৎ সবাই মিলে সাগরকে সব দোষের ভাগিদার বানালাম হিহি। যদিও বেশি দোষ ওরই ছিল। সবটা শুনে সবশেষে সিদ্ধান্ত হলো সাগর আর আমাদের সঙ্গে খেলতে যাবে না। এবং আপাতত কিছুদিন আমাদের খেলাও বন্ধ থাকবে। কোনো উপায় নেই মেনে নিলাম। আগে কত কিছু করেছি। এখন সেগুলো মনে পড়লে মনের মধ্যে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে।

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

---

---

---

---