👬 দুই বন্ধু- পর্ব:১👬👬। ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমার বাংলা ব্লগে আমার নতুন একটি পোস্টে আপনাদের স্বাগতম। আজ আমি আমার লেখা নতুন আর একটি গল্পের প্রথম পর্ব শেয়ার করব আপনাদের সাথে। গল্পটির নাম দুই বন্ধু। আশাকরি আপনারা পড়বেন। চলুন শুরু করা যাক। এই পোস্টের ১০% বেনিফেসিয়ার @shy-fox এর জন্য।
ছবিটি pixabayথেকে নেওয়া হয়েছে।
দুই বন্ধু।
পর্ব:-১
সালটা 1970 তখনো বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়নি। তবে পাকিস্তানীদের যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। বাংলার মানুষ এখন নিজেদের ভালো বুঝতে শিখেছে তারা এখন আর পাকিস্তানীদের হাতে শাসিত হয়ে থাকতে চাই না। নিলয় এবং শিলাজিৎ তখন ক্লাস সিক্সে পড়ে। তাদের ধর্ম বর্ণ আলাদা হলেও তারা দুজন খুব ভালো বন্ধু।নিলয় মুসলমান এবং শিলাজিৎ হিন্দু। কিন্তু ওদের বন্ধুত্বটা ধর্মকে ছাড়িয়ে অনেক উপরে। নিলয় শিলাজিৎ এর বাড়ি যাই থাকে খায়। আবার শিলাজিৎ নিলয়ের বাড়ি যাই থাকে খায় ওদের বাবা-মা এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করে না। উভয়ের বাবা মা তাদের বন্ধুত্বকে অনেক সম্মান করে। 1970 সালটা কেটে গেল। এলো সেই রক্তমাখা 71। তখন দুজন ক্লাস সেভেনের ছাত্র। চারিদিকে বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। এ যুদ্ধ বাঙালির অধিকার আদায়ের যুদ্ধ বাংলার স্বাধীনতার যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অত্যাচার চালাতে থাকে বাঙ্গালীদের উপর শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ।
পাকিস্তানিদের হাত থেকে সাধারণ মুসলিম বাঙালিরা রক্ষা পেলেও রক্ষা পেত না হিন্দুরা। পাকিস্তানিরা বেশি বেশি হিন্দুদের হত্যা করত। তাদের বাড়িঘর লুটপাট করত।সেই সময় অসংখ্য হিন্দু পরিবার ভারতে চলে যায়। কোন উপায় না থাকায় শিলাজিৎ এর পরিবারও ভারতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শিলাজিৎ যেতে রাজি না। কারণ সে নিলয়কে ছেড়ে থাকতে পারবে না।নিলয়ও সেইরকম সেও শিলাজিৎকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। কিন্তু যেখানে জীবনের ঝুঁকি সেখানে এসব কথা ভাবলে কি আর চলে।
শিলাজিৎ বলে আমি মুসলিম হবো কিন্তু আমি তোকে ছেড়ে যাবো না। নিলয় শিলাজিৎ কে বোঝায় পরিস্থিতির কারণে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হয়। তুই তোর বাবা-মার সাথে যা।
নিলয়ের অনুরোধে শিলাজিৎ ওর বাবা-মায়ের সাথে ভারতে যেতে রাজি হয়। কিন্তু যাওয়ার আগে দুজন একটি চুক্তিবদ্ধ হয়। নিলয় এবং শিলাজিৎ নিশ্চিত দেশ একদিন স্বাধীন হবেই। তারা একদিন দেখা করবে। সেজন্য তারা ঠিক করে আজ থেকে ঠিক 15 বছর পরে ঐদিন ওই তারিখে তারা ঠিক ওই জায়গায় দেখা করবে। জায়গাটা ছিল তাদের স্কুলের পেছনে। তারা তাদের চুক্তিপত্র একটি কাগজে লিখে দুজন দুজনের কাছে রেখে দেয়। কয়েকদিনের ভেতরেই শিলাজিৎ এবং তার পরিবার বর্ডার পার হয়ে ভারতে চলে যায়। কিছুদিন পরে দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। এবং সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। একসময় নিলয়ও স্বাভাবিক হয়ে যায়। এবং শিলাজিৎ এর কথা ভেবে দুঃখ প্রকাশ করে। এভাবে কেটে যায় প্রায় 15 বছর। নিলয় এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। নিলয়ের লেখালেখির অভ্যাস আছে। তার অনেকগুলো উপন্যাস এবং গল্প বেশ জনপ্রিয়। হঠাৎ নিলয় তার পুরনো কাগজপত্র ঘাটতে ঘাটতে সেই চুক্তিপএটা পাই। মূলত চিঠিটার কথা তার মনেই ছিলো। কারণ এই 15 বছরের প্রতিটা মুহূর্ত শিলাজিৎকে অনুভব করেছে। 15 বছর হয়ে এসেছে এখন শুধু অপেক্ষা মাত্র কয়েকদিনের। চুক্তিপত্র তা দেখে নিলয়ের চোখ থেকে পানি ঝরতে লাগলো। আজ 5 বছরে তার স্ত্রী তাকে কখনো কাঁদতে দেখিনি। কিন্তু কি এমন হলো সে আজ কাঁদছে তার স্ত্রীর প্রশ্ন তুমি কাঁদছো কেন?
চলবে........
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ আমি ফুটবল পছন্দ করি।
আসলে আপনার গল্পটা অনেক সুন্দর ছিল। বন্ধুত্ব এমন একটা জিনিস এটি কোন ধর্ম মানে না। খুবই ভালো লাগলো কথাগুলো শুনে বন্ধুত্ব সবার ঊর্ধ্বে। বন্ধুত্ব আমাদের প্রয়োজন একটি জীবনের অংশে। সুখ দুখে বিপদে-আপদে আগে কিন্তু বন্ধুর প্রয়োজন লাগে। খুবই ভালো ছিল পোস্টটি
আপনি ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভাই গল্পের এই অংশটি যখন পড়ছিলাম কেন জানি আমার পুরো শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো চোখটা জ্বলজ্বল করে উঠলো। ভাই অসাধারণ একটা গল্প লিখেছেন খুব ভালো লেগেছে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল।
পরবর্তী পর্ব খুব দ্রুতই দেব। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।।
খুব সুন্দর একটি গল্পঃ শেয়ার করেছেন ভাই।আপনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর ছিল।বন্ধু নিয়ে লেখা সকল গল্পঃ এরকম ই হয়।খুব ভালো লাগে এরকম গল্পঃ পড়তে।
শেষ মুহূর্তের চমক টা আমাকে পরবর্তী পর্বের জন্য বেশ আগ্রহী করে তুলেছে।আশা করছি খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্ব পাবো।
ধন্যবাদ ভাই আপনার জন্য সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আশাকরি পরবর্তী পর্ব পড়ে আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
খুব সুন্দর ।দুই বন্ধু বন্ধুত্বের ভালোবাসা অবিচল ছিলো। কি কারণে বন্ধুর মন কাঁদছে। নিলয় এর স্ত্রীর উত্তর হয়তো পরবর্তী পর্বে পাবো। অপেক্ষায় থাকলাম। শুভেচ্ছা অবিরাম ভাই।
জ্বী দাদা অবশ্যই পাবেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।।
সুন্দর একটি গল্প লেখা শুরু করেছেন ভাই। আশা করছি দুই বন্ধুর আবার একসাথে দেখা হবে। পরের অংশের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ ভাই। পরের পর্ব দ্রুতই পাবেন।
বন্ধুত্ব ব্যাপারটা খুব বেশি স্পেশাল।গল্পটা পুরোটা পড়লাম, সত্যি বলতে খুব বেশি ভালো লিখেছেন।বন্ধুত্ব সবার উপরেই থাকে আসলে। হয়তো সবার জীবনেই কখনো না কখনো বিপদে আগে দৌড়ে আসে বন্ধুরাই।
সুন্দর লিখেন আপনি।
ঠিক বলেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।।