ছোটবেলায় ফাঁদ তৈরি করে পাখি ধরার অনুভুতি । 10% beneficiary @shy-fox
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি । |
---|
আজকে সকালটা দারুন ছিল । অসুস্থতার মাঝেও ব্যায়াম করতে উঠছিলাম । প্রচন্ড শীত পড়ছিল । কিছু দূর দৌড়ে দিয়ে গরম লেগে গিয়েছিল । তারপর অনেক জনের দেখা হলো । গল্প করতে করতে ব্যায়াম করতেছি। স্কুল বন্ধ হওয়াতে ছেলে- পেলেরা সবাই বাসায় আছে । তাই বেশ কয়েক দিন ধরে ক্রিকেট খেলা দারুন জমেছে । গ্রামের যারা ভালো খেলে তারা এক পাশে আর যারা খারাপ খেলে তারা এক পাশে । কিন্তু একটা দুঃখের বিষয় যে যারা ভালো খেলে তারা এক দিনও জিততে পারে নি । তাই জুনিয়রেরা বিভিন্ন ভাবে সিনিয়র দের রাগ উঠা ছিল । কিন্তু সেই রাগ সিনিয়রা সহ্য করতে পারে নাই । তাই সিনিয়র টিম বলে উঠলো তোদের জুনিয়র দের আমরা ছার দিয়ে খেলব । সেই সময় আমি উপস্থিত হলাম । জুনিয়র টিম বলল আমাকে যদি তাদের টিমে দেয় তাহলে খেলবে ।
![]() |
---|
সিনিয়র টিম রাজি হয়ে গেল । খেলা শুরু হলো মোটা অঙ্কের । সিনিয়র টিম আগে ব্যাটিং পেল আর জুনিয়র টিম বোলিং । জুনিয়র টিম এর বড় ভাই বলল করতে গেল । বয়সে বড় কিন্তু খেলতে তেমন পারেনা বলে জুনিয়র । ৫ ওভার করে খেলা । প্রথম ওভারে গিয়ে ২১ রান দিল । হায় হায় আমরা সবাই হতাশ হয়ে গেলাম । ম্যাচের জিতার আশা আর নেই । তারপর এক ছোট্ট ভাইকে বল দিলাম । তার নাম ছিল সৈকত । সে বল করতে গিয়ে ২ রানে ৩ উইকেট নিল । বাহ অনেক সুন্দর বল করেছিল । খেলোয়াড় ছিল ৯ জন করে । তারপর আরেক ছোট্ট ভাই কে বল দিলাম সেও অনেক ভালো ফল করল । ৩ রানে ২ উইকেট ।পরের ওভারে আবার সৈকতকে বল করতে দিলাম ২৮ রানে অলআউট হয়ে গেল । ম্যাচ ছিল কি আর এখন হলো কি । তারপর আমি আর সৈকত নামলাম । আমি ২ ওভারে ২৫ রান নিলাম । তারপর গাছে লেগে এক বাড়িতে গিয়ে পড়ল আর আমি আউট হয়ে গেলাম । কেননা ওই বাড়িতে যে বল নিয়ে যাবে সে আউট । তারপর এক ছোট ভাইকে নামিয়ে দিলাম । আর মাত্র ৩ রান বাকি । তাদেরকে দেখে- শুনে খেলতে বললাম । সৈকত প্রথম বলে চার মেরে দিল আর আমরা উইন হয়ে গেলাম । সিনিয়রেরা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কিছু বলতেও পারে না । তাদের সাথে কিছুক্ষণ মজা নিলাম ।
![]() |
---|
তারপর শুনা গেল যে , আমাদের করতোয়া নদী টি পুনঃ খনন করতেছে । অনেক গুলো এস্কেভেটর কাজ করতেছে । তাই সবাই চলে গেলাম । যাওয়ার পথে কিছু ছোট ভাইদের সাথে দেখা । তারা ফাঁদ তৈরি করে পাখি ধরেছে । এসময় আমাদের এই দিকে জমি চাষ করে ধান রোপণ করতেছে । তাই জমিতে কাঁদা করার জন্য প্রথমে সেচ দিতে হয় । কেননা এই সময় আকাশ থেকে কম বৃষ্টিপাত হয় । তাই সেচ দিলে মাটির নিচে পোকামাকড় গুলো ভেসে ওঠে । এই পোকামাকড় গুলো খেতে অনেক পাখির সমাহার তৈরি হয় । পাখিদের মধ্যে প্রতিযোগিতা লাগে । পোকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় ।
![]() |
---|
যারা গ্রামে থাকে তারা হয়তো জানেন । আর সেই সুযোগে ব্যবহার করে ফাঁদ তৈরি করে পাখি ধরা হয়।এতে ছোটরা অনেক মজা পায় । কেননা ছোটবেলায় আমি ও ফাঁদ তৈরি করে এসব মজা নিয়েছি । এসব ফাঁদ গরুর লেজের চুল দিয়ে তৈরি করা হয় । সুন্দর করে গিট্টু মেরে মাটির চাপায় সারি বেঁধে দিতে হয় । এমন সিস্টেম করে দিতে হয় পাখিরা যদি বুঝতে না পারে । আর সব সময় প্রস্তুত হয়ে থাকতে হয় । কেননা বড় পাখিগুলো ফাঁদ সহ উড়িয়ে নিয়ে যায় ।
ছোট ভাইদের পাখি ধরা দেখে ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। তাই তাদের সাথে আমিও কিছু সময়ের জন্য যোগ দেই । অনেক পাখি ফাঁদে আটকা পড়ে কিন্তু ফাঁদ সহ উড়িয়ে নিয়ে যায় । তাই এক বুদ্ধি বের করলাম । ফাঁদের সাথে এক রশি বেঁধে দিলাম । আর সেই রশি নিজের কাছে রাখলাম । তখন থেকে আর পাখি পালাতে পারে না । বুদ্ধিটা দিয়ে ছোট ভাইয়েরা অনেক খুশি ।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
হাহা,,সে কথা আর বলতে।ছোটবেলায় এরকম অনেক ফাঁদ তৈরি করেছিলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমার ফাঁদে কোনোদিন পাখি ধরা পড়ে নাই😩।আর আজকের এই গল্পটি অসাধারণ ছিলো ধন্যবাদ আপনাকে পুরনো সৃতী মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।🖤
সত্যিই ছোটবেলায় অনেক হৈ-হুল্লোড় অনেক মজা করতে করতে আমরা। তার মধ্যে ফাঁদ পেতে পাখি ধরার অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। আমরা প্রায়ই ফাঁদ পেতে পাখি ধরে পিকনিক করতাম বন্ধুরা মিলে। শৈশবের দিনগুলো অনেক মজার ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।