কিছু সময় খুবই আনন্দের হয় !! 10% beneficiary @shy-fox
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি । |
---|
আজকের দিনটা খুব ভালো ছিল আমার । কারণ অনেক দিন পরে সব বন্ধু মিলে কলেজ মাঠে বসে আড্ডা দিলাম । করোনার আগে সবাই মিলে এই যে আড্ডা দিছি , তখন থেকে আর দেওয়া হয়নি । আজকেও দেওয়া হতো না । স্যার কলেজে না থাকায় সবাই একটা সময় পেয়ে গেছিলাম । তাই সময় টুকু কাজে লাগালাম ।
আমাদের কলেজ ছিল আজ ১:১৫ মিনিটে । আজকে দুইটি প্রাকটিক্যাল ক্লাস ছিল । তাই দেরি না করে চলে গেলাম । কলেজে গিয়ে দেখি কমবেশি সব বন্ধু আসছে । সবাই ক্যাম্পাস মাঠে রোদ পোয়াচ্ছে । কারণ আজকে একটু শুষ্ক বাতাস ছিল । তাই খুব ঠান্ডা লাগছিল । যাইহোক আমি ও তাদের সাথে যোগ দিলাম । এবার কিছুক্ষণ পর সবাই ক্লাসরুমে গেলাম ।
কিছুক্ষণ পর স্যার আসলো । আমাদের প্রতিটি প্রাকটিক্যাল খুব ইনপডেন্ট । তাই আমি কোনো প্রাকটিক্যাল মিস্টেক করি না । এবার অসুস্থতার কারণে ৪ টা প্রাকটিক্যাল মিস্টেক করে ফেলেছি । তাই একটু সুস্থ হয়ে মেচে চলে আসলাম । যা মিস্টেক হবার হয়েছে আর মিস্টেক করতে চাই না । তাই ভাবলাম ফাজলামি করা যাবে যাবে না । স্যার আসলো সবাইকে প্রাকটিক্যালের জন্য প্রস্তুত হতে বলল ।
স্যার বললেন, আজকেও কি ইব্রাহিম আসেনি । আমি বললাম জি স্যার আসছি । স্যার বলল, এতদিন আসোনি কেন ? অসুস্থ ছিলা নাকি । আমি বললাম জি স্যার। কারণ ডিপার্টমেন্টের কয়েক জন স্যারের সাথে আমার ভালো পরিচয়। তারা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আমি আমার স্যারদেরকে অনেক ভালোবাসি ।
তারপর স্যার ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কে বলল প্রাক্টিক্যালের সব মালামাল নিয়ে আসতে। তারপর সব মালামাল নিয়ে আসার পর স্যার হোয়াইট বোর্ড সার্কিট ডায়াগ্রাম আর্ট করে বুঝিয়ে দিলে না। তারপর স্যার আমাদের তিনটা গ্রুপে ভাগ করে দিলেন। আমাদের গ্রুপে ছিল 12 জন। তারপর সবাই মিলে সার্কিট তৈরি করলাম। তিনটা গ্রুপের মধ্যে আমরাই সর্বপ্রথম সার্কিট সঠিক ভাবে সাজিয়ে ছিলাম।
তার আগে অনেক মজা হলো । সার্কিট তৈরি করতে কেউ আর যায় না। সবাই খেলে বুদ্ধি দিতে পারে। কমবেশি আমাদের গ্রুপে সার্কিট গুলো আমি তৈরি করি। তাই আজকেও আমাকে সার্কিট তৈরি করতে হবে। তাই আমি আর আমার দুটো বন্ধু রে সাহস করে ধরতে বললাম । কিন্তু না কিছুক্ষণ পর তাদের হাত কাঁপতে লাগলো। তাদের এই হাত কাঁপানো দূর থেকে স্যার দেখতে পেল। তখন স্যার বলল ,তোরাই হবি ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার । যেই কথা শুনে সবাই হাসাহাসি করলো। আসলে সত্যি কথা বলতে কি? আমাদের ইলেকট্রিক্যাল সাবজেক্ট খুবই ভয়ানক। অল্প একটু ভুলত্রুটি হলে প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কি আর করার ভয় করলে কি ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যাবে। অবশেষে যখন কয়েকবার ভুল হওয়ার পর সার্কিট সঠিক হয়েছে । এবার সার্কিট চেক করার পালা। সার্কিটে বৈদ্যুতিক সোর্স দেওয়ার আগে স্যার প্রত্যেকটি সার্কিট চেক করে না। সেরূপভাবে আমাদের সার্কিট ও স্যার চেক করলো। স্যার বলল যে তোমাদের সার্কিট সঠিক হয়েছে তোমরা সোর্স দিতে পারো। তারপর এক বন্ধু সোর্স দিল, তখন ভয়ে সবাই পিছিয়ে গেল, না জানি কখন বাস্ট হয়ে যায়! হারে ভয় । বৈদ্যুতিক সোর্স দেওয়ার পর দেখলাম যে, আমাদের সার্কিট সঠিকভাবে কাজ করতেছে। এখন স্যার বলল ভোল্ট মিটারের ভোল্টেজ পরিমাপ করো। তখন আর কেউ পরীক্ষা করতে এগিয়ে আসে না । কারণ শর্ট হওয়ার ভয় লেগেছে । তারপর আমি আর আমার বন্ধু মিলে ভোল্টেজ পরিমাপ করলাম। তারপর ফলাফল খাতায় লিখলাম। দেখলাম যে সব গুলো ঠিক রয়েছে। প্র্যাকটিক্যাল টা আমি পুরোপুরি একদম সঠিক ভাবে বুঝেছি। অনেকেই বোঝেনি । না বুঝেও স্যার কে বলতেছে বুঝেছি।
তারপর একে একে স্যার প্রত্যেকটি গ্রুপে চেক করল । আবার ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়ে স্যার ক্লাস শেষ করল। তারপর সবাই মিলে ল্যাব থেকে বাইরে আসলাম। ল্যাব থেকে বাইরে এসে শুনি বিজনেস অর্গানাইজেশন সাবজেক্টের স্যার নেই । ট্রেনিং এ গেছে। এখন কি করব বুঝতে পারছি না , পুরো ৬০ মিনিটের ক্লাস । তারপর এক বন্ধু বলল, ক্যাম্পাসে মাঠে গিয়ে বসি। তারপর সবাই বলল ,চলো অনেক দিন থেকে আড্ডা দেই নি । তাই সবাই ক্যাম্পাস মাঠে চলে দিয়ে গোল হয়ে বসলাম।
এখন সবাই বিভিন্ন রকম শয়তানি করতে ছিল। একজন বন্ধু বলল শয়তানি বাদ দেয় । গান ধর, সবাই একসঙ্গে বলি। আমি বললাম বন্ধু আইডিয়াটা কিন্তু খারাপ দেস নিয়ে । তাই সবাই মিলে একসঙ্গে সুর মিলিয়ে অনেকগুলো গান বললাম । যখন গান শুরু করছিলাম তখন সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। না জানি কলেজের বাকি ছাত্রছাত্রীরা নতুন কিছু দেখতে চাই। আরও বিভিন্ন রকম ফাজলামির মধ্যে দিয়ে পুরো বিকেলের সময়টা সবাই ক্যাম্পাসে আড্ডা দিয়ে কাটিয়ে দিলাম। অসুস্থ ছিলাম আমি তবুও সেই সময় মনে হচ্ছিল জানো আমি আর অসুস্থ নেই। কি রকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল অনেকদিন পর। এতদিন পর সবাই মিলে একসঙ্গে আড্ডা দেওয়া মুহূর্ত অনেক ভালো লাগছিল ।
তাই সবাই বন্ধুদের সাথে মাঝে মধ্যে দেখা করে আড্ডা দিবেন। তাতে করে মন ফ্রেশ হয়। কেননা করো নাই বাসায় ভিতরে অনেকেই একঘেয়েমি তৈরি করে ফেলেছে। বা বাসার ভিতরে থাকা একটা অভ্যাস করে নিয়েছে। তাই তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, মাঝেসাজেই বাইরে একটু ঘোরাফেরা করেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলে নিজের মনের প্রতিভা বৃদ্ধি পাবে।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।