নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস রাখা উচিত !! তাহলে কঠিন কাজ সহজ মনে হবে // 10% beneficiary @shy-fox

হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি ।

light-bulb-3104355__340.webp

Pixabay

আমরা অনেকে নিজের যোগ্যতা,মেধা ও দক্ষতা নিয়ে হিনম্মন্যতায় ভুগি । এটা একেবারেই সত্য । কেউ নিজের উপর বিশ্বাস বা ভরসা স্থাপন করতে পারি না । যারা নিজের উপর ভরসা রাখে , নিজের প্রতি বিশ্বাস করে তারাই সাফল্য অর্জন করে ।

আমরা অনেকে মনে করি যে , আমাকে দিয়ে কিছু হবে না । কোনো কঠিন কাজ শত চেষ্টার পরেও বুঝতে পারব না বলে হাল ছেরে দেই । আমাদের মনে হয় যারা অনেক মেধাবী তাদেরকে কোনো চেষ্টা করতে হয় না । আমাদের এসব ধারনা ভুল করে থাকি ।

আসলে মানুষেই সব পারে । এই ধারনা নিয়ে এগি যেতে হবে । আমাকে দিয়ে কিছু হবে না এ কথা ভাবা যাবে না । ভাবতে হবে সে যদি পারে আমি কেন পারব না । সেও মানুষ আমিও মানুষ । পার্থক্য তার মেধা মনে রাখার ধারণ ক্ষমতা একটু বেশি , আর আমার একটু কম । ভাবতে হবে ওর থেকে আমাকে একটু বেশি চেষ্টা করতে হবে । হয়তো সে একটা কাজ বা পড়া ২ মিনিটে কমপ্লিট করবে , হয়তো আমার সে কাজ বা পড়াটি কমপ্লিট করতে ৫ মিনিট লাগবে ।

আসল কথা আমরা অলস । চেষ্টা করতে চাই না । শুধু ফ্রি ফ্রি সব কিছু হাতের মুঠোয় নিতে চাই । তাই আমি একটা গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চাই !!


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

বাংলাদেশের এক করুন মেধাবী ছাত্র । তার লেখাপড়া প্রত্যেকটি স্তরে ছিল বিস্ময়কর । তিনি বাংলাদেশের সর্ব শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের ছাত্র ছিলেন । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে । তিনি প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর পাস করে পিএইচডি করার জন্য চলে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রে । পিএইচডি করার জন্য ভর্তি হলে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডেকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে

তার পিএইচডি করার কোর্স ছিল কোয়ান্টাম মেকানিক। ইউনিভার্সিটিতে এই কোর্স উপর অনেক ভাগ ছিল । ইউনিভার্সিটিতে ২০০ লেভেলের কোর্স ছিল আন্ডার গ্রাজুয়েট এর নিচের দিকে শিক্ষার্থীদের । ৩০০ লেভেলের কোর্স ছিল আন্ডার গ্রাজুয়েট এর উপরের দিকে শিক্ষার্থীদের ।আর ৪০০-৫০০ লেভেলে কোর্স ছিল গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের । কোয়ান্টাম মেকানিক ছিল ৫০০ লেভেলের কোর্স ।

এ বিষয়ে তার বেশি পড়াশোনা ছিল না । কিন্তু সে পিছুপা হয়নি । জ্ঞান ও আত্ববিশ্বাস ছিল নিজের উপর ।

তিনি ক্লাস করতে গেলে । তখন স্যার বললেন , তুমি তো এখনো ৪০০ লেভেলের কোর্স এ সম্পূর্ণ করো নি । তুমি এ সব পারবে না । তুমি আগে ৪০০ লেভের কোর্স কমপ্লিট করো। নয়তো সাবজেক্ট চেঞ্জ করো। কিন্তু ছেলেটি অনেক আত্ববিশ্বাস নিয়ে বললেন , আমি পারব স্যার !! স্যার বললেন, ঠিক আছে কিন্তু ভেবে দেখো ।

তারপর ছেলেটি নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস রেখে শুরু করলেন ক্লাস । কিন্তু স্যারের লেকচারে কিছুই বুঝতো না । কারণ এসবের প্রতি তার ধারনা ছিল খুবই কম । তারপর ছেলেটি কোয়ান্টাম মেকানিক এর উপর দিন রাত বই পড়তে শুরু করলেন । কিন্তু এসব পড়ে তার লাভ হলো না কিছুই । শুধু নষ্ট হলো তার রাতের ঘুম । কারণ এই সাবজেক্ট বুঝতে হলে ক্যাকুলাস জানতে হবে প্রচুর পরিমাণে । কিন্তু এ বিষয়ে তার ধারনা ছিল খুবই কম । তাই সে কোনো কিছু বুঝতো না ।

দেখতে দেখতে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা চলে আসলো । ছেলেটি শূন্য প্রিপারেশন এ পরিক্ষা দিতে বসলেন । কিন্তু কিছু না জানায় খাতায় কিছু লেখতে পারেনি । সাদা খাতা জমা দিয়ে চলে আসছিলেন । কয়েকদিন পরে ফলাফল প্রকাশ হলো । ১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সবাই অনেক ভালো রেজাল্ট করেছে । কিন্তু বাংলাদেশের ছাত্র টি শূন্য পেয়েছিলেন । লজ্জায় ছেলেটি আত্মহারা হয়ে পরলেন ।

কিন্তু তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে ছাত্র টি নাম্বার পেয়েছিল , সে অন্ধ । অন্ধ ছেলে টির সাফল্য বাংলাদেশের ছেলেটির আরো চিন্তা ধারা বদলে দিল ।

thinker-28741__480.webp

Pixabay

শূন্য রেজাল্ট দেখে আবারো স্যার সাবজেক্ট চেঞ্জ করতে বললেন । কিন্তু সে করতে রাজি হয়নি । স্যার ছেলে টিকে সাবধান করে দিলে , এবার তুমি যদি ফেল করো তাহলে তোমাকে কলেজ থেকে বের করে দিব ।

তারপর বাংলাদেশী ছেলেটি নিজের নিজে ক্যালকুলাস করতে শুরু করলে । শিখলো ক্যাকুলাস, শিখলো আ্যলজেবরা সহ অনেক কিছু । তার দেখলো সে কোয়ান্টাম মেকানিক এর সব বিষয়ে বুঝতেছে । তারপর ফাইল পরিক্ষা দিলেন । কিছু দিন পর ছেলেটির কাছে কলেজ থেকে এক চিঠি আসে । কোয়ান্টাম মেকানিক নিয়ে তার সাথে কাজ করতে চায় । ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি ১০০ তে ১০০ পেয়েছিলেন ।

এই আত্ববিশ্বাসী শিক্ষার্থী হলো , লেখক , গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক হুমায়ূন আহমেদ !!তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন ।

তাই বন্ধুরা জীবনে কখনো হাল ছাড়ব না । নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস রাখব ।



20210618_231449.jpg

আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।

Sort:  
 3 years ago (edited)

একেবারে ঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোন কঠিন কাজ খুব সহজে করে ফেলা যায়। কিন্তু নিজের উপর যদি কারো আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে দেখা যায় যে খুব সহজ কাজ করতেও ভয় লাগে। আসলে আমাদের সকলের আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে সকল কাজ চেষ্টা করে দেখা উচিত। আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে আপু পোস্ট টি পড়ার জন্য । অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ।

 3 years ago 

সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আপনি আর্টিকেল লিখেছেন। আত্মবিশ্বাস এই আত্মবিশ্বাস না থাকলে আমরা জীবনে কিছুই করতে পারবো না। প্রতিটি মানুষের নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকা খুবই জরুরী। যেকোনো বিষয়ে যেকোনো কাজেই নিজের প্রতি যদি আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে সেটি ভালোভাবে করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ

অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাই । আসলে আমাদের নিজেদের প্রতি আত্ববিশ্বাস নেই ।

 3 years ago 

ঠিক বলেছেন। আমাদের উচিত নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা। নিজের প্রতি ভরসা রাখলে যেকোনো কাজ আরও সহজ হয়ে ওঠবে৷ নিজের প্রতি ভরসা রাখার ব্যাপারটা আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

জি ভাই নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস থাকলে কঠিন কাজও সহজ মনে হবে ‌‌আর নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস নি থাকলে সহজ কাজও কঠিন মনে হবে । অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাই ধন্যবাদ।

জীবন চলার পথে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকা অতি প্রয়োজন। আমি যতক্ষণ পর্যন্ত আমার মনকে স্থির করতে পারব না যে আমি এই জিনিসটি পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটা আমার দ্বারা কখনো সম্ভব হবে না। প্রথমেই আমাদের প্রয়োজন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস এবং এরপরে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এর উপর আর্টিকেল লিখেছেন আপনি ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56596.99
ETH 2394.78
USDT 1.00
SBD 2.32