সুন্দর একটি মুহূর্তের গল্প। 10 % beneficiary @shy-fox
হ্যালো বন্ধুরা , আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকে আমার একটি সুন্দর মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি সবাইকে ভালো লাগবে।
আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন রকম কাজ করে থাকি। সেগুলো কাজের মধ্যে কোন গুলো আগে থেকেই প্ল্যান করা থাকে, আবার কোন গুলো হুটহাট করে থাকি। তবে হুটহাট করে কোন কাজ করা মজাই আলাদা, তবে সেটা যদি ভালো কাজ হয়। সেই কাজ যদি পরিপূর্ণ হয় তাহলে আনন্দে মনটা ভরে যায়। আর এই কাজ করার মধ্যে অনেক কিছু স্মৃতির জমা হয়ে যায়।
কালকে সাগর আর আমি রাতে অনেক দেরি করে ঘুমাইছি । কেননা আজ আমাদের পরীক্ষা চলতেছে। আর করোনায় কলেজের ক্লাস হয়নি। তাই পড়াশোনা একটু পিছিয়ে রয়েছি। তাই পরীক্ষায় প্রস্তুতির জন্য একটু বেশি করেই সময় দিতে হচ্ছে বইয়ে। তাই অনেক রাত হয়ে যায়।
কালকে ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমাইছি দুজনে। দুপুর 12 টা বেজে যায় তবুও ঘুম থেকে ওঠার কোনো আগ্রহ নেই । বারোটা দশে দিক কে জানি দরজায় নক করল। আমার আবার দরজার টুকটুকি শুনে ঘুম ভেঙে গেল। আমি গিয়ে দেখলাম এক ছোট ভাই। আমি বললাম এত সকাল সকাল ডাকতেছিস কি জন্য । সে বলল ভাই এখনো কি সকাল আছে 12 টা পার হয়ে গেল যে। আমি বললাম কি? তারপর মোবাইল টিপে দেখি 12 টা পার হয়ে গেছে।
সাগর তখনও ঘুমাচ্ছে। আমি আবার সাগরকে ডাকলাম। কেননা মেসের বাজার আজকে আমাদের এই করতে হবে। তারপর দুজন ঝটপট ফ্রেস হয়ে নিলাম। কেননা ছোট ভাইয়েরা রাগে জ্বলতেছে। কারণ তারা সকাল থেকে না খেয়ে আছে। আমাদেরও কিছু বলতে পারতেছি না। আমরা আবার তাদের পরিস্থিতি দেখে খুব তাড়াতাড়ি বাজার যাওয়ার জন্য রেডি হলাম। তারপর তাদেরকে বললাম আজকে তোরা কি খাবি বল তো। ছোট ভাইয়েরা বলল ভাই আপনারা যা নিয়ে আসবেন তাই চলবে।
তারপর আমি সাগরকে বললাম আজকে কি নিয়ে আসবি বল। সাগর আবার আমাকে বলে তুই যা নিবি তাই। তারপর দুজন মিলে হুট করে সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে একটা বড় ধরনের কিছু হয়ে যাক। তারপর এক ছোট ভাইকে নিয়ে বাজারের উদ্দ্যেশে রওনা দিলাম। আজকে আবার আমাদের দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় মার্কেট বাহাদুর বাজারে বাজার করতে গেলাম। কেননা সাগর বললো আজকে গরুর মাংস খাবে, আমি বললাম ঠিক আছে চল। গরুর মাংস আমরা যেখানে থাকি সেখানে পাওয়া যায় না। তা বাদে সব কিছুই পাওয়া যায়। তাই বাহাদুর বাজার গেলাম মাংস ও বিভিন্ন রকম শাক সবজি কিনতে।
বাহাদুর বাজার যাওয়ার সময় অটোচালকের সাথে এক কাহিনী হয়ে গেল। সাগর বলল মামা বাহাদুরবাজার যাবেন, তারপর আঙ্কেলটি বলল হ্যাঁ যাবো। সাগর আবার বলল ভাড়া কত নিবেন। অটোচালক আংকেল টা বলল 50 টাকা। আমরা বললাম 50 টাকা কেন? ভাড়া তো 30 টাকা । আপনি 50 টাকা চাচ্ছেন তার মানে।
সাগর বললো দেখেন আঙ্কেল আমরা নতুন না। আমরা প্রায় কমবেশি প্রতিদিনই যাই । অটোচালক আঙ্কেল আর কিছুই বলতে পারেনা। কারণ অটোচালক আঙ্কেলটি মনে করছে আমরা নতুন। তারপর সাগর বললো আপনি যান আপনার অটো আর যাব না।তারপর সাগর আরেকটি অটো কে ডাকলো। সেই অটোয় করে চলে গেলাম।
এর আগে বাহাদুরবাজার আসছিলাম এমনিতেই মার্কেট করতে। কিন্তু কাঁচাবাজার মার্কেটে ঘোড়া হয়নি। তাই সাগর বললো আজকে পুরা মার্কেট ঘুরবো। আমি বললাম এত বড় মার্কেট ঘুরবি তোর পা ব্যাথা করবে। সাগর বললো পাবে তা করুক তবুও আজকে ঘুরবো। তিনজন মিলে ঘুরতে লাগলাম। ঘুরতে ঘুরতে তবুও মাংসের দোকান গুলো খুজে পাচ্ছি না। সাগরকে বললাম অন্য লোককে জিজ্ঞাসা করি যে মাংস হাটি টা কোন দিকে। সাগর বললো না করার দরকার নেই। আমি বললাম কেন? সে বলল আজকে মাংস হাটি কই নিজেই খুঁজে বার করব তারপর মাংস কিনব। আমি বললাম চল।
অবশেষে অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর মাংসহাটি পেলাম। হায় হায় দেখি অনেক বড়! অনেকগুলো মাংসের দোকান। কোন দোকানে নিব বুঝতে পারতেছি না। তারপর ছোট ভাইটি বললো ওই বুড়ো আঙ্কেলের মাংসগুলো ভালো চলেন ওইখান থেকে নিব। অবশেষে ওই বুড়ো আংকেল এর কাছ থেকে মাংস কিনলাম। তারপর কাঁচাবাজার দোকান গুলোর ওই দিকে রওনা দিলাম। তারপর কাঁচা বাজার যা যা লাগে সব গুলোই করলাম।
এখন মেসেজ দিকে রওনা দিব। সেই সময় ম্যাচ থেকে এক ছোট ভাই ফোন করে বলল, ভাই একটা ভাত রান্না করা বড় পাতিল লাগবে। আগের পাতিলে যা ভাত রান্না সেটা এখন আর সবার হয় না। কারন সবাই এখন খাওয়া হয়ে গেছে। সবাই বেশি বেশি করে খাইতে শিখছে। আমি বললাম ঠিক আছে ।
তারপর তিনজনে মিলে এই পাতির দোকান খুজতে লাগলাম । কিন্তু পাতিলের দোকান যে কই সেটা আর খুঁজে পাইনা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন ক্লান্ত হয়ে গেলাম । তখন সাগর বললো অন্য লোককে জিজ্ঞাসা করি যে পাতিলের দোকান কোন দিকে। আমি বললাম কেন শখ মিটল । সাগর বলল বলিস না অনেক দিন পর আজকে এত হাঁটাহাঁটি করলাম ।
তারপর এক আঙ্কেলকে জিঙ্গাসা করে পাতিল এর দোকান চলে গেলাম । আমরা যে পাতিল খুজতেছি সেটা এখানে নেই । তারপর দোকানদার আঙ্কেলকে বললাম , তাহলে এই পাতিলটা কোথায় পাওয়া যাবে। তারপর দোকানদার আন্টি বলল , তোমরা যে পাতিলটি খুজতেছ সেটার জন্য নিমতলা যেতে হবে। তারপর পাখিটি নেওয়ার জন্য নিমতলা গেলাম। অবশেষে পাতিল কি কিনে ফেললাম। তারপর মেসেজ ফিরে আসলাম।
মেসেজ ফিরে এসে রান্না করতে বসলাম সবাই। রান্না করতে করতে প্রায় পাঁচটা বেজে গেল। তারপর সবাই মিলে খেতে বসলাম। তো বন্ধুরা আজকের মত এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
যাইহোক অবশেষে মাংশের দোকান আর পাতিলের দোকান খুজে পেয়েছেন😄😄। নাইলে তো আজ না খেয়েই দিন যেত। তবে ছবিগুলো খুব সুন্দর করে তুলেছেন, খুব ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে এই মূহুর্ত শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু । অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল ।
শেষমেষ পাতিল কিনতে পেয়েছেন জেনে খুবই খুশি হলাম। না হলে তার খাওয়া হতো না। গল্পটা ভালো ছিল, মেসে থাকলে এগুলো মাঝেমধ্যে হওয়াটা স্বাভাবিক। দুজন চেনামুখ কে দেখে খুবই ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো ভাই আপনাদের জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই আজকের দিনটি অনেক মজাদার ছিল। হুটহাট করে বড়োসড়ো একটা আয়োজন, সকলের ক্লান্তি দূর করে দিয়েছে। পরীক্ষার কারণে একঘেয়েমিতা, কেটে গেছে অনায়েসেই। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ভাইয়া আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনি যে শেষপর্যন্ত মাংসের দোকান খুঁজে পেয়েছেন এবং পাতিলের দোকান খুঁজে পেয়েছেন এটাই বড় কথা নইলে তো সারাটা দিন না খেয়ে থাকতে হতো। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
জ্বী আপু অনেক খোঁজাখুঁজির পর মাংসের দোকান খুঁজে পেয়েছি। কারণ অনেক বড় বাজার তো তাই । ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।