কলেজের সেই স্মৃতিগুলো আজও মনে পড়ে।//10% Beneficiaries @shy-fox
আমরা প্রতিদিন সবাই কোনো না কোনো কাজ করে থাকি। কোনো কাজগুলো আমাদের সফল হয় আবার কোনো কাজগুলো সফল হয় না। যেগুলো কাজ সফল হয় না বুঝতে হবে সেগুলো কাজে হয়তো কোন ভুল হয়েছে। সেই ভুলগুলো আমাদের খুঁজে বের করে শিক্ষা নিতে হবে।
আমি কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। তাই আমি প্রতিদিন কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি। আমারও প্রতিদিন সব কাজ সফল হয় না। যে কাজগুলো সফল হয় না , তার জন্য আমি মন খারাপ করি না। কেননা মন খারাপ করে কোন লাভ নেই। কারণ সৃষ্টি কর্তা আমার ভাগ্যে এটাই লিখেছে , আর আমার সাথে ।
আমি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি । ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে একটু বই পড়ি। কেননা ফজরে বা ভোরে বই পড়তে আমায় খুব ভালো লাগে। ওই সময় আমার মাথায় উদ্ভট কোন চিন্তা আসে না। রাতে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাটা অনেক ফ্রেশ হয়ে যায়। তাই যেগুলো পড়ি গুলো মনে হয় মাথায় গাথা হয়ে যায়। সেই জন্য আমার স্টাডি করার সময় ভোর কেই অনেক ভালো লাগে ।
সকালে সূর্য মামা দেখা দিলে আরে স্টাডি করি না। ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে আসি। বাসায় থাকলে সকালে গরুদের জন্য জমি থেকে ঘাস কেটে নিয়ে আসি। গাছগুলো ছোট ছোট করে কেটে বা সানি কেটে গরু গুলোকে খেতে দেই। আমাদের গরুগুলো আমাকে অনেক ভালোবাসে । কেননা তাদের আমি অনেক আদর করি। গরুদের কে খাবার দেওয়া হয়ে গেলে, বাকি যেগুলো কাজ থাকে সেগুলো সেরে ফেলি । মেসে থাক লে সকালবেলা বাজার করতে যাই, বাজার করে সাগর আর আমি রান্না করি । রান্না করে খাওয়া দাওয়া করার পর কলেজে চলে যাই।
কলেজে থাকার সময় গুলো অনেক সুন্দর লাগে। যখন স্যার ক্লাস নেয় , তখন আমার অন্যরকম একটা আনন্দ মনের ভেতর চলে আসে। মনে হয় এই নতুন কিছু শিখতেছি । যা আমি আগে জানি না। আমার জানার আগ্রহ টা অনেক বেশি। আমি চাইনা আমি কোন কিছু থেকে পিছিয়ে পরে থাকি ।
আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। আমাদের কলেজে প্রতিদিন কোন না কোন বিষয়ে প্রাক্টিক্যাল হয়ে থাকে। সেই প্রাক্টিক্যাল গুলো আমি খুব মনোযোগ দিয়ে করে থাকি। কেননা স্যার যদি একবার ওই প্র্যাকটিক্যাল টা শিখিয়ে দেয় বা বুঝিয়ে দেয় ,পরবর্তীতে কোনো স্যার ভালো করে বুঝিয়ে দিতে চায় না। সব স্যার একরকম না ।
তবে আমাদের ডিপার্টমেন্টের সার গুলো অনেক ভালো। কোন কিছু না বুঝলে,স্যার জিজ্ঞাসা করে বুঝেছ কি? যদি বলে না ছাড় বুঝিনি, তখন স্যার তার হাত ধরে ছেলের মত সুন্দর ভাবে প্রাক্টিক্যাল গুলো বুঝিয়ে দেয়। কারণ আমরা ইলেকট্রিক্যালের ছাত্র অল্প একটু ভুল হলে জীবন আমি হতে পারে। করোনায় আমরা অনেক প্রাকটিক্যাল মিস করেছি। জানিনা স্যারেরা কিভাবে এগুলো আমাদেরকে পরবর্তীতে শেখাবে। হয়তো যেগুলো প্রাক্টিক্যাল শেখা হয়নি বা পিছিয়ে গিয়েছে করোনায় সেগুলো আর শেখা হবে না। তাই আমাদেরকে নিজে নিজেই শিখতে হবে।
আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার হব। কেননা সার্কিট তৈরি করতে আমায় খুব ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকেই আমি এসবের উপর অনেক পারদর্শী ছিলাম। ছোটবেলায় যখন স্যার ক্লাসে জিজ্ঞাসা করেছিল, যে তোমরা বড় হয়ে কি হতে চাও । আমি বলেছিলাম স্যার আমি ইঞ্জিনিয়ার হব । স্যার আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল ইনশা আল্লাহ তোমার স্বপ্ন পূরণ হবে । স্কুলের স্যার আমার তখন এই বলেছিল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে, অনেক পড়তে হবে। তারপর আমি স্যারের কথা শুনে মনোযোগ সহকারে বই পড়তে থাকি। তারপর এসএসসিতে অনেক ভালো রেজাল্ট করি । তারপর ভাবলাম কোথায় ভর্তি হব।
আমাদের দেশে চাকুরীর ব্যবস্থা ভালো না। এখন সব জায়গাতেই ঘুষের কারবার চলে । মামা খালু থাকলেই তো কোনো কথাই নেই। আমি হলাম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। চাকরি নিতে গেলে আমার পরিবার থেকে এতগুলো টাকা দেওয়া অসম্ভব। তাই ইন্টারে আর ভর্তি হলাম না। ভেবেচিন্তে আমাদের বাংলাদেশের কয়েকটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পরীক্ষা দেই। আমার শখ ছিল দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়া। কেননা বাংলাদেশের মধ্যে টপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হল দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। শুনেছিলাম সেখানে অনেক চাপের সহকারে ছাত্রদেরকে পড়ানো হয়। অবশেষে সেখানেই পরীক্ষা দিয়ে টিকলাম । সাবজেক্ট চয়েজ দিয়েছিলাম ইলেকট্রিক্যাল। কলেজ থেকে আমায় ইলেকট্রিক্যাল সাবজেক্ট এই দেওয়া হল। তাই সেখানে আমি ভর্তি হয়ে যাই।
আমার কোন বন্ধুই সেখানে পরীক্ষা দিয়ে টেকেনি। তাই সবাই নতুন ছিল। কলেজে প্রথম যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন অনেক আনন্দ ও মনের ভেতর ভয় অনুভব হয়েছিল । কেননা সেখানে কাউকেই চিনিনা। তারপর এক স্যার কে জিজ্ঞাসা করলাম যে একাডেমি ভবন টা কোন দিকে । স্যারটি বলল কেন কি সমস্যা। স্যারকে বললাম আমি আমার কাগজপত্রগুলো জমা দিব। স্যার আমাকে বলল তুমি কোন ডিপার্টমেন্ট এ চান্স পেয়েছো। আমি বললাম স্যার ইলেক্ট্রিকাল। স্যার বলল আমার সাথে এসো কোন সমস্যা নেই আমি তোমার ডিপার্টমেন্টের প্রধান চিফ ইনস্ট্রাক্টর।
স্যার আমার বাসা জিজ্ঞাসা করল। আমি আমার বাসা পার্বতীপুরে বললাম। স্যার বলল পার্বতীপুরের কোথায়? আমি বললাম ছাড় খোলাহাটি তে। স্যার বলল আমার ও বাসা ঐখানে। আমি হতভাগ্য হয়ে গেলাম। যাই হোক আমার ডিপার্টমেন্টের প্রধানের বাসায় হলো আমাদের ঐদিকে। স্যারকে বললাম স্যার আপনাকে তো আগে কোনদিন দেখিনি আমাদের ঐদিকে। স্যার বলল ছোট থেকে বাইরে ছিলাম। সেই জন্য মনে হয় দেখনি । আমার সার্টিফিকেট মার্কশিট গুলো সত্যায়িত করা ছিল না। স্যার সুন্দরভাবে সত্যায়িত করে দিল এবং আমার কাগজপত্রগুলো জমা নিল। তারপর আমাকে কলেজ সম্পর্কে সবকিছু বুঝিয়ে দিল।
তারপরের দিন আমি কলেজে যাই। গিয়ে ক্লাসে যাই । গিয়ে দেখি সবাইরেই অচেনা মুখ। কাউকে আগে কখনো দেখিনি। তারপর আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচয় হলাম সবাই আমাকে পরিচয় দিলো। তারপর সবার সাথে ভালোই চলছিল। কলেজের মধ্যেই সবাইরেই কোনো-না-কোনো ক্লোজ ফ্রেন্ড হয়ে যায় । আমারও ঘনিষ্ঠ দুটা বন্ধ হয়ে গেল । বেশ ভালই লাগছিল। দেখতে দেখতে ডের বছর হয়ে গেছিল। তারপর করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। তারপর আমাদের ইস্কুল কলেজ গুলো বন্ধ করে দিল।
এর পরেই কলেজে কাহিনীগুলো বা আমার সাথে কি হয়েছিল পরে পোস্টগুলোতে বলবো । সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই,
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। দোয়া করবেন আমি যেন আমার লক্ষ্যে পৌঁছায়।
অবশ্যই দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার লক্ষ্য পূরণ করেন
আপনার কলেজ জীবনের স্মৃতি চারন মূলক অনেক কথাই আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।পোস্টটি খুব সুন্দর হয়েছে।আসলে স্কুল জীবন এবং কলেজ জীবনের গল্পটা একটু বেশি স্বরনীয় হয়ে থাকে। যেটার মায়া সহজে ভোলা যায় নাই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।