কষ্টের পরেই আসে সুখ ।//10% beneficiary @shy-fox
হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি । |
---|
আমরা মানব জাতি। সৃষ্টিকর্তার পৃথিবীতে অনেক কিছু সৃষ্টি করেছেন। আর এই সবগুলো সৃষ্টির মধ্যেই সেরা হল মানুষ। মানুষের চেয়ে উত্তম এই সৃষ্টি জগতে আর কেউ নেই। তাইতো সৃষ্টিকর্তা মানুষের ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিয়ে থাকেন শ্রেষ্ঠতা দেখার জন্য। বিপদের আতঙ্ক, কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, খুদার জালা, ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে ইত্যাদি বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। আর যারা এই কষ্টের মধ্যেও থেকে ধৈর্য নিয়ে পথ চলে তাদের পরবর্তীতে সুখ আসে । এটা মহান আল্লাহতালার পরীক্ষা মাত্র।
যেকোনো কিছু করতে গেলে ধৈর্য দরকার। ধৈর্য ছাড়া কোন কাজ সফলতা অর্জন হয় না। আর এই কাজ সফলতা অর্জন করতে গেলে বিভিন্ন বিপদের মুখোমুখি হতে পারে। এমনকি আপনার কাছের লোক গুলো সে সময় কাছে থাকবে না। হয়তো আশেপাশের লোক বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করবে। বিপদে পড়লে হয়তো পাগল বলবে নয়তো আরো বিভিন্ন খারাপ কথা বলে গালি দিবে। এতে কে কি বলল তা শোনার দরকার নেই। কথায় আছে না,
পাছে লোকে কিছু বলে।
ভালো কাজ করতে গেলে অনেকেই সেই কাজে খোটা দিবে। বলবে ,পাবেনা ,যোগ্যতা নেই, এসব ওর দ্বারা হবে না আরো বিভিন্ন রকম সমোচালনা করবে।
তাই এই বিপদে পিছুটান দেওয়া যাবে না ধৈর্য নিয়ে থাকতে হবে। কষ্ট করে হলেও বিপদ কে পিছনে ফেলে দিয়ে চলতে হবে। হয়তো আপনার আশেপাশের লোক এরা চায় না আপনি আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণ করেন।
পৃথিবীতে এরকম সফল মানুষ অনেকেই আছে। যারা জিরো থেকে এখন হিরো হয়েছে। তাদের ইতিহাসগুলো ঘাটাঘাটি করলে অনেক কিছু শেখা যায়। তারা কিভাবে সফলতা অর্জন করেছে। আমরা এখনকার মানুষেরা পরিশ্রম করতে পছন্দ করি না। অলসতা আমাদের ঘিরে রেখেছে। আমাদের নিজের প্রতি কনফিডেন্স নেই। আমরা নিজেই কোন কাজ দেখে ভয় পাই। মনে করি এই কাজ আমার পক্ষে করা সম্ভব হবে না। একটা কোন কথা হলো? তাহলে এগুলো কাজকে করতেছে? আমাদের মত মানুষ এ তো। তাহলে ওই মানুষটি পারলে আমি কেন পারব না। এটা কি আমরা একবারও ভেবে দেখি? হয়তো দেখিনা। কাজটা কঠিন মনে হলে পিছুটান দেই।
কিন্তু এটা বুঝিনা যে চেষ্টা করলেই কাজটি করা সম্ভব হবে। আসলে এই বোঝা টাকেই অলসতা ঘিরে রেখেছে। তাই আমাদের উচিত এই অলসতা দূর করা। এই অলসতা মনের ভিতর থাকলে জীবনে কোনদিন সফলতা অর্জন হবে না।
আমরা এ .পি .জে. আবুল কালাম স্যার কে সবাই চিনি। স্যার এর জীবন কাহিনী হয়তো কমবেশি সবাই জানি। তিনি কি ছিলেন আর কি হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন। এরকম পৃথিবীতে অনেক মানুষের সফলতার গল্প রয়েছে।
তাহলে আজকে আমি আমার এক বড় ভাইয়ের সফলতার গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। আশা করি সবাই বুঝতে পারবেন।
ভাইয়ের নাম ছিল সুকুমার। তার পরিবার ছিল খুবই গরীব। সুকুমার ভাইয়ের বাবা ছিলেন একজন জেলে। মাছ ধরে নিয়ে বাজারে বিক্রি করতেন যা টাকা ইনকাম হতো তাই দিয়ে সংসার চলত। পরিবারের ছিলেন বাবা-মা ও এক বোন। সুকুমার ভাই ছোট থেকেই ভালো ছাত্র ছিলেন।পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী ছিলেন। তার এই পড়ালেখায় আগ্রহ দেখে সুকুমার ভাইয়ের বাবার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ছেলেকে মানুষের মত মানুষ করবে। তাকে যেন এই এই রোদ ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে মাঠে-ঘাটে কাজ করতে না হয়। বাবার এই আগ্রহ দেখে সুকুমার ভাইয়ের পড়ালেখার আগ্রহ আরো বেড়ে গেল।
কিন্তু হঠাৎ করে সুকুমার ভাইয়ের উপর এক বড় ঝড় নামলো। ভাই যখন ৫ শ্রেণি পরীক্ষা দিলেন তখন তার বাবা মারা যান।তখন কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না । হঠাৎ মনে হলো তার বাবার স্বপ্ন কি বিফলে যাবে । এ পাশে আবার মা আর ছোট বোন রয়েছে।পুরা সংসারের ভার সুকুমার ভাইয়ের ঘাড়ে এসে পড়ল। অন্যের বাসায় কাজ করে নিজের পরিবার চালাতেন ও রাতে বই পড়তেন । কেননা তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে যে । ভাইয়ের মেধা ও লেখাপড়া আগ্রহ দেখে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ (BUSMS)। বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ দিলেন । সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভার্সিটির পিপারেশন নিলেন। প্রথম বারেই বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) এ পড়া সুযোগ পেলেন। পড়াশুনা শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিলেন। বিসিএস পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ২১ তম হয়েছিলেন । এখন তিনি একজন প্রশাসন ক্যাডার। ওই যে প্রথমে কষ্ট করেছিল এখন সুখে আছে।
বন্ধুরা আজকের মত এখানেই শেষ। আমার কথাগুলো হয়তো বুঝতে পেরেছেন। কষ্ট ছাড়া কোন কিছু সফলতা অর্জন হয় না। সফলতা অর্জন করতে হলে প্রথমেই কষ্ট ভোগ করতেই হয়। আরে কষ্ট পেরিয়ে চললেই সুখ আসে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
খুব সুন্দর একটি মোটিভেশনাল রাইটিং শেয়ার করেছেন আপনি। আসলেই কষ্ট না করলে কোন কাজে সফলতা আসে না। একাগ্রতা আর সেইসঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করতে পারলে আমার মনে হয় পৃথিবীতে অনেক কিছুই করা সম্ভব। যেমন করেছেন আপনার সুকুমার ভাই। সুন্দর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।