বন্ধুই বন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা //10% beneficiary @shy-fox
হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি । |
---|
আমরা প্রতিদিন নানার ধরনের কাজের মুখোমুখি হই । আর এই কাজ গুলো করতে হয় নানার ধরনের মানুষের সাথে । কেউ পরিচিত আবার কেউ অপরিচিত । তবুও মিলেমিশে কাজ করতে হয় । দীর্ঘ দিন এক সাথে কাজ করার পর তাদের মধ্যে একটা মধুর সম্পর্ক তৈরি হয় । তাদেরকে মনে হয় অনেক আপনজন । তাদের প্রতি একটা বিশ্বাস চলে আসে ।
কেউ কেউ আছে সেই বিশ্বাসের খেয়ানত করে । এমন পরিস্থিতিতে কমবেশি সবাই পড়ে ।
তাহলে একটা চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করি ।
সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হলাম । সবাই অপরিচিত । কাউকে চিনি না । আর কারো সাথে তেমন কথা বলা হয় না । কেননা সবাই অপরিচিত । স্যার ক্লাসে আসে আর পরিচয় সবাইরে নেয় । সবাই সবাইরে দিকে তাকিয়ে থাকে , পরিচয় টুকু শুনার জন্য । এই বুঝি নিজের এলাকার কথা কেউ বলে ফেলে । ক্লাসে বেশ কয়েকজন ছিল , আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলার । তেবে দুজন পেয়েছিলাম নিজের এলাকার । মনে মনে ভাবলাম ক্লাস শেষে তাদের সাথে ভালো ভাবে পরিচয় হবো । স্যার ক্লাস থেকে বের হওয়ার পর এক এক করে দুজনেই এলো আমার কাছে । এসে ভালো করে পরিচয় হলাম ।
মনে মনে ভাবলাম যাই হোক নিজের এলাকার বন্ধুর খোঁজ পাওয়া গেল । ছেলে দুটো ছিল অনেক ভালো । কয়েক দিন যেতে না যেতে সব বন্ধুদের সাথে পরিচয় হয়ে গেল । কিন্তু নিজের এলাকার বন্ধু দুটোর সাথে খুবই মিল হয়ে গেল । কিছুদিন পর বীরগঞ্জের এক বন্ধু আমাদের তিন জনের দলে যোগ দিলেন । তাকে আবার আমাদের দলে জায়গা করে দিলাম । কেননা ছেলেটি ঠিক আমাদের মতোই সাদা । অনেক ভালো ছেলে ছিল । ছেলেটির নাম ছিল সুজন ।
তার আবার পারিবারিক অবস্থা অনেক ভালো । কিন্তু ছেলেটি অনেক সাদাসিধে । আমাদের মতো বেশি কথা বলে না । ভালোই দিনকাল যাচ্ছিল । দেখতে দেখতে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা চলে আসলো । পরিক্ষা আলহামদুলিল্লাহ ভালো ভাবে দিলাম সবাই । পরিক্ষার পর কয়েকদিন কলেজ বন্ধ দিছিল । বন্ধ পেয়ে কমবেশি সবাই বাসায় চলে গিয়েছিলাম । কিন্তু সুজন থেকে গিয়েছিল ।
আমাদেরকে পাশে না পেয়ে সে স্থানিয় এক ছেলের সাথে সুজনের বন্ধুত্ব হয়ে গেল । তারা দুজন এত ঘনিষ্ঠ হয়ে গেল যে , আমাদেরকে আর চিনে না । তাদের মধ্যে অনেক পার্সোনাল কথপোকথন চলে । আমাদেরকে সেই কথপোকথন শুনায় না । আমরাও আর তার ব্যবহার দেখে অতিস্ট হয়ে গেছি । যাই হোক লেখাপড়া করতে আসছি , লেখাপড়া করি । আমরা আর সেদিকে লক্ষ্য রাখিনি ।
কিন্তু কিছু দিন পর শুনি তার লেপটপ হারিয়ে গিয়েছে । অবাক করা কথা । তার লেপটপ নাকি রুমেই ছিল । অনেক খুজা খুঁজি কিন্তু পাওয়া যায় নি । ভালো পরিবারের ছেলে তো এটা তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি । তবুও আমরা ভিতরে ভিতরে খোঁজ নিয়ে দেখতেছি । কিন্তু না খুঁজে পাওয়া যায় না । সন্ধেও করার মতো কাউকে ছিল না ।
কয়েকদিন পর আবার একটা ঘটনা ঘটল । কয়েক জন বন্ধু আর বড় ভাই মিলে বাইরে হাঁটতেছি । বিকেল বেলায় বন্ধুরা অনেক কয়েক জন মিলে গল্প করতে করতে হাঁটতে অনেক ভালো লাগে । এক আমি বললাম ভাই কোথায় যাবে না আজকে । বড় ভাই বলল , আজকে নাহয় রেল লাইন দিয়ে একটু হাঁটি । আমরা বললাম ঠিক আছে ভাই ।
কিছু দূর গিয়ে দেখি কয়েক জন ছেলে দুজন ছেলেকে মারতেছে । আমরা তারাতাড়ি এগিয়ে গেলাম । কাছে গিয়ে দেখি সুজন আর তার বন্ধুটা । আমরা বললাম কি হইছে রে । সুজন বলল, দেখনা তাদেরকে চিনিনা জানিনা আন্দাজি আমাদেরকে মেরে মোবাইল আর মানিব্যাগ নিয়েছে । এই কথা শুনে আমরা তাদেরকে ঘিড়ে ধরে উড়াধুড়া মাইড় শুরু করলাম । কারণ তাদের থেকে আমরা সংখ্যায় বেশি ছিলাম ।
মাইরের ঠেলায় টোকাই গুলো বলল, আমাদের কোনো দোষ নেই । এই ছেলে আমাদেরকে বলছে মোবাইল আর মানিব্যাগ কেরে নিতে । এখন ভাবতেছেন এই ছেলেটি কে ? এই ছেলেটি হলো সুজন এর সেই বন্ধু । এক সাথে ঘুরে বেড়া এক সাথে খায় , আবার ছেলে লাগাই দিয়ে তাকে লুট ও করে ।
আমরা তো পুরোই অবাক !! বন্ধু হয়ে বন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা । এটা কেমন করে হয় । হুট করে মাথায় চলে আসলো তাহলে লেপটপ এই ছেলেয় চুরি করেছে । সব কয়েকটা কে মেসে নিয়ে আসলাম । এসে সবাইকে ঘন পিটানি দিতেছে বড় ভাইয়েরা । বলতেছে লেপটপ কে নিছে বল ? কিন্তু তারা সিকার হচ্ছে না । এক বড় ভাই বলল, তাদেরকে পুলিশে দেওয়া উচিত । পুলিশে দেওয়া কথা শুনে বলল , ভাই আমি সুজনের লেপটপ নিয়েছি । তাদের এই কাহিনী দেখে আমরা অবাক । বন্ধুই বন্ধুকে সিস্টেম দিতেছে ।
তাই বন্ধুরা , কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে হলে ভেবে চিন্তে করবেন । আগে দেখবেন ছেলেটি কেমন । আবার দুদিন হলো কারো সাথে পরিচয় হওয়ার ,তাকে ভরসা না করাই ভালো । আজকে এখানেই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন ।
আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।
বিশ্বাসঘাতকতা শব্দের সাথে বেশ অনেক আগেই আমি পরিচিত হয়েছি। এই শব্দটা যে একজন বন্ধুর জন্য কতটা বেদনাদায়ক তা শুধু বুঝতে পারবে যারা এই মুহূর্তের সম্মুখীন হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আমার পোস্টটি আপনি বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।
পৃথিবীতে মানুষ কখনো একা বসবাস করতে পারে না । বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশী নিয়েই তাকে চলতে হয় । তবুও এর ভিতর থেকে বাছাই করে বন্ধুবান্ধব ঠিক করে নিয়ে তাকে চলতে হবে । বন্ধু ফেলে দেওয়া যাবে না, আর হঠাৎ করে বন্ধুত্ব করা ও যাবে না । এভাবেই দুনিয়়ার ভিতরে চলতে হবে । ধন্যবাদ সুন্দর একটি ঘটনা আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য ।
জি ভাই ঠিক বলেছেন বন্ধু বান্ধব ফেলে দেওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের ভেবেচিন্তে বন্ধুত্ব করা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আসলে একটা জিনিস খুবই খারাপ লাগে যখন কাছের মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করে। এর থেকে খারাপ অনূভুতি আর হয়না। আপনার গল্পটা বেশ শিক্ষনীয় ছিল। এবং এটা এখন হরহামেশাই ঘটতে দেখা যাচ্ছে। সুন্দর লিখেছেন।।
জি ভাই ঠিকই বলেছেন এখন হরহামেশাই ঘটনাগুলো ঘটছে। আমাদের সতর্ক ভাবে বন্ধুত্ব করা উচিত।