অন্যের ভালো মানুষ সহ্য করতে পারে না, হিংসা হয় । 10% beneficiary @shy-fox

আসসালামুয়ালাইকুম

আজ ০৮ মার্চ, ২০২২, রোজ মঙ্গলবার।


আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি ।


মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আর এই মানুষের এই ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা রয়েছে। আর এই মানুষ এই বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হয়। মানুষের চরিত্রে যেসব দিক রয়েছে তার মধ্যে হিংসা খুবই মারাত্মক। হিংসা নিয়ে বসবাস করলে কখনোই সফলতা অর্জন হয় না । তাই আমি আজকে হিংসা নিয়ে কিছু আলোচনা করব।



hand-2593743_640.webp
Source


অন্যের ধন-সম্পদ , সুখ - শান্তি , কামনা -বাসনা ,ধ্বংস করে দিয়ে নিজে এর মালিক হওয়া চিন্তা বা কামনা- বাসনাকে হিংসা বলে। এই হিংসা কারো ক্ষতি করতে পারে না, একমাত্র নিজের ছাড়া। হিংসা মানুষেকে পতনের দিকে ধাবিত করে। হিংসা অন্যের দিকে লক্ষ্য করে, কিন্তু নিজেকে আঘাত করে। এগুলো বুঝেও আমরা বুঝতে চাইনা।

এক গ্রামে বাস করত এক গরিব ছেলে।তার নাম ছিল রাসেল ‌ তার ছিল দুই বোন ও তার মা । রাসেল যখন ছোট তখন তার বাবা মারা যায়। তখন থেকে রাসেল কাজ করে তার পরিবার চালাত । কিন্তু রাসেলের স্বপ্ন ছিল একদিন সে অনেক বড় হবে । আর মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা নিতো । সে কথা কম বলত‌। কেউ যদি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করত সে খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনত। যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করত সে ওই বিষয়ে জানা সত্ত্বেও চুপ করে থাকতে। কেননা সে যে বিষয় নিয়ে জানে তার থেকেও অন্যজন বেশি জানতেও পারে। তাই সে আলোচনা পুরোপুরি শুনে কথা বলতো। যদি আলোচনা মধ্যে কোন ভুল থাকতো , তাহলে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে কথা বলতো।



student-849825_640.webp
Source


তার কম্পিউটারের প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল। তার স্বপ্ন ছিল সে বড় হয়ে একজন ফ্রিল্যান্সার হবে। দিনের বেলায় মাঠে কাজ করতো এবং রাতের আঁধারে কম্পিউটার নিয়ে বসতে। এখন সে একজন পারফেক্ট ফ্রিল্যান্সার। মাসে তার অনেক টাকা ইনকাম। ক্রমশ এসে উন্নত হতে লাগল।

কিন্তু পাশের বাড়ির লোকেদের এটা সহ্য হয় না । তার এই ক্রমশ উন্নত হওয়া মেনে নিতে পারে না । তারা মনে করে ফকিন্নির বাচ্চা কিভাবে এত টাকা ইনকাম করে । আমরা স্বাবলম্বী হয়েও এত টাকা ইনকাম করতে পারি না। এই বলে মানুষের কাছে বিভিন্ন কথা বলে রাসেলের নামে।



নানার কাছ থেকে একটা গল্প শুনেছিলাম,



istockphoto-146785125-170667a.jpg

Source


বাবা আর ছেলে মহিষ বিক্রি করতে যাবে। মহিষ বিক্রি করার জন্য বাসা থেকে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে হবে। আর এই পথ পাড়ি দেওয়ার সময়, অনেকগুলো গ্রাম অতিক্রম করে যেতে হয়। এখন বাবা ও ছেলে ভাবলো এত দূর পথ হেঁটে যাবো? তাই বাবা ও ছেলে মহিষের পিঠে উঠলো। জেতে জেতে সামনে এক গ্রাম আসলো । সেই গ্রামের লোকেরা হাসতেছে আর বলতেছে, কান্ডজ্ঞান দেখো একটা মহিষের উপর বাবা ছেলে দুজনেই উঠে বসেছে। মহিষের প্রতি কোনো দয়া মায়া নেই। গ্রামের লোকেদের এইকথা শুনে বাবা ছেলে দুজনেই মহিষের পিঠ থেকে নামলেন। এখন বাবা ছেলে দুজনেই মহিষ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কিছুদূর যেতে যেতেই আরেকটি গ্রাম এসে পৌছিল । এখন এই গ্রামের লোকেরা বলে, হাহা কত বোকা দেখো এত বড় একটি মহিষ থাকতে হেটে যাচ্ছে। অন্তত একজন হলেও তো চলে যেতে পারতো ।

গ্রামের লোকেদের কথা শুনে, বাবা ছেলেকে মহিষের পিঠে উঠিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর আরেকটি গ্রাম সামনে পেলেন ।এখন এই গ্রামের লোকেরা বলে, হাহা দেখো কি অবস্থা বাবাকে নিচে রেখে ছেলে মহিষের পিঠে যাচ্ছে। বাবার প্রতি ছেলের কোন দয়া মায়া নেই। এই কথা শুনে ছেলে মহিষের পিঠ থেকে নেমে বাবাকে উঠিয়ে দিলেন। কিন্তু পাশের গ্রামে গিয়ে তবুও লোকেরা হাসাহাসি করছে বাবা আর ছেলেকে দেখে। তখন ছেলে বলল কি জন্য হাসাহাসি করতেছেন, তখন গ্রামের লোকেরা বলল, তোমার বাবার কোনো কান্ডজ্ঞান নেই ছেলেকে রেখে তিনি আরাম আয়েশ করে মহিষের পিঠে যাচ্ছেন। তখন বাবা আর ছেলে বিপদে। মহিষের পিঠে চরে গেলেও দোষ না চরে গেলেও দোষ।

ঠিক গল্পের মতো এখন আমাদের সমাজের লোকেরা । মানুষের ভালো কাজ বা ভাল কিছু দেখতে পারে না। হিংসা করে। তারা কিভাবে অন্যজনকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলানো যায় সেই চেষ্টা করে। আশাকরি আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি আপনারা বুঝে গেছেন। ধন্যবাদ সবাইকে আজকের মত এখানেই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।



20210618_231449.jpg

আমি মোঃ ইব্রাহিম ইসলাম নাহিদ। আমাকে সবাই নাহিদ বলেই ডাকে। আমি বাংলাদেশী । আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বই পড়তে , লিখতে ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে ভালোবাসি।নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি।

Sort:  

গল্পটি আমি আগে ও‌ পড়েছিলাম। তবে আমি মানুষও গাধা দিয়ে শুনেছিলাম। যাই হোক আমাদের সমাজে মানুষেরা কোন মানুষ উন্নতি পথে যাক এটা সহ্য করতে পারে না। তারা প্রতিনিয়ত তাদের নিয়ে হাসি-তামাশা করে যেন তারা মাঝপথে ছেড়ে চলে যায়। আর যারা তাদের হাসি-তামাশা উপেক্ষা করে নিজের মতো কাজ করে দেয় তারাই জীবনে সফলতা অর্জন করে। ধন্যবাদ সুন্দর একটা বিষয় আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

ঠিক বলেছেন আপনি‌ । ধন্যবাদ আপনাকে ‌

 2 years ago 

আপনার গল্পদুটো পড়লাম। আসলে আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষই এমন। অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না কিন্তু আমি মনে করি এরা প্রকৃত মানুষ নয়। এদের থেকে সমাজের কোন কিছু শিক্ষা গ্রহণের নেই। প্রকৃত মানুষ তারাই যারা মানুষের ভালোর জন্য কিছু করে। মনে রাখবেন সবাই দৃষ্টান্ত হতে পারে না। যাই হোক সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই । অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

অন্যের ভালো মানুষ সহ্য করতে পারে না, হিংসা হয় একদম সত‍্য একটি উক্তি দিয়েছেন। আমরা কারোর ভালো কেউ দেখতে পারি না এতে করে আমরা এবং আমাদের সমাজইই পিছিয়ে পরছে। আপনার পোস্টটি পরে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন‍্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন‍্য।

একদম ঠিক বলেছেন ভাই । ধন্যবাদ আপনাকে।

একদম সত্য একটি উক্তি দিয়েছেন ভাই।বর্তমান সময়ে আমরা কেউ অন্যের ভালো দেখতে পারিনা। সবাই সবার স্বার্থ্য খুঁজি।ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74