এক টাকা দিয়ে দশ টাকা তুলে নিয়ে যাও বাবা রা! ১০% লাজুক-খ্যাঁকের জন্য বরাদ্দ
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয়,
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও সদস্য বন্ধুদের প্রতি রইল আমার অন্তরের অন্তরস্থল হতে একরাশ প্রীতি, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রমাণ হিসাবে একটি বাস্তব ঘটনার বর্ণনা করতে যাচ্ছি। আশাকরি বিষয়টি অনেক ভালো লাগবে।
তো দেরি না করে আলোচনা শুরু করে দেয়া যাক-
বন্ধুরা আমরা যারা সক্ষম ব্যক্তি তারা কোন না কোন কাজে বা পেশায় জড়িত।আর যারা অক্ষম বা পঙ্গু বা প্রতিবন্দী তাদের কর্ম হচ্ছে বাড়ী বাড়ী বা কোন ফুটপাতে বা রাস্তার মোড়ে বসে কিছু আর্থিক সাহায্যেের আবেদন করেন।
এদেরকে বলা হয় ভিক্ষুক বা ফকির বা ফাকিরুন।আর এরা এভাবে মানুষের কাছে হাত পাতিয়ে জীবন ধারণ করেন।
টাইটেল বা শিরোনাম দেখে হয়তো আচর্য্য হয়েছেন।আসলে এটাই বাস্তব।এক টাকা দিয়ে দশ টাকা তুলে নিয়ে যাও বাবা রা-কথাটি বলতে বলতে কেঁদে ফেললো আমাদের এলাকার এক প্রতিবন্দী ভিক্ষক তোসা।আসল নাম মোঃ তোসাদ্দেক হোসেন।সবাই তোসা বলেই ডাকে এবং চেনে।
জন্মের সময় ভালোই ছিল তোসা। ৫/৬ বছর বয়সে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে তার দুটি পা ই বিকল হয়ে যায়।বর্তমান তার বয়স ৬০ বছর। ঐ অবস্থায় চলছে।সে ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট বাজারে ভিক্ষা করে নিয়ে এসে জীবিকা নির্বাহ করে। সংসারে স্ত্রীসহ ৭ জন পোষ্য তার।
গত মঙ্গলবার আমাদের হাট বার। বেলা ৪ঃ৩০ টায় চেম্বার থেকে বাসায় গিয়েছিলাম কেনা মাছ রেখে আসতে।চেম্বার থেকে বাসার দুরত্ব ১১০ মিটার। তাই হেঁটে যাতায়াত করতাম।
বাসা থেকে ফেরার পথে রাস্তা এক পাশ্বে বসে তোসা ভিক্ষা করছে।আমি ওর কাছাকাছি আসতে না আসতেই তোসা আজকের আলোচনার টাইটেলটি কেঁদে কেঁদে বলতেছে।
আমি হঠাৎ থেকে গিয়ে বললাম তোসা চা কি হয়েছে -বাবা।ও রকম বলছেন যে?
তোসা বলল- ২০/২২ বছর বয়সের এক ছেলে এক টাকার একটা কয়েন আমার দান কাপড়ে দিয়ে ১০ টাকার একটি নোট তুলে নিয়ে গেল।
আমি বললাম-আপনি কিছু বললেন না?
তোসা বললেন-কি বলবো বাবা আমি তো খোঁড়া মানুষ আমার আর করার কি বা আছে।তাতে ভিক্ষক মানুষকে কেউ দেখতে পারে না। কথাগুলো ও কেঁদে কেঁদে বলে ফেললো।
আমি বললাম- চাচা কাঁদিস না আমি আপনাদের পোষিয়ে দিচ্ছি। দান করলাম একটা ৫০ টাকার সে খুব খুশি হলো। ও বলল যে-ছেলেটা এ রকম করলো কেন।
আমি বললাম হয়তো সিগারেট খাওয়ার জন্য টাকা নেই, তাই হয়তো আপনার কাছ থেকে নিয়েছে।
তাহলে ভাবুন আমাদের নৈতিক অবক্ষয়ের কথা। আমরা একজন ভিক্ষুকের টাকা নিতেও আমরা লজ্জা বোধ করছি না।
এই ধরণের আচরণ আমাদের সমাজ থেকে দুর করতে পারলেই তবেই হবে আমাদের শান্তি,হবে দেশের উন্নয়ন।
আলোকচিত্রের বর্ণনা-
ধারণকৃত ডিভাইস | এন্ড্রোয়েড ফোন ক্যামেরা |
---|---|
ফোনের নাম ও মডেল | সিম্ফনি জেড২৫ |
ক্যামেরা রেজুলেশন | ১৩ মেগাপিক্সেল |
ক্যাটাগরি | নৈতিক অবক্ষয় |
ফটোগ্রাফার | @doctorstrips |
লোকেশন | ভেন্ডাবাড়ী ,রংপুর,বাংলাদেশ |
what3words address | https://w3w.co/sufferer.backfiring.trailers |
ধন্যবাদান্ত-
আমি মোঃ নায়েব আলী,
হাইস্কুল শিক্ষক।
এলএমএএফ ডাক্তার।
একজন ইউটিউবার।
ওয়েব ডিজাইনার ও ব্লগার।
ছাদবাগান, ফটোগ্রাফ, ভিডিও,জনসেবা ও ভ্রমণ আমার প্রিয় শখ।
আমি আপনার আজকের লেখাটি পড়ে একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।এও কি সম্ভব!আমি যে একেবারেই কি যে বলবো তা বলার ভাষাটাই খুঁজে পাচ্ছিনা।
আসলে আমাদের নৈতিকতাটা একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে, একেবারে যাকে বলে পঁচে গিয়েছে।
রাইট বলেছেন আপু।
সম্পুর্ণ পোস্টটি পড়ে অতি চমৎকার একটি কমেন্টস করেছেন।
সেজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামণা রইল।
ভাইয়া,আপনার লেখাটি পড়ে আমার খুবই খুবই খারাপ লেগেছে। ছেলেটি নিজের চাহিদার জন্য বিক্ষোভকে পর্যন্ত ছাড়ে নি। নিজের ইনকাম করে যা খাবার খেতে পারতো কিন্তু এই একজন পঙ্গু লোকের থেকে কিভাবে টাকাটা নিয়ে গেল। খুব কষ্ট লাগছে ভাইয়া আপনার লেখাটি পড়ে। আমাদের সমাজে এই ছেলেটির মতো মানুষ থাকার কোন অধিকার নেই। ভাইয়া,আপনার লেখাটি পড়ে মন একদম খারাপ হয়ে গেছে।
ভাইয়া, আমার লেখার মধ্যে এই লেখাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।
দান করলাম একটা ৫০ টাকার সে খুব খুশি হলো।
ধন্যবাদ,ভাইয়া।
আসলে বেকার ছেলেরাই এই ধরণের ঘটনা করে থাকে।কর্মমুখী ছেলেরা এমন করতে পারে না।
ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর ও মুল্যবান মতামত দেয়ার জন্য আপু।
সত্যিই ,এটি খুবই লজ্জাজনক।সেই মানুষের মনুষ্যত্ব বোধ এতটাই ঠুনকো যে ভিক্ষুকের টাকা নিতে ও দ্বিধাবোধ করলো না।আপনার লেখার বিষয়টি ভালো, বাস্তব চিত্র নিয়ে।ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।