ত্রিফলাঃ হরিতকীর গাছ পরিচিতি ও এর স্বাস্থ্য উপকারিতাসমূহ
আজ || ২৭ ভাদ্র,১৪২৮ বঙ্গাব্দ || ০৩ সফর,১৪৪৩ হিজরী || ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ইংরেজি || রোজঃশনিবার ||
হ্যালো,
সকল স্টিমিয়ান বন্ধুদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আশাকরি সবাই ভালো আছেন।
আমিও সকলের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে যা ভাগ করতে যাচ্ছি তা হলো-
ত্রিফলাঃ হরিতকীর গাছ পরিচিতি ও এর স্বাস্থ্য উপকারিতাসমূহ
এ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করতে যাচ্ছি।
তো দেরি না করে আলোচনা শুরু করে দেয়া যাক।
ভুমিকা
ত্রিফলা মানে তিনটি ফলের সমাহার।ফলগুলো হচ্ছে আমলকি,বহেড়া ও হরিতকী। এর আগের পোস্টে আমি আমলকী ও বহেড়া সম্পর্কে আলোচনা করেছি।আজকে হরিতকীর গাছ পরিচিতি ও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
হরিতকী
বাংলা নাম | হরিতকী |
---|---|
ভেষজ নাম | ত্রিফলা,হরিতকী |
ইংরেজি নাম | Myrobalan/black/chebulic |
বৈজ্ঞানিক নাম | Terminalia chebula |
প্রজাতি | টি.চেবুলা |
গণ | টের্মিনেলিয়া |
পরিবার | কমব্রেটেসিয়া |
বর্গ | ম্যার্টালেস |
শ্রেণীবিহীন | সপুস্পক উদ্ভিদ । |
জগৎ | উদ্ভিদ |
গাছ পরিচিতি
হরিতকী একটি বৃক্ষ জাতীয় সপুষ্পক বহুবর্ষজীবি উদ্ভিদ।
এটি বাংলাদেশ ও ভারতে জন্মে।
হরিতকী পুর্ণবয়স্ক একটি গাছের উচ্চতা হয় ৩০ থেকে
৪০ ফুট।
ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এর পাতা ঝরে নতুন পাতা গজায়।
বাকল-গাঢ় বাদামী বর্ণের।
পাতা-লম্বা,চ্যাপ্টা,কিনার চোখা,৫/৬ ইঞ্চি লম্বা।
ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত হরিতকীর ফল সংগ্রহ করা যায়।
ফল-লম্বাটে,মোচাকৃতি ১ থেকে ১.৫০ ইঞ্চি লম্বা হয়।
ফলটি স্বাদে তিঁতা।
হরিতকীর উপাদান
১.ট্রাইনিন
২.এ্যামাইনো এসিড
৩.ফ্রুকটোস
ও
৪.বিটা সাইটোস্টেবল।
হরিতকীর স্বাস্থ্য উপকারিতা
ত্রিফলার সব ফলের বহবিধ স্বাস্থ্য গুন রয়েছে।
হরতকীরও অনেক ভেষজ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো-
রক্তচাপ
রক্তচাপ বা হাইপার টেনশন প্রায় মানুষের মাঝে দেখা যায়।আর এই কারণে মানুষ হার্ট ব্লক বা এটাক্ট যখন তখন হয়ে মানুষকে পৃথিবী ছেড়ে যেতে হচ্ছে। একটু স্বাস্থ্য নিয়ে মনোযোগী থাকলে এমন দুর্ঘটনা খুব কমে ঘটতে পারে।
শুকনো হরিতকী ফল গুড়া করে সকাল ও রাতে ১ চামচ করে নিয়মিত সেবন করলে এই হার্টের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
অবসাদ ও যৌন দুর্বলতা
শুকনো হরিতকীর গুঁড়ার সাথে খাটি মধু মিশিয়ে সকাল ও রাতে দুইবেলা নিয়মিত খেলে শারীরিক অবসাদ ও যৌন দুর্বলতা সেরে উঠে। তাছাড়া স্নায়ু দুর্বলতা দিন দিন কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
খিঁচুনি
আমাদের শরীরে পানি শুণ্যতা দেখা দেয় সাধারনত আমাশয়,পাতলা পায়খানা বা কলেরা বা ডায়রিয়া রোগ হলে।
আর এই পানি শুন্যতার কারনে আমাদের শরীরে খিঁচুনি আসে।
হরিতকী এসব সমস্যা দুর করতে সক্ষম। কারন হরিতকীতে থাকা এ্যামাইনো এসিড ও ফ্রুকটোস শরীরের ডিহাইড্রেশন রোধ করে শরীর সুস্থ্য রাখে।তাই হরিতকীর গুঁড়া দিনে তিনবার খেয়ে খিঁচুনি কমাতে পারি।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও অশ্ব
হরিতকী গুঁড়া নিয়মিত খেলে কন্সটিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পায়খানা স্বাভাবিক রাখে ফলে অশ্ব বা পাইলস রোগও ভালো হয়ে যায়।
চুলকানি ও এলার্জি
দেশি নিমের পাতার রসে ১ চামচ পরিমাণ হরিতকীর গুঁড়া মিশিয়ে সকাল ও রাতে দিনে ২ বার নিয়মিত খেলে চুলকানি ও এলার্জি রোগ ভালো হয়ে যায়।
কৃমি নাশক
হরিতকী নিয়মিত একবেলা করে খেলে কৃমি ধ্বংশ করে। কৃমির উৎপাত থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়।
গলা ব্যথা
হরতকী পানিতে ভিজিয়ে রস করে খেলে গলা ব্যথা নির্মুল হয়।তাছাড়া হরিতকী কাপড়ে মুড়িয়ে একটু গরম করে গলার ব্যথা জায়গাটিতে স্যাঁক দিলে ব্যথা উপসম হয়।
হজম ও পেট পরিস্কার
প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে হরিতকীর গুঁড়া একগ্লাস পানির সাথে খেলে সারাদিন পেটের হজম শক্তি বাড়ে,পায়খানা ক্লিয়ার হয় ও পেট পরিস্কার করে।
ত্বকের কাজ
নিয়মিত হরিতকী খেলে আমাদের ত্বক হবে মসৃণ, চকচকে,মোলায়েম ও সুন্দর।তাই প্রতিদিন হরিতকী খাওয়া আমাদের জন্য।
চুলের কাজ
হরিতকীর গুঁড়া পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানি সাকিয়ে নিয়ে নারিকেলের তেলের সাথে প্রতিদিন চুলে ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ হবে,খুসকি কমে যাবে,চুল হবে-ঘনকালো মসৃণ ও ঝকঝকে কৃঞ্চবর্ণের মতো।
উপসংহার
অবশেষে বলা যায় যে এমন একটি গুনধর ফল আমাদের প্রত্যেকের বাড়ীতে থাকা উচিত। তাতে এটি একটি হোম ডক্টরের মতো কাজ করবে।আমাদের শারীরিক কোন করতে হবে না,তাই না?
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্ত সবাই হরিতকী ব্যবহার ও সেবন করে সুস্থ্য থাকুন,সুন্দর থাকুন,নিরাপদে থাকুন।
দেখা হবে পরের পোস্টে।
বন্ধুরা পোস্টটি ভালো লাগলে আপভোট দিতে পারেন।না হলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন, কেমন?
ধন্যবাদান্ত-
আমি মোঃ নায়েব আলী,
হাইস্কুল শিক্ষক।
এলএমএএফ ডাক্তার।
একজন ইউটিউবার।
ওয়েব ডিজাইনার ও ব্লগার।
ছাদবাগান, ফটোগ্রাফ, ভিডিও,জনসেবা ও ভ্রমণ আমার প্রিয় শখ।
আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ন পোস্ট করে থাকেন।যেগুলো আমাদের জন্য খুবই উপযোগী ও দরকারী।আপনি আপনার পোস্টে হরীতকী এর গুনাগুন এবং ঔষুধি গুনাগুন তুলে ধরেছেন।খুব সুন্দর ছিল আপনার উপস্থাপনা।
শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনি অনেক ভালো রিপ্লাই দিতে পারেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরো ধন্যবাদ যে আমার পোস্ট গুলোর মনোযোগের সাথে পড়েন।
অভিনন্দন আপনাকে।
অনেক তথ্যবহুল একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সবকিছুই আছে এই পোষ্টে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
ধন্যবাদ অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।শুভেচ্ছা রইল।
আমি হরিতকী সেবন করি। আমার পেটে যখন বদহজমের সমস্যা ছিল এবং আমি একজন কবিরাজের কাছে গেলে আমাকে কি ফলা খাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল।
স্বস্তি স্বাস্থ্যসম্মত এবং সুন্দর আরামদায়ক ফিট রাখতে হলে সকলের ত্রিফলা খাওয়া উচিত
ঠিক বলেছেন ভাই।অনেক সুন্দর ও বাস্তব মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভ কামণা রইল।
এভাবেই সেবা মূলক পোস্ট করে যাবে ইনশাল্লাহ উপকৃত হবে সবাই
হ্যাঁ ভাই দোয়া করবেন।
খুবই উপকারী একটা গাছ। পাতা-বীজ-ফল সবই কাজে লেগে যায়। হাই প্রেসারের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী
ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর উপস্থাপনা এবং তথ্যবহুল পোস্ট। চেষ্টা করুন ভাবে ভাবে লেগে থাকার জন্য আমাদের সঙ্গে । শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ অনেক সুন্দর মতামত দেয়ার জন্য।
শুভ কামণা রইল আপনাদের জন্য।